ঢাকা ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪

সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল জীবনটা অস্ত্রময় হয়ে উঠেছিল

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
জীবনটা অস্ত্রময় হয়ে উঠেছিল
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম। ছবি : খবরের কাগজ

‘সোমালিয়ার জলদস্যুরা যখন আমাদের জিম্মি করে তখন থেকেই জীবনে অন্য এক ভয় নেমে আসে। স্বাভাবিক সময়ে আমরা জাহাজে ডিউটি করতাম। ডিউটি শেষে ভাত খেতাম, গোসল করতাম, বিশ্রাম নিতাম, পরিবারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতাম। অথবা জরুরি কোনো কাজ থাকলে সেগুলো সেরে নিতাম। কিন্তু জলদস্যুরা আমাদের এই স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করেছিল। সবকিছুতে স্থবিরতা নেমে আসে। জীবনটা অস্ত্রময় হয়ে ওঠে। সবসময় অস্ত্রের মুখে থাকতে হতো। এক মুহূর্ত জীবনের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। মনে হতো, আজই মনে হয় মেরে ফেলা হবে।’ 

মঙ্গলবার (১৪ মে) খবরের কাগজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এভাবেই জিম্মিদশার বর্ণনা দেন এমভি আবদুল্লাহর জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘সমুদ্রের জীবনটা হচ্ছে সামরিক বাহিনীর মতো। যুদ্ধে গেলে আসলে আর থেমে থাকার সুযোগ নেই। মরণপণ লড়াই তখন করতেই হবে। বুকে সাহস ছিল, তাই হয়তো সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছি।’

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়ি ময়মনসিংহে। চট্টগ্রাম থেকে অনেক দূরে। তাই তারা (স্বজনরা) এখানে আসতে পারেনি। আমার সন্তানরা টেলিভিশনে আমাকে দেখে ফোন করে। তারা আমাকে প্রশ্ন করেছে, এখানে নেই কেন? তারাতো জানে না যাদের বাড়ি কাছে তারাই আসতে পেরেছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে এই অনুষ্ঠানের জন্যই আসা। এখন আমাদের ইমিগ্রেশন আছে। কিছু দাপ্তরিক কাজ আছে। সেগুলো সেরে নিয়ে বাড়ির পথে রওয়ানা হব। বাড়ি যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি।’

জিম্মিদশার বর্ণনা দিয়ে নাবিক শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘৩৩ দিন আমার কাছে ৩৩ বছর মনে হয়েছে। কীভাবে দিন কাটতো সেটি আমরাই টের পেয়েছি। মনে হচ্ছিল প্রাণ যায় যায় অবস্থা। সারাক্ষণ জলদস্যুরা অস্ত্র ধরে রাখতো। ঈদের দিনও অস্ত্রের মুখে নামাজ পড়ি। কখনো ভাবিনি জীবনে এমন দিন আসবে। এখন নিজ দেশে ফিরে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া।’ 

বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৫৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও এমভি আবদুল্লাহর ডেক ক্যাডেট টাঙ্গাইলের সাব্বির হোসেন বলেন, ‘ভেবেই নিয়েছিলাম মারা যাব। আমাদের ভাগ্যে কী ছিল আমরাও জানতাম না। পুরো ৩৩টি দিন এক ধরনের শঙ্কায় ছিলাম। দিনগুলো চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। গোসল করতে পারিনি, ভালো মতো খেতে পারিনি। অবশেষে আমরা সুস্থ অবস্থায় ফিরে এসেছি। এটাই শুকরিয়া।’  

> মৃত্যুর মুখ থেকে স্বজনদের কাছে, আনন্দ উচ্ছ্বাস
> ‘আমাদের দিয়ে রান্না করিয়ে দস্যুরা খেয়ে ফেলত’
> মেহেদিরাঙা হাতে ফুল ও কেক নিয়ে নুরকে বরণ করলেন স্ত্রী
> ‘মায়ের ছেলে মায়ের বুকে ফিরেছে’
> মৃত্যুর হুমকি ছিল, কিন্তু সাহস রেখেছি : এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন
> বাবাকে ছাড়তেই চাইছিল না দুই মেয়ে, বুকে জড়িয়ে থাকে বহুক্ষণ
> ছেলের জন্য গরুর মাংস, শুঁটকি ও শিমের বিচি রান্না করে এনেছি

সর্বজনীন পেনশন স্কিম: ৫০ হাজারের মাইলফলক পেরোল চট্টগ্রাম জেলা

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম
সর্বজনীন পেনশন স্কিম: ৫০ হাজারের মাইলফলক পেরোল চট্টগ্রাম জেলা
ছবি : সংগৃহীত

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে দেশের প্রথম জেলা হিসেবে ৫০ হাজার রেজিস্ট্রেশনের মাইলফলক অতিক্রম করেছে চট্টগ্রাম জেলা। ২৭ মে'র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সমগ্র দেশে এখন পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করেছে প্রায় দুই লাখ বাহান্ন হাজার গ্রাহক, যার প্রায় ২০ শতাংশই চট্টগ্রাম জেলা থেকে। 

