![জুরি হয়েও ভিসা পেলেন না বাঁধন](uploads/2024/02/28/1709099338.111.jpg)
ভারতের এক চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি হয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের উদ্দেশে রওনা দিতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রে তার এ ভূমিকার কারণে সবাই যখন সাধুবাদ জানাচ্ছিলেন, তখনই জানা গেল দুঃসংবাদ। ভারতের ভিসা দেওয়া হয়নি বাঁধনকে।
ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্ণাটক চলচ্চিত্র একাডেমি আয়োজিত ১৫তম বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল জুরি হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন বাঁধন। উৎসবের এশিয়া সিনেমা কমপিটিশন বিভাগের পাঁচ জুরির তিনি একজন। ওই বিভাগের চেয়ারপারসন রুশ শিক্ষাবিদ নিনা কোচলেইভা। অন্য জুরিরা হলেন ভারতীয় সাংবাদিক, লেখক, চলচ্চিত্র পরিচালক এন এস শংকর, স্পেনের চলচ্চিত্র সমালোচক রোশানা জি আলোনসো, যুক্তরাজ্যের নির্মাতা ক্যারি রাজন্দর সাহনি। উৎসবের ওয়েব সাইটে বাঁধনকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশের টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ’ হিসেবে। ভারতীয় নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’ ছবিতে তিনি কাজ করেছেন সে কথাও জানানো হয়েছে ওই পাতায়। এমনকি কান চলচ্চিত্র উৎসবে অফিসিয়াল সিলেকশন পাওয়া বাংলাদেশের প্রথম ছবির প্রধান শিল্পী হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে তাকে।
গতকাল মঙ্গলবার বাঁধন খবরের কাগজকে বলেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাক ছিল, আগাম টিকিটও করা ছিল। কিন্তু পাসপোর্ট তুলতে গিয়ে দেখলাম আমাকে ভিসা দেওয়া হয়নি।’ কেন এমন হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমন্ত্রণপত্রে লেখা আছে টুরিস্ট ভিসায়ও ফেস্টিভ্যালে অংশ নেওয়া যাবে। এ কারণে আমি টুরিস্ট ভিসার আবেদন করেছি। ভারতে আমি কোনো সিনেমার শুটিংয়ে যাচ্ছি না। অ্যাপ্লাই করার সময় ভিসা ক্যাটাগরি নির্বাচনেও কোনো ভুল করিনি। তারপরও কেন ভিসা পেলাম না, জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে যাওয়ার কথা ছিল ২৪ তারিখে। শুটিং ছিল বলে ২৬ তারিখে গিয়েছি। দেখি ভিসা পাইনি। আবারও আবেদন করেছি। সবকিছু অনিশ্চিত। দেখি কী হয়।’
বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হবে ২৯ ফেব্রুয়ারি, চলবে ৭ মার্চ পর্যন্ত। এ উৎসবে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘এ উৎসবে জুরি হিসেবে আমন্ত্রণ পাওয়া আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের ব্যাপার। যে ঘটনাটি ঘটল, সেজন্য খুব খারাপ লাগছে। যেহেতু আবার আবেদন করেছি, আশা করছি দূতাবাস আমাকে ভিসা দেবে।’
এই উৎসবের ১৫টি বিভাগে দেখানো হবে ৫০টিরও বেশি দেশের ২ শতাধিক সিনেমা। এশিয়ান সিনেমা কমপিটিশন বিভাগের সিনেমাগুলো দেখে সেসবের মধ্য থেকে সেরা ছবি বাছাইয়ে মতামত দেবেন বাঁধন। এই বিভাগ ছাড়াও উৎসবে রয়েছে ভারতীয় ও কর্ণাটকি চলচ্চিত্রের প্রতিযোগিতা বিভাগ। অফিশিয়াল জুরিদের পাশাপাশি উৎসবের চলচ্চিত্র সমালোচকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিপ্রেসি ও এশিয়াভিত্তিক সংগঠন নেটপ্যাক জুরিরাও থাকবেন। এর আগে গত বছর ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত আই এম টুমোরো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও জুরির দায়িত্ব পালন করেন বাঁধন।
বাঁধনের ভিসা প্রত্যাখ্যানের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’ ছবির কাজ করে আসার পর, গত দেড় বছরে এ নিয়ে দুবার ভিসার আবেদন করেও ভারতের ভিসা পাননি বলে জানান বাঁধন। দুবারই তিনি ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন করেছিলেন। প্রথমবার ‘খুফিয়া’ ছবির প্রচারের জন্য যেতে চেয়েছিলেন। সেবারও তার ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।
ভারত ও বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনের বহু শিল্পী ও কলাকুশলী নিয়মিত দুই দেশে যাতায়াত করেন। শিল্পীদের ভিসার ক্ষেত্রে দুই দেশই যথেষ্ট আন্তরিকতার পরিচয় দিয়ে আসছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিচ্ছিন্ন দুই একটি ঘটনা শিল্পীদের মন ভেঙে দেয়। বাঁধনের ক্ষেত্রে আবারও সে রকম একটি ঘটনা ঘটল।
জাহ্নবী