রংপুর বেতার অফিসে গোপনে কাটা হয়েছে লাখ টাকার গাছ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

রংপুর বেতার অফিসে গোপনে কাটা হয়েছে লাখ টাকার গাছ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম
রংপুর বেতার অফিসে গোপনে কাটা হয়েছে লাখ টাকার গাছ
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশ বেতার রংপুর আঞ্চলিক প্রেরণ কেন্দ্রের গাছ গোপনে কেটে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রের আঞ্চলিক প্রকৌশলী আবু ছালেহের নির্দেশে লক্ষাধিক টাকার এসব গাছ কাটা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রকৌশলীর দাবি, পুলিশ ব্যারাক রক্ষা করতেই এগুলো কাটা হয়েছে। তবে বন বিভাগ জানিয়েছে, গাছগুলো কাটা বিধি সম্মত হয়নি। প্রকৌশলী আবু ছালেহের বিরুদ্ধে অচল জেনারেটর সচল দেখিয়ে তেল আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে অফিস সহায়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বড় স্যারের নির্দেশে রেডিও টেকনিশিয়ান মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বাইরে থেকে গাছ কাটার লোকজন নিয়ে আসেন। পরে তারা বাউন্ডারির ভেতরের পুলিশ ব্যারাকের কাছে থাকা লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মেহগনি ও নিমসহ কয়েকটি পুরোনো গাছ কেটে ফেলেন। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক আঞ্চলিক প্রকৌশলীকে জানাই। তিনি বিষয়টি জানেন বলে আমাকে জানান। পরে গাছগুলো সরাতে আমিও আবুল কালাম আজাদকে সহায়তা করি। কারণ আমি ছোট চাকরি করি, স্যারের নির্দেশ আমি অমান্য করতে পারি না। এ কারণেই স্যারের নির্দেশেই সহায়তা করেছি।’

এ বিষয়ে রেডিও টেকনিশিয়ান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এগুলো ছোট বিষয়, এসব নিয়ে নিউজ না করাই ভালো। আর-ই (আঞ্চলিক প্রকৌশলী) স্যার গাছগুলো কাটতে বলেছিলেন। কারণ গাছগুলো বাতাসে ভেঙে পড়লে পুলিশ ব্যারাকে সমস্যা হতে পারে। এজন্যই গাছগুলো কাটার নির্দেশ দিয়েছিল আঞ্চলিক প্রকৌশলী।’ এ বিষয়ে নিউজ না করার জন্য তিনি বারবার অনুরোধ করেন। 

তবে অফিসের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ বেতার রংপুরের আঞ্চলিক প্রকৌশলী আবু সালেহ ছয় বছর ধরে এই স্টেশনে আছেন। দীর্ঘদিন একই স্থানে থাকায় শুধু গাছ কাটা নয়, অফিসের বৈদ্যুতিক অচল জেনারেটর সচল দেখিয়ে তেল আত্মসাৎ করেছেন তিনি। এ ছাড়াও চাষযোগ্য ৪০ একর আবাদি জমি ফেলে রাখাসহ নানা ধরনের অনিময়-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বেতার রংপুর আঞ্চলিক কেন্দ্রের প্রকৌশলী আবু সালেহ বলেন, ‘কেন্দ্রের ভেতরে কিছু গাছ অনেক পুরোনো হয়ে পোকা ধরেছিল। যেকোনো সময় বাতাসে গাছগুলো ভেঙে পুলিশ ব্যারাকের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারত। কারণ পুলিশের ওখানে অনেক অস্ত্র ও গোলাবারুদ থাকে যেগুলো দেখভালের দায়িত্ব আমার। যাতে পুলিশের ঘরের কোনো ক্ষতি না হয়, এ কারণে আমি মৌখিকভাবে গাছগুলো কাটার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাই। মৌখিকভাবে বলায় আমি গাছগুলো কাটার অনুমতি দিয়েছি। তবে কোনো গাছ আমি আত্মসাৎ করিনি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির কথা আমাকে জানানো হয়েছে, সেগুলো আমি করিনি। তারপরেও আমি বন বিভাগের লোকজনকে ডেকে গাছগুলো তাদের মাধ্যমে সরকারি নিয়মে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়েছি।’ তিনিও এই বিষয় নিয়ে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

