ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

জলঘরে জল নেই!

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম
আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
জলঘরে জল নেই!
ঢাকার প্রথম পানির ট্যাংকটি আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ঢাকাবাসীর কাছে যেন তার পুরনো গৌরব আর ইতিহাসেরই জানান দেয়। ছবি: শরিফ মাহমুদ

১৮৭৮ সালে ঢাকায় প্রথম স্থাপিত হয় ওভারহেড পানির ট্যাংক, যা পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের উত্তর দিকে অবস্থিত। স্থানীয়দের কাছে এ ট্যাংকটি ‘বাহাদুর শাহ পার্ক পানির ট্যাংক’ বা ‘জলঘর’ নামে পরিচিত। পানির ট্যাংকটির বর্তমান চিত্র তুলে ধরেছেন সৈয়দ শিশির।

একটা সময় ছিল যখন নিয়মিত প্রতিবছর মহামারিতে ঢাকা শহরে অনেক মানুষের মৃত্যু হতো। এর কারণ ছিল বিশুদ্ধ পানির অভাব। ১৮৭৮ সালের পূর্ব-পর্যন্ত ঢাকায় খাবার পানির উৎস ছিল বুড়িগঙ্গা, বিভিন্ন পুকুর-ডোবা আর নোংরা পাতকুয়ো। তখন বাড়ি বাড়ি পানি সরবরাহের কাজ করত সাক্কা বা ভিস্তিওয়ালারা।

গত শতাব্দীর ষাটের দশক পর্যন্ত মশকের সাহায্যে পানি সরবরাহের কাজ করত তারা। কিন্তু রোগ-শোক থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন দেখা দেয় পরিশ্রুত (যান্ত্রিকভাবে বা প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে যে পানি থেকে অপদ্রব্যাদি দূর করা হয়।) পানির। মুনতাসীর মামুনের ‘ঢাকার টুকিটাকি’ বই থেকে জানা যায়, ১৮৭১ সালে ঢাকার নবাব আবদুল গনি সরকারকে ৫০ হাজার টাকা দান করেন শহরের কল্যাণার্থে ব্যয় করার জন্য। পরে ঠিক হয় এ টাকা ব্যয় করা হবে ঢাকায় পরিশ্রুত পানি সরবরাহের জন্য। কিন্তু ৫০ হাজার টাকা ছিল এ প্রকল্পের জন্য অপ্রতুল। ১৮৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে নবাব আবদুল গনি এজন্য শহরের গণ্যমান্যদের নিয়ে বৈঠক আহ্বান করেন। বৈঠকে কেবল শহরের বিখ্যাত দুজন বাঈজি রাজলক্ষ্মী আর আমিরজান ৫০০ টাকা করে দান করতে চাইলেন।

ফলে নবাব গনি নিজেই আরও এক লাখ টাকা দান করেন। তবে নবাব গনির শর্ত ছিল ঢাকাবাসীকে বিনামূল্যে পানি সরবরাহ করতে হবে। অবশ্য পরে নবাব আহসানউল্লাহ ৫০ হাজার টাকা এবং সরকার ৯০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিলেন প্রকল্পের জন্য। ১৮৭৪ সালে তৎকালীন ভাইসরয় চাঁদনীঘাটে ওয়াটার ওয়ার্কসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৮৭৮ সালে এর কাজ সম্পন্ন হলে ঢাকায় শুরু হয় পরিশ্রুত পানি সরবরাহ।  ইতিহাস বলছে, ১৮৭৮ সালে ঢাকায় প্রথম স্থাপিত হয় ওভারহেড পানির ট্যাংক, যা পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের উত্তর দিকে অবস্থিত।

স্থানীয়দের কাছে এই ট্যাংকটি ‘বাহাদুর শাহ পার্ক পানির ট্যাংক’ বা ‘জলঘর’ নামে পরিচিত। এর লাল ইটের প্রাচীর কাঠামো, স্থাপত্যশৈলী, নির্মাণকৌশল এতই অসাধারণ এবং স্বতন্ত্র যে পথচারীদের নজর কাড়ে। কিছুটা গম্বুজের মতো দেখতে দানবীয় এ স্থাপনাটি লম্বায় প্রায় পাঁচতলা বাড়ির সমান। ১৮৭৮ সালের ২৪ মে থেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ট্যাংকটি ব্যবহার করা শুরু হয়।

