প্রবন্ধ: স্মরণীয় যারা চিরদিন
বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন: কোন শহিদ বুদ্ধিজীবী প্রথম পাকিস্তানি গণপরিষদে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান?
উত্তর: পাকিস্তানি গণপরিষদে প্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবি জানান প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। বাংলাদেশ ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের একটি অংশ ছিল। আর তখন একটাই গণপরিষদ ছিল। সেটি হলো পাকিস্তান গণপরিষদ। যেহেতু বাংলাদেশের সব মানুষের ভাষা ছিল ‘বাংলা’, তাই তিনি ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান গণপরিষদে দাবি জানান যে, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হোক। মূলত বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার সেটাই ছিল প্রথম দাবি।
প্রশ্ন: রণদাপ্রসাদ সাহাকে কেন দানবীর বলা হয়?
উত্তর: দানশীলতার জন্য রণদাপ্রসাদ সাহাকে দানবীর বলা হয়। এ দেশের সাধারণ মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণ সাধনের জন্য তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন।
প্রশ্ন: দুজন শহিদ সাংবাদিকের নাম বলো ও তারা কোথায় কীভাবে শহিদ হন সে সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ শহিদ হওয়া দুজন সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন শহিদ সাবের এবং মেহেরুন্নেসা।
শহিদ সাবের ছিলেন মেধাবী লেখক ও সাংবাদিক। ২৫ মার্চের ভয়াল রাতে পাকিস্তানি সেনারা আগুন দেয় দেশের অন্যতম সংবাদপত্র ‘দৈনিক সংবাদ’-এর অফিসে। সেখানে ঘুমিয়ে ছিলেন শহিদ সাবের। আগুনে পুড়ে শহিদ হন তিনি। আর সাংবাদিক মেহেরুন্নেসাকেও অল্প বয়সেই প্রাণ দিতে হয় হানাদারদের নির্যাতনে।
প্রশ্ন: আমরা কীভাবে শহিদদের ঋণ শোধ করতে পারি?
উত্তর: বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য অসংখ্য মানুষ প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তাদের সবারই একটা আদর্শ ছিল। দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তারা দেশকে ভালোবেসে প্রাণ দান করেছিলেন। দেশ ও মাতৃভাষার জন্য তারা ত্যাগের মহান আদর্শ স্থাপন করে গেছেন। আমরা তাদের আদর্শ অনুসারে নিজেদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলব। তবেই আমাদের পক্ষে তাদের ঋণ শোধ করা সম্ভব হবে।
প্রশ্ন: কোন দিনটিকে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়? কেন?
উত্তর: ১৪ ডিসেম্বরকে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে পরাজয় অবধারিত বুঝতে পেরে এ দেশকে গভীরভাবে ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয় পাকিস্তানিরা। এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে অপূরণীয় ক্ষতি করার পরিকল্পনা করে তারা। ১৪ ডিসেম্বর রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বাহিনীর সহায়তায় নানা পেশার অনেক যশস্বী ব্যক্তিদের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। সেই শহিদদের স্মরণ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি।
প্রশ্ন: কোন সময়কে মুক্তিযুদ্ধের কাল বলা হয়?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের কাল। এ ৯ মাস যুদ্ধ করার পর আমরা জয়ী হই, অর্জন করি আমাদের স্বাধীনতা।
প্রশ্ন: ফাঁকা ঘরে সঠিক শব্দ বসিয়ে বাক্য তৈরি করো।
ঘুমন্ত, জাগ্রত, স্বাধীন, পরাধীন, সাধু, অসাধু, লোভী, নির্লোভ, সরল, গরল
ক. ... অবস্থায় সংবাদ অফিসে শহিদ হন শহিদ সাবের।
খ. দেশ ... হওয়ার পরে অনেক বুদ্ধিজীবীর লাশ পাওয়া যায়।
গ. এ দেশের কৃষক ... জীবনযাপন করেন।
ঘ. বাংলাদেশে অনেক ... সন্ন্যাসী বাস করেন।
ঙ. আলবদর বাহিনীর লোকেরা ছিল অসাধু ও ...।
উত্তর: ক. ঘুমন্ত অবস্থায় সংবাদ অফিসে শহিদ হন শহিদ সাবের।
খ. দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে অনেক বুদ্ধিজীবীর লাশ পাওয়া যায়।
গ. এ দেশের কৃষক সরল জীবনযাপন করেন।
ঘ. বাংলাদেশে অনেক সাধু সন্ন্যাসী বাস করেন।
ঙ. আলবদর বাহিনীর লোকেরা ছিল অসাধু ও লোভী।
প্রশ্ন: নিচের অনুচ্ছেদটিতে বিরাম চিহ্ন বসিয়ে লিখ।
সশস্ত্র যুদ্ধে আমাদের মুক্তিসেনারা প্রাণ দেন আর দেশের ভেতর অবরুদ্ধ জীবনযাপন করতে করতে প্রাণ দেন এ দেশের লাখ লাখ মানুষ তারা ছিলেন নানা পেশার- কেউ কৃষক কেউ মজুর কেউ পুলিশ কেউ সৈনিক আরও ছিলেন ছাত্র শিক্ষক সাংবাদিক সরকারি কর্মকর্তা লাখ লাখ নারী পুরুষ শিশুর রক্তে ভেজা আমাদের স্বাধীনতা
উত্তর: সশস্ত্র যুদ্ধে আমাদের মুক্তিসেনারা প্রাণ দেন। আর দেশের ভেতরে অবরুদ্ধ জীবনযাপন করতে করতে প্রাণ দেন এ দেশের লাখ লাখ মানুষ। তারা ছিলেন নানা পেশার- কেউ কৃষক, কেউ মজুর, কেউ পুলিশ, কেউ সৈনিক। আরও ছিলেন ছাত্র শিক্ষক, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা। লাখ লাখ নারী-পুরুষ-শিশুর রক্তে ভেজা আমাদের স্বাধীনতা।
লেখক: সহকারী শিক্ষক
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ
বসুন্ধরা শাখা, ঢাকা
জাহ্নবী