ইঁদুরদৌড়ের জীবনে একাকিত্ব হলো অন্যতম সঙ্গী। সারা দিন পাহাড়প্রমাণ কাজের ভিড়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখলেও দিন শেষে একাকিত্ব গ্রাস করে অনেককেই। কেউ স্বেচ্ছায় একা, কেউ বাধ্য হয়ে। কিন্তু দুই ক্ষেত্রেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে একাকিত্ব। একা থাকার এই অবসাদ যে শুধু মনের ওপর চাপ তৈরি করে, তা নয়। শরীরের ওপরেও প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি গবেষণা জানাচ্ছে, দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতিকর হলো একাকিত্ব। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘আওয়ার এপিডেমিক অব লোনলিনেস ও আইসোলেশন’ নামে একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ হয়েছে। জাতিসংঘের এই সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, কোভিডের পর থেকে একাকিত্ব যেন জাঁকিয়ে বসেছে মানুষের মাঝে। মহামারির সময় লকডাউন, কোভিড আক্রান্ত হয়ে নিভৃতবাস (কোয়ারেন্টিন), সামাজিক দূরত্ববিধি- সব মিলিয়ে একা থাকাটা যেন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। তারপর গত দুই বছরে অনেকটাই কমে এসেছে কোভিডের প্রকোপ। কিন্তু রয়ে গিয়েছে একাকিত্ব। আর একা থাকার এই অবসাদ থেকেই বাড়ছে হৃদরোগ, ডিমেনশিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতার মতো রোগের ঝুঁকি।
যত দিন যাবে, এই সমস্যা ধীরে ধীরে অতিমারির আকার ধারণ করবে বলে মনে করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষকরা। তাই এখন থেকেই রাশ টানতে হবে। একাকিত্বকে কিছুতেই মনের ওপর চেপে বসতে দেওয়া যাবে না। তার জন্য নিজের যত্ন নেওয়ার কথা বারবার মনে করাচ্ছে জাতিসংঘের এই সংস্থা।
কাজের চাপ, ব্যক্তিগত জটিলতা এবং অন্যের খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজেকে ভালোবাসতে ভুলে যান অনেকেই। একাকিত্বের জন্ম নেয় সেখান থেকেই। সঙ্গীহীন জীবনেও নিজেকে ভালো রাখার রাস্তা খুঁজে নিতে হবে। নিজেকে ভালো রাখার পাশাপাশি সামাজিক মেলামেশা বাড়াতে হবে বলে মত স্বাস্থ্য সংস্থার।
কোভিড-কাঁটা এখন আর নেই। ফলে যতটা সম্ভব নিজেকে সুরক্ষিত রেখে জনসংযোগে জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। একাকিত্ব কম বয়সে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সেই ঝুঁকি এড়াতে মনের যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এমএ/