ট্যাংকটি বাহাদুর শাহ পার্কের সেই মোড়ের আকর্ষণীয় এক নিদর্শন। গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলে চোখে পড়ে দাবার বোর্ডের মতো সাদা-কালো মেঝে আর গোলাকার ট্যাংকটির মাঝে একটি লম্বা খাম্বা। ট্যাংকটির মাথার চারদিক খেয়াল করলে চোখে পড়ে সিমেন্টের তৈরি সিংহমুখের। যা বাইরের দিকে হা করে আছে। কিছুটা মিল পাওয়া যায় সিঙ্গাপুরের লায়ন স্ট্যাচুর সঙ্গে। অনেকের মতে, বৃষ্টির পানি যেন না জমতে পারে, তাই পানি বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এ ব্যবস্থা করেছিল ব্রিটিশরা।

অবশ্য তারপর ঠিক কবে এ ট্যাংকটি বন্ধ হয়ে যায়, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। কেউ বলেন, পাকিস্তান আমলেই এটি বন্ধ হয়ে গেছে। আবার কারও মতে, ২৫ বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে। যখনই বন্ধ হোক, ১৪৬ বছর বয়সী এ পানির ট্যাংকটি বর্তমানে কেবল একটি অকেজো, জরাজীর্ণ বিশাল স্তম্ভ হয়েই দাঁড়িয়ে আছে! অবশ্য ২০২০ সালের মে মাসে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক এ ট্যাংকটিকে ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তাতেও এটি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ তো নেই-ই, বরং এর ভেতরে মাজার ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, বহুদিন আগেই ট্যাংকটি চলে গেছে দখলদারের খপ্পরে। ট্যাংকের নিচের খালি জায়গায় কয়েক দশক আগে স্থাপিত হয়েছে মাজার। বর্তমানেও ট্যাংকের দেয়ালের পাশ ঘেঁষে রয়েছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী দোকান। প্রবেশপথে একটি লোহার গেট, সে গেটের ওপরে মাজারের বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার, শানে নুজুল লেখা। অথচ ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটি যে এক সময় ঢাকাবাসীকে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে মৃত্যু, মহামারির হাত থেকে বাঁচিয়েছিল, তা নিয়ে নেই কোনো স্মৃতিফলক।

ঢাকার প্রথম পানির ট্যাংকটি আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ঢাকাবাসীর কাছে যেন তার পুরোনো গৌরব আর ইতিহাসেরই জানান দেয়। ঢাকাজুড়ে ছড়িয়ে আছে ওয়াসার মোট ৩৮টি অকেজো ওভারহেড পানির ট্যাংক। বাহাদুর শাহ পার্কের সমসাময়িক আরেকটি পানির ট্যাংকের দেখা মেলে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ভাট্টিখানা এলাকায়। যার স্থাপত্যশৈলী অনেকটা একই রকম। লাল ইট-সুরকি দিয়ে নির্মিত ট্যাংকটি। এলাকাবাসীর মতে, এটি ছিল ঢাকা শহরের দ্বিতীয় পানির ট্যাংক। হাটখোলা রোড, ফুলবাড়িয়া, ফকিরাপুল, বিজয়নগর, লালমাটিয়া, মিরপুর-১০ এলাকার ওভারহেড পানির ট্যাংকগুলোরও প্রায় একই চিত্র। ফকিরাপুল আর লালমাটিয়ার ট্যাংক দুটি স্টিলের তৈরি। সাধারণ ট্যাংকগুলোর চেয়ে আকারেও বেশ বড় এগুলো। যে ট্যাংকগুলোর সঙ্গে ওয়াসার জোন অফিস অবস্থিত, সেগুলোর অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও বাকি ট্যাংকগুলো পড়ে আছে অরক্ষিত।

