হাতির তাণ্ডবে কাটা হচ্ছে আধাপাকা ধান । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

হাতির তাণ্ডবে কাটা হচ্ছে আধাপাকা ধান

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
হাতির তাণ্ডবে কাটা হচ্ছে আধাপাকা ধান
হাতির তাণ্ডব থেকে বাঁচতে আধাপাকা ধান খেত থেকে কেটে কৃষকরা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন/ খবরের কাগজ

বছরের পর বছর বন্য হাতির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছেন শেরপুরের সীমান্ত অঞ্চলের মানুষরা। বর্তমানে হাতির উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় তাদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে। তাই আধাপাকা ধান ঘরে তুলতেই রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে এসব অঞ্চলের কৃষকদের। গত এক সপ্তাহ ধরে হাতির উপদ্রব আরও বেড়েছে।

বন বিভাগের তথ্য মতে, শেরপুর জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তজুড়ে গারো পাহাড়। এ পাহাড়ে ১৯ হাজার ২৭৫ একর বনভূমি রয়েছে। এসব বনভূমির সীমান্ত এলাকাজুড়ে ছুটছে বন্য হাতির দল। বাংলাদেশের বনাঞ্চল ভারতের বনাঞ্চলের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সমতল হওয়ায় ভারতের গহিন অরণ্য থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে হাতির দল তাণ্ডব চালাচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে ফসল।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক ধরে হাতির উপদ্রব বেড়েছে। রাত জেগে ঢাক-ঢোল ও মশাল জ্বালিয়েও থামানো যাচ্ছে না ক্ষুধার্ত বুনো হাতির দলকে। তাই বন্য হাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় আধাপাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন সীমান্ত এলাকার মানুষ। উপদ্রব সবচেয়ে বেশি শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুড়ি, মালাকোচা, খ্রিস্টানপাড়া, চান্দাপাড়া এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও, পানিহাটা, বুরুঙ্গা, কালাপানি এলাকায়।

স্থানীয়রা জানান, নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নে সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও, বুরুঙ্গা, কালাপানি ও পানিহাটা গ্রামের ভারতের সীমান্তঘেঁষা ২৫০ একর জমিতে দুই শতাধিক কৃষক বোরো ধান আবাদ করেছেন। এসব এলাকায় ধান পাকতে আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। কিন্তু বাতকুচি, মৌচাক, চৌকিদারটিলা, ডালুকোনা, নাকুগাঁও ও পানিহাটা সীমান্তবর্তী পাহাড়ি জঙ্গলে দুই সপ্তাহ ধরে শতাধিক বন্য হাতির দল তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান করছে।

তপ্ত রোদে হাতির দল পাহাড়ের উঁচু টিলায় থাকে। বিকেল হলেই নামতে শুরু করে লোকালয়ে। স্থানীয় কৃষকরা মশাল জ্বালিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাতির দলকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে আসছেন। হাতির তাণ্ডব বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই জমি থেকে পরিবারের লোকজন ও শ্রমিক দিয়ে আধাপাকা ধান কেটে নিয়ে আসছেন।

সম্প্রতি নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কেউ কাটা ধান মাথায় করে নিয়ে ধান খেতের পাশে রাখছেন। কেউবা আবার খেতের পাশের সড়কে রাখছেন। অনেক জায়গায় আবার দেখা গেছে সড়কে রাখা ধানগুলো মেশিনের মাধ্যমে মাড়াই করে ধানের স্তূপ করে রাখা হয়েছে। একই অবস্থা শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুড়ি ও মালাকোচা এলাকার কৃষকদের। তারাও আধাপাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নালিতাবাড়ীর পানিহাটা গ্রামের কৃষক আব্দুল মিয়া বলেন, আমি ৪০ শতাংশ জমিতে এবার বোরো ধানের আবাদ করেছি। ফসল এখন পাকতে শুরু করেনি। তবুও হাতির জন্য কাঁচা ধান কাটতে হচ্ছে। কারণ, কখন যে হাতি এসে তা নষ্ট করে ফেলে, তাই কাঁচা ধান কাটতেছি।

একই উপজেলার বুরুঙ্গা গ্রামের কৃষক মুক্তার আলী বলেন, আমার ৬০ শতক জমিতে ধান পাকতে এখনো সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। কিন্তু হাতির ভয়ে নিরুপায় হয়ে আধাপাকা ফসল কাটতে বাধ্য হচ্ছি।

কালাপানি গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, কালাপানি পাহাড়ের ঢালে ৭০ শতক জমিতে ধান চাষ করছি। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে প্রতিরাতে হাতি অত্যাচার করে। সবাই রাত জেগে খেত পাহারা দেই।

