ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোপা নিষ্পত্তির ম্যাচে অনিশ্চিয়তা!

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১০ এএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৪ পিএম
শিরোপা নিষ্পত্তির ম্যাচে অনিশ্চিয়তা!
ছবি : সংগৃহীত

প্রিমিয়ার লিগ হকির শেষ দিন শুক্রবার (১৯ এপ্রিল)। দেড় মাসের মাঠের লড়াই শেষে শিরোপার নিষ্পত্তি হবে আজ লিগের শেষ ম্যাচে। যে ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী ও মোহামেডান। কিন্তু আদৌ এই ম্যাচটি হবে কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ হকি ফেডারেশনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে শিরোপানির্ধারণী ম্যাচটিতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার হুমকি দিয়ে রেখেছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান।

লিগ টেবিলের শীর্ষে মোহামেডান। নিজেদের শেষ ম্যাচে আবাহনীকে হারাতে পারলেই চ্যাম্পিয়নের মুকুট ফিরে পাবে তারাই। কিন্তু নিজেদের ক্লাব টেন্টে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে লিগজুড়েই নানা অবিচারের শিকার হওয়ার দাবি করেছে মোহামেডান। বিভিন্ন ম্যাচের কিছু ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে ক্লাবটির কর্মকর্তা সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘লিগজুড়েই আমরা অনেক ধরনের সূক্ষ্ম কারুচুপি, সূক্ষ্ম প্রতারণার শিকার হয়েছি। ফেডারেশনকে বিভিন্ন সময়ে এসব বিষয়ে অবহিত করলেও তারা কোনো প্রতিকার করেনি।’

মোহামেডানের এই মুহূর্তের একমাত্র দাবি কার্ডসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে নিষিদ্ধ হওয়া রাসেল মাহমুদ জিমির শাস্তি প্রত্যাহার করা।  লিগের বাইলজ অনুযায়ী একজন খেলোয়াড় তিনটি হলুদ কার্ড পেলে পরের এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হবেন। গত ১৬ এপ্রিল ঊষা ক্রীড়াচক্রের বিপক্ষে ৬-৫ গোলে জেতা ম্যাচে  লিগে তৃতীয় বারের মতো হলুদ কার্ড দেখেন মোহামেডান অধিনায়ক জিমি। ফলে আবাহনী ম্যাচে তিনি নিষেধাজ্ঞার খড়গে পড়েন। 

ঊষার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে জিমির নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মোহামেডানকে চিঠি দিয়ে অবহিত করে ফেডারেশন। কিন্তু মোহামেডানের দাবি- বাইলজ অনুযায়ী জিমির দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের পর ফেডারেশন তাদের চিঠির মাধ্যমে সতর্ক করেনি। লিগ কমিটির বিরুদ্ধে বাইলজ পুরোপুরি অনুসরণ না করার অভিযোগ এনেছে ক্লাবটি। গত বুধবার এক চিঠিতে জিমির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে ফেডারেশনকে চিঠিও দেয় তারা। তবে সেদিনই  হকি  ফেডারেশন মোহামেডানের  চিঠির জবাব দেয়। চিঠিতে  তারা  লিখেছে, ‘রাসেল মাহমুদ জিমি চলতি লিগে ৪২ ও ৬৩ নম্বর ম্যাচে দুটি হলুদ কার্ড পাওয়ায় মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়। পরবর্তী সময় ৬৬ নম্বর ম্যাচেও সে একটি হলুদ কার্ড প্রাপ্ত হওয়ায় মোট তিনটি কার্ড প্রাপ্ত হয়। তিনটি ম্যাচের ম্যাচ রিপোর্ট শিটে আপনার ক্লাবের ম্যানেজার সব কিছু বুঝে অবগত হয়ে সাক্ষাৎ করেছেন।’ কিন্তু মোহামেডান পাল্টা আরেকটি চিঠি দিয়ে ফেডারেশনকে বলেছে, ম্যানেজার সাক্ষাৎ করেছে ম্যাচের আগে। ম্যাচের শেষে নয়। এসব নিয়েই পরিস্থিতি এখন বেশ ঘোলাটে। যেখানে সবাই অপেক্ষায় রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ দেখার, সেখানে ম্যাচটাই ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম। মোহামেডান কর্মকর্তা সারওয়ার হোসেন সরাসরি বলে দিয়েছেন, ‘যদি আমাদের ন্যায্য দাবি না মানে, তাহলে আমরা খেলায় অংশ নেওয়ার থেকে বিরতি থাকব।’ এমনকি মোহামেডান আর হকিতে থাকবে কি না, সে নিয়ে চিন্তা করবেন বলেও জানিয়েছেন ক্লাবটির কর্তারা। দলটির ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স তো সরাসরি বলেছেন, ‘জিমির কার্ডটি পরিকল্পিত।’ সারওয়ারের দাবি, ‘নির্দিষ্ট দুটি ক্লাবকে সুবিধা দিতে জিমিকে অন্যায়ভাবে তৃতীয় হলুদ কার্ডটা (ঊষার বিপক্ষে) দেওয়া হয়েছে।’ মোহামেডান ম্যানেজার প্রিন্স ফেডারেশন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও। এমন চেয়ারে থেকেও তিনি ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের দিকে আঙুল তুলে বলেন, ‘সব সিদ্ধান্তই তিনি নেন একা, রাতের আঁধারে।’