বিশাল আকৃতির ওভারহেড ট্যাংকগুলো মূলত ব্যবহৃত হতো ওয়াসার পানি জমিয়ে রাখার কাজে। পানি শোধনাগার থেকে পরিশোধিত করে পাম্পের সাহায্য ট্যাংকে উঠিয়ে রিজার্ভ করে রাখা হতো। কোনো কারণে পাম্প নষ্ট হলে সারানোর সময়টুকুতে যেন এলাকাবাসী পানির অভাবে না থাকে, সে জন্যই ছিল এ ব্যবস্থা। সে সময় ঢাকার জনসংখ্যা ছিল বেশ কম। বর্তমানে এ শহরের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটির বেশি। জানা যায়, ওভারহেড পানির ট্যাংকগুলো পানিতে ভরতে সময় লাগত ১০ ঘণ্টার মতো।

বর্তমানে ঢাকার বিপুল জনগোষ্ঠীকে পানি সরবরাহ দিতে হিমশিম খেতে হয় ওয়াসাকে। তাই রিজার্ভ ট্যাংকে পানি উঠিয়ে রাখার মতো সময় আর নেই। এখন সরাসরি লাইনে পানি সাপ্লাই করা হয় বাড়িগুলোর নিজস্ব রিজার্ভ ট্যাংকে। এ ছাড়া বড় বড় পানির ট্যাংকের রক্ষণাবেক্ষণও ছিল বেশ ঝামেলাপূর্ণ। উঁচু ট্যাংক থেকে পানি সাপ্লাই করায় পানির চাপও হতো অনেক বেশি; যে কারণে অনেক বাসাবাড়ির পানির ট্যাপ ভেঙে যেত। তাই মূলত আশির দশক থেকে বন্ধ হতে শুরু করে ওভারহেড পানির ট্যাংকগুলো।

ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত সুবিশাল পানির ট্যাংকগুলো এখনো নজর কাড়ে পথচারীদের। কোনো কোনো জায়গায় বিশাল বিশাল অট্টালিকা এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি সেসব ট্যাংকের সামনে। কালের আবর্তে নির্দিষ্ট কিছু এলাকার নামকরণও হয়ে গেছে পানির ট্যাংকের নামে। যেমন- ‘ফকিরেরপুল পানির টাংকি’, ‘বিজয়নগর পানির টাংকি’। অথচ এসব ট্যাংকের বেশির ভাগই এখন অকেজো ও জরাজীর্ণ বিশাল স্তম্ভ হয়েই দাঁড়িয়ে আছে। রাজধানীর প্রাচীন এ নিদর্শনগুলোর তালিকা করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি।

কলি

কিন্টসুগি: ভাঙা জিনিস জোড়া দেওয়ার শিল্প

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০২:১৩ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০২:১৭ পিএম
কিন্টসুগি: ভাঙা জিনিস জোড়া দেওয়ার শিল্প

আমাদের জীবনে এমন অনেক কঠিন সময় আসে, যখন আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। মনে হয় এখানেই সব শেষ। কিন্তু শেষ থেকেও যে শুরু করা যায়, ভাঙনও যে আশ্চর্য সুন্দর উঠতে পারে, তার অনন্য উদাহরণ জাপানের কিন্টসুগি শিল্প। প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো এই শিল্প হচ্ছে অপূর্ণতাকে আলিঙ্গন করার শিল্প, অসম্পূর্ণতার সৌন্দর্যের শিল্প। যখন কোনো কাচ বা সিরামিকের জিনিস ভেঙে যায়, সেই ভাঙা টুকরোগুলো ওরা জোড়া লাগায় সোনার গুঁড়োর বার্নিশ দিয়ে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত আছে, ভাঙা কাচ কখনো জোড়া লাগে না। কিন্তু জাপানিরা এই প্রবাদকে মিথ্যে প্রমাণ করেছে। যদিও এই ভঙ্গুর জিনিস জোড়া লাগানোর জন্য অনেকটা সময় প্রয়োজন, তবে মেরামতের পর তা আগের চেয়ে আরও বেশি নান্দনিক হয়ে ওঠে। তখন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করাটা সার্থক মনে হয়।

