মুন্সীগঞ্জে পুকুরে ডুবে ভাইবোনের মৃত্যু । খবরের কাগজ
ঢাকা ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

মুন্সীগঞ্জে পুকুরে ডুবে ভাইবোনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০১:১১ এএম
মুন্সীগঞ্জে পুকুরে ডুবে ভাইবোনের মৃত্যু

মুন্সীগঞ্জের মহাকালি ইউনিয়নের কেওয়ার ঢালীবাড়ি এলাকায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই ভাইবোনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির পাশে ঢালীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত দুই শিশু ওই এলাকার দিনমজুর নূরে আলমের সন্তান আল আমিন (৬) ও মরিয়ম আক্তার (৭)। তারা স্থানীয় আল জামিয়াতুল তারা মতিয়া খলিলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলতে বের হয় দুই ভাইবোন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাদের খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির পাশের ঢালীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুর থেকে দুই ভাইবোনের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

 

নোয়াখালীতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৬

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১০:৩২ এএম
নোয়াখালীতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৬
ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালী সরকারি কলেজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই সভাপতিসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজের শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

সংঘর্ষে নোয়াখালী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নাঈম তানিম, বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক সানিসহ ছয় নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

নোয়াখালী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নাঈম তানিম বলেন, ‘সন্ধ্যায় কলেজ ছাত্রাবাসের হলরুমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগের মতবিনিময় সভার আয়োজন ছিল। এতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু সভার আগমুহূর্তে বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম রাতুল ও একলাশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক সানির নেতৃত্বে শতাধিক বহিরাগত যুবক এসে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে মতবিনিময় সভা স্থগিত করা হয়েছে।’ 

অন্যদিকে বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম রাতুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বিকেলে মাইজদীতে আমাদের একটা কর্মসূচি ছিল। এতে কলেজ ছাত্রাবাসের নেতা-কর্মীরা আসতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতারা ফটকে তালা দিয়ে তাদের আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে আমাদের জুনিয়র ব্যাচের ছাত্রলীগকর্মীরা সেখানে গেলে তাদের ওপর কলেজ ছাত্রলীগ নেতাদের নির্দেশে হামলা করা হয়। এতে আমাদের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে।’ 

কলেজের শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম ছাত্রাবাসের হোস্টেল সুপার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজের ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ৯টার মধ্যে সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’ 

ইকবাল হোসেন/ইসরাত চৈতী/   

পতেঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লরি পুকুরে, মামা-ভাগ্নের মৃত্যু

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১০:৩০ এএম
পতেঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লরি পুকুরে, মামা-ভাগ্নের মৃত্যু
দুর্ঘটনা কবলিত লরি। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি লরি পুকুরে পড়ে লরিচাপায় মাম-ভাগ্নের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও চারজন। 

শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে বাটারফ্লাই মোড়ে প্রজাপতি পার্কের পাশে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন- আসাদুজ্জামান সানি (১৯) ও শিশু মো. সাকিব (৫)। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগ্নে। 

অন্যদিকে আহতরা হলেন- ইমরান (৮), নুরুল আমিন (২১), তাসপিয়া (২০) ও নুসরাত (৩৫)।

জানা গেছে, কনটেইনারবাহী লরিটি একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে। লরিটি প্রজাপতি পার্কের পাশে মোড় নেওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় ফুটপাতে থাকা ছয়জনকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িটি পার্শ্ববর্তী পুকুরে পড়ে যায়। 

স্থানীয়রা পাঁচজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে আসাদুজ্জামান সানির মৃত্যু হয়। সানির লাশ চমেক হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। 

অন্যদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ১টার দিকে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। আহত চারজন বর্তমানে চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। 

কেইপিজেড ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘হতাহতরা ফুটপাতে হাঁটার সময় এ দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনার পর আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে শিশুটির মরদেহ স্থানীয়রা উদ্ধার করেছেন।’ 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর জোনের এডিসি হারুনুর রশীদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায় কনটেইনারবাহী লরিটি। লরিচালক কামাল হোসেনকে আটক করা হয়েছে।’ 

