![কলকাতায় চীনা দূতাবাসের সামনে তুমুল বিক্ষোভ](uploads/2024/02/11/1707629868.kolkata.jpg)
মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণের প্রতিবাদে কলকাতায় চীনা দূতাবাসের সামনে গতকাল শনিবার বিক্ষোভ দেখালেন কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিরা। শহরের একটি ইসলামি সংগঠন ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন ফর পিসের (আইএপি) উদ্যোগে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আইএপির বিক্ষোভের মূলত দুটি বিষয় ছিল। প্রথমটি হলো চীনের সিংকিয়াং প্রদেশে মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের প্রতি চীনা প্রশাসনের নিরবচ্ছিন্ন প্রতিহিংসামূলক আচরণ। আর দ্বিতীয়টি হলো ভারতের মানচিত্রের ওপর চীনা প্রশাসনের দুরভিসন্ধিমূলক হামলা। একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও চীনের মানচিত্রে ভারতের অঙ্গরাজ্য উত্তরপূর্ব প্রান্তের অরুণাচল প্রদেশকে চীনের অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। বিশ্বের নানা প্রান্তে চীন যে মানচিত্র পেশ করে, সেখানে অরুণাচল প্রদেশকে চীনের অংশ হিসেবেই দেখানো হয়ে থাকে।
কালোপোশাক পরে আইএপির সদস্য-সমর্থকরা শনিবার সকালে কলকাতার সল্টলেকে চীনা দূতাবাসের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন- অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। একে কোনো ভাবেই ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। চীনের সিংকিয়াং প্রদেশে উইঘুর সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন অব পিসের চেয়ারম্যান নাজিবুল্লাহ বলেছেন, চীনের প্রশাসন উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নানা অবিচার ও অত্যাচার চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি সে অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়েছে। মুসলিমদের দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার প্রথা তারা সিংকিয়াং প্রদেশে বন্ধ করে দিয়েছে। পুরুষদের দাড়ি রাখা এবং মহিলাদের বোরকা পরার ওপরেও তারা একাধিক বিধিনিষেধ জারি করেছে।
নাজিবুল্লাহ আরও দাবি করেন, হাজার হাজার উইঘুর মানুষকে চীনা প্রশাসন তাদের বিশেষ শিক্ষাশিবিরে পাঠিয়ে ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করে ‘প্রকৃত কমিউনিস্ট’ হওয়ার ‘শিক্ষা’ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
নাজিবুল্লাহর আরও অভিযোগ, সিংকিয়াং প্রদেশে মুসলিম পরিবারগুলোর ওপর চীনা প্রশাসনের আগ্রাসন মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এই সম্প্রদায়ের ওপর গণ নির্বীর্যকরণ অভিযান চালাচ্ছে। পাশাপাশি ইসলামি ধর্মাচরণে পদে পদে বাধার সৃষ্টি করেছে। সিংকিয়াং প্রদেশ কার্যত উইঘুর সম্প্রদায়ের জন্য একটি বৃহৎ কারাগারে পরিণত হয়েছে।
চীনের হান সম্প্রদায়ের মানুষদের দলে দলে নিয়ে আসা হচ্ছে সিংকিয়াংয়ে। একটা সময় চীন তিব্বতে যা করেছে, সেই একই কাজ তারা শুরু করেছে সিংকিয়াংয়ে।
তিব্বত ইস্যুতে এর আগে বেশ কয়েকবার কলকাতায় চীন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। শুধু তিব্বতের প্রতি সহানুভূতিশীল মানুষরাই নন, চীনা দূতাবাসের সামনে একাধিকবার বিক্ষোভ দেখিয়েছে ভারতের শাসক দল বিজেপিও। লাদাখ এবং অরুণাচল প্রদেশে চীন যেভাবে বারবার লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল লঙ্ঘন করে ভারতের ভূখণ্ডে সেনা প্রবেশ করিয়েছে, তারই প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে চীনা দূতাবাসের সামনে।