চট্টগ্রামে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ । খবরের কাগজ
ঢাকা ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

চট্টগ্রামে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ পিএম
চট্টগ্রামে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নালা ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) নগরের ফলমন্ডী থেকে স্টেশন রোডের উভয় পাশ ও নিউ মার্কেট মোড় থেকে জুবলী রোডের মুখ পর্যন্ত অভিযানটি পরিচালিত হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন চসিকের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরীন ফেরদৌসী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্বিদ্যা এবং স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজন। অভিযানে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

চসিকের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম বলেন, নালা ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা (টং দোকান) উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় শতাধিক অবৈধ স্থাপনার মালামাল জব্দসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ভেঙে দেওয়া হয়।

বানারীপাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
বানারীপাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
গোলাম ফারুক

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলাদ হোসেন সানা। 

মঙ্গলবার (১৫ মে) জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ অভিযোগ জমা দেন তিনি।

অভিযোগপত্রে জানা যায়, বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. গোলাম ফারুক গত ৯ মে উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ফকির বাড়িতে এক কর্মী সভায় বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই।’

মুহূর্তেই এই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ফলে নষ্ট হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ। পাশাপাশি ভোটাররা অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আবার ভোট না দিতে যাওয়ার কথা বলছেন। এমন অবস্থায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বীমূলক নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে বলে অভিযোগ করা হয়।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলাদ হোসেন সানা জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণকে উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বানারীপাড়ায় তা বাস্তবায়ন করতে হলে গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে। 

বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোস্তফা ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলাদ হোসেন সানা তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

৭ কোটি টাকার স্ক্র্যাপ সোয়া কোটিতে বিক্রি, তদন্তে দুদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
৭ কোটি টাকার স্ক্র্যাপ সোয়া কোটিতে বিক্রি, তদন্তে দুদক
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি : খবরের কাগজ

সাত কোটি টাকার স্ক্র্যাপ মাত্র এক কোটিতে বিক্রি করল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসায় চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, আট মাস আগে দরপত্রের মাধ্যমে ১ কোটি ২১ লাখ টাকায় লোহার স্ক্র্যাপ বিক্রি করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এসব স্ক্র্যাপের প্রকৃত মূল্য ছিল সাত কোটি টাকা। বন্দরের এই অনিয়ম ধরতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযানে নেমেছে। দুদকের তিন সদস্যের দল ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হকের নেতৃত্বে চলছে এ অভিযান। ইতোমধ্যে দুদকের তদন্ত দল বন্দরে গিয়ে কাগজপত্র ঘেঁটে দেখেছে। 

বুধবার (১৫ মে) থেকে অভিযোগ ওঠা ওই নিলামের লটের স্ক্র্যাপ আবারও পরিমাপ করা হচ্ছে, যা শেষ করতে তিন-চার দিন সময় লাগতে পারে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এসব লোহার স্ক্র্যাপ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

দুদক জানায়, তাদের টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সঙ্গে কথা বলার পর সংশ্লিষ্ট শাখার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। ঠিকাদারকে যে পরিমাণ মালামাল সরবরাহ করা হয়েছে এবং যে পরিমাণ মালামাল রয়ে গেছে সেগুলোর ওজন করে দেখা হচ্ছে। 

চট্টগ্রাম বন্দরের ভাণ্ডার শাখার ৩১, ৩২, ৫৮, ৫৯, ও ৬০ নম্বর লটে লোহার স্ক্র্যাপসহ অন্যান্য মালামাল বিক্রির কাগজ, রেকর্ডপত্র, স্টক রেজিস্ট্রার, মুভমেন্ট রেজিস্ট্রার ও স্টক করা মালামাল সরেজমিন পরিদর্শনে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক কর্মকর্তা মো. এনামুল হক। তিনি বলেন, গত বছর সেপ্টেম্বরে লোহার স্ক্র্যাপ বিক্রির দরপত্র আহ্বান করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেখানে সাত কোটি টাকার স্ক্র্যাপ ছিল। অথচ অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ওই লোহার স্ক্র্যাপ বিক্রি করা হয় মাত্র ১ কোটি ২১ লাখ টাকায়।

