চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদসহ চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আজ রবিবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা এই ধর্মঘট চলবে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মো. মুছা খবরের কাগজকে বলেন, চুয়েটে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদসহ চার দফা দাবিতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এতে পোড়ানো গাড়ির ক্ষতিপূরণ, বিনা অপরাধে ড্রাইভার-হেলপারদের গ্রেপ্তার না করা, সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, নছিমন-করিমন-ভটভটি, অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ করা ও চুয়েটে যারা গাড়ি পুড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা মোহাম্মদ মহি উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত বাসচালককে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে। বিষয়টির আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মালিকপক্ষ ক্ষতিপূরণও দিচ্ছে। কিন্তু মালিকপক্ষের যে আরও তিনটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? তার বিচারও প্রচলিত আইনে করা হোক। আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। চুয়েটের ঘটনায় ছাত্রদের সঙ্গে অছাত্র-বহিরাগতরাও গাড়ি পোড়ানোয় জড়িত। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক। আমাদের ধর্মঘট আপাতত ৪৮ ঘণ্টা চলবে। দাবি মানা না হলে তা আরও বাড়ানো হবে।’
গত সোমবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এর জের ধরে ওই দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। এরই মধ্যে গত বুধবার ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে ২০ জনের একটি প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা চুয়েটের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন। এরপর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। ওই বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে আগামী ৯ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়। গত শুক্রবার বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। তবে পরে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবেন। যদিও জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।