মৌ চাষে স্বাবলম্বী ফেনীর শামীম । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

মৌ চাষে স্বাবলম্বী ফেনীর শামীম

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৪, ০২:৩০ পিএম
মৌ চাষে স্বাবলম্বী ফেনীর শামীম
মৌ বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করছেন মেজবাহ-উদ্দিন শামীম। ছবি : খবরের কাগজ

মাত্র ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে মৌ চাষ শুরু করেন মেজবাহ উদ্দিন শামীম। পাঁচ বছরের ব্যবধানে এখন তিনি স্বাবলম্বী। বাণিজ্যিকভাবে মৌ চাষ করে মৌসুমের ছয় মাসে অন্তত ৩০ লাখ টাকার মধু বিক্রি করেন তিনি। লাভজনক হওয়ায় জেলায় দিন দিন বাড়ছে মৌ চাষ। 

অনার্স শেষ করে শেয়ার ব্যবসায় লোকসানের মুখে পড়েন মেজবাহ উদ্দিন শামীম। হতাশ হয়ে ২০১৯ সালে কৃষি অফিসের সহায়তা নিয়ে মৌ চাষের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। চারটি মৌ বাক্স নিয়ে শুরু করেন মৌ চাষ। এখন তিনি ২০০ মৌ বক্সের মালিক। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তিনি মৌ বক্স বসিয়েছেন। প্রতি বক্স থেকে গড়ে ৫৭ কেজি মধু আহরণ করেন। প্রতি বক্স থেকে মাসে দুই থেকে তিনবার মধু আহরণ করা হয়। প্রতি কেজি মধু তিনি খুচরা বিক্রি করেন ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

মেজবাহ উদ্দিন শামীম বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চারটি ডিজিটাল মৌ বক্স দিয়েছিল। সেখান থেকে আমার মৌ চাষের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে আমার খামারে ২০০ মৌ বক্স রয়েছে। প্রতি বক্স থেকে সপ্তাহে ৫ থেকে ৭ কেজি করে মধু আহরণ করছি। আমার এই মৌ চাষ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বিভিন্ন উপজেলার উদ্যোক্তারা এসে মৌ বক্স ও মৌমাছি নিয়ে যাচ্ছেন।’ 

মধু কিনতে আসা সোলায়মান বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বাজারে ভেজাল মধুতে সয়লাব। খাঁটি ও প্রকৃত মধু চেনার জন্য কোনো উপায় নেই। কীভাবে মধু আহরণ করেন সেটি দেখতে এসেছি এবং আহরণ শেষে তিন কেজি মধু কিনেছি। এতে করে আমি দুই দিক থেকে লাভবান হলাম। প্রথমত খাটি মধু কিনতে পারলাম, দ্বিতীয়ত কীভাবে মধু আহরণ করে তা দেখতে পেলাম।’

অপর ক্রেতা আবদুল কাদের বলেন, ‘আমি অনেকের কাছে শুনেছি এখানে খাঁটি মধু পাওয়া যায়। স্বচক্ষে দেখার জন্য এসেছি কীভাবে মধু সংগ্রহ করে। আমি আমার পরিবারের জন্য এক কেজি মধু কিনেছি।’

মধু কিনতে আসা আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমি নিজে একটি মৌ খামার গড়ে তোলার চেষ্টা করব। আমার বাড়ির আশপাশে সরিষা চাষ হয়। আমি শামীম ভাইয়ের কাছ থেকে দুটি মৌ বক্স কিনে আমার বাড়ির পাশে প্রাথমিকভাবে শুরু করব।’ 

ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, ‘ চার বছর আগে শামীমকে কৃষি অফিস থেকে চারটি মৌ বক্স দিয়ে তাকে সহায়তা করা হয়। বর্তমানে তার খামারে ২০০টির বেশি মৌ বক্স রয়েছে। তাকে দেখে আরও অনেকেই মৌ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। জেলা কৃষি অফিস থেকে সরকারি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’ 

ঋণের সুদহারের করিডর প্রথা প্রত্যাহার

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
ঋণের সুদহারের করিডর প্রথা প্রত্যাহার
বাংলাদেশ ব্যাংক। ছবি : সংগৃহীত

ঋণের সুদহারের করিডর প্রথা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে ব্যাংকগুলো নিজেরাই স্বতন্ত্রভাবে সুদহার নির্ধারণ করবে এবং তা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।

বুধবার (৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সম্পর্কিত সিদ্ধান্তের কথা ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে।

