চার জেলায় বজ্রপাতে বৃহস্পতিবার (২ মে) ২ নারীসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে কুমিল্লায় ৪, রাঙামাটিতে ৩, কক্সবাজারে ২ এবং খাগড়াছড়ির এক শিশু রয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিরা জানান-
কুমিল্লা: কুমিল্লার চান্দিনা, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও দেবিদ্বার উপজেলায় বিকালে বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন, চান্দিনার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে দৌলতুর রহমান, সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ার ইউনিয়নের উত্তর সূর্যনগর গ্রামের আতিকুল ইসলাম, দেবিদ্বারের ধামতী গ্রামের মোখলেছুর রহমান এবং বুড়িচংয়ের রাজাপুর ইউনিয়নের পাচোরা গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে আলম হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, ধানখেত থেকে ওষুধ ছিটানোর মেশিনটি আনতে গিয়ে দৌলতুর রহমান বজ্রপাতের শিকার হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে বিকেল ৫টার দিকে ধান কাটতে গিয়ে আলম হোসেন বজ্রপাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। অন্যদিকে মোখলেছুর রহমান বাড়ির পাশে খড় শুকাচ্ছিলেন। ওই সময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে তিনি ঘটনাস্থালে মারা যান। অপরদিকে, আতিকুল ইসলাম ফসলের জমি দেখার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পথে তিনি বজ্রপাতের শিকার হয়ে মারা যান।
রাঙামাটি: সদর ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে দুই নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় আহত হয়েছেন ৪ জন। নিহতরা হলেন, বাহারজান (৫৭), তোনিবালা ত্রিপুরা (৩৭) ও নজির আহাম্মেদ (৫০)। আহতরা হলেন, পার্থ চাকমা (৫৫), পেট্রো চাকমা (৪৫), রবীন্দ্র চাকমা (৬৫), তৃণা চাকমা (৩৫)।
স্থানীয়রা জানান, সকালে বাঘাইছড়ি রূপকারী ইউনিয়নের বড়াদম মুসলিম ব্লক এলাকায় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বাহারজান নামে এক নারী বজ্রপাতের শিকার হন। ওই সময় তার একটি গরু মারা যায়। এ ছাড়া দুপুরের দিকে সাজেক ইউনিয়নের লংথিয়ান পাড়ায় বজ্রপাতে মারা যান তোনিবালা ত্রিপুরা নামের আরেক নারী। অন্যদিকে রাঙামাটি শহরের সিলেটি পাড়া এলাকায় সকালে কাপ্তাই হ্রদে বরশি দিয়ে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মারা যান নজির আহাম্মেদ নামে এক ব্যক্তি। এ ছাড়া পৃথক বজ্রপাতে বাঘাইছড়িতে আরও চারজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন, পার্থ চাকমা, পেট্রো চাকমা, রবীন্দ্র চাকমা, তৃণা চাকমা।
কক্সবাজার: জেলার পেকুয়ায় পৃথক বজ্রপাতে দিদারুল ইসলাম (২৯) ও মোহাম্মদ আরফাত (২২) নামে দুই লবণচাষীর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড কোদাইল্যা দিয়া ও রাজাখালী ৭ ওয়ার্ডের ছরিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, দিদারুল ইসলাম কোদাইল্যা দিয়া এলাকার জমির হোসেনের ছেলে ও মোহাম্মদ আরফাত ছরিপাড়া এলাকার মোহাম্মদ জামালের ছেলে।
নিহত দিদারুল ইসলামের চাচাতো ভাই হাবিব জানান, ভোরে মাঠে লবণ তুলতে গিয়ে দিদার, বজ্রপাতের শিকার হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে নিহত আরফাতের স্বজনেরা জানান, একই ভাবে ভোরে মাঠে লবণ তুলতে গিয়ে বজ্রপাতে আরফাতের মৃত্যু হয়।
খাগড়াছড়ি: জেলার মাটিরাঙ্গায় বজ্রপাতে আরাফাত হোসেন (১০) এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সকালে উপজেলার বর্ণাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহীমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আরাফাত হোসেন ওই এলাকার ইউসুফ মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় ফজলুল করিম নুরানী মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আবু বক্কর বিষয়টি জানান, সকালে বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করার সময় বজ্রপাতে আরাফাতের মৃত্যু হয়।