সাঈদ অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। জিমির নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মোহামেডানের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সবকিছু বাইলজ মেনেই হয়েছে। মোহামেডান যদি ম্যাচে অংশগ্রহণ থেকে বিরতি থাকে, সে ক্ষেত্রে বাইলজ অনুযায়ীই কাজ হবে। আম্পায়ার মাঠে যাবে। তিনি তার হুইসেল বাজাবেন। প্রতিপক্ষ নিয়ম অনুযায়ী পয়েন্ট পাবে। সে ক্ষেত্রে হকি ফেডারেশনের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।’

জিমি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পাওয়ার পর ফেডারেশন চিঠি দেয়নি বলে যে অভিযোগ মোহামেডানের, এ নিয়ে সাঈদ বলেন, ‘বাইলজের কোথাও লেখা নেই চিঠির মাধ্যমে এটা জানাতে হবে। অবহিত করার যে বিষয়টি উল্লেখ আছে, সেটা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাদের করা হয়েছে।’

১৪ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ মোহামেডান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবাহনীর পয়েন্ট ৩৪। সমান ৩৪ পয়েন্ট ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মেরিনার ইয়াংসের। এই তিন দলেরই রয়েছে শিরোপা জয়ের সুযোগ। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের আগে বাংলাদেশ পুলিশের বিপক্ষে খেলবে মেরিনার্স। এই ম্যাচ যদি মেরিনার্স জেতে আর আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ড্র হয় তাহলে চ্যাম্পিয়ন হবে মেরিনার্স। ঊষা ও আবাহনীর পয়েন্ট সমান হয়ে যাওয়ার সুযোগও আছে। কিন্তু মাঠের এই রোমাঞ্চই তো ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম।

প্যারিস অলিম্পিক কেবল অংশগ্রহণেই কেন আনন্দ খোঁজা?

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪১ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪২ এএম
কেবল অংশগ্রহণেই কেন আনন্দ খোঁজা?
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর অলিম্পিক গেমসের ৩৩তম আসরের পর্দা উঠেছে গতকাল। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’খ্যাত এই আসরে রয়েছে বাংলাদেশেরও অংশগ্রহণ। তবে পক্ষকালজুড়ে ৩২টি ডিসিপ্লিনে ৩২৯ ইভেন্টের যে পদকের লড়াই হবে, তার কোনো একটিতে বাংলাদেশের কাউকে জয়ীর বেশে দেখাটা দূরকল্পনা। বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের জন্য অলিম্পিক মানেই যে কেবল অংশ গ্রহণের আনন্দ! 

৯৮৪ সাল থেকেই নিয়মিত অলিম্পিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্যারিস অলিম্পিকের পাঁচজন দিয়ে বাংলাদেশের অলিম্পিয়ানের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৫৪ জনে। কিন্তু গত ৩০ বছরে এদের কেউই কোনো পদক জয়ের কাছাকাছিও যেতে পারেননি। এই দৃশ্যপট বদলাচ্ছে না কেন? দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম সফল তারকা শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকীর মতে, বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাও সামর্থ্য রাখেন পদক জয়ের। তবে এজন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। উন্নত প্রশিক্ষণ আর বেশি বেশি আন্তর্জাতিক গেমে অংশগ্রহণ জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। অন্যদিকে সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শীলা বিশ্বাস করেন, অলিম্পিকে বাংলাদেশের চিত্রটা দিনে দিনে বদলাচ্ছে। তিন আসর ধরে একজন করে ক্রীড়াবিদ কোটা প্লেস অর্জন করে অলিম্পিকে খেলছেন। এই বিষয়টি উল্লেখ করে বাকীর মতো শীলাও বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা গ্রহণ করলে বাংলাদেশও পারবে অলিম্পিকের পদক তালিকায় নিজেদের নাম তুলতে।