শ্রীবরদী উপজেলা বালিজুড়ি অফিসপাড়ার কৃষক রবিন মিয়া বলেন, গত বছর হাতি আমাদের এখানে আগে এসে ক্ষতি করেছে। এবার এখনো হাতি আমার খেতের ধান নষ্ট করেনি। কখন যে হাতি চলে আসে, এই ভয়েই আধাপাকা ধান কাটছি।

খ্রিস্টানপাড়ার কৃষক করিম মিয়া বলেন, কদিন আগে এক কৃষককে হাতি মেরে ফেলেছে। ওই কৃষক ধান পাহাড়া দিতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এ জন্য আগেই ধান কাটা শুরু করেছি। গত দুদিন ধরে ধান কাটতাছি।

পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেরাজ উদ্দিন বলেন, মূল বিষয় হচ্ছে হাতি যেসব জায়গা দিয়ে যাতায়াত করত সেসব জায়গা দখল করে ধান চাষ করা হচ্ছে। ফলে হাতির জায়গায় হাতি রয়েছে। কিন্তু হাতির জায়গায় বর্তমানে মানুষের বাড়ি-ঘর ও চাষাবাদ হচ্ছে। তাই হাতি চলাচলের সময় কৃষকের ধান খেয়ে বা মুড়িয়ে নষ্ট করছে। কৃষকও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে, তাই আধাপাকা ধান কাটছেন। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একটাই উপায় গারো পাহাড়ে হাতির অভয়ারণ্য করা হোক এবং কৃষকদের এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হোক।

শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার বলেন, কৃষকদের লাগানো বোরো ধান ৮০% পাকলেই কেটে ফেলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে হাতির অপছন্দের খাবার চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, হাতি যেসব স্থানে আসে, সেসব স্থানে কাঁটাযুক্ত গাছ লাগানোর।

রাজশাহী স্বাচিপের সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. অর্ণা জামান

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:৫৭ এএম
রাজশাহী স্বাচিপের সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. অর্ণা জামান
স্বাচিপের রাজশাহী ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) রাজশাহী ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। 

রবিবার (১৯ মে) বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হয়।

সম্মেলনে স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডা. এফএমএ জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।

ডা. অর্ণা জামান আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

আর স্বাচিপ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার পদে সভাপতি ডা. মাহবুবুর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক পদে ডা. রাকিব সাদিক নির্বাচিত হয়েছেন।

রবিবার স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্বাচিপের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। 

উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। স্বাচিপ রাজশাহী জেলার সভাপতি অধ্যাপক ডা. চিন্ময় কান্তি দাসের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল হাসান মিলন, বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তফা আলম নান্নু, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক (সাগর)। 

সঞ্চালনা করেন স্বাচিপ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান।

এনায়েত করিম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাই করে এসআই হাতেনাতে ধরা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:৪৬ এএম
প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাই করে এসআই হাতেনাতে ধরা
স্বর্ণ ছিনতাইকারী এসআই আমিনুল ইসলাম (গোল চিহ্নিত)। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোর্সসহ পুলিশের এক এসআইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার এসআই আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রামের খুলশী থানায় কর্মরত রয়েছেন। আরেকজন হলেন সোর্স মো. জাহেদ। 

লোহাগড়া থানার আবদুল খালেকের ছেলে আবদুল মালেক তার ভাইকে নিয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। লোহাগড়া যাওয়ার পথে নগরের টাইগার পাস এলাকায় তাদের গাড়ি থামিয়ে চেক করেন এসআই আমিনুল ইসলাম। সেখান থেকে আবদুল মালেককে নিয়ে নগরের আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভার হয়ে চলে আসেন বহাদ্দারহাট এলাকার এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক কারখানার সামনে। আসার পথে মালেকের কাছে থাকা ৮টি স্বর্ণের চুড়ি নিয়ে নেন এসআই। কিন্তু বহাদ্দারহাট এলাকায় এসে ৩টি চুড়ি ফেরত দিয়ে বলেন চলে যাও। 

