![দুর্নীতি মামলায় সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিচার শুরু](uploads/2024/04/01/1711978344.Jaynul_Abedin.jpg)
দুর্নীতির অভিযোগে করা এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন ও তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ আদেশ দেন।
সোমবার (১ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুদকের এই আইনজীবী জানান, অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৩০ মে দিন রেখেছেন আদালত।
সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তার পক্ষের আইনজীবী এই মামলা থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। কিন্তু তার ছেলে ফয়সাল আবেদীন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
মামলাসূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১ জুলাই এই মামলা করে কমিশন। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের মোট সম্পদ এক কোটি ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৪ টাকা। তার ১৯৮২-৮৩ করবর্ষ থেকে ২০১০-১১ করবর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ৬৪ লাখ ৭৪ হাজার ৩৯ টাকা। এসব ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদ ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২১৩ টাকা। এর বিপরীতে আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১ কোটি ৮৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৪ টাকার। তার আয়ের তুলনায় ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকা বেশি সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
তা ছাড়া এই বিচারপতি তার ছেলেকে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন বলে ঘোষণা দেন। ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতেও তা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বিচারপতির আয়কর রিটার্নে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দান এবং ফেরত প্রাপ্তির কোনো তথ্য নেই। বিচারপতির দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে দাখিল করা ব্যাংক স্টেটমেন্টে (২০০৫-২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর) তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬ লাখ টাকা উত্তোলনের তথ্য নেই। ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতে তার দায় ক্রমান্বয়ে পরিশোধ দেখানো হলেও মো. জয়নুল আবেদীনের কাছে টাকা পরিশোধের কোনো দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যা থেকে দুদক অভিযোগ করেছে যে সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন তার অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বৈধ করার জন্য ২৬ লাখ টাকা তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করেন।
তা ছাড়া বিচারপতি জয়নুল আবেদীন তার স্ত্রীর নামে ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব দাখিল করেন। দুদকের তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখলে রাখা এবং ছেলে ফয়সাল আবেদীনকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য দেওয়া ২৬ লাখ টাকা নিজ আয়কর নথিতে ও দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে প্রদর্শন না করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। মো. ফয়সাল আবেদীন বাবার ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ২৬ লাখ টাকা জেনেশুনে বৈধ করার জন্য সম্পত্তি ক্রয় ও দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।