কিন্টসুগি শিল্পের জন্ম সম্পর্কে জানা যায়, জাপানের এক সেনা কমান্ডার ইয়োশিমাসার প্রিয় একটি চায়ের কাপ ভেঙে যায় এবং তিনি এই কাপটি মেরামত করার জন্য চীনে পাঠিয়েছিলেন। তখন তা ধাতব স্ট্যাপলার দিয়ে মেরামত করে পাঠানো হয়। কিন্তু কমান্ডারকে তা খুশি করে না। এরপর জাপানিরা নিজেরাই ভিন্ন এবং নান্দনিক উপায়ে সিরামিক মেরামতের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। এভাবেই একসময় কিন্টসুগি শিল্পের উদ্ভব হয়। কমান্ডারের ইচ্ছা অনুযায়ী নান্দনিকভাবে সমৃদ্ধ কাপ তৈরি করার লক্ষ্যে যে শিল্পের জন্ম হয়েছিল, তা যে এত জনপ্রিয় হবে এবং সুদীর্ঘ বছর ধরে টিকে থাকবে, তা হয়তো তখনো কেউ ভাবতে পারেনি।

যদিও কিন্টসুগি বস্তুর মধ্য দিয়ে প্রকাশিত একটি শিল্প, তবে এটিতে একটি গভীর দর্শন রয়েছে। কিন্টসুগি দর্শন অনুসারে, ভাঙা, ক্ষয়প্রাপ্ত বা আগের রূপ হারানো কিছুই মূল্য হারায় না। বরং তা আগের চেয়ে আরও মূল্যবান এবং বিশেষ করে তোলা সম্ভব। জাপানিরা অপচয় করতে পছন্দ করে না। তারা রূপান্তরে বিশ্বাসী। যেকোনো ভঙ্গুর কিংবা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে ওঠা জিনিসকে তারা রূপান্তর করে নতুন কিছু তৈরি করে।

এই কিন্টসুগি শিল্প যেকোনো পণ্যে ভিন্ন মূল্য যোগ করার পাশাপাশি মানব সম্পর্কের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিন্টসুগি দর্শন অনুসারে, যদি পর্যাপ্ত প্রচেষ্টা করা হয় এবং প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত বিন্দু সাবধানে এবং সূক্ষ্মভাবে মেরামত করা হয়, তবে যেকোনো জিনিস আগের চেয়ে অনেক সুন্দর এবং মূল্যবান হয়ে ওঠে।

সিরামিক আসলে শক্তিশালী, সুন্দর, কিন্তু মানুষের মতোই ভঙ্গুর। কখনো এমন কিছু ঘটতে পারে, যা মানুষের জীবনে গভীর ক্ষতচিহ্ন রেখে যায় এবং মেরামত করা অসম্ভব বলে মনে করা হয়। তবে সেসব পরিস্থিতি অতিক্রম করা এবং অনেক বেশি মূল্যবান এবং শক্তিশালী বন্ধন দিয়ে ভাঙা জায়গাগুলো মেরামত করাও যে জীবনের একটি অংশ, কিন্টসুগি শিল্প থেকে আমরা তা জানতে পারি। আপনি কীভাবে নিজেকে নিরাময় করতে পারেন এবং আপনার ভাঙা জায়গাগুলো মেরামত করতে পারেন, তা আবিষ্কার করতে পারেন এই শিল্পের মাধ্যমে। কিন্টসুগি আপনাকে আপনার দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে পারে।

জাপানিরা তাদের ঘরে কিন্টসুগি শিল্পের তৈরি শো-পিস রেখে দেয়। যখন তাদের মেন্টাল ব্রেকডাউন হয়, তারা ওই শো-পিসগুলোর দিকে তাকায় এবং সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়, বুকে বাঁধে নতুন আশা। এসব শো-পিস তাদের জীবনের ভুলত্রুটি কিংবা ব্যর্থতা উদযাপনের স্মারক। এ ব্যাপারটা তাদের ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

জাহ্নবী

 

স্বাধীনতার আকাশে মুক্ত বিহঙ্গ

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০২:১২ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০২:১২ পিএম
স্বাধীনতার আকাশে মুক্ত বিহঙ্গ

ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে সন্ধ্যার অন্ধকার। অনেক আগেই সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিম আকাশের প্রান্তসীমানায়। অপ্সরা এখনো সমুদ্রপাড়ে একা দাঁড়িয়ে আছে। সঙ্গে কেউ নেই। নেই বাড়ি ফেরার তাড়া। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে অপ্সরা নিজেকে নরক থেকে স্বর্গে স্থানান্তরিত করেছে। গতকাল ঠিক বিকেলে সে তার চেয়েও বড় একটি কাজ করে ফেলেছে। যার কারণে আজ যে এখানে। 

বয়স যখন তার দশ বছর, বাবা-মা মারা যায় এক সড়ক দুর্ঘটনায়। এরপর থেকে সে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকতো। ঠিক সঙ্গে বললে ভুল হবে। তারা তাকে রাখেন কেবল কাজের মেয়ে হিসেবে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা তাকে খাটিয়ে মারতেন। সারা দিন কাজ করেও একটু ফুরসত পেত না সে। বিনাবাক্যে একটার পর একটা কাজ করে যেতে হতো। কাজে ফাঁকি তো দূরের কথা, সামান্য ভুল হলেই রক্ষা নেই। গায়ে হাত, লাঠির আঘাত তো রোজকার ঘটনা। আর সেদিন ঘটেছিল লঙ্কাকাণ্ড!

ঘনিষ্ঠ কিছু মেহমান এসেছিলেন বাড়িতে। বরাবরের মতো রান্নার দায়িত্ব বর্তায় অপ্সরার ওপর। দুই হাতে দশ হাতের কাজ শেষ করেও তার কপালে দুঃখ ঠিকই রয়ে গিয়েছিল। সবগুলো রান্নাই খুব ভালো হয়েছিল। কিন্তু একটি তরকারিতে লবণ বেশি হয়েছিল বলে অপ্সরার চাচা বেজায় রেগে যান। মেহমান বিদায় হওয়ার পর যাচ্ছেতাই বলেন অপ্সরাকে। শুধু কথা নয়, ইচ্ছেমতো মারধরও করেন। মারধরের একপর্যায়ে চাচি তার হাতে আগুনের ছ্যাঁকা দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। আগুনের ছ্যাঁকায় অপ্সরার প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলেও কেউ একটু পানিও দেয়নি।

শেষমেশ অপ্সরা পরিকল্পনা করে পালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু যাওয়ার আগে আরেকটি কাজ করে যায় অপ্সরা। তার চাচা-চাচির ভবলীলা সাঙ্গ করে। কিন্তু এতে তার বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। বরং আনন্দ হচ্ছে, মুক্ত হওয়ার আনন্দ।

আজ থেকে সে আর খাঁচায় বন্দি পাখির মতো নয়, পরাধীনতার শৃঙ্খল ছেড়ে স্বাধীনতার আকাশে মুক্ত বিহঙ্গ সে। এখন থেকে পুরোটা আকাশই তার; ঠিক পাখির মতো। কিন্তু দিনশেষে সব পাখিই ঘরে ফেরে সন্ধ্যা নামার আগে। রাতের আকাশটা যে তাদের নয়। অপ্সরাও তো পাখির মতো, তাহলে রাতের আকাশ কী তার জন্যও নয়?

পাঠানটুলা, সিলেট

জাহ্নবী

বরষার কদমফুল

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৪ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৪ পিএম
বরষার কদমফুল
ছবি: খবরের কাগজ

প্রতিদিনই বিকেলে বিষণ্নতায় মন ছেয়ে যায় প্রীতির। দিনে দিনে প্রীতির সঙ্গে মানুষের সম্প্রীতির জায়গাটায় বিশেষ সংকট দেখা দেয়, তবু নিজের কাছে অবিশ্বাস্যরকম ভাবলেশহীন সে। প্রীতি দেখতে আহামরি রূপসী না হলেও ছিপছিপে গড়নের অত্যন্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। মানুষ স্বভাবতই রাগ-ক্ষোভ, আনন্দ-উচ্ছ্বাসে তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করলেও তার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো।

প্রীতির কাছে বিকেলের ক্ষণটা ভীষণ পছন্দের। বর্ষায় প্রীতির মন বিষণ্নতায় অধিক আচ্ছন্ন থাকে। আজকের দিনের বিরামহীন বৃষ্টি তাকে মোটেই একঘেয়েমিতে ঢেকে দেয়নি। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছুঁয়েছে সে। শরীরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মনের বাড়বাড়ন্ত আবেগকে যে বয়স চাইলেও দমাতে পারে না, সে বয়সটা প্রীতির সঙ্গে ছায়ার মতো লেপ্টে থাকে। কোনোকিছুতেই আর আলগা হয় না।