কমনওয়েলথ গেমসে দুটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ জয়ী শুটার বাকী মনে করেন, অলিম্পিক পদক জয় বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব কিছু নয়। তার কথায়, ‘শুটিংটা অনেক ক্লোজ। এবার রবিউল ইসলাম অংশ নিচ্ছেন। ও প্র্যাকটিসে ৬৩০ প্লাস স্কোর করে। এই স্কোর করতে পারলে ও নিশ্চিতভাবেই ফাইনালে খেলবে। আর ফাইনালে খেলতে পারলে তো যেকোনো কিছুই হতে পারে। এখন জরুরি হচ্ছে কম্পিটিশনের দিনে ওই স্কোরটা করা।’ কিন্তু বাংলাদেশের শুটারদের সেটাই যে করা হয় না। দায়টা খেলোয়াড়দের দেওয়ার উপায় নেই। কারণ এ ধরনের বড় গেমসে নার্ভ ধরে রাখার উপায় একটিই- বড় বড় মঞ্চে নিয়মিত খেলা। কিন্তু বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা যে সেই সুযোগটাই পায় না। বাকী যেমন একটা উদাহরণ দিলেন, ‘গলফ ও আর্চারি থেকে কোটা প্লেস অর্জন করে আমরা অলিম্পিকে খেলেছি। আমরা শুটাররাও কিন্তু কোটা প্লেস নিয়ে অলিম্পিকে যেতে পারি। কিন্তু কেন জানি ভাগ্যটা আমাদের পক্ষে থাকে না। যদি পাঁচটা কোটা প্রতিযোগিতা থাকে, তাহলে এগুলোর সবগুলোতে আমরা যেতে পারি না। কয়েকটি প্রতিযোগিতায় ২-৪ জন শুটার যায়, সেখানে হয়তো আরও ৮-১০ জন যাওয়া উচিত।’ 

এমনটা হলে হয়তো কোনো না কোনো শুটার ঠিকই কোটা প্লেস পেয়ে যেতেন। এবারই যেমন শুটার রবিউল ইসলাম কোটা প্লেস অর্জনের খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন। আবদুল্লাহ হেল বাকী যোগ করে বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত কোটা প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশ নেওয়া উচিত। যদিও ফেডারেশন অনেক চেষ্টা করে। হয়তো অনেক ব্যয়বহুল এজন্য হয় না। সরকার, ক্রীড়া পরিষদ, অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন, স্পন্সর প্রতিষ্ঠান- সবাই মিলে যদি চেষ্টা করে, তাহলে হয়তো এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।’ সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে শুটিংয়ে হয়তো আসলেই পদকের কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব। কিন্তু ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ও সুইমিংয়ে? অলিম্পিকে অ্যাথলেটিক এবং সাঁতার ঘিরেই সবার আগ্রহ থাকে বেশি। খেলাধুলার প্রাণই যে এই দুই ডিসিপ্লিন। এসএ গেমসে জোড়া স্বর্ণজয়ী সাঁতারু শীলার কথায়, ‘ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড এবং সুইমিং ইভেন্টে ভালো করাটা অনেক কঠিন। এ জন্য অনেক ভালো প্ল্যানিং, দীর্ঘমেয়াদি ট্রেনিং দরকার। কারণ এখানে অনেক ভালো ভালো দেশ খেলে।’ তাই বলে অসম্ভবও মনে করেন না শীলা, ‘ভারত কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা করে ঠিকই অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমার কাছে মনে হয়, উন্নত সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে ট্রেনিং করতে পারলে উন্নতি সম্ভব। সরকার, ফেডারেশন, অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এজন্য।’

বাংলাদেশে শুটিং, সাঁতার, অ্যাথলেটিকসের মতো খেলাগুলো বেঁচে আছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো কিছু সংস্থার জন্য। এই জায়গাটায় বিভিন্ন ক্লাবের এগিয়ে আসা উচিত বলেও মনে করেন বাকী ও শীলা দুজনই। ‘সাঁতারের কথা যদি বলি, আমাদের এখানে বাহিনী এবং বিকেএসপির বাইরে কজন সাঁতারু বড় বড় গেমে যাচ্ছেন? এটা তো ক্লাবভিত্তিক খেলা হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের এখানে সাঁতারে ক্লাবের অস্তিত্ব কোথায়?’- বলেন শীলা।