বন বিভাগের রংপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘যেকোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে গেলে বিধি মোতাবেক কাটতে হয়। কিন্তু রংপুর বেতারের আঞ্চলিক প্রেরণ কেন্দ্রের ভেতরের গাছগুলো কাটার সময় বন বিভাগকে জানানো হয়নি। রংপুর বেতারের আঞ্চলিক প্রকৌশলী আবু সালেহ গাছ কাটার এক সপ্তাহ পর আমাকে জানান। পরে আমি সেখানে গিয়ে কয়েকটি গাছের টুকরো দেখতে পাই। পরবর্তীকালে গাছগুলোর দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। তবে গাছগুলো কাটা বিধি সম্মত হয়নি।’ 

এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান বলেন, ‘রংপুর বেতারের আঞ্চলিক প্রেরণ কেন্দ্রের গাছগুলো যদি বিধি মোতাবেক কাটা হয়ে থাকে, তাহলে ভালো কথা। আর যদি সরকারি নিয়ম না মেনে কাটা হয়, তাহলে যিনি কেটেছেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাই করে এসআই হাতেনাতে ধরা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:৪৬ এএম
প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাই করে এসআই হাতেনাতে ধরা
স্বর্ণ ছিনতাইকারী এসআই আমিনুল ইসলাম (গোল চিহ্নিত)। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোর্সসহ পুলিশের এক এসআইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার এসআই আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রামের খুলশী থানায় কর্মরত রয়েছেন। আরেকজন হলেন সোর্স মো. জাহেদ। 

লোহাগড়া থানার আবদুল খালেকের ছেলে আবদুল মালেক তার ভাইকে নিয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। লোহাগড়া যাওয়ার পথে নগরের টাইগার পাস এলাকায় তাদের গাড়ি থামিয়ে চেক করেন এসআই আমিনুল ইসলাম। সেখান থেকে আবদুল মালেককে নিয়ে নগরের আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভার হয়ে চলে আসেন বহাদ্দারহাট এলাকার এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক কারখানার সামনে। আসার পথে মালেকের কাছে থাকা ৮টি স্বর্ণের চুড়ি নিয়ে নেন এসআই। কিন্তু বহাদ্দারহাট এলাকায় এসে ৩টি চুড়ি ফেরত দিয়ে বলেন চলে যাও। 

ষোলশহর ২নম্বর গেট এলাকায় আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ওপরে ওই ঘটনায় সময় ভুক্তভোগী প্রবাসী আবদুল মালেক খবরের কাগজকে বলেন, গত ১২ মে আমি সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছি। আজ (রবিবার) আমার ছোট ভাই এসেছে। আমার ভাইসহ আমি আসার পথে সিভিলে থাকা অবস্থায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে তল্লাশি করার কথা বলেন এসআই আমিনুল। আমাকে সিএনজি গাড়ি থেকে নামিয়ে অপর একটি সিএনজিতে তুলে নেন। নগরের টাইগার পাস এলাকা থেকে আমাকে বহদ্দারহাট নিয়ে আসেন। সেখানে আমাকে মারধরের হুমকি ও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। তখন আমি আমার কাছে স্বর্ণের বিষয়ে থাকা সব ডকুমেন্ট দেখাই। এরপর রাজস্ব পরিশোধের কাগজটি নিয়ে নেন। পরে আমাকে তিনটি স্বর্ণের চুড়ি ফেরত দিয়ে চলে যেতে বলেন। আমি বলেছি আমাকে থানায় নিয়ে যান, যেখানে খুশি সেখানে নিয়ে যান। আমি চলে যাব কেন? চলে গেলে আমার স্বর্ণ ফেরত দেন। কিন্তু আমাকে স্বর্ণ ফেরত না দিয়ে তারা ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে সিএনজি গাড়ি টান দেন। পরে আমি চিৎকার দেই চোর চোর বলে। এ সময় অপর একটি গাড়িতে করে আমি তাদের পিছু নেই। এ সময় আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজি যাত্রীরা মিলে তাদের ধরি। তারা পালাতে চেয়েছিল। সাধারণ মানুষ তাদের ধরেছে ফ্লাইওভারের ওপরে। এরপর পিবিআইয়ের একজন পুলিশ এসে আমাদের সহযোগিতা করেছেন। পরে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়। 

পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমান চাকমা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা ওই এসআইকে তার এক সোর্সসহ আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ওপর থেকে আটক করেছি। সে কাজটি ভালো করেনি। সিভিলে অভিযান চালানোর কোনো নিয়ম নেই। আর স্বর্ণ ছিনিয়ে নেওয়া বড় অন্যায় হয়েছে। ঘটনাস্থল যেহেতু খুলশী থানা এলাকায়, তাই দুজনকে খুলশী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. মোখলেসুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘পুলিশের এক এসআইসহ দুজন খুলশী থানায় আটক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। ভুক্তভোগী ওই প্রবাসী মামলা করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে খুলশী থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, এসআই আমিনুল ইসলাম ও তার সোর্সের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো : ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:৪২ এএম
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো : ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো বলে মন্তব্য করেছেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো। 