গত জুলাইয়ে ছয় মাসের ট্রেজারি বিলের গড় হার অর্থাৎ সিক্স মান্থ মুভিং অ্যাভারেজ রেটস অব ট্রেজারি বিল অ্যান্ড বন্ডস বা স্মার্ট রেট করিডর প্রথা চালু করে। এর আওতায় প্রতি মাসেই বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্মার্ট রেট ঘোষণা করে আসছিল। সর্বশেষ গত মাসে এ স্মার্ট রেট করিডর অনুযায়ী ঋণের সুদহার দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ঋণের এ উচ্চ সুদহারের সমালোচনা করে ব্যবসায়ীরা তা কমানোর দাবি করে আসছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে কাজ চলছে। এ লক্ষ্য সামনে রেখে বাজারে টাকার সরবরাহ কমাতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই সুদহারে আপাতত ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়। এটিকে কন্ট্রাকশনারি বা সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বলা হচ্ছে।

নীতি সুদহার বাড়ল

বুধবারই নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি ৫০ পয়েন্ট বেসিস বাড়িয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছে এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি ৭ শতাংশ থেকে ৫০ পয়েন্ট বেসিস বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলোকে তহবিল সংগ্রহে বাংলাদেশ ব্যাংককে বেশি সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ তহবিল সংগ্রহে ব্যাংকের ব্যয় বাড়বে।

ডলারের বিনিময় হার ১১৭ টাকা

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম
ডলারের বিনিময় হার ১১৭ টাকা
ডলার। ছবি : সংগৃহীত

ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে অবশেষে ক্রলিং পেগ মিড রেট (সিপিএমআর) ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সিপিএমআর-এ এক ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা থেকে এক লাফে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা হয়েছে।

বুধবার (৮ মে) মনিটারি পলিসি কমিটির সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নেয়। পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে ডলারের নতুন হার মেনে চলতে ব্যাংকগুলোকে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয় করা হলো।

বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহে ঘাটতি ও বিনিময় হারে অস্থিরতা কাটাতে গত বছর জুলাই থেকেই দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা বিনিময় হার বাজারমুখী করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে তাগিদ দিচ্ছিলেন। তাদের যুক্তি ছিল, ডলারের বিনিময় হার কম রয়েছে, যা বাজার দরের বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিহীন। এর ফলে রেমিট্যান্স বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে না এসে হুন্ডিতে চলে যেতে থাকে।

ডলার সরবরাহে ঘাটতির শুরু ২০২৩-এর মার্চ মাসের প্রথম দিকে। তখন এক ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ১০৪ টাকা। এ সময় হঠাৎ করেই প্রতি ডলারের দর ৩ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকায় লেনদেন হয়। পরে মার্চের ৭ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে বিনিময় হার ১০৫ টাকায় উঠে আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকের বাইরে নগদ ডলারের দাম গত বছর ১১০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো তখন দর আরও বাড়ার কথা জানায়। এ আশায় অনেকে ব্যক্তি পর্যায়ে ডলার সঞ্চয় করে ধরে রাখেন। শুরু হয় ডলারের দরে এক ধরনের অস্থিরতা। এ কারণে গত নভেম্বরে খোলা বাজারে ডলারের দর ১২৭ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এই দর চলে ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে। এ বছর মার্চে এসে নগদ ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১১৯ টাকা। যা ব্যাংকে পাওয়া গেছে ১১৬ টাকা বা আরও কম দরে। এমন অস্থিরতায় কমেছে ব্যক্তি পর্যায়ে বিদেশ ভ্রমণ, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও চিকিৎসার প্রয়োজনে কিনতে আসা ডলারের দর।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখনই ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ বা দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়ের এই পদ্ধতিটি ব্যবহারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এক দিনে টাকার সর্বোচ্চ অবমূল্যায়ন এর আগে ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এক দিনে বেড়ে ১১৭ টাকা মূলত ডলারের বিপরীতে টাকার একটি মধ্যবর্তী হার। ব্যাংকগুলো এর চেয়ে কম বা বেশি দাম নিতে পারবে, তবে সেটি খুব বেশি পার্থক্য করা যাবে না। ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন ডলার কেনাবেচার দামের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।

পুঁজিবাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১১০০ কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
পুঁজিবাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১১০০ কোটি টাকা

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মঙ্গলবার সূচক কমলেও বেড়েছে লেনদেন। এ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রায় আড়াই মাস পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন বেড়েছে। তবে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে।

টানা চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার দেশের পুঁজিবাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ১১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির পর বা প্রায় আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

গতকাল দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে প্রায় সবকটি ব্যাংক। এ দিন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৬টি বা ৭৯ শতাংশ ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে।

