গরমের এই সময় পোশাক হওয়া চাই পাতলা এবং আরামদায়ক। অনেকেই গরমের অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে স্লিভলেস পোশাক পরেন। স্বাচ্ছন্দ্য আর মানানসই, দুটো জায়গায়ই স্লিভলেস সবসময়ই এগিয়ে। বর্তমানে স্লিভলেস পোশাক ফ্যাশনেবল হওয়ার পাশাপাশি গরমেও স্বস্তি এনে দেয়। স্লিভলেস পোশাক নিয়ে লিখেছেন শাহিনুর আলম কলি
গরমে থ্রি-কোয়ার্টার কিংবা ফুলহাতার পোশাকে স্বস্তি তেমন পাওয়া যায় না। যতটা স্লিভলেসে পাওয়া যায়। স্লিভলেস মূলত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণীদের মধ্যেই বেশি জনপ্রিয়। সঙ্গে আড্ডা অথবা কোনো পার্টিতে স্লিভলেস পোশাক সহজেই পরা যায়। পরতে আরামদায়ক এবং ফ্যাশনেবল হওয়ার কারণে জিন্স, লেগিংস বা পালাজ্জোর সঙ্গে মানিয়ে যায়।
ফ্যাশনসচেতন মানুষের কথা মাথায় রেখে ফ্যাশন ডিজাইনাররা বিভিন্ন ডিজাইনের স্লিভলেস সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, ফতুয়া, টপস, শার্ট নকশা করেন। এই পোশাকে কাপড় হিসেবে সুতিকে প্রাধান্য দেওয়া হলেও লিনেন, বেক্সিভয়েল, জয়সিল্কের মতো কাপড় ব্যবহার করা হয়। শিফন, ভিসকস, ধুপিয়ান ক্রেপ, জর্জেট, সিল্ক, ভালো মানের নেটের আরাম পাওয়া যায় এমন কাপড় বেছে নেওয়া হয়। গরমে কোনোভাবেই ভারী ও সিনথেটিক কাপড়ের পোশাক পরা উচিত নয়। অন্যদিকে সুতি কাপড় সব থেকে আরামের হলেও এটি সব জায়গার জন্য মানানসই হয় না। এক্ষেত্রে শিফনের কাপড় বেছে নেন। শিফনের কাপড় সবকিছুতেই আভিজাত্য নিয়ে আসে।
নকশা হিসেবে কাপড়ের ওপর ব্লক, স্প্রে-বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, টাই-ডাই, অ্যাপলিকের কাজ করা হয়। কখনো আবার দেখা যায় এমব্রয়ডারি বা হাতের কাজের ব্যবহার। তা ছাড়া পোশাকের কাট আর প্যাটার্নে থাকে আধুনিকতার ছোঁয়া। পোশাকে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে বিভিন্ন ডিজাইনের লেস অথবা রঙিন রিবন ব্যবহার করা হয়। গলার ডিজাইনের জন্য গোল গলা, ত্রিভুজাকার গলা, হাইনেক বা পাঞ্জাবি কলারে ডিজাইন করা হয়। এ ছাড়া হাইনেক, রাউন্ড ও ভি-গলার পোশাকও পাওয়া যায়।
এই গরমে হালকা রঙের পোশাক বেছে নেওয়া সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। হালকা রঙের পোশাক পরলে আরাম পাওয়া যায়, সেই সঙ্গে চোখকেও প্রশান্তি দেয়। এর ভেতর সাদা রঙের পোশাক গরমের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক। কারণ, এর তাপ শোষণের ক্ষমতা খুব কম। কালো বা গাঢ় রঙের পোশাক অতিরিক্ত তাপ শোষণ করে। তাই এ রঙের কাপড় না পরাই ভালো। সাদার পাশাপাশি হলুদ, ধূসর ও লাল রঙের কাপড় শরীর ঠাণ্ডা রাখে। তাই গরমের জন্য গোলাপি, জলপাই সবুজ, আকাশি, হালকা ম্যাজেন্টা, হালকা নীল, ফিরোজা, হালকা সবুজ, পেস্ট ধরনের উজ্জ্বল কিন্তু হালকা রঙগুলো বেছে নেয়া যেতে পারে।
গরমের পোশাক সম্পর্কে দেশীয় ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস জানান, গরমের সময়টাতে পোশাকে স্বস্তির জন্য স্লিভলেসকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। আর ফ্যাব্রিক হিসেবে সুতি, লিনেন, বিভিন্ন প্রিন্টকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেমি লং ও ফ্রক আকৃতির কামিজের ট্রেন্ড চলছে এখন। কলিদার এই কামিজগুলো তৈরি করা হয়েছে নানা ছাঁটে। প্রতিটি কলিতে ভিন্ন রং ও নকশার ব্লকপ্রিন্টের ব্যবহার এনেছে অভিনবত্ব।
এ ছাড়া হালকা কাজের ওপর একরঙা স্লিভলেস কুর্তির গলায় হালকা কাজও রয়েছে। গলার নিচে কামিজের বডির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরপর দু-তিনটি ভিন্ন রঙের কাপড় ব্যবহার করে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। কেউ চাইলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে স্লিভলেস পোশাক পরতে পারেন। আর যারা স্লিভলেসে অভ্যস্ত নন তারাও চাইলে ছোট গলার সঙ্গে খানিকটা চওড়া ঘাড়ের স্লিভলেস পোশাক পরতে পারেন।
কোথায় পাবেন
বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে নানা ডিজাইনের নারীদের স্লিভলেস পোশাক পাওয়া যায়। ওয়েস্টার্ন আউটফিটের হাউস যেমন- ক্যাটস আই, ইয়োলো, লা রিভ এ বিভিন্ন কাটিংয়ের স্লিভলেস পোশাক পাওয়া যায়। দেশীয় ফ্যাশন হাউজ অঞ্জন’স রঙ বাংলাদেশ, বিশ্বরঙেও খুঁজে পাবেন আপনার পছন্দের স্লিভলেস পোশাকটি। এ ছাড়া বসুন্ধরা শপিং মল,যমুনা ফিউচার পার্ক, মৌচাক মার্কেট, চাঁদনি চক, গাউছিয়া ও নিউমার্কেটে পাওয়া যাবে স্লিভলেস পোশাক। চাইলে গজ কাপড় কিনেও বানিয়ে নিতে পারেন মনের মতো স্লিভলেস পোশাকটি।
কলি