নওগাঁয় আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে চলতি বছরের শুরুতেই শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে।
নওগাঁর আত্রাই, রাণীনগর, মান্দার পূর্বাঞ্চল ও সদর উপজেলার দক্ষিণে বিল বাঁওড়গুলোতে বছরে একবার ধান চাষ হয়। এসব এলাকার চাষিরা কালবৈশাখী ও বৃষ্টির শঙ্কায় দ্রুত ফলন ঘরে তুলতে চান। কিন্তু শ্রমিকসংকটে কাটা মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি এলাকার চাষি মনির উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রতি বছরই ধান পাকার সময় কালবৈশাখীতে শিলাবৃষ্টি ও বৃষ্টির কারণে ফলন নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকে। এবারও সেই দুশ্চিন্তায় আছি। ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে ধান দ্রুত ঘরে তুলতে পারছি না। ধান মাড়াই করতে মেশিন ব্যবহার করছি। কিন্তু শ্রমিকসংকটের কারণে ধান কাটতে বেশি খরচ হচ্ছে। শুধু ধান কাটতেই বিঘায় ২ হাজার ৫০০ টাকা লাগছে। এতে প্রতি বিঘায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত লাগছে।
শিকারপুর গ্রামের চাষি আবদুল কাদের জানান, বিলের জমিতে গত বছরের মতো এবারও তিনি প্রায় ৭ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ধান কাটা মাড়াই শুরু করতে পারেননি। গাইবান্ধা থেকে প্রতি বছর শ্রমিক এসে ধান কাটাসহ মাড়াইয়ের কাজ করে দেন। কিন্তু এ বছর সেই শ্রমিকরা না আসায় বেকায়দায় পরেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত কয়েক দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা ও রংপুর থেকে কিছু শ্রমিক এসেছেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা অনেক কম। ধানকাটা মেশিনের মাধ্যমে ফলন ঘরে তুললে খড় নষ্ট হয়। তাই মেশিনের ব্যবহার করতে চান না কৃষকরা।
এ প্রসঙ্গে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নওগাঁয় চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে বিলের জমিতে পাকা ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে পুরোদমে ফলন উঠবে আরও সপ্তাহ দুয়েক পর। বিলের জমিতে মেশিনে ধান কাটতে চান না কৃষকরা। তাই শ্রমিকের ওপর নির্ভর করতে হয়। তারপরও আবহাওয়া ভালো আছে শ্রমিকরাও আসতে শুরু করেছেন। সুতরাং কোনো সমস্যা হবে না। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় চাষিদের একাধিক হার্ভেস্টার মেশিন দেওয়া আছে। ধান কাটা পুরোদমে শুরু হলে সেগুলো ব্যবহার করে ফলন ঘরে তুলবেন কৃষকরা।