ফলে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও সূচকের বড় পতন হয়নি।

গতকাল ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ খাতের কোম্পানির শেয়ার। এ দিন ডিএসইর মোট লেনদেনের ২১ দশমিক ২৫ শতাংশই ছিল এ খাতের।

অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও বেড়েছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন দেশের পুঁজিবাজার নেতিবাচক অবস্থায় ছিল। এ অবস্থায় যেসব বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন তারা সক্রিয় হচ্ছেন। যার প্রভাবে বাজারে লেনদেন বেড়েছে।’

এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসও ঊর্ধ্বমুখী থাকে পুঁজিবাজার।

গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। একই সঙ্গে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

তবে লেনদেনের শেষ দিকে মুনাফা তুলে নিতে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে দাম কমার তালিকায় চলে আসে দেড়শোর বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচক ঋণাত্মক হয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭২৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দাম বাড়ার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও সূচক সামান্য কমার কারণে প্রায় সবকটি ব্যাংক দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৬টির বা ৭৯ শতাংশ ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে।

এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১০৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের ৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গোল্ডেন সন।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, ওরিয়ন ইনফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মালেক স্পিনিং এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এ দিন দরবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড।

এ দিন গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। তাতে দরবৃদ্ধির শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।

দরবৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা জিকিউ বলপেনের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়েছে। আর শেয়ারদর ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ বাড়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা আইসিবি।

গতকাল দরবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো- ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, সাইফ পাওয়ার, রহিম টেক্সটাইল, প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ড, বেস্ট হোল্ডিংস, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড এবং এনআরবিসি ব্যাংক।

এ দিন দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

গতকাল এল আর সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ৮০ পয়সা বা ৩ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।

দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে ফার্মা এইডস লিমিটেড।

এ দিন দরপতনের তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো- নাভানা ফার্মা, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, সাফকো স্পিনিং, সেন্ট্রাল ফার্মা, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস, বিডি থাই এবং এমারেল্ড অয়েল লিমিটেড।

অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

চীন-যুক্তরাষ্ট্রে বৈদ্যুতিক গাড়ি বাড়ার প্রভাব বিশ্বে পেট্রলের চাহিদা অর্ধেকে নামবে

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৪১ পিএম
বিশ্বে পেট্রলের চাহিদা অর্ধেকে নামবে
ছবি: সংগৃহীত

বছরের দ্বিতীয়ার্ধে রিফাইনারি মার্জিন (পরিশোধনাগারের লাভ) কমে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী গ্যাসোলিন বা পেট্রলের চাহিদা বৃদ্ধি ২০২৪ সালে অর্ধেকে নামতে পারে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়িতে (ইভি) স্থানান্তর এবং কোভিড-১৯-এর পর গত বছর থেকে জ্বালানির ব্যবহার স্বাভাবিক হওয়ায়, চলতি বছর পেট্রলের চাহিদা কমবে। খবর বিবিসির।

প্রসঙ্গত, রিফাইনারি মার্জিন হলো পরিশোধনাগারের লাভ নির্ণয়ের একটি মাপকাঠি। এটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কাঁচামাল (অপরিশোধিত তেল) থেকে পরিশোধিত পণ্য (যেমন- গ্যাসোলিন, ডিজেল, জেট ফুয়েল) উৎপাদনের মাধ্যমে পরিশোধনকারী কোম্পানি কতটা লাভ করেছে সেটিকে বোঝায়।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান উডম্যাকেনজি (উডম্যাক) জানিয়েছে, ২০২০ সালের পর সর্বনিম্ন গতিতে এগিয়ে যাওয়া জ্বালানির চাহিদা চলতি বছর দৈনিক ৩ লাখ ৪০ ব্যারেল (বিপিডি) বৃদ্ধি পেয়ে ২ কোটি ৬৫ লাখ বিপিডি হবে। এটি গত বছরের ৭ লাখ বিপিডি চাহিদা বৃদ্ধির থেকেও কম। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, চীনে পরিবহন জ্বালানির চাহিদা সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানোর কাছাকাছি অবস্থান করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই তাদের সর্বোচ্চ স্তর অতিক্রম করেছে। এ কারণে জ্বালানি চাহিদা বৃদ্ধির হার কমেছে।

উডম্যাকের বিশ্লেষক সুশান্ত গুপ্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে ইলেকট্রিক যানবাহনের যুগে প্রবেশের মাত্রা বাড়ছে। তিনি বলেন, ইভি গ্রহণে প্রচণ্ড ঝোঁকের কারণে চলতি বছর চীনে জ্বালানির চাহিদা বাড়বে মাত্র ১০ হাজার বিপিডি।