সাঁতার-অ্যাথলেটিকসে যারা বিশ্বসেরা, তাদের থেকে প্রাকৃতিকগতভাবেই বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে। তবে শীলা বিষয়টি মানতে নারাজ, ‘সেটা হলে আমরা তো সাফ গেমসে স্বর্ণ পেতাম না। ভারত তো ঠিকই এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা একই আবহাওয়ায় বসবাস করি। আমাদের উচ্চতা-ওজন ওদের সঙ্গে খুবই মিল। আমাদের ন্যাচারাল কাঠামো আসলে খারাপ না। আসলে শুধু পরিকল্পিত পরিকল্পনা দরকার আমাদের।’

প্যারিস অলিম্পিক উদ্বোধনের আগে অস্বস্তি

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
উদ্বোধনের আগে অস্বস্তি
ছবি: সংগৃহীত

‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত অলিম্পিক গেমস বসেছে এবার ফ্রান্সের প্যারিস শহরে। তবে নয়নাভিরাম উদ্বোধনের আগেই কিছুটা অস্বস্তিতে ছিল ভালোবাসার শহর হিসেবে বিশ্বে সুপরিচিত প্যারিস।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত ১১টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। তার কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সের দ্রুতগতির রেল নেটওয়ার্কে হামলা চালায় দুষ্কৃতকারীরা। যাতে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল। যদিও শেষ পর্যন্ত এই হামলা তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে প্যারিসে দ্রুতগতির রেল নেটওয়ার্কে (টিজিভি) অগ্নিসংযোগসহ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে করে তিনটি অঞ্চলের রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শুক্রবার ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় ট্রেন পরিচালনাকারী সংস্থা এসএনসিএফ এসব কথা জানিয়েছে। এসএনসিএফ কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাতের বেলায় একযোগে রেল নেটওয়ার্কে কয়েকবার হামলা চালানো হয়। এতে আটলান্টিক অঞ্চল, উত্তরাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলের লাইনগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার পর রেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রেল যোগাযোগব্যবস্থা মেরামত করতে কমপক্ষে পুরো সপ্তাহ লেগে যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ফ্রান্সের পরিবহনমন্ত্রী প্যাত্রিশ ভারগারিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগব্যবস্থা চালুর চেষ্টার জন্য ভারগারিত এসএনসিএফকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

এবারের প্যারিস অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছে ২০৬টি দেশের সাড়ে ১০ হাজার অ্যাথলেট। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশের উদ্বাস্তুদের নিয়ে একটি দল গড়া হয়েছে। এবারের অলিম্পিকে থাকছে ৩২ ধরনের খেলা। রয়েছে ৩২৯টি পদক ইভেন্ট। এর মধ্যে পুরুষদের ১৫৭টি, ১৫২টি মহিলাদের ও ২০টি পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে।

লন্ডনের পরে প্যারিসই দ্বিতীয় শহর যেখানে তিনবার অলিম্পিক আয়োজন হতে চলেছে। প্যারিস প্রথম অলিম্পিক আয়োজন করে ১৯০০ সালে। এরপর ১৯২৪ সালে। একশ বছর পর তৃতীয়বারের মতো অলিম্পিকের বৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ বসেছে প্যারিসে। তিনবার অলিম্পিক আয়োজনের রেকর্ড আছে ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরেরও। ১৯০৮ সালে প্রথমবারের মতো অলিম্পিক আয়োজন করে শহরটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৮ সালে দ্বিতীয়বার। এর প্রায় ৬৪ বছর পর ২০১২ সালে তৃতীয়বারের মতো অলিম্পিক আয়োজন করে লন্ডন।

অলিম্পিক আয়োজনের স্বত্ব পাওয়ার শুরুর দিকে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে ফ্রান্সকে। একের পর এক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে ফ্রান্সের সরকার। প্যারিসের প্রশাসনকে সামলাতে হয়েছে বিমানবন্দরের কর্মীদের বিক্ষোভ থেকে শুরু করে আয়োজনের খরচের দিকও। সেই সব বিপত্তি সামলে তৈরি প্যারিস। গত ২৪ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে প্যারিস অলিম্পিকের যাত্রা। যার পর্দা নামবে আগামী ১১ আগস্ট।

এবারের প্যারিস অলিম্পিকে পদকে থাকছে একটু ভিন্নতা। যে পদক দেওয়া হবে তা আইফেল টাওয়ার থেকে কেটে নেওয়া লোহার টুকরো দিয়ে তৈরি। প্যারিসের ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়াযজ্ঞে থাকছে বাংলাদেশও। লাল-সবুজ পতাকার প্রতিনিধি হিসেবে আছেন পাঁচজন। তারা হলেন স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমান, আর্চার সাগর ইসলাম, সাতারু সোনিয়া ইসলাম ও সামিউল ইসলাম রাফি, শুটার রবিউল ইসলাম। বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক থেকে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশে হিসেবে অলিম্পিকে এখনো পদকশূন্য বাংলাদেশ!