চট্টগ্রামের এই অগ্রগণ্য যাত্রা নিয়ে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবদ্য উদ্যোগ সর্বজনীন পেনশন স্কিম, যা বৃদ্ধ বয়সে সকলের অবলম্বন হিসেবে বিবেচিত হবে। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অন্যতম প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা হওয়াতে এখানকার মানুষ এ ধরণের স্কিমে অংশগ্রহণ করতে ব্যাপক আগ্রহী। জুলাই মাসের মধ্যে ১ লক্ষ রেজিস্ট্রেশনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কাজ করছে মর্মে তিনি জানান। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২৭ মে রাত ১০টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলাতে ৫০ হাজার ৬৮৮টি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে রাউজান উপজেলাতে ৮ হাজার ৬৪৭টি, সীতাকুণ্ড উপজেলাতে ৫ হাজার ৬২০টি, বাঁশখালী উপজেলাতে ৪ হাজার ৬০২টি, কর্ণফুলী উপজেলাতে ৩ হাজার ২৩৩টি এবং চন্দনাইশ উপজেলাতে ৩ হাজার ২১৪টি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। 

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলাতে শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেএসআরএম গ্রুপ সর্বপ্রথম তাদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন স্কিমে সংযুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। 

জেলা প্রশাসক চলমান কার্যক্রমের ধারা সমান গতিতে বজায় রাখতে সচেষ্ট। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মতো উদ্যোগের সাফল্য সম্ভাবনা বিপুল; পঞ্চাশ হাজার মাইলফলক অর্জন সেই পথকে আরও সুগম করেছে। আশা করি জেলা প্রশাসনের চেষ্টায় এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা আরও অনেক দূর যাবো।

উল্লেখ্য, দেশের জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিবেচনায় নিয়ে মহান জাতীয় সংসদ কর্তৃক “সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩” পাশ হয় এবং গত ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

এমএ/

শপথ নিলেন রাজশাহী বিভাগের নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানরা

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ০৭:৩৯ পিএম
শপথ নিলেন রাজশাহী বিভাগের নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানরা
ছবি : খবরের কাগজ

উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে নির্বাচিত রাজশাহী বিভাগের ২৩ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা শপথ গ্রহণ করেছেন। মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর ১২টায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। পরে এসব উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরাও শপথ গ্রহণ করেন।

রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় আয়োজিত এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রথমে নবনির্বাচিত ২৩ উপজেলা চেয়ারম্যানদের একসঙ্গে শপথবাক্য পাঠ করান বিভাগীয় কমিশনার। এরপর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পরে ভাইস চেয়ারম্যানদের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। শপথ শেষে বিভাগীয় কমিশনার সবাইকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার এই জনপ্রতিনিধিদের দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক পারভেজ রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে গত ৮ মে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার এই ২৩টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এনায়েত করিম/এমএ/

ওসমানীতে শিডিউল বিপর্যয়, গন্তব্যে পৌঁছেছে ৯ ডাইভার্ট ফ্লাইট

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ০৭:২৭ পিএম
ওসমানীতে শিডিউল বিপর্যয়, গন্তব্যে পৌঁছেছে ৯ ডাইভার্ট ফ্লাইট
ছবি : সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট উঠানামায় শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশব্যাপী বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করায় সোমবার বিকাল থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমান, ইউএস বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা এয়ারলাইন্সের ১২টি ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এর মধ্যে ছিল নিয়মিত উড্ডয়ন ও অবতরণ ফ্লাইট। 

এদিকে সোমবার (২৭ মে) ৯টি ডাইভার্ট ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছিল। এর মধ্যে ৩টি গতকালই গন্তব্যের উদ্দেশে চলে যায়। আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে বাকি ৬টি ডাইভার্ট ফ্লাইট গন্তব্যের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেছে। এই ৬টি ফ্লাইটিই ছিল ইউএস বাংলার। এরমধ্যে কোনো কোনো ফ্লাইট সমন্বিত হয়ে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে উড্ডয়ন করছে বলে জানিয়েছেন ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ। 

ওসমানী বিমানবন্দরের সহকারী ব্যবস্থাপক বেলায়েত আলী লিমন বলেন, ৬টি ফ্লাইটের মধ্যে ৭টা ১৮ মিনিটের দিকে প্রথম ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। সর্বশেষ ফ্লাইটটি ৯টা ৩৫ মিনিটের বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। সবগুলো ফ্লাইটই সুষ্ঠুভাবে গন্তব্যের উদ্দেশ্য ছেড়ে গেছে।

শাকিলা ববি/এমএ/

রিমালে সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি, ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
রিমালে সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি, ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার
ছবি : খবরের কাগজ

