শিশুর ঘুম নিয়ে সব বাবা-মা চিন্তিত থাকেন। বেশির ভাগ অভিভাবকের অভিযোগ, শিশুদের সহজে ঘুম পাড়ানো যায় না। অনিয়মিত ঘুমের প্রভাব বাবা-মায়ের ওপরেও পড়ে। এ ছাড়া শিশুকে সুস্থ রাখতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমেরও দরকার। তাই নিয়মমাফিক ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। বিস্তারিত জানিয়েছেন সানশাইন চাইল্ড সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ফারহানা আহমেদ। লিখেছেন সানজিদা রিমু
প্রথমে শিশুকে ঘুম পাড়ানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় অভ্যাস করতে হবে। নিজেদের যত কাজই থাকুক না কেন, শিশুর ঘুমের সেই সময় কোনোভাবেই হেরফের করা যাবে না। একটা সময় বেঁধে ঘুমের অভ্যাস করালে তার দেহঘড়ি নিয়ন্ত্রণ হবে। কিছু দিন অভ্যাসের পর ওই নির্দিষ্ট সময়ই তার ঘুম চলে আসবে। এ ছাড়া শিশুকে তাড়াতাড়ি ঘুম না পাড়িয়ে যখন তার ঘুম পাবে তখনই ঘুমাতে দিতে হবে। এতে সে নিজে থেকেই ঘুমিয়ে পড়বে।
ছোট শিশুদের ঘুমানোর সময় তাকে একটু বেশি আদর করতে পারেন। শিশুর ঘুমানোর সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের জোরে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। উষ্ণ খাবার, ডায়াপার পরিবর্তন করে তার ঘুমানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। অনেক সময় ঘুমের মধ্যে খাওয়ালে বারবার ডায়াপার ভিজিয়ে ফেলে। যার কারণে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। সারা রাত ঘুমানোর মতো যথেষ্ট বিরতি দিয়ে শিশুকে খাওয়ালে এই সমস্যা দূর হবে।
শিশুকে ঘুমের উপযুক্ত পরিবেশ দিতে হবে। ঘরে চড়া আলো বা টিভি, সাউন্ড সিস্টেমের আওয়াজ তাদের ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই শিশুর শোবার ঘরের পরিবেশ যেন ঘুমের উপযোগী হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া শিশুর বিছানা যেন আরামদায়ক হয়, সেদিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে।
শিশুকে ঘুম পাড়ানোর আগে মোবাইল থেকে বিরত রাখুন। অনেক বাবা-মা সন্তানকে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মোবাইলে গেম খেলতে দেন। এতে তার মস্তিষ্কের স্নায়ু উদ্দীপ্ত হয় এবং ঘুম বাধা পায়।
রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর সন্তানকে ঘুম পাড়াতে গল্প বলতে পারেন। গল্প করার কারণে শিশুর মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ও থ্যালামাস প্রভাবিত হয়। যা তাকে শান্ত করে সহজে ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে।
শিশু একটু বড় হলে, তার সারা দিনের রুটিনে শরীরচর্চার জন্য কিছুটা সময় রাখতে পারেন। সাঁতার, জিমন্যাস্টিক বা দৌড়োদৌড়ি করে খেলতে পারে। খেলাধুলার কারণে পরিশ্রম হবে আর এতে করে শরীরে ঘুমের চাহিদা তৈরি হবে। এ ছাড়া শরীরচর্চাগুলো শিশুর শরীরের সমস্যা দূর করে, তার মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলবে।
কলি