বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৮১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১২০ কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষায় এগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলা হয়। শতকরা হিসাবে বরিশালে দুই উপজেলার ৬৬ শতাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৬৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৭টি এবং বাকেরগঞ্জের ১১৩ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৩টি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় নির্বাচনকে ঘিরে সংঘাত ঠেকাতে এই দুই উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলাকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে। এখানে ৬০০ পুলিশ সদস্য থাকার কথা থাকলেও রাখা হবে দ্বিগুণ। ভোটের দিন ৪০টি মোবাইল টিম কাজ করবে। প্রতিটি ইউনিয়নে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।’
বরিশাল পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার দ্বীপ অঞ্চলের ১৫টি কেন্দ্রকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এখানকার ১১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩টিই ‘গুরুত্বপূর্ণ’। নির্বাচনে কোনো সহিংসতা বরদাস্ত করা হবে না। সহিংসতামুক্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।
বরিশাল সদর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৫ হাজার ২১০ জন। এর মধ্যে তিনজন তৃতীয় লিঙ্গের ও ৯৫ হাজার ৯৭ জন নারী ও ১ লাখ ১১০ জন পুরুষ ভোটার রয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৭৪ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮৭ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন তিনজন। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে কয়েক ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পুলিশ। বিএমপি কমিশনার জিহাদুল কবির স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ ছাড়া আরেক বিজ্ঞপ্তিতে লাইন্সেধারী বৈধ অস্ত্র নিয়ে চলাচল ও প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। গণবিজ্ঞপ্তিতে ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস, ট্রাক, লঞ্চ এবং ইঞ্জিনচালিত বোট (নির্দিষ্ট রুটে চলাচল ব্যতীত) ও মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন ও অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত যানবাহন এবং ওষুধ, স্বাস্থ্য-চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ও সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী, প্রার্থীর নির্বাচনি এজেন্টদের রিটার্নিং কর্মকর্তা অনুমোদন ও গাড়িতে স্টিকার দেখানো সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।