পরামর্শক সংস্থা রিস্ট্যাড এনার্জির বিশ্লেষক মুকেশ সহদেব বলেছেন, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী গ্যাসোলিনের চাহিদা ২ কোটি ৬০ লাখ বিপিডি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ লাখ বিপিডি বৃদ্ধির তুলনায় এবার প্রায় ৩ লাখ বিপিডি বৃদ্ধি পাবে। এর আগে মহামারির পর ভোক্তা ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে ২০২৩ সালে গ্যাসোলিনের চাহিদা এই হারে বৃদ্ধি পায়।

আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) বলেছে, একসময় বিশ্বের পেট্রলের চাহিদা পরিবর্তনের বড় পরিচালক ছিল চীন। তবে চলতি বছরে বিশ্বে মোট ইভি বিক্রির অর্ধেকেরও বেশিতে দেশটি অবদান রাখবে বলা ধারণা করা হচ্ছে।

চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (সিএনপিসি) একটি গবেষণা শাখার পূর্বাভাস বলছে, বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি পণ্যের আমদানিকারক চীনের গ্যাসোলিনের ব্যবহার এই বছর প্রায় ১ দশমিক ৩০ শতাংশ বা প্রায় ২০ লাখ টন বৃদ্ধি পেয়ে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টন (৩৮ লাখ বিপিডি) দাঁড়াবে।

চীনের সবচেয়ে বড় পরিশোধনাগার সিনোপেকের একটি গবেষণা সংস্থার প্রত্যাশা হলো, এই বছর পেট্রলের চাহিদা ১ দশমিক ৭০ শতাংশ বা প্রায় ৩০ লাখ টন বেড়ে ১ কোটি ৮২ লাখ টন হবে।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) অনুমান অনুসারে, দাম কমে যাওয়ায় পাশাপাশি চাহিদা বাড়ায়, চলতি বছর চীনে বৈদ্যুতিক গাড়ির শেয়ার ৪৫ শতাংশ, ইউরোপে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১১ শতাংশের বেশি হতে পারে।

তুলনামূলকভাবে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধি এবং কম ইভি তৈরি, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় পেট্রলের চাহিদাকে চালিত করছে।

সরকারি একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ মাস থেকে ভারতে পেট্রলের ব্যবহার ৩ কোটি ৯২ লাখ টনের (৯ লাখ ৮ হাজার বিপিডি) নতুন রেকর্ডে পৌঁছাবে, যা ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যবহার হওয়া ৩ কোটি ৭২ লাখ টন থেকে প্রায় ৫ শতাংশ বেশি।

ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের দৈনিক পেট্রলের ব্যবহার সর্বোচ্চ ৩৯ কোটি ২০ লাখ গ্যালনে পৌঁছানোর পর, ২০২৩ সালে মার্কিন পেট্টলের ব্যবহার দৈনিক ৩৭ কোটি ৬০ লাখ গ্যালনে (৮৯ লাখ ৪০ হাজার বিপিডি) নেমে এসেছে। তবে ২০২৪ সালে চাহিদা হ্রাস বা বৃদ্ধি হবে না বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।

উডম্যাক ও রাইস্ট্যাডের বিশ্লেষকরা বলেছেন, এর ফলে গ্রীষ্মের শীর্ষ যানবাহন চালানোর মৌসুমের পর মার্কিন রিফাইনিং মার্জিন চাপের মধ্যে পড়বে।

জ্বালানি পরামর্শক সংস্থা এফজিই জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ইউরোপে পেট্রলের চাহিদা ৫০ হাজার বিপিডি বা ২ দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়ে মোট ২১ লাখ ৯০ হাজার বিপিডি হবে। এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিলেটে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ২৫৮ টন

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম
সিলেটে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ২৫৮ টন
ভিডিও কনফারেন্সে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্ধোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটে এবার সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ মে) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান-চাল ও গম সংগ্রহের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এবার প্রতি কেজি ধানের মূল্য ৩২ টাকা, চাল ৪৫ টাকা ও আতপ চালের মূল্য ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান-চাল কেনার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৭ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত মিলারদের সঙ্গে চুক্তির সময়সীমা নির্ধারিত করা হয়েছে।

সিলেট ছাড়া হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জেও ধান-চাল সংগ্রহের অভিযানের উদ্বোধন করা হয়েছে। সিলেট ব্যুরো, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