সময়টা টের পাওয়া লোকেরও একদম অভাব নেই। ভ্রমর যেমন ফুলকে অনুসরণ করে, তেমনই পড়শির চোখেও যৌবনের অস্তিত্ব বারবার ধরা দেয়।

বরষার কদম প্রীতির ভীষণরকম প্রিয়। তার শোবার ঘরের পাশে আগে একটি কদম গাছ ছিল। কিন্তু বাড়ি সংস্কারের সময় গাছটি কাটা পড়ায় সে খুব ব্যথিত হয়। যারপরনাই অবাক হয়। কারও মনেই গাছটির জন্য এতটুকু কষ্ট অনুভূত হয়নি। আজ বিকেলবেলায় প্রীতির ঘরের জানালা দিয়ে ভেতরে ছুড়ে দেওয়া পূর্ণ যৌবনের একগুচ্ছ কদম ফুল এসে মেঝেতে পড়ে। কৌতূহল নিয়ে কদম ফুলের দিকে তাকায় প্রীতি। সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির আদলে ভেতরটাও হিমশীতল করে দিয়ে যায় অদ্ভুত অজানা এক শিহরণ। 

ব্যাকুল পিয়াসীর মতো দারুণ এক সুখানুভূতি ছুঁয়ে দেয় তাকে। দৌড়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই চোখ পড়ে কাকভেজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক সুদর্শন যুবক। অপলক তাকিয়ে থাকে অচেনা-অজানা যুবক। প্রীতিও নিষ্পলক তাকিয়ে থেকে বুঝে উঠতে চায় অপরিচিত এই যুবকের চাহিদা কী? এই প্রথম পূর্ণ যৌবনের অনুভূতি টের পায় নিষ্পাপ সারল্যের প্রীতি। নিজের বোধকে জাগ্রত করে উপলব্ধির ব্যাপকতা বাড়িয়ে সময়ের উপযোগী করে তুলতে চায়।

ভালোভাবে বুঝে ওঠার আগেই ছেলেটি হাঁটতে থাকে। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে দৃষ্টিসীমার দূরত্ব বেড়ে যায়, ছেলেটি ঝাপসা হয়ে আসে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, ছেলেটি আর পেছনে ফিরেও তাকায়নি। ব্যস তোলপাড় করা ঝড় শুরু হয় যুবতী মনের অন্দরে। বৈশাখী ঝড়ের আদলে এই ঝড় সবকিছু নতুন করে চেনায়। ফুল চেনায়। যৌবন চেনায়। কাছের কাউকে চেনায় নিবিড়ভাবে!

গাজী তারেক আজিজ, ফুলগাজী, ফেনী/আবরার জাহিন

গাছ হাঁটতে পারে?

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
গাছ হাঁটতে পারে?
ছবি: আবরার জাহিন

পৃথিবীতে ছোট-বড় মিলিয়ে অনেক ধরনের গাছ আছে। কোনোটি বড় আবার কোনোটি ছোট। এসব গাছের কোনোটির কাণ্ড মোটা আবার কোনোটির কাণ্ড লিকলিকে চিকন। কোনো কোনো গাছ আকাশ সমান উঁচু হয় আবার কোনো গাছ খাটোতেই সুন্দর। গাছেরও যে জীবন আছে তা আমরা জানি। গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে মানুষের প্রয়োজনীয় উপাদান অক্সিজেন সরবরাহ করে। কিন্তু কখনো কি শুনেছেন গাছ চলতে পারে? ছোটবেলা থেকে আমরা দেখে আসছি গাছ যেখানে জন্মায় সেখানেই শিকড় দিয়ে মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকে। কিন্তু প্রাকৃতিক বিস্ময়ের এই পৃথিবীতে এমনো গাছ আছে যারা চলতে পারে। মাটি আঁকড়ে না থেকে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে হেঁটে বেড়ায়।

