![বরফশূন্য হতে পারে আর্কটিক](uploads/2024/03/29/1711693865.a.jpg)
আগামী এক দশকের মধ্যে আর্কটিক মহাসাগর বা উত্তর মেরু বরফশূন্য হয়ে যেতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছেন। এর অবস্থান পৃথিবীর একদম উত্তর প্রান্তে। আর এই অবস্থানের জন্য এটি সুমেরু অঞ্চল নামেও পরিচিতি। আর এই মহাসাগর সব সময় বরফের চাদরে মোড়া থাকে। তবে আগামী ১০ বছর পর সেই বরফ আর দেখা যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সমীক্ষায় এমনটাই দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। আর এই তথ্য ঘুম কাড়ছে আবহাওয়াবিদ ও বিজ্ঞানীদের। উত্তর মেরু বা আর্কটিক অঞ্চলে আগামী কয়েক বছরে কার্যত কোনো সামুদ্রিক বরফ গ্রীষ্মের সময় দেখা যাবে না। এমনকি এখানকার বরফ গলে গেলে সারা বিশ্বের আবহাওয়া ও সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর প্রভাব ফেলবে।
ন্যাচার রিভিউস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন ভবিষদ্বাণী করা হয়েছে। আর্কটিক বরফশূন্য হওয়ার আগের অনুমানের চেয়ে ১০ বছর আগে এটি হতে পারে। সেই সময় অঞ্চলটি এক মাস বা তারও বেশি সময়ে বরফ থাকবে না। পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বাড়ার কারণে এমনটা হবে।
এই শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ সম্ভবত সেপ্টেম্বরে অর্থাৎ গ্রীষ্মের সময় ভাসমান বরফ দেখা যাবে না আর্কটিক অঞ্চলে। তখন এই অঞ্চলের সমুদ্রে বরফের পরিমাণ সবচেয়ে কম থাকবে। এই শতাব্দীর শেষ ভাগে উত্তর মেরুতে বরফশূন্য ঋতু দেখা যাবে। পরিস্থিতি আরও খারাপ ও কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেশি হলে এই অঞ্চলে শীতেও থাকবে না কোনো বরফ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আর্কটিক মহাসাগরে ৩৩ লাখ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র বরফের আচ্ছন্ন ছিল। তবে গবেষকরা সমুদ্রে বরফের আকার ১ লাখ বর্গকিলোমিটারের কম থাকলে, তখন আর্কটিককে বরফমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা দেবেন। এই অঞ্চলে সেপ্টেম্বরে সর্বনিম্ন পরিমাণ বরফ দেখা যায়। বিজ্ঞানী আলেকজান্দ্রা জাহান বলেন, আর্কটিক মহাসাগর ২০২০ থেকে ২০৩০ সালের দূষণের মাত্রা বাড়ার কারণে আগামী দশক থেকে প্রতিবছর আগস্টের শেষের দিকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রথমবারের মতো বরফশূন্য হতে থাকবে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে সমুদ্রের বরফের ক্ষতি হচ্ছে। তুষার ও বরফের আচ্ছাদন কমে গেলে সমুদ্রের শোষিত সূর্যালোক পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ায়। এতে আর্কটিকের বরফ আরও গলে গিয়ে উষ্ণতা বেড়ে যায়। এখানকার বরফ কমে গেলে আর্কটিক অঞ্চলের প্রাণীদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে সিল ও মেরু ভালুকের মতো প্রাণীদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে।
সমুদ্রের বরফ কমে গেলে উপকূলীয় অঞ্চলের কাছাকাছি বসবাসকারী প্রাণীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে। এ ছাড়া সমুদ্রের বরফ কমে যাওয়ায় সমুদ্রের ঢেউ বড় হবে। এতে উপকূলীয় এলাকার ক্ষয় বাড়বে। কার্বন নিঃসরণের মাত্রা যেভাবে বেড়ে চলেছে, এজন্য ভবিষ্যতে কখনো না কখনো আর্কটিক বরফশূন্য হবেই। এই শতাব্দীর শেষের দিকে এই অঞ্চল বছরে ৯ মাস পর্যন্ত বরফশূন্য হতে পারে। সাদা আর্কটিক অঞ্চলের বদলে আমরা তখন নীল আর্কটিক অঞ্চল দেখতে পাব। সূত্র: ফিজিস
জাহ্নবী