প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা ঈমানি দায়িত্ব। প্রতিশ্রুতি পালন মানুষকে সম্মানিত করে। সমাজে বিশ্বাসী করে তোলে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ফলে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি হয় এবং টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ১)
প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে : মানুষের সঙ্গে চলতে-ফিরতে আমরা নানাবিধ প্রতিশ্রুতি দিই। কখনো সেগুলো পালন করি, কখনো ভঙ্গ করি। প্রত্যেককে তার প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো পূর্ণ করো। নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩৪)
প্রতিশ্রুতি পালন মুমিনের গুণ: মুমিনের প্রতিশ্রুতি পালন করা নিয়ে হাদিসে এসেছে, আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের আচরণে ১১টি গুণ রয়েছে; ছয়টি প্রকাশ্যে এবং পাঁচটি গোপনে। প্রকাশ্য ছয় গুণের অন্যতম হলো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। (বুখারি, হাদিস : ৬০২৪)
মুনাফিক প্রতিশ্রুতি পালন করে না : প্রতিশ্রুতি পালন করা মুমিনের নিদর্শন। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। যে প্রতিশ্রুতি পালন করে না সে মুনাফিক। আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফিকের আলামত তিনটি—এক. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে। দুই. যখন ওয়াদা করে, তা ভঙ্গ করে। তিন. তার কাছে যখন আমানত রাখা হয়, সে তার খিয়ানত করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৩)
প্রতিশ্রুতি রক্ষার উপকারিতা : প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা ব্যক্তির বিশ্বাসযোগ্যতা এবং আস্থা বাড়ায়। এটি ব্যক্তির সম্পর্ককে মজবুত করে এবং সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি ব্যক্তিকে একটি সৎ এবং নৈতিক জীবনযাপন করতে সাহায্য করে।
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার কুফল : প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা গুরুতর অপরাধ। এতে ব্যক্তি সম্পর্কে মানুষের মনে খারাপ ধারণা তৈরি হয়। ব্যক্তির বিশ্বাসযোগ্যতা ও আস্থা হারিয়ে যায়। পারস্পরিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
লেখক : ফাউন্ডার, সলিউশন আইটিকেয়ার