ইফতেখারুল/ইসরাত চৈতী/  

২ বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১০:১৯ এএম
২ বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে
আহত জমজ দুই বোন । ছবি : খবরের কাগজ

পাবনার চাটমোহরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে আলিফ ইয়ামান পায়েল (২২) নামে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে যমজ দুই বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। 

শুক্রবার (১৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার উথুলি খামারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত দুই বোন হলেন- মিম (২০) ও লাম (২০)। 

তারা পৌর সদরের আরাজি উথুলী খামারপাড়া এলাকার রেজাউল করিম রিজুর মেয়ে। অভিযুক্ত পায়েল চাটমোহর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি।

এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন আহতদের বাবা রেজাউল করিম। 

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ঘটনার সময় বাড়ির পাশে কদমগাছের ডাল কাটছিলেন পায়েল। এ সময় লাম তাকে গিয়ে বলেন, গাছ কাটার সময় তাদের কলাগাছ যেন নষ্ট না হয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পায়েল হাতুড়ি দিয়ে লামকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ সময় আরেক বোন মিম এগিয়ে গেলে তাকেও হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। পায়েলসহ তার বাবা-মা দুই বোনকে মারধর করেন। 

পরে চিৎকার শুনে মিম ও লামের পরিবারের লোকেরা এলাকাবাসীর সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

অভিযুক্ত পায়েল বলেন, ‘আমার মায়ের সঙ্গে দুই বোন মারামারি করে। আমি তাদের আটকাতে গিয়েছিলাম। তাদের আমি মারিনি। আমাকে ফাঁসানোর জন্য অহেতুক অভিযোগ করা হয়েছে।’

চাটমোহর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি নিন্দনীয় কাজ। সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের জায়গা ছাত্রলীগে নেই। যদি সে দোষী সাব্যস্ত হয়, আমি তার বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানাই। যেহেতু ছাত্রলীগের কমিটি জেলা ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে, তাই তারা এ বিষয়টি দেখবে।’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা খবরের কাগজকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আমি জানি না। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে এবং আমরা তদন্ত করে সত্যতা পাই, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পার্থ/পপি/

টানা ৫ দিনের ছুটির ফাঁদে বেনাপোল স্থলবন্দর

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৪৭ এএম
টানা ৫ দিনের ছুটির ফাঁদে বেনাপোল স্থলবন্দর
ছবি: খবরের কাগজ

টানা ৫ দিনের ছুটির ফাঁদে পড়েছে বেনাপোল স্থলবন্দর। আজ ১৮ মে শনিবার, আগামীকাল ১৯ মে রবিবার এবং পরশু ২০ মে সোমবার ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁতে লোকসভা নির্বাচন, ২১ মে যশোরের শার্শা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ২২ মে বৌদ্ধ পূর্ণিমার সরকারি ছুটির কারণে বেনাপোল দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। সব মিলিয়ে টানা ৫ দিন ছুটির ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ এ স্থলবন্দরটি। তবে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শনিবার ও রবিবার বন্দর এবং কাস্টমসের কার্যক্রম চলবে।

বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের প্রায় ৯০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। টানা ৫ দিনের ছুটির কারণে স্থবির হয়ে পড়বে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের কার্যক্রম। এতে করে সীমান্তের দুই পাশে পণ্যবাহী ট্রাকজট বাড়বে।

শুক্রবার (১৮ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন।

তিনি জানান, শনিবার থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে টানা ৫ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। আগামী ২৩ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে আবার এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হবে।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম জানান, ছুটির কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। লোকসভা নির্বাচনের কারণে ভারতে বাংলাদেশি পর্যটক ভ্রমণ নিষিদ্ধ। শুধুমাত্র মেডিকেল ও ভারতীয় পাসপোর্টযাত্রীরা ভারতে যেতে পারবেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। ২১ মে থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম জানান, ছুটির মধ্যে বন্দরে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এর জন্য বিশেষ নজরদারিসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