ষোলশহর ২নম্বর গেট এলাকায় আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ওপরে ওই ঘটনায় সময় ভুক্তভোগী প্রবাসী আবদুল মালেক খবরের কাগজকে বলেন, গত ১২ মে আমি সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছি। আজ (রবিবার) আমার ছোট ভাই এসেছে। আমার ভাইসহ আমি আসার পথে সিভিলে থাকা অবস্থায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে তল্লাশি করার কথা বলেন এসআই আমিনুল। আমাকে সিএনজি গাড়ি থেকে নামিয়ে অপর একটি সিএনজিতে তুলে নেন। নগরের টাইগার পাস এলাকা থেকে আমাকে বহদ্দারহাট নিয়ে আসেন। সেখানে আমাকে মারধরের হুমকি ও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। তখন আমি আমার কাছে স্বর্ণের বিষয়ে থাকা সব ডকুমেন্ট দেখাই। এরপর রাজস্ব পরিশোধের কাগজটি নিয়ে নেন। পরে আমাকে তিনটি স্বর্ণের চুড়ি ফেরত দিয়ে চলে যেতে বলেন। আমি বলেছি আমাকে থানায় নিয়ে যান, যেখানে খুশি সেখানে নিয়ে যান। আমি চলে যাব কেন? চলে গেলে আমার স্বর্ণ ফেরত দেন। কিন্তু আমাকে স্বর্ণ ফেরত না দিয়ে তারা ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে সিএনজি গাড়ি টান দেন। পরে আমি চিৎকার দেই চোর চোর বলে। এ সময় অপর একটি গাড়িতে করে আমি তাদের পিছু নেই। এ সময় আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজি যাত্রীরা মিলে তাদের ধরি। তারা পালাতে চেয়েছিল। সাধারণ মানুষ তাদের ধরেছে ফ্লাইওভারের ওপরে। এরপর পিবিআইয়ের একজন পুলিশ এসে আমাদের সহযোগিতা করেছেন। পরে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়। 

পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমান চাকমা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা ওই এসআইকে তার এক সোর্সসহ আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ওপর থেকে আটক করেছি। সে কাজটি ভালো করেনি। সিভিলে অভিযান চালানোর কোনো নিয়ম নেই। আর স্বর্ণ ছিনিয়ে নেওয়া বড় অন্যায় হয়েছে। ঘটনাস্থল যেহেতু খুলশী থানা এলাকায়, তাই দুজনকে খুলশী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. মোখলেসুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘পুলিশের এক এসআইসহ দুজন খুলশী থানায় আটক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। ভুক্তভোগী ওই প্রবাসী মামলা করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে খুলশী থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, এসআই আমিনুল ইসলাম ও তার সোর্সের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো : ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:৪২ এএম
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো : ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো বলে মন্তব্য করেছেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো। 

রবিবার (১৯ মে) সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে পিছিয়ে রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া খাদ্য সংরক্ষণ ও হালাল ফুড রপ্তানিতে বিশ্বে নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করেছে। উভয় দেশের ট্যুরিজম, ম্যানুফ্যাকচারিং, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার এবং রিনিউঅ্যাবল এনার্জি সেক্টরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। 

চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, পরিচালক এ কে এম আক্তার হোসেন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক শাহ, মাহবুবুল হক মিয়া, মোহাম্মদ মনির উদ্দিন ও আখতার উদ্দিন মাহমুদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের অ্যাটাচে রব্বি ফিরলি হারখা ও ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স সপ্তো রুদিয়ান্তো। 

সভাপতির বক্তব্যে ওমর হাজ্জাজ বলেন, খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। কিন্তু দেশের মোট খাদ্য উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ বা তিন বিলিয়ন ডলার সংরক্ষণ কিংবা প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার বিশ্বব্যাপী হালাল ফুড এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে সুনাম রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার। তাই দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিশাল বাজার ধরা ও রপ্তানিতে ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি করে বাংলাদেশ। যার মধ্যে পামওয়েল, কয়লা, সিমেন্ট ক্লিংকার, পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্টসহ কৃষিপণ্য আমদানি করে। বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া তৈরি পোশাক ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে। 

এএসআইয়ের ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
এএসআইয়ের ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল
এএসআই আলতাফ হোসেনে

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আসমানখালী পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলতাফ হোসেনের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বাদীপক্ষের কাছে টাকা দাবি ও বিবাদীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ে দর-কষাকষির অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর ফেঁসে যাচ্ছেন তিনি।

গত ১৩ মে এএসআই আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের আফরোজা খাতুন নামে এক নারী চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ সুপার অভিযোগটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদকে তদন্তের নির্দেশ দেন। 

বাদীপক্ষের অভিযোগ ও ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ। তিনি বলেন, ভাইরাল অডিও ক্লিপটিতে থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী নারী আফরোজা খাতুন বলেন, গত ৫ বছর যাবৎ আমার স্বামী আতিয়ার হোসেন অসুস্থ। কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। এ জন্য আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। গত ১০ মাস যাবৎ স্থানীয় একটি বেসরকারি এনজিওতে রান্নাবান্নার কাজ করছি। বাইরে কাজ করি বলে আমার দেবর আক্তার আলী ও মেজো ভাশুর হাশেম আলী আমার স্বামীর কাছে আমাকে নিয়ে কুমন্তব্য করতে থাকেন। আমার স্বামী তাদের কথা শুনে আমাকে অশালীন কথাবার্তা বলেন। 

