![মিস্ট্রিয়াস মিউজিয়াম](uploads/2024/03/23/1711179694.BI-JS.jpg)
নীলকমল উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী পরশ প্রতিদিনের মতো নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ক্লাসে এসে হাজির হলো। যথাসময়ে ক্লাসে ঢুকলেন শিক্ষক আনিস সাহেব। আনিস সাহেব অত্র স্কুলের সদ্য জয়েন করা তরুণ তেজোদীপ্ত শিক্ষক। তিনি পড়িয়ে ছাত্রদের যতটা না মুগ্ধ করেন, ক্লাসের ফাঁকে তাদের উদ্দেশে ভাবগম্ভীর প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তার চেয়ে বেশি অবাক করেন। এই অদ্ভুত কাণ্ড ওদের একদিকে যেমন ভাবনার বেড়াজালে ফেলে দেয়, একই সঙ্গে অন্যরকম আনন্দের আবহও তৈরি করে।
যথারীতি তার আজকের প্রশ্নটাও ছিল চমকপ্রদ। ছাত্রদের উদ্দেশে আনিস সাহেবের ছুড়ে দেওয়া আজকের প্রশ্নটি ছিল: মনে করো সৃষ্টিকর্তা তোমার একটি স্বপ্ন পূরণ করবেন, তাহলে তুমি কী চাইবে?
ক্লাসের প্রথম সারির প্রায় সব ছাত্রই কিছু না কিছু বলার চেষ্টা করল। ফার্স্ট বয় আদিল বলল, আমি সুস্থতা চাইব। আহনাফ বলল, আমি চাইব যেন আমার অতীতের সব অপূর্ণ মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়, ভবিষ্যতের সব দোয়া কবুল হয়। অপূর্ব বলল, আমি সুখী হতে চাইব।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে শেষের বেঞ্চ থেকে পরশ দাঁড়িয়ে বলল, স্যার আমি খোদা তায়ালার কাছে একটা টাইম মেশিন চাইব। আনিস সাহেবের চোখে কিঞ্চিত বিস্ময়। বিস্ময়াভিভূত আনিস সাহেব পরশের কাছে তার আশ্চর্য চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে সে বলতে লাগল, টাইম মেশিনের সাহায্যে আমি আজকের সময় থেকে এক শতাব্দী সামনে যাব।
১০০ বছর পরের পৃথিবীতে পদার্পণ করব। তারপর আজকের সমাজে মানুষের বেশে দারুণ আরাম আয়েশে যেসব রক্তচোষা প্রাণী আছে, ওদের শ্যাওলা জমা সমাধিগুলো খুঁড়ে কঙ্কাল সংগ্রহ করব। প্রত্যেকের কঙ্কাল শনাক্ত করে, নাম-ঠিকানা অ্যান্ট্রি করে তাদের রেখে যাওয়া যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির কাগজপত্র তাদের কঙ্কালের গলায় ঝুলিয়ে দেব। সব কঙ্কাল একত্র করে একটা জাদুঘর তৈরি করব। যার প্রতিটা কক্ষে একটা করে কঙ্কাল থাকবে আর তার যাবতীয় সহায়-সম্পত্তি ও শৌর্যবীর্যের নানা নিদর্শন সজ্জিত থাকবে। জাদুঘরের নাম হবে ‘মিউজিয়াম ফর মেসেজ’। জাদুঘরটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মিউজিয়াম ফর মেসেজ-এর প্রাঙ্গণজুড়ে থাকবে বিশাল ফুলবাগান। বাগানের প্রতিটা ফুলগাছের সামনে একটা করে মানবফুলের (নিষ্পাপ শিশুর) ছবি টাঙিয়ে দেওয়া হবে; যেই মানবরূপী ফুলগুলো অকালেই ধরার বুক থেকে ঝরে গিয়েছিল। সেই বাগানের ফুলগুলো পবিত্র আত্মার সৌরভ ছড়াবে।
তৎক্ষণাৎ, ক্লাসের ঘণ্টা বেজে উঠল।
ঠিকানা পাওয়া যায়নি
কলি