অদ্ভুত এই গাছের নাম ‘ক্যাশাপোনা’। ইংরেজিতে একে বলা হয় ‘ওয়াকিং পাম’ বা ‘চলন্ত পাম’। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘Socratea exorrhiza’। পামজাতীয় এই উদ্ভিদটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার রেইন ফরেস্টে দেখা মেলে। গাছটির উচ্চতা প্রায় ২৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ হওয়ায় এর শিকড়ে শ্বাসমূল এবং ঠেসমূলের উপস্থিতি রয়েছে। তবে এর অস্বাভাবিক শিকড় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রেইন ফরেস্টে দেখা মেলে এই গাছের। এই জায়গার মাটি আলগা এবং সেখানে পানি ধারণক্ষমতা খুব কম। তাছাড়া প্রায় সেখানে ভূমিক্ষয় হয়। তাই এর শিকড় হেঁটে চলে।

মাটি আলগা হওয়ায় শিকড়গুলো মাটি থেকে উঠে আসে। আবার এই অঞ্চলে সূর্যের আলো ঠিকমতো পৌঁছায় না। তাই একটু সূর্যের আলোর ছোঁয়া পেতে স্থান পরিবর্তন করে গাছটি। পাশাপাশি নতুন ঠেসমূল তৈরি করে গাছটি। আগের শিকড়গুলো রেখে যায় এবং সেই স্থানে নতুন উদ্ভিদ গজায়। গাছটি রেখে যায় তার অঙ্কুর। গাছটি এভাবে জলবায়ুতে বেঁচে থাকতে হেঁটে চলে। গবেষকরা বলেন, গাছটি প্রতিদিন তার স্থান থেকে দুই বা তিন সেন্টিমিটার নড়ে। বছরে তা প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

পৃথিবীতে অনেক পাম জাতীয় উদ্ভিদ আছে। তবে ‘ক্যাশাপোনা’ উদ্ভিদই হাঁটতে পারে। এই পাম জাতীয় উদ্ভিদগুলো অ্যামাজনের আদিবাসী লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করে এবং ঘর নির্মাণে ব্যবহার করে। তাছাড়া এই গাছে হলুদ এক ধরনের ফলও হয়ে থাকে।

এই গাছের চলনে বৃষ্টিও ভূমিকা রাখে। বৃষ্টি অনেক প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা দিয়ে থাকে, যা এটিকে যথেষ্ট শক্তিশালী হতে সাহায্য করে। ফলে গাছটি তার পরিবেশের চারপাশে চলাফেরা করতে পারে। যেহেতু এই অঞ্চলে পানি ধারণক্ষমতা কম তাই বৃষ্টি অনেকাংশে সাহায্য করে গাছটিকে।

১৯৮০ সালে জীববিজ্ঞানি জন এইচ বোডলি ক্যাশাপোনা গাছের এই হেঁটে চলার ব্যাপারটা ব্যাখা করেন। তিনি বলেন, গাছটি নতুন শিকড় তৈরি করে এবং অবস্থান পরিবর্তন করে আগের স্থানে অঙ্কুরোদগোম করে। বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, এই গাছে সূর্যের আলো পৌঁছানোর জন্যও গাছটি তার শিকড় দিয়ে স্থান পরিবর্তন করে।

স্লোভাক একাডেমি অব সায়েন্সেস ব্রাটিসলার আর্থ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের প্যালিওবায়োলজিস্ট পিটার ভারসানস্কি বলেন, তিনি এই প্রথম এই ধরনের উদ্ভিদ দেখেছেন। শিকড়গুলো নতুন মাটি খুঁজতে স্থান পরিবর্তন করে বলে তিনি মনে করেন। তিনি দুই মাস সেই অঞ্চলে অভিযান চালান এবং ১৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ খুঁজে পান। এই গাছটির নাম তিনি বিপন্ন উদ্ভিদের তালিকায় উঠান।

ইকুয়েডরের এই অঞ্চলে শুধু ওয়াকিং পাম নয়, আরও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী পাওয়া যায়। যা পৃথিবীর অন্য কোনো জায়গায় পাওয়া যায় না। ইকুয়েডরের এই সংরক্ষিত অঞ্চলকে ইউনেস্কো সংরক্ষিত অরণ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। জায়গাটির নাম ‘সুমাকো বায়োস্ফিয়ার’। দুর্গম এই জায়গায় ভ্রমণ করতে প্রায় একদিন সময় লাগে।

