বরগুনার পাথরঘাটায় মৎস্য বিভাগের বিরুদ্ধে বিষখালী নদীতে অভিযানের সময় জেলেদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় নদীতে ছিটকে নিখোঁজ হন রিপন নামে এক জেলে। ২২ ঘন্টা পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে বিষখালী নদীর কালমেঘা টুলুর পয়েন্ট থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে দক্ষিণ কুপধন এলাকায় জেলা মৎস্য বিভাগের অভিযানের সময় রিপন নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় আরও দুই জেলে আহত হন।
নিহত রিপন উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুপধনের আ. রাজ্জাকের ছেলে। আহত জেলেরা হলেন, একই এলাকার নুরু মোল্লার ছেলে রাসেল ও সুলতান হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।
এদিকে রাতে রিপনের মরদেহ টুলু পয়েন্টে উদ্ধার করে নিয়ে আসলে এ ঘটনার বিচারের দাবিতে শতাধিক নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির, জেলা পরিষদ সদস্য এনামুল হোসাইন, ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নাসির উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র ও আহত জেলেরা জানান, প্রতিদিনের মতো রিপন, রাসেল, দেলোয়ার দুটি ট্রলার নিয়ে বিষখালী নদীতে মাছ ধরার জন্য যায়। রাত আড়াইটার দিকে স্পিডবোট নিয়ে বরগুনা সদর উপজেলা মৎস্য বিভাগ অবৈধ খুটি অপসারণের জন্য অভিযানে আসেন। তখন ওই দুটি ট্রলারকে ধরে সেখানে থাকা জেলেদের মারধর শুরু করে তারা। এ সময় রিপন নদীতে পড়ে নিখোঁজ হলেও রাসেল ও দেলোয়ারকে নিয়েই অভিযান চালায় মৎস্য বিভাগ। অভিযান শেষে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় যুবলীগ নেতা তাওহীদ দীপু বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ফিরে আসা জেলেদের থেকে তথ্য পেয়ে নদীতে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে খুঁজতে শুরু করি। পরে রাত ১২টার দিকে টুলু পয়েন্টের কাছে বনের ভেতর রিপনের লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নাসির বলেন, নিখোঁজ জেলের সন্ধান পাওয়ার পর পাথরঘাটা থানায় জানালে রাত দেড়টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সাইফুজ্জামান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব খবরের কাগজকে বলেন, ‘বরগুনা সদর থেকে বৃহস্পতিবার বিষখালি নদীতে অবৈধ খুঁটিগুলো অপসারণে অভিযান চালানো হয়। এ সময় স্থানীয় কিছু জেলে সহযোগিতা করেন। তখন কোনো জেলেকে আটক করা হয়নি। মারধরের বিষয়টিও সত্য নয়। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসককে এ বিষয় অবহিত করা হয়েছে।’
মহিউদ্দিন অপু/জোবাইদা/অমিয়/