প্রতিবারের মতো এবারও উপকূল অঞ্চলকে ঘূর্ণিঝড় থেকে ঢাল হয়ে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। কিন্তু গত রবিবার (২৬ মে) রাত থেকে সোমবার (২৭ মে) পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে সুন্দরবনে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে বন্য প্রাণীর, যা অপূরণীয়। জলোচ্ছ্বাসে পানিতে ডুবে হরিণসহ শত শত বন্য প্রাণী মারা গেছে। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে আরও বহু বন্য প্রাণী। সেই সঙ্গে বন্য প্রাণীর জন্য বনের ভেতর খনন করা সব কটি মিষ্টি পানির পুকুর লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এরই মধ্যে বনে মিষ্টি পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া সুন্দরবনের ভেতরে থাকা ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন কর্মকর্তারা বলছেন, গত ২০-৩০ বছরের মধ্যে সুন্দরবনের এত বড় বিপর্যয় হয়নি।

জানা যায়, অতীতের অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে রিমাল বেশ দীর্ঘস্থায়ী ছিল। রিমালের প্রভাবে এবার সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ বনভূমি প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পানিতে নিমজ্জিত ছিল। বনের ভেতরে প্রায় সব স্থানই ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়। জোয়ারের পানি নেমে গেলে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বনের বিভিন্ন অংশে বন্য প্রাণীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে বিশেষ করে বনের অনেক হরিণ মারা গেছে। এ পর্যন্ত বনের শুধু কটকা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। মৃত বন্য প্রাণীর সন্ধানে বনজুড়ে বনরক্ষীদের তল্লাশি চলছে। এ ছাড়া বনের গাছপালারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’ 

মিহির কুমার জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি হয়েছে বন বিভাগের বিভিন্ন অফিসসহ টহল বোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর। দুবলা, কটকা, কচিখালী, বগি ও বিভিন্ন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। কটকা অভয়ারণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগরে বিলীন হয়ে গেছে। পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের পুলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে তছনছ হয়েছে অসংখ্য গাছপালা।

বন সংরক্ষণ দপ্তর জানায়, সুন্দরবনে অভ্যন্তরের মিঠাপানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনাপানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনাপানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বনকর্মীদের পাশাশাশি বাঘ, হরিণসহ বন্য প্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।

এদিকে বন গবেষকরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গত কয়েক বছর ধরে নিম্নচাপের কারণে লোনা পানিতে বন তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বন বিভাগ সেদিকে নজর দেয়নি। ফলে এবার ১০-১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসে বন ভূমিতে বিচরণ করা বাঘ, হরিণ ও শূকরসহ অন্যান্য প্রাণীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

সুন্দরবন একাডেমির বন গবেষক ও পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে বন্য প্রাণীর এত বিশাল ক্ষতি হয়েছে, যা পূরণ করা কখনোই সম্ভব হবে না। বন্য প্রাণীর সুরক্ষায় বনের মধ্যে উঁচু পানির ঢিবি তৈরি, সুপেয় পানির পুকুরগুলোর পাড় উঁচু করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’

এ বিষয়ে বন কর্মকর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছর বনের মধ্যে মাটির ১২টি উঁচু ঢিবি করা হয়। তবে তা প্রায় ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার বনভূমির তুলনায় খুবই কম। এবারের জলোচ্ছ্বাসে বন পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে বনে উঁচু ঢিবি তৈরিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

সুন্দরবন বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া ১৩টি হরিণ লোকালয় থেকে উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। আহত কিছু বন্য প্রাণীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনো বনজুড়ে তল্লাশি চলছে, তাতে মৃত হরিণসহ অন্যান্য বন্য প্রাণীর সংখ্যা আরও বাড়বে। এ ছাড়া আহত অবস্থাও উদ্ধার করা হচ্ছে হরিণসহ অন্যান্য বন্য প্রাণী।’

রিমালের তাণ্ডবে ঝালকাঠিতে ৬ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম
রিমালের তাণ্ডবে ঝালকাঠিতে ৬ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
ছবি : খবরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ঝালকাঠিতে ৬ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ঘরবাড়ি।

সোমবার (২৭ মে) রাতে ঝড়ের সময় জেলার কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের বলতলা গ্রামে গাছচাপা পড়ে জাকির হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড়ে জেলার ৬ হাজার ১৯০ হেক্টর জমির ফসল এবং বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে সাড়ে ৯ কিলোমিটার বেড়িবাধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই হাজার ৭০টি পুকুর ও ১৫৯টি মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।

এছাড়া বিদ্যুতের খুঁটির ওপর গাছ পড়ে রবিবার রাত থেকে টানা দুই দিন ধরে জেলাজুড়ে বিদুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে আজ সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনও কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। জেলার বিভিন্ন এলাকার সড়কে এখনও উপড়েপড়া গাছ পড়ে আছে। এসব গাছপালা কেটে সরিয়ে নিতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

এদিকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুদামে পানি প্রবেশ করায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বেশ কয়েকটি মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। 

আল-আমিন/এমএ/