সিলেট:
সিলেটে এবার ২৪ হাজার ২৫৮ টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ধান ৯ হাজার ৫৬৬ টন, সেদ্ধ চাল ৯ হাজার ৮৭৩ টন এবং আতপ চাল ৪ হাজার ৮১৯ টন কেনা হবে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া মোস্তফা, সিলেট সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের অতিরিক্ত উপপরিচালক (পিপি) মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান ও সিলেট সদর, খাদিমনগর খাদ্য গোদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রযুক্তির সুবিধায় অ্যাপের মাধ্যমে কিছু উপজেলায় ধান-চাল কেনা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। এ ব্যাপারে বলা হয়, সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ ও কানাইঘাটসহ মোট ৬টি উপজেলায় ধান সংগ্রহ করা হবে। ইতোমধ্যে কৃষক নিবন্ধন শুরু করা হয়েছে। নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর লটারির মাধ্যমে বিক্রেতা কৃষক নির্বাচন করা হবে। অ্যাপের মাধ্যমে সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজার ও কানাইঘাটসহ মোট ৪টি উপজেলায় চাল সংগ্রহ করা হবে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর সূত্র জানায়, অ্যাপের আওতার বাইরের উপজেলাগুলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হবে। উপজেলা সংগ্রহ কমিটি অনুমোদিত কৃষক তালিকা থেকে লটারির মাধ্যমে বিক্রেতা কৃষক নির্বাচন করা হবে। প্রত্যেক কৃষক সর্বোচ্চ ৩ হাজার টন, সর্বনিম্ন ১২০ কেজি ধান গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। সিলেটে লাইসেন্স করা ১৪টি সেদ্ধ, ৬৩টি আতপ চালকল রয়েছে।

সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জে দুই কৃষকের কাছ থেকে ৬ টন ধান কিনে ধান-চাল সংগ্রহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক।

সুনামগঞ্জ খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছর সুনামগঞ্জ থেকে সরকারিভাবে ২৯ হাজার ৮১১ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মিলাদের কাছ থেকে ৯ হাজার ৬৮৪ টন সেদ্ধ চাল ও ৯ হাজার ৯৫৪ টন আতপ চাল সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। তবে ২০২৩ সালে এই জেলার কৃষকদের কাছ থেকে ১৭ হাজার ৪৮৩ টন ধান কেনার কথা থাকলেও সরকার ১৫ হাজার ৫৫৪ টন ধান কিনেছিল। সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভুঞা জানান, চলতি মৌসুমে ধানের দাম বাড়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।

হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জ থেকে এবার ১৪ হাজার ৭৬০ টন ধান, ৪ হাজার ১৬৬ টন আতপ চাল এবং ১৪ হাজার ৯৬৬ টন সেদ্ধচাল কেনার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে, কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, পুরো জেলায় সার্বিকভাবে ৮০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। হাওরের প্রায় ৯৯ শতাংশ জমির ধান কাটা ও মাড়াই শেষ হয়েছে।

কৃষকরা বলছেন, জেলায় সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয় হাওরে। সেই ক্ষেত্রে হাওরের ধান কাটা-মাড়াই শেষে কৃষক কম দামে পাইকার ও ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি ধান বছরের খোরাকির জন্য গোলায় তুলেছেন। এরপর ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ায় হাওরের কৃষকরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবেন। একই সঙ্গে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বাড়বে।

বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা এলাকার কৃষক সুমন মিয়া বলেন, ‘সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ২৮০ টাকা মণ। আর আমরা পাইকারের কাছে বিক্রি করছি ৭৭০ টাকা মণ। অনেক অপেক্ষা করছি, কখন সরকার ধান কিনবে। আমরা ঋণ পরিশোধ করতে ধান কেটে বিক্রি করে ফেলেছি। এখন সরকার ধান কিনলেও আমাদের কোনো লাভ নেই।’

একই এলাকার কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘সরকার ধান কিনতে দেরি করেছে। তার ওপর আবার মাত্র ১ হাজার ২৮০ টাকা দরে ধান কিনছে। সরকারকে ধান দিতে হলে ট্রাক ভরে খাদ্য গোদামে নিয়ে যেতে হয়। যে কয়টা টাকা লাভ হওয়ার কথা, সেটি গাড়ি ভাড়া আর শ্রমিকের মজুরিতেই চলে যাবে। এরপর দেখা যাবে খাদ্য কর্মকর্তা বলতেছেন, ধান পরিষ্কার না, ভালোভাবে শুকানো হয়নি। নানা অজুহাত।’

এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা চাই থোয়াই প্রু মার্মা বলেন, ‘অন্য বছর কৃষকরা যে অভিযোগ করেন এবার তা পারবেন না। কারণ অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে ধান বিক্রি করতে হবে। এ ছাড়া ধান বিক্রির টাকা কৃষক তার নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাবেন।’

চলতি বছর জেলার ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ টন।