/আবরার জাহিন

বিশ্বের চার ব্যতিক্রম স্কুল

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
বিশ্বের চার ব্যতিক্রম স্কুল
ছবি: সংগৃহীত

প্রচলিত স্কুলে শিক্ষার্থীরা স্কুলব্যাগ, খাতা-কলম আর ড্রেস পরে ক্লাসে যায় এবং পাঠদান নেয়। মাঝে মধ্যে শিক্ষকদের কাছ থেকে অ্যাসাইনমেন্ট পায় এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সেগুলো মূল্যায়ন করার মধ্য দিয়ে শিক্ষক শিশুর প্রতিভা এবং দক্ষতার প্রতিফলন ঘটান। কিন্তু এমন কিছু স্কুল আছে যেখানে পাঠদান একটু ব্যতিক্রম। এমন চার স্কুল নিয়েই আজকের আয়োজন।

উইচ স্কুল: এ স্কুলটি মূলত জাদুবিদ্যার প্রয়োজনীয়তা এবং এর ওপর বিশ্বাস করাকে শেখায়। আমেরিকার শিকাগো ইলিনয় ও সালেম ম্যাসাচুসেটে উইচ স্কুলের ক্যাম্পাস রয়েছে। এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে রেভ এড হাব্বার্ড। স্কুলটি সাধারণত অনলাইনে কোর্স অফার করে। ২০০১ সালে যখন স্কুল যাত্রা শুরু করে তখন এর ছাত্রছাত্রী ছিল ২ লাখ ৪০ হাজার। ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও স্কুলটি এখনো সফলভাবে চলছে। সারা বিশ্ব থেকে এখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়। 

ব্রুকলিন ফ্রি স্কুল: নাম অনুসারেই ফ্রি স্কুল ব্রুকলিন। এটি ইউএসএতে অবস্থিত। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই স্কুলের কোনো নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম বা শিক্ষার্থীদের অনুসরণ করার মতো কোনো নিয়ম নেই। স্কুলের পেছনে ধারণা হলো শিশুদের তাদের পথ খুঁজে পেতে অনুমতি দেওয়া। যাতে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা কী শিখতে চায় এবং কোন ক্লাসে তারা যোগ দিতে চায়। যদি তারা ক্লাসে বসতে আগ্রহী না হয়; তাহলে তারা ঘরেই থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণে স্কুলটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

এলফ স্কুল: এ স্কুলটি আইসল্যান্ডের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মধ্যে অবস্থিত। এটি প্রধানত এলভস এবং আইসল্যান্ডের লোককাহিনি সম্পর্কে শিক্ষা দেয় যারা সাধারণ মানুষের কাছে অদৃশ্য। ১৯০০ সালে এই স্কুলটি চালু হওয়ার পর থেকে ৯০০০ জনেরও বেশি লোক স্কুলে ভর্তি হয়েছে যার বেশির ভাগই বিদেশি। স্কুলটি এলভস শিক্ষার সার্টিফিকেশন  দেয়, যা এক দিনের মধ্যে অর্জন কর যায়। তারা জনপ্রিয় আইসল্যান্ডিক লোককাহিনি নিয়ে গবেষণা করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ম্যাগনাস স্কারফিওইনসন এই বিষয়ে বিভিন্ন বই লিখেছেন।

মহর্ষি স্কুল: এই স্কুল ১৯৮৬ সালে যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মহর্ষি স্কুলে গণিত, বিজ্ঞান বা ইংরেজির মতো বর্তমান বিশ্বের প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো শেখানো হয় না। তাদের শিক্ষার পদ্ধতি চেতনাভিত্তিক, যেখানে তারা অতীন্দ্রিয় ধ্যান শেখায়। শিক্ষাদানের অপ্রচলিত রূপ সত্ত্বেও এই স্কুলটি অভিভাবকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে এবং যুক্তরাজ্যের শীর্ষ স্কুলগুলোর মধ্যে সেরা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।  

/আবরার জাহিন