চোরের হাত থেকে বাঁচাতে মোটরসাইকেলের জন্য নেওয়া হয় আলাদা সুরক্ষা ব্যবস্থা। কেউ ব্যবহার করে হাইড্রোলিক লক কেউবা ব্যবহার করে থাকেন জিপিএস ট্র্যাকারও। তবে এসবের বাইরে মোটরসাইকেলের চাকায় তালার পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে আসামির জন্য বরাদ্দ হ্যান্ডকাফ। এমনই এক ঘটনা জন্ম দিয়েছেন শরীয়তপুরের এক পুলিশ সদস্য। নিজের শখের মোটরসাইকেল রক্ষায় বেছে নিয়েছেন অভিনব এই পন্থা। ইতোমধ্যে এ ঘটনার বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেলটির মালিক পালং মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মাসুদ রানা। তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বর্তমানে ওই এলাকার চলাচলের একমাত্র সড়কটিতে সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এতে সড়কে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই ওই পুলিশ সদস্য বাসার অদূরে মোটরসাইকেলটি রেখে বাসায় যাতায়াত করেন। এদিকে চুরি হওয়ার আশঙ্কায় গাড়িটির চাকায় হ্যান্ডকাফ ব্যবহার করেন তিনি। তবে তার মোটরসাইকেলের পেছনে কোনো নম্বর প্লেট নেই। শুধু লেখা রয়েছে পুলিশ।
খান মুহাম্মদ শিহান নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মোটরসাইকেলের চাকায় হ্যান্ডকাফ লাগানো দুটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘হাতকড়া ঝুলছে মোটরসাইকেলের হাইড্রোলিক প্লেটে।’ আর সেই পোস্টে বেশ কয়েকজন মজার কমেন্টও করেছেন। কামরুজ্জামান পলাশ খান নামের এক ব্যক্তি সেখানে কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল গ্রেপ্তার।’ কাওসার মাহমুদ শান্ত নামের আরেক ব্যক্তি কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল যখন হত্যা মামলার আসামি।’
মোটরসাইকেলে হ্যান্ডকাফ লাগানোর বিষয়ে আইন কী বলে? জানতে চাইলে জেলা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট সহিদুল ইসলাম সজীব বলেন, ‘বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন, প্রবিধান ৩৩০-এ হাতকড়ার ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে, হাতকড়া সবসময় ব্যবহার উপযোগী রাখতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য পেশাগত কাজ ছাড়া ব্যক্তিগত কাজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন না।’
এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য মাসুদ রানা বলেন, ‘মাঝে মধ্যেই অনেক মোটরসাইকেলের তালা ভেঙে চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। আমার বাসার সামনে কাজ চলমান থাকায় মোটরসাইকেলটি বাসায় নিতে পারি না। তাই চুরি এড়াতে মোটরসাইকেলটি হাতকড়া দিয়ে তালা মেরে রাখি।’ বিষয়টি জানতে জেলা সুপার মো. মাহবুবুল আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’