তিনি আরও বলেন, মালামাল ওজন করার কাজ চলছে। দুদকের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লটে নিলাম হওয়া স্ক্র্যাপের ওজন করা হচ্ছে। বুধবার এক দিনে কয়েকটি লটের ওজন করে ২২ মেট্রিক টন স্ক্র্যাপ পাওয়া গেছে। বাকিগুলো ওজন করতে আরও ৪-৫ দিন সময় লাগবে। 

সূত্রমতে, চট্টগ্রাম বন্দরের ভাণ্ডার শাখা থেকে নামমাত্র মূল্যে কার্যাদেশ দিয়ে পুরো টাকা কতিপয় কর্মকর্তা ও দুই প্রতিষ্ঠানের মালিক ভাগবাঁটোয়ারা করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বন্দরজুড়ে তোলপাড় চলছে।

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ডাকা নিলামে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। ১৬ জানুয়ারি মেসার্স আল-আমিন এন্টারপ্রাইজকে দুই লটের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ৫৮ নম্বর লটে ৫০ টন বা ৫০ হাজার কেজি স্ক্র্যাপ দেখানো হয়। এ লটে রয়েছে জাহাজ ও পন্টুনের পুরোনো প্রেইট, অ্যাঙ্গেল, গার্ডার ও অকেজো মালামাল। ২৭ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা দাম দেখানো হয়। একইভাবে ৬০ নম্বর লটে স্ক্র্যাপের পরিমাণ একই দেখানো হয়। মালামালও একই ধরনের। ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা দাম ধরা হয়। প্রকৃতপক্ষে এ দুই লটে স্ক্র্যাপের পরিমাণ প্রায় ৭৫০ টন। এভাবে ৫টি লটে অনিয়ম হয় বন্দরে। এ লটগুলোর নিলাম পায় মেসার্স আল-আমিন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। 

দুদদ কর্মকর্তারা বলেন, অভিযানে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও মালামালের ওজন পরিমাপের বিস্তারিত প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করা হবে।

ভোটের আড়াই বছর পর বিজয়ী হলেন পরাজিত প্রার্থী

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম
ভোটের আড়াই বছর পর বিজয়ী হলেন পরাজিত প্রার্থী
সৈয়দ মুজাহিদ আলী

মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যপদে পরাজিত হওয়ার আড়াই বছর পর আদালতে গিয়ে বিজয়ী হলেন সৈয়দ মুজাহিদ আলী। ভোট পুনর্গণনা করে তাকে ১০৩ ভোটের ব্যবধানে জয়ী ঘোষণা করেন আদালত।

গত ৩০ এপ্রিল মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী জজ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুমিনুল হকের আদালত এই রায় দেন। তবে বিষয়টি সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন টিউবওয়েল প্রতীকের সৈয়দ মোজাহিদ আলী ও ফুটবল প্রতীকের মো. আবু সুফিয়ান। কিন্তু ভোট গণনার পূর্বে প্রিসাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা অভিনব কায়দায় ফলাফল ঘোষণা করে কেন্দ্র থেকে চলে যান। এতে ৯৮ ভোটের ব্যবধানে সৈয়দ মুজাহিদ আলীকে পরাজিত দেখানো হয়। এরপর মুজাহিদ আলী মৌলভীবাজার নির্বাচনি আদালতে মামলা করেন। বিচারক মুমিনুল হক দীর্ঘ বিচারকার্য সম্পাদন করে ব্যালেটগুলো তলব করেন এবং প্রকাশ্যে আইনজীবীদের উপস্থিতিতে আদালতে ভোট পুনরায় গণনা করেন। এতে দেখা যায়, টিউবওয়েল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৬৮০টি ও ফুটবল প্রতীক পড়েছে ৫৭৭ ভোট। এই গণনায় কেউ কোনো আপত্তি না করায় আদালত টিউবওয়েল প্রতীকের সৈয়দ মোজাহিদ আলীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

আদালত আরও ঘোষণা করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফুটবল প্রতীকে মো. আবু সুফিয়ান বেআইনিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত প্রিসাইডিং অফিসার খালিশপুর মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মো. ইলয়াছ আলী, রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোতাহের বিল্লাহর বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাদী আদালতের মাধ্যমে ভোট পুনরায় ভোট গণনা করে সুষ্ঠু বিচার পেয়েছেন। বিবাদী বেআইনিভাবে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। অভিনব এই ভোট কারচুপির বিষয়টি উদ্ঘাটন হয়েছে।’