এ ঘটনার জের ধরে গত ৯ মে আমার দেবর ও মেজো ভাশুর আমার বাড়িতে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়িতে আসেন। আমি ও আমার দুই নাবালক সন্তান আরেফিন রহমান (১৭) ও আল মেরাজকে (১২) নিয়ে ঘরের দরজা আটকে দিই। এ সময় তারা ঘরে প্রবেশ করতে না পেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে টিনের বেড়ায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যান।

এ ঘটনার পরদিন ১০ মে আমার বড় ছেলে আরেফিন বাড়িতে এসে তার বাবাকে বিষয়টি বোঝাচ্ছিল। সে জানতে চায় তার মায়ের সঙ্গে কেন এমন আচরণ করা হচ্ছে? ঠিক এ সময় আমার দেবর ও মেজো ভাশুর লোহার রড, লোহার পাইপ নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। আমাকেসহ আমার তিন সন্তানকে তারা বেধড়ক মারপিট করতে থাকেন। এতে আমার মেজো ছেলে ও বড় ছেলে জখম হয়। দুজনকে সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার দিন ১০ মে আমার স্বামী, দেবর ও মেজো ভাশুরের বিরুদ্ধে আসমানখালী ক্যাম্পে একটি অভিযোগ করি। ক্যাম্পের পুলিশ উভয় পক্ষকে ডেকে সুন্দরভাবে আপস-মীমাংসা করে দেন। এরপর আমি আমার সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিবাদীরা আমাদের ঢুকতে না দিয়ে বের করে দেন। পরে দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় খেয়ে না খেয়ে দুই দিন ঘুরেছি।
আফরোজা খাতুন আরও বলেন, গত ১৩ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসমানখালী ক্যাম্পের এএসআই আলতাফ হোসেন আমার বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে আমার বড় জা, তার পুত্রবধূ ও তার মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কে অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসমানখালী ক্যাম্পে দেখা করার জন্য বলেন। আমি অসহায় গরিব মানুষ। আমার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। সে কারণে সঠিক বিচারের আশায় বড় স্যারের (পুলিশ সুপার) নিকট অভিযোগ করেছি।

অডিও ক্লিপটিতে এএসআই আলতাফ হোসেন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কয়েকজনের উপস্থিতি বোঝা যায়। এএসআই আলতাফ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার একটা পাওয়ার আছে, সার্কেল স্যার আমার কাছের লোক। তাকে আমি বুঝ দিতে পারব। আমার ব্যাক কিন্তু সে। আমি যেভাবে বলব সেভাবে হবে।’ এমন কথা বলার পর ৫০ হাজার টাকা দাবি করতে শোনা যায় এএসআই আলতাফ হোসেনকে। এ নিয়ে দর-কষাকষি হতে থাকে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এএসআই আলতাফ হোসেন দাবি করেন যে, ঘটনাটি সত্য নয়। 

চট্টগ্রামে ৫১০০ পিস সেগুন কাঠ জব্দ

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১১:২৫ এএম
চট্টগ্রামে ৫১০০ পিস সেগুন কাঠ জব্দ
জব্দ করা সেগুন গাছের পিস। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে অভিযান চালিয়ে ৫১০০ পিস সেগুন গাছের কাঠ জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় বন বিভাগকে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) উপজেলার রংগীপাড়া এলাকায় রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। 

অভিযানে নেতৃত্ব দেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবি এম মশিউজ্জামান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহরাজ শারমিন। 

এ সময় চট্টগ্রাম জেলা এনএসআইয়ের প্রতিনিধি দল, বন বিভাগের কর্মকর্তা ও হাটহাজারী থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

এবি এম মশিউজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। আমরা ঘটনাস্থলে ৫১০০ পিস সেগুন গাছের কাঠ দেখতে পাই। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া কিছু গাছের মার্কিং নাম্বার থাকলেও, অধিকাংশ গাছে কোন মার্কিং নাম্বার নেই।  সরকারি ক্রয়াদেশের সঙ্গে অধিকাংশ গাছ মিক্সড (মিশ্রিত) হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সময় ঘটনাস্থলের আশেপাশে ডিপোর মালিক বা শ্রমিক কাউকে না পাওয়ায় বনবিভাগকে আনুমানিক ৫১০০ পিস গাছের টুকরা জব্দ করে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়।’

ইফতেখারুল/পপি/