![সফল নেতৃত্ব দেওয়ার কৌশল](uploads/2024/03/25/1711345670.kar-jab-3.jpg)
নেতৃত্বের সংকটে একটি জাতি ধ্বংসের মুখোমুখি হয়। কারণ শুধু নেতার ভুলের জন্যই পণ্ড হয় সবকিছু। যেকোনো সংগঠন, সমাজ বা রাষ্ট্রের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় হলো যোগ্য নেতৃত্ব। প্রকৃত নেতৃত্ব তখনই গড়ে ওঠে যখন কতগুলো নির্দিষ্ট বিষয় একযোগে কাজ করে এবং সফলতা অর্জিত হয়।
অফিসে, ঘরে কিংবা বাইরে অনেক ভালো মানের নেতাও অনেক সময় সবাইকে নিয়ে কাজ করার গুরুত্ব বুঝতে পারেন না। নেতা হিসেবে দলের সবার মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। যাতে দলের প্রত্যেকে এটা বুঝতে পারে যে তারা প্রত্যেকে সমানভাবে তার ন্যায্য অধিকার পাবে। তারা প্রত্যেকেই দলে সমান গুরুত্বপূর্ণ এবং দলে কোনো গোপন পক্ষপাতিত্ব নেই, যা উন্নয়নে বাধা দেয়।
নিচের উপায়গুলো অবলম্বন করলে আপনি সহজেই নেতৃত্ব দিতে পারবেন-
সবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা: অফিস পার্টি, কোম্পানি রিট্রিট এবং একসঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়া যেকোনো প্রতিষ্ঠানেরই অংশ। কিন্তু দলনেতাকে এটা দেখতে হয় যে, সবাই সেখানে আসে এবং কেউ যাতে তাকে অনাকাঙ্ক্ষিত না ভাবে। দলের সবাই একসঙ্গে ডিনারে যাবে এটা ভালো উদ্যোগ কিন্তু অনেকেই আছেন যাদের পক্ষে সন্ধ্যাটা ডিনারের জন্য ব্যয় করা সম্ভব নয়, তাই নেতাকে দেখতে হয় যাতে এসব অনুষ্ঠান ছুটির দিনে হয় যাতে সবাই অংশ নিতে পারে।
দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা: অনেক নেতা আছে যারা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং দায়িত্বশীলতা সব সময় এড়িয়ে চলেন। অনেক ক্ষেত্রেই ভালো নেতার কাছ থেকে পারফেক্ট কাজ আশা করা হয় না। আশা করা হয় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি। প্রকৃত নেতৃত্ব গড়ে ওঠার পেছনে এই স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং দায়িত্বশীলতার বিরাট অবদান। কারণ এই বিষয়গুলো যার মধ্যে আছে তিনি সবার কাছে বিশ্বাসী এবং যোগ্য নেতা হিসেবে জায়গা করে নেন।
কথা বলার সময় সতর্ক থাকা: মুখের ভাষার দ্বারা মানুষ আহত হয়, তাই শব্দ নির্বাচনে সতর্ক থাকা উচিত। সব সময় সব কথাই যে খুব চিন্তা করে বলতে হবে এমন নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে অনেক সময় অনেক খেয়ালী মন্তব্য অথবা হাসি কেউ কেউ অন্যভাবেও নিতে পারে। কেউ যদি বলে কারও কথা বলায় ভুল ছিল, তর্ক না করে তা মেনে নেয়া উচিত, ক্ষমা চাওয়া উচিত।
সবাইকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া: দলনেতাকেই এটা নিশ্চিত করতে হয় যে, আলোচনা সভায় সবাই যেন কেবল বসে না থাকে বরং কথা বলে। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করে অংশগ্রহণ করতে পারে। যদি এমনটি হয় যে আলোচনায় কেবল মাত্র গুটিকয়েক মানুষ অংশ নিতে পারবে তবে সে আলোচনা অর্থহীন।
নিয়োগ এবং পদোন্নতি: সব সময় নিয়োগ এবং পদোন্নতির সিদ্ধান্ত কেবল মাত্র প্রত্যেকের কর্মদক্ষতা ও যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে নিতে হবে। তবে যারা সিদ্ধান্ত নেবেন তারা যাতে পক্ষপাতমুক্ত হয় তার দিকে লক্ষ রাখা উচিত। যখন কোনো কর্মীর কাজের মূল্যায়ন হয় তখন যাতে সেই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রভাবমুক্ত হয়। নিরপেক্ষ থাকতে চেষ্টা করতে হবে এবং অন্যদেরও এমন হতে উৎসাহিত করতে হবে।
মেধা অন্বেষণ প্রকল্পকে গোপন না রাখা: মেধা অন্বেষণ প্রকল্পকে কোনো বিভাগ বা দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত না। যখন একজন যোগ্য ব্যক্তিকে খোঁজা হয় যে তার কাজের দ্বারা অন্যদের চেয়ে বেশি দিতে পারে, তখন সে অন্বেষণের কথা প্রচার করা দরকার। হয়তো অযাচিতভাবে সেই বিশেষজনকে পাওয়া যায়।
এই উপায়গুলো সহজ এবং স্পষ্ট। কিন্তু কখনো কখনো সহজ নিয়ম পালন করাই অনেক কঠিন হয়ে ওঠে। দলনেতাকেই অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণের কথা মাথায় রাখতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠানে একটি সুন্দর কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
কলি