জেলা প্রশাসন থেকে নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসে চট্টগ্রামে গণপরিবহন মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। জেলা প্রশাসন নিরাপত্তা দিয়ে গাড়ি চালানোর আশ্বাসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট স্থগিত করা হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অনুরোধে আমরা আমাদের চলমান ধর্মঘট স্থগিত করে নিচ্ছি। যদি আমাদের গাড়ি কোনো রকম হামলার শিকার হয়, তাহলে আমরা আবারও ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাউজান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিসির সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি প্রমুখ।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ মুছা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের চার দফা দাবির বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।’
এদিকে রবিবার সকাল থেকে ধর্মঘট স্থগিত করার আগ পর্যন্ত গণপরিবহন সংকটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের মানুষ। চৈত্রের আগুনঝরা রোদে গাড়ির জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়। একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে গাড়িসংকটের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ যাত্রীরা।
সকালে নগরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ধর্মঘটের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রাঙ্গামাটি, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-খাগড়াছড়ি, ঢাকা-বান্দরবানসহ বিভিন্ন জেলার গণপরিবহন চলেনি। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলা ও বান্দরবান এবং কক্সবাজারমুখী যাত্রীরা কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর মুখে জটলা করেন সকাল থেকেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদে দাঁড়িয়ে থাকেন যাত্রীরা।
চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদসহ চার দফা দাবিতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দেয় বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।