![জি-সিরিজের বিরুদ্ধে দুদকে শিরোনামহীনের অভিযোগ](uploads/2024/05/29/REWQH-1716973964.jpg)
সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি-সিরিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছে গানের দল শিরোনামহীন। লিখিত ওই অভিযোগ থেকে জানা গেছে, দলটির বেশ কিছু গান বিদেশি কোম্পানির কাছে অবৈধভাবে বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি আয়ের বিপরীতে সরকারকে দিচ্ছে না ভ্যাট-ট্যাক্স। এ কারণে বঞ্চিত হচ্ছে শিরোনামহীনও।
জানা গেছে, কপিরাইট অফিস থেকে সনদ পাওয়ার পরও শিরোনামহীন ব্যান্ডের বেশ কিছু গান বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রচার করছে জি-সিরিজ। এমনকি ওই গানগুলো রাখায় শিরোনামহীনের ইউটিউব চ্যানেলকে ‘স্ট্রাইক’ দিচ্ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদকের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যান্ডটির দলনেতা জিয়াউর রহমান।
দুদককে দেওয়া অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, “জি-সিরিজ নামে মিউজিক লেবেল প্রতিষ্ঠান ‘শিরোনামহীন’ ব্যান্ডের নিজস্ব ও কপিরাইটকৃত— বন্ধ জানালা, হাসিমুখ, জাহাজি, পাখি, ইচ্ছে ঘুড়ি, ভালোবাসা মেঘ ও ক্যাফেটেরিয়া গানগুলো বিদেশি কিছু কোম্পানির কাছে বিক্রি করে অবৈধভাবে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। যেসব অর্থের বিপরীতে সরকারকে কোনো ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদান করছে না। জি-সিরিজের এ রকম বেআইনি ও দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে গানগুলোর প্রকৃত স্রষ্টা ও মালিক ‘শিরোনামহীন’ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
অভিযোগ প্রসঙ্গে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আইন অনুযায়ী যেকোনো শিল্পের কপিরাইট থাকে এর ক্রিয়েটরের। সে হিসেবে গানগুলোর কপিরাইট সনদ আমরা অনেক আগেই পেয়েছি।
জি-সিরিজ থেকে আমাদের অ্যালবামগুলো চুক্তি অনুযায়ী ডিস্ট্রিবিউশন হয়েছিল। আইন অনুযায়ী সেটার একটা সময়সীমা রয়েছে। এ কারণে কপিরাইট অফিস জি-সিরিজের স্বত্ব বাতিল করে আমাদের ব্যান্ডের নামে গানগুলোর স্বত্ব দিয়েছিল। জি-সিরিজ আপিলও করেছিল। তবে চূড়ান্ত রায় আসে আমাদের পক্ষে। কিন্তু যখনই আমরা ওই অ্যালবামগুলো ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করার চেষ্টা করি, জি-সিরিজের স্ট্রাইকের শিকার হয়েছি। তারা স্ট্রাইক দিচ্ছে, নোটিশ দিচ্ছে, গ্লোবালি ব্লক করে রাখছে।’
২০১৯ সালে একই বিষয় নিয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছিল জি-সিরিজ। আদালত তাদের কাছে গানগুলো চালানোর প্রমাণ চাইলেও তারা সেটা দিতে পারেনি। জিয়াউর রহমান বলেন, ‘তারা দিনের পর দিন সময় নষ্ট করছে। এই কালক্ষেপণের উদ্দেশ্য হলো, মুনাফা অর্জন। তারা কখনো সুবিচার চায়নি। কারণ বিচার তাদের পক্ষে যাবে না।’ এই ইস্যুতে কপিরাইট অফিসের কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেই। এ কারণে জি-সিরিজ এ রকম অনিয়মের সুযোগ পাচ্ছে। তাই এবার দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছে শিরোনামহীন।
অভিযোগের পর গত ২৬ মে কপিরাইট অফিস থেকে জি-সিরিজের স্বত্বাধিকারী নাজমুল ভূঁইয়ার কাছে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী ২ জুনের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে একটি লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে জি-সিরিজের কেউ ফোন ধরেননি।
২০০৪ সালে প্রকাশিত হয় শিরোনামহীনের প্রথম অ্যালবাম ‘জাহাজী’। সেই থেকেই জনপ্রিয় এই ব্যান্ড। পরে ২০০৬ সালে ‘ইচ্ছে ঘুড়ি’ এবং ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় ‘বন্ধ জানালা’ অ্যালবামগুলো। শিগগিরই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে দলের অষ্টম অ্যালবাম ‘বাতিঘর’। এরই মধ্যে অ্যালবামের ‘জানে না কেউ’ শিরোনামে একটি গান প্রকাশিত হয়েছে।
কলি