রবিবার (১৯ মে) সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে পিছিয়ে রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া খাদ্য সংরক্ষণ ও হালাল ফুড রপ্তানিতে বিশ্বে নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করেছে। উভয় দেশের ট্যুরিজম, ম্যানুফ্যাকচারিং, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার এবং রিনিউঅ্যাবল এনার্জি সেক্টরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। 

চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, পরিচালক এ কে এম আক্তার হোসেন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক শাহ, মাহবুবুল হক মিয়া, মোহাম্মদ মনির উদ্দিন ও আখতার উদ্দিন মাহমুদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের অ্যাটাচে রব্বি ফিরলি হারখা ও ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স সপ্তো রুদিয়ান্তো। 

সভাপতির বক্তব্যে ওমর হাজ্জাজ বলেন, খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। কিন্তু দেশের মোট খাদ্য উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ বা তিন বিলিয়ন ডলার সংরক্ষণ কিংবা প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার বিশ্বব্যাপী হালাল ফুড এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে সুনাম রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার। তাই দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিশাল বাজার ধরা ও রপ্তানিতে ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি করে বাংলাদেশ। যার মধ্যে পামওয়েল, কয়লা, সিমেন্ট ক্লিংকার, পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্টসহ কৃষিপণ্য আমদানি করে। বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া তৈরি পোশাক ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে। 

এএসআইয়ের ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
এএসআইয়ের ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল
এএসআই আলতাফ হোসেনে

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আসমানখালী পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলতাফ হোসেনের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বাদীপক্ষের কাছে টাকা দাবি ও বিবাদীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ে দর-কষাকষির অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর ফেঁসে যাচ্ছেন তিনি।

গত ১৩ মে এএসআই আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের আফরোজা খাতুন নামে এক নারী চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ সুপার অভিযোগটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদকে তদন্তের নির্দেশ দেন। 

বাদীপক্ষের অভিযোগ ও ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ। তিনি বলেন, ভাইরাল অডিও ক্লিপটিতে থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী নারী আফরোজা খাতুন বলেন, গত ৫ বছর যাবৎ আমার স্বামী আতিয়ার হোসেন অসুস্থ। কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। এ জন্য আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। গত ১০ মাস যাবৎ স্থানীয় একটি বেসরকারি এনজিওতে রান্নাবান্নার কাজ করছি। বাইরে কাজ করি বলে আমার দেবর আক্তার আলী ও মেজো ভাশুর হাশেম আলী আমার স্বামীর কাছে আমাকে নিয়ে কুমন্তব্য করতে থাকেন। আমার স্বামী তাদের কথা শুনে আমাকে অশালীন কথাবার্তা বলেন। 

এ ঘটনার জের ধরে গত ৯ মে আমার দেবর ও মেজো ভাশুর আমার বাড়িতে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়িতে আসেন। আমি ও আমার দুই নাবালক সন্তান আরেফিন রহমান (১৭) ও আল মেরাজকে (১২) নিয়ে ঘরের দরজা আটকে দিই। এ সময় তারা ঘরে প্রবেশ করতে না পেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে টিনের বেড়ায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যান।

এ ঘটনার পরদিন ১০ মে আমার বড় ছেলে আরেফিন বাড়িতে এসে তার বাবাকে বিষয়টি বোঝাচ্ছিল। সে জানতে চায় তার মায়ের সঙ্গে কেন এমন আচরণ করা হচ্ছে? ঠিক এ সময় আমার দেবর ও মেজো ভাশুর লোহার রড, লোহার পাইপ নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। আমাকেসহ আমার তিন সন্তানকে তারা বেধড়ক মারপিট করতে থাকেন। এতে আমার মেজো ছেলে ও বড় ছেলে জখম হয়। দুজনকে সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার দিন ১০ মে আমার স্বামী, দেবর ও মেজো ভাশুরের বিরুদ্ধে আসমানখালী ক্যাম্পে একটি অভিযোগ করি। ক্যাম্পের পুলিশ উভয় পক্ষকে ডেকে সুন্দরভাবে আপস-মীমাংসা করে দেন। এরপর আমি আমার সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিবাদীরা আমাদের ঢুকতে না দিয়ে বের করে দেন। পরে দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় খেয়ে না খেয়ে দুই দিন ঘুরেছি।
আফরোজা খাতুন আরও বলেন, গত ১৩ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসমানখালী ক্যাম্পের এএসআই আলতাফ হোসেন আমার বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে আমার বড় জা, তার পুত্রবধূ ও তার মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কে অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসমানখালী ক্যাম্পে দেখা করার জন্য বলেন। আমি অসহায় গরিব মানুষ। আমার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। সে কারণে সঠিক বিচারের আশায় বড় স্যারের (পুলিশ সুপার) নিকট অভিযোগ করেছি।

