স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র-আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে দেশব্যাপী পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ।
এদিকে দেশের অন্যান্য জেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে সবচেয়ে বেশি উত্তাল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ইউনিটের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। এছাড়া ঢাবির সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে শোভা পায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা।
সোমবার (৬ মে) ঢাবির মধুর ক্যানটিনের সামনে থেকে এক পদযাত্রা শুরু হয়। এসময় পদযাত্রায় অংশ নেওয়ারা ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন-স্টপ জেনোসাইড, স্বৈরাচার নিপাত যাক-ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, উই ওয়ান্ট জাস্টিস-জয় জয় ফিলিস্তিন, ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি-প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
পদযাত্রাটি ভিসি চত্বর-ফুলার রোড-কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার হয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পৌঁছালে পরে সেখানে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, আমাদের এই ছাত্র আন্দোলন দেশের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন যুদ্ধ-মুক্ত, ন্যায় ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সেই সীমান্ত ব্যারিকেড, ভাষার ব্যবধান সবকিছু মুছে গিয়ে একাকার হয়ে গেছে। আমাদের পূর্বপুরুষরা নিজেদের দেশের মুক্তির জন্য বীরত্বের সঙ্গে যেভাবে লড়াই করেছে ঠিক তেমনি আমরাও ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের পাশে দাঁড়াবো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, গণতন্ত্রের মোড়লরা যারা বাকস্বাধীনতার সার্টিফিকেট দেয় এবং বলে দেয় কোন দেশটি গণতান্ত্রিক আর কোনটি অগণতান্ত্রিক। আজ তাদের মুখোশ কীভাবে উন্মোচিত হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের জন্য যারা অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেছেন, তাদের দেশ থেকেই দুর্বার আন্দোলনের জয়ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তাদের দেশে ১৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আন্দোলন চলমান, সেখানে আড়াই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যারা ফিলিস্তিনে এই নরকীয় গণহত্যা চালাচ্ছে তাদের মানবতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযুক্তদের বিচারের আহ্বান জানান এই ছাত্রলীগ নেতা।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে বাঁধভাঙা গণজোয়ার, তা সেই গাজা উপত্যকায় গিয়ে লাগবে এবং গাজা উপত্যকা থেকে সব অন্যায়, অবিচার, অপশাসন ভেসে যাবে। শেখ মুজিবুর রহমান দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত- শোষক আর শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে। তার হাতে গড়া সংগঠন আমরাও জানিয়ে দিতে চাই সারাবিশ্বের শোষিত, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে থাকব, অত্যাচারিত মানুষের পক্ষে থাকব।
ছাত্রলীগের সমাবেশে ফিলিস্তিনিদের ধন্যবাদ: ঢাবিতে রাজু ভাস্কর্যের ভাস্কর্যে অংশ নেয় ফিলিস্তিন শিক্ষার্থীরা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক আকিব মুহাম্মদ ফুয়াদ, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম, মহানগর দক্ষিণ সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি, সাধারণ সম্পাদক বাবু সজল কুন্ডু প্রমুখ।
আরিফ জাওয়াদ/এমএ/