প্যারিস অলিম্পিক নয়নকাড়া-ব্যতিক্রমী জাঁকালো উদ্বোধন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৪০ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৪০ এএম
নয়নকাড়া-ব্যতিক্রমী জাঁকালো উদ্বোধন
ছবি: সংগৃহীত

পানি দিয়ে তৈরি করা হলো বিশেষ পর্দা। সেই পর্দা ভেঙে পন্ট ডি’এলিনা ব্রিজের তলা দিয়ে বের হয়ে এল গ্রিস। তার পেছনে উদ্বাস্তু অলিম্পিক দল। এরপর একে একে নিজ দেশের পতাকা নিয়ে অংশগ্রহণকারী সব দলের মার্চ পাস্ট। ফ্রান্সের সিন নদী তখন নানা রঙে সজ্জিত। মার্চ পাস্টের ফাঁকে ফাঁকে দর্শকদের মোহিত করলেন লেডি গাগা, আয়া নাকমুরাসহ তারকা পপ স্টারদের গান। ভালোবাসার শহর প্যারিস, সে উপলক্ষে থাকল বিশেষ এপিসোড। সব মিলিয়ে নয়নকাড়া-ব্যতিক্রমী জমকালো উদ্বোধনের মধ্যে পর্দা উঠেছে প্যারিস অলিম্পিক গেমসের। 

অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সাধারণত হয়ে থাকে স্টেডিয়ামে। সেই ধারা থেকে এবার বের হয়ে এসেছে ফ্রান্স। প্যারিসের প্রাণখ্যাত সিন নদীকে দারুণ ঢঙে ব্যবহার করে গোটা বিশ্বকে মনমুগ্ধকর এক অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছে ফরাসিরা। আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত এই শহরেই চলবে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ। যেখানে অংশ নিয়েছেন ২০৬টি দেশের সাড়ে ১০ হাজার অ্যাথলেট। ৩৫টি ভেন্যুতে ৩২ খেলায় চলবে ৩২৯ ইভেন্টের পদকের লড়াই। পাঁচ সদস্যের দল নিয়ে অলিম্পিকে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশও। মার্চ পাস্টে বাংলাদেশের হয়ে পতাকা বহন করেন আর্চার সাগর ইসলাম। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে বৃষ্টিস্নাত ছিল প্যারিসের শহর। তাতে অবশ্য ম্লান হয়ে যায়নি বর্ণিল উদ্বোধন। ৯৪টি নৌকা ও বার্জে করে ৭ হাজার প্রতিযোগী আইফেল টাওয়ারের পূর্ব কোণের অস্টারলিটজ সেতু থেকে ট্রোকাড রোতে পৌঁছান। যাদের উচ্ছ্বাস-আনন্দ নদীর ধারে উপভোগ করেছেন কয়েক লক্ষাধিক দর্শক।

অ্যাথলেট ও পারফরমাররা নৌকায় পাড়ি দেন প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ। উস্তালিজ সেতু থেকে চলা শুরু করে নৌকা নথু-দেম ক্যাথেড্রালের পাশ ঘেঁষে, আরও অনেক সেতুর নিচ দিয়ে অনেক গেটওয়ে ধরে প্যারিসের দর্শনীয় নানা জায়গা ছুঁয়ে আইফেল টাওয়ারের কাছে গিয়ে শেষ হয় ভ্রমণ। পুরো যাত্রাপথের আকাশ ও পানিতে ছিল রঙের খেলা। পথে দুই ধারে নদীর তীরে, সেতুর ওপরে এবং চারপাশে গান, নাচসহ নানা পারফরম্যান্সে রঙিন হলো প্যারিসের আকাশ। প্যারেডের পাশাপাশি নদীর দুই তীরে চলেছে ফ্রান্সের দেশজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নটর ডেম ক্যাথিড্রালের সামনে হলো গান। পারফর্ম করেন মুল্যাঁ রুজ। এতে ফিরে এল ১৮২০-এর দশকে সৃষ্টি হওয়া একটি বিশেষ নাচ। মার্কিন পপ তারকা লেডি গাগা গাইলেন নিজস্ব ঢঙে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আয়া নাকামুরার পারফরম্যান্স। ফরাসি ভাষা জানা শিল্পীদের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় শিল্পী পারফর্ম করেন এতে। মাঝে দেখা গেল রহস্যময় এক মশালবাহককে। কখনো ভিডিওতে, কখনো বাস্তবে পুরো শহর চষে বেড়ালেন তিনি।