রাস্তার নাম দুর্ভোগ মনোহরপুর-ওসমানপুর সড়ক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৪৪ এএম
রাস্তার নাম দুর্ভোগ মনোহরপুর-ওসমানপুর সড়ক
যশোর সদর উপজেলার মনোহরপুর-ওসমানপুর সড়ক পাকাকরণের নির্মাণকাজ বন্ধ। ফলে খুঁড়ে রাখায় সড়ক দিয়ে কেউ চলাচল করতে পারছেন না। খবরের কাগজ

যশোর সদর উপজেলার মনোহরপুর-ওসমানপুর সড়ক পাকাকরণের নির্মাণকাজ আট মাস বন্ধ থাকায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রাস্তা খুঁড়ে রাখায় সড়ক দিয়ে কেউ চলাচল করতে পারছেন না। বিশেষ করে কৃষকরা তাদের বোরো ধান মাঠ থেকে ঘরে তুলতে বিপাকে পড়েছেন। একইভাবে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে পা পিছলে দুর্ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর যেতে পারছেন না। কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এমনকি বাইসাইকেল নিয়ে চলাচলেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এলাকাবাসী। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদরের ইছালি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মনোহরপুর থেকে ওসমানপুর সড়কের (কোড নং ২৪১৪ ৭৫২০২) ১ হাজার ৭৫০ মিটার পাকাকরণের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ২১ জুলাই। কিন্তু সড়কটির কিছু কাজ করে সেপ্টেম্বর মাসে বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। 

এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ লোকজন সদর উপজেলার প্রকৌশলী সড়ক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো প্রতিকার পাননি। এ এলাকায় পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। আর ৯৫ ভাগ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। এলাকায় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র না থাকায় ছোট ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করার জন্য পার্শ্ববর্তী দূরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়।

কৃষকদের উৎপাদিত ফসল (ধান) মাঠ থেকে বাড়িতে তোলা ও বিক্রির জন্য পার্শ্ববর্তী বাজারে যাতায়াত করতে হয় ওই সড়ক দিয়ে। এক বছর আগে এ সড়কের সোলিং উঠিয়ে পাকাকরণের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ফলে রাস্তায় গর্ত তৈরি হয়। সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ২১ জুলাই। কিন্তু সড়কটির অর্ধেক কাজ করে সেপ্টেম্বর মাসে বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকে এখানে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মনোহরপুর গ্রামের কৃষক আবদুল মালেক সরদার জানান, সড়ক পাকাকরণের নির্মাণকাজ ৮ মাস বন্ধ থাকায় বোরো ধান মাঠ থেকে ঘরে তুলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বাজারে বিক্রি করতে গিয়েও বেহাল রাস্তার জন্য কোনো যানবাহন পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও ভাড়া তিন গুণ চাচ্ছে। 

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লাবণী আক্তার জানায়, গত সপ্তাহে বৃষ্টি হলে স্কুলে যাওয়ার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে সারা শরীরে কাদাপানি লেগে যায়। এ জন্য আর ওই দিন স্কুলে যেতে পারিনি। প্রায় দিনই কেউ না কেউ এ অবস্থায় পড়ছে। তাদের চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। 

পাশের খাজুরা বাজারের ব্যবসায়ী আজিজ হোসেন জানান, সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। প্রায় দিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কের কাজ ৮ মাস বন্ধ রাখার কারণে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বাইসাইকেল চলাচলেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এলাকাবাসী। এমনকি হেঁটেও চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি  রাস্তাটি দ্রুত পিচের কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

স্থানীয় ইছালি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ‘এ সড়কের কারণে এবার কৃষকদের মাঠ থেকে ধান তুলতে কী পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। রাস্তার কাজ শেষ করার জন্য একাধিকবার আমরা ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারের অফিসে বলেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।’ 

এ ব্যাপারে ঠিকাদার আনন্দ বিশ্বাস আট মাস বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ফান্ডের সমস্যা ছিল। সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে কাজ শুরু করব। শনিবার-রবিবার মেশিনপত্র যাবে। কাজ তাড়াতাড়ি করে দেব।’
 
সদর উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুল হক বলেন, ‘কাজ বন্ধ রাখায় ঠিকাদার আনন্দ বিশ্বাসকে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি কাজ করেননি। ফলে কিছুদিন আগে তার কাজ বাতিল করার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে সুপারিশ করেছি।’