অডিও ক্লিপটিতে এএসআই আলতাফ হোসেন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কয়েকজনের উপস্থিতি বোঝা যায়। এএসআই আলতাফ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার একটা পাওয়ার আছে, সার্কেল স্যার আমার কাছের লোক। তাকে আমি বুঝ দিতে পারব। আমার ব্যাক কিন্তু সে। আমি যেভাবে বলব সেভাবে হবে।’ এমন কথা বলার পর ৫০ হাজার টাকা দাবি করতে শোনা যায় এএসআই আলতাফ হোসেনকে। এ নিয়ে দর-কষাকষি হতে থাকে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এএসআই আলতাফ হোসেন দাবি করেন যে, ঘটনাটি সত্য নয়। 

চট্টগ্রামে ৫১০০ পিস সেগুন কাঠ জব্দ

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:২৫ এএম
চট্টগ্রামে ৫১০০ পিস সেগুন কাঠ জব্দ
জব্দ করা সেগুন গাছের পিস। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে অভিযান চালিয়ে ৫১০০ পিস সেগুন গাছের কাঠ জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় বন বিভাগকে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) উপজেলার রংগীপাড়া এলাকায় রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। 

অভিযানে নেতৃত্ব দেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবি এম মশিউজ্জামান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহরাজ শারমিন। 

এ সময় চট্টগ্রাম জেলা এনএসআইয়ের প্রতিনিধি দল, বন বিভাগের কর্মকর্তা ও হাটহাজারী থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

এবি এম মশিউজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। আমরা ঘটনাস্থলে ৫১০০ পিস সেগুন গাছের কাঠ দেখতে পাই। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া কিছু গাছের মার্কিং নাম্বার থাকলেও, অধিকাংশ গাছে কোন মার্কিং নাম্বার নেই।  সরকারি ক্রয়াদেশের সঙ্গে অধিকাংশ গাছ মিক্সড (মিশ্রিত) হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সময় ঘটনাস্থলের আশেপাশে ডিপোর মালিক বা শ্রমিক কাউকে না পাওয়ায় বনবিভাগকে আনুমানিক ৫১০০ পিস গাছের টুকরা জব্দ করে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়।’

ইফতেখারুল/পপি/

শিক্ষকের অনিয়ম-অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:২২ এএম
শিক্ষকের অনিয়ম-অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ

জামালপুরের ইসলামপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষক ডা. শাহ মো. মোখলেছুর রহমানের বিভিন্ন অনিয়ম, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল রবিবার সকাল থেকে ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। 

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী কৌশিক, মেহেদী হাসান, আতিক কাওসার ও বৈশাখী আক্তারসহ অন্য শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষক ডা. শাহ মো. মোখলেছুর রহমান যোগ দেওয়ার পর থেকেই পাঠদানে অবহেলা, হোস্টেলে সিট বাণিজ্য, নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ নানাভাবে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রেখেছেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠের বাইরের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলে তিনি দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় করলেও ১০ মিনিটের বেশি পাঠ দেন না। হোস্টেলের ছাত্রদের মাদকাসক্ত ও ছাত্রীরা দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। এসবের প্রতিবাদ করলেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া, শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত দেখানো, অকৃতকার্য করানো, ছাত্রত্ব বাতিল, হোস্টেলের সিট বাতিলের হুমকিসহ অভিভাবকদের ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও অসৌজ্যমূলক আচরণ করেন। এ ছাড়া হোস্টেল সুপার রবিউল ইসলামের যোগসাজশে হোস্টেলের খাবারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। 

তারা আরও বলেন, মো. মোখলেছুর রহমান নিজের পছন্দ অনুযায়ী হোস্টেলে ম্যানেজার নির্ধারণ করে খাবারের টাকা আত্মসাৎ করেন। শিক্ষার্থীরা খাবার না খেলেও মাসিক খাবারের টাকা গুনতে হয়। কলেজটিতে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে আয়া, বুয়া, বাবুর্চিদের বেতন দেওয়া হলেও প্রতিমাসে ৪০০ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। মো. মোখলেছুর রহমানের এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিগগিরই ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।