মুক্তিযোদ্ধার কবর খুঁড়তে গিয়ে মিলল গ্রেনেড সদৃশ বস্তু

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৭:২৮ পিএম
মুক্তিযোদ্ধার কবর খুঁড়তে গিয়ে মিলল গ্রেনেড সদৃশ বস্তু
কবর খুঁড়তে গিয়ে গ্রেনেড সদৃশ বস্তুটি পাওয়া গেছে। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক মুক্তিযোদ্ধার কবর খুঁড়তে গিয়ে গ্রেনেড সদৃশ একটি বস্তু পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মধ্যম আজমনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও জানাজানি হয়েছে আজ বুধবার (১৫ মে) সকালে। 

জানা যায়, ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইলিয়াছের কবর খুঁড়তে গিয়ে বস্তুটি পান গ্রামের মুরুব্বিরা। এরপর খবর দেওয়া হলে এক যুবক গিয়ে সেটি ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে সাংবাদিকরা ওসিকে জানালে পুলিশ গিয়ে সেটি সাময়িক সময়ের জন্য বালুতে চাপা দেন।

হিঙ্গুলি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহ আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘খবর পেয়ে সেখানে যাই। আমার এক আত্মীয় বলেন, এটি মাইন। এটি বিপদ ঘটাতে পারে। পুলিশ অবগত হয়েছে। শুনেছি তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এলাকাবাসীর কেউ কেউ উৎসাহ নিয়ে দেখতে ভিড় করছেন। আমরা ধারণা করছি এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের গ্রেনেড।’

জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন খবরের কাগজকে বলেন, ‘গতকাল এটি পাওয়া গেলেও আমাদের জানানো হয়েছে আজ সকালে। তবে এটি বিপজ্জনক হবে কি না, এটি আসলে কী সেটি আমরা বলতে পারব না। এটার জন্য স্পেশালিস্ট বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

মনির/সালমান/

গোপালগঞ্জে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৭:১০ পিএম
গোপালগঞ্জে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ
নিহতের মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। ছবি : খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় নিহত মো. ওয়াসিকুর রহমান ভূঁইয়ার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। তাদের অবরোধে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চন্দ্রদিঘলিয়ায়ও মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত হত্যার ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বুধবারের (১৫ মে) মধ্যেই দোষীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মে) অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে গোপালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-পরবর্তী বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান ভূঁইয়া ও পরাজিত প্রার্থী বি এম লিয়াকত আলীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কামরুজ্জামানের সমর্থকের গুলিতে লিয়াকত আলীর সমর্থক মো. ওয়াসিকুর ভূঁইয়া (২৭) নিহত ও পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনায় বুধবার বেলা ১১টায় ওয়াসিকুর ভূঁইয়ার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। বিক্ষোভ মিছিলটি বঙ্গবন্ধু কলেজ মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চেনানিয়াকান্দিতে গিয়ে শেষ হয়। এতে চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। পরে দুপুর ১২টায় ওই স্থানে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার অপসারণসহ দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে অবেরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারা সেখানে সমাবেশ করে বুধবার রাতের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র জব্দ করা না হলে বৃহস্পতিবার অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম ও পুলিশ সুপার আল-বেলি আফিফা আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা এক ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন। তবে এ ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন চন্দ্রদিঘলিয়াবাসী। 

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হক বলেন, ‘হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। যেহেতু জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তাই আমরা সাময়িকভাবে অবরোধ তুলে নিয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করছি, প্রশাসন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করবে।’

গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আল-বেলি আফিফা বলেন, ‘অবরোধকারীদের সঙ্গে আমরা কথা বলে তাদের আশ্বস্ত করলে তারা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। আমরা ইতোমধ্যে হত্যার তদন্ত শুরু করেছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা না হলেও আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ 

জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে এবং স্বচ্ছভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান কম ছিল। জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি, আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। অবৈধ কোনো অস্ত্র ব্যবহার হলে তা উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।’