মধ্যরাতে রাবি ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া দেন সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীরা। ছবি : খবরের কাগজ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছেন সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীরা।
শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদের হলে প্রবেশের খবরে গতকাল সোমবার (১৩ মে) দিবাগত রাত দেড়টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের সামনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ জড়ো হন তাদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশ সদস্যরা সোহরাওয়ার্দী হলে অভিযান চালালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। অভিযান শেষ হলে রাত সাড়ে ৪টার দিকে নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, নিয়াজ মোর্শেদ এবং তার সহযোগীরা হলে অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে রাত দেড়টার পর থেকেই মাদার বখ্শ হলের সামনে জড়ো হতে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী বিভিন্ন হলের নেতা-কর্মীরা। এ সময় প্রায় সবার হাতে রড, স্টাম্প ও দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক সেখানে উপস্থিত হন। রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সউদ, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পাণ্ডে, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক সোহরাওয়ার্দী হলে বহিরাগত প্রবেশ করেছেন বলে অভিযোগ করেন। এরপর পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলে অভিযান চালায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন। পরে রাত সাড়ে ৪টার দিকে অভিযান শেষ হলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় আশপাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, ডিবি এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের দেখা গেছে। তবে নিয়াজ মোর্শেদ বা তার অনুসারী কাউকে হলে বা তার আশপাশে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘জোহা হল এবং মাদার বখ্শ হলের ছাদ থেকে আমার নেতা-কর্মীরা নিয়াজকে বহিরাগতসহ ডাইনিংয়ের ছাদ দিয়ে হলে ঢুকতে দেখেছেন। বিষয়টা আমি জানতে পেরে প্রক্টর স্যারকে অবহিত করি। পরে প্রক্টর পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় হলে অভিযান চালান।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, ‘আমি আমার নেতা-কর্মীসহ হলে প্রবেশ করেছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলে অভিযান চালিয়ে কোনো বহিরাগত বা কোনো অস্ত্র পায়নি।’
প্রায় দুই ঘণ্টা সোহরাওয়ার্দী হলে অভিযান শেষে ভোর ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি সূত্র থেকে হলে বহিরাগত প্রবেশের খবর পেয়ে রেড দিই। এ সময় আমরা একটি চায়নিজ কুড়ালের অংশবিশেষ পেয়েছি। এ ছাড়া কিছু সন্দেহজনক কক্ষে অভিযান চালাই। এ সময় আমরা কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পাই। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে হল প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’