অলিম্পিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল উপস্থাপক ছিলেন এনবিসির মাইক তিরিকো। সঙ্গে ছিলেন হোদা কোতব, সাবানা গুথরি ও মারিয়া টেলর। সংগীতশিল্পী কেলি ক্লার্কসন, সেলিন ডিওনের গান মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। 

ফ্রান্সের থিয়েটার ডিরেক্টর থমাস জলির পরিকল্পনায় পুরো অনুষ্ঠান মোট ১২টি ভাগে ভাগ করা হয়। এতে অংশ নেন তিন হাজারের মতো নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও বিনোদনকর্মী। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা সিন নদীর দুই তীরে, সেতুতে ও কাছাকাছি স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় নিজেদের কারিকুরি দেখান। সব মিলিয়ে বিশ্ব দেখল অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের এক অনন্য আয়োজন। কোনো স্টেডিয়াম কিংবা নির্দিষ্ট আঙিনায় নয়, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্যতিক্রমী এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নদীর তীরে ও নদীকেন্দ্রিক করে প্রতিশ্রুত ‘সাহসী’ আয়োজনের মূল ছাপ রাখলেন ফরাসিরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রায় এক শর বেশি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে। নদীর তীর ধরে উদ্বোধনী আয়োজন উপভোগ করেন ৩ লাখের বেশি দর্শক। পথের নানা জায়গায় ছিল ৮০টি বিশালাকৃতির স্ক্রিন।

সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মন কেড়েছে সবার। এবার পদক লড়াইয়ের পালা। যা পদকের লড়াই ছাপিয়ে খেলার চিরন্তন চেতনার উদযাপন। এটি অনেকটা বিশ্বভ্রাতৃত্বেরও। মানুষে মানুষে সংযোগ স্থাপনের মঞ্চ যে এই অলিম্পিক গেমসই।

 

ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:০১ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:০১ পিএম
ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের
ছবি: সংগৃহীত

এশিয়া কাপ শুরুর আগে বাংলাদেশের সামনে দুশ্চিন্তার কারণ ছিল ব্যাটিং ইউনিটের ব্যর্থতা। কঠিন দুই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পুরোনো ওই সমস্যা জেগে ওঠে নিগার সুলতানা জ্যোতি বাহিনীর সামনে। ওই ব্যাটিং ব্যর্থতায় সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ১০ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ডাম্বুলায় নারী এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে মাত্র ৮০ রান তোলে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ছাড়া আর কেউ ভারতীয় বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। বাকিরা ছিলেন সবাই যাওয়া আসার মিছিলে। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে জ্যোতির ব্যাটে আসে ৩২ রান। এই ইনিংস খেলতে তিনি খরচ করেন ৫১ বল। এছাড়া ১৯ রান আসে স্বর্ণা আক্তারের ব্যাটে। 

ভারতের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন রেনুকা সিং ও রাধা যাদব। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন পুজা ভাস্ত্রেকার দীপ্তি শর্মা।

৮১ রানের ছোট লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওপেনিং জুটিতে জয় নিশ্চিত করে ভারত। বাংলাদেশি বোলারদের উপর দাপট দেখিয়ে ১০ উইকেটের জয় তুলে নেয় এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়ার পথে স্মৃতি মান্ধানা ৫৫ ও শেফালি ভার্মা ২৬ রান করেন।
 

সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০২:২০ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০২:২১ পিএম
সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
ফাইল ছবি

ডাম্বুলায় নারী এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে শুক্রবার (২৬ জুলাই) মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এই ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই বাড়তি উন্মাদনা। ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়েও থাকবে সেই উন্মাদনা। টসের সময় ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রীত কাউর বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) সব দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা উপহার দেয়। আশা করি দারুণ লড়াই হবে।’

সেমিফাইনালে বাংলাদেশের একাদশে এসেছে এক পরিবর্তন। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে একাদশে থাকা সাবিকুন নাহারের বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন মারুফা আক্তার। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে তাকে রাখা হয়েছিল সাইড বেঞ্চে।

পার্থ/সালমান/