ঢাকা ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
English

সাগরিকায় বিপিএল রোমাঞ্চ

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৭ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:১৬ এএম
সাগরিকায় বিপিএল রোমাঞ্চ
ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর সাগরিকা রোডে দাঁড়িয়ে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। এই মাঠে এলে যে কারও মনে বাড়তি ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করে। অদূরেই বঙ্গপোসাগরের সৈকত। সাগর তীরে দাঁড়ালে যেমন মন ভালো হয়ে যায়, এই মাঠে ক্রিকেট দেখার অনুভূতিও তাই।

গতকাল সোমবার রংপুর রাইডার্সের অনুশীলনের কথাই উল্লেখ করা যায়। বেলা ১টা মাঠে এসে এক ঘণ্টা ঘাম ঝড়ায় দলটির দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়রা। পুরো মাঠে তখন ঝকঝকে রোদ। বসন্ত আসি আসি করছে। একদিকে শীত আর রোদের মিশেল। সঙ্গে সবুজ গালিচায় ব্যাট-বলের সুমধুর আওয়াজ। অন্তরে অন্য রকম ভালো লাগার অনুভূতি দোলা দিয়ে যায়।

রংপুর রাইডার্স মাঠ ছেড়ে যাওয়ার আগেই খুলনা টাইগার্সও মাঠে হাজির হয়েছিল প্রস্তুতি সারতে। আজ মঙ্গলবার সাগরিকার মাঠটিতে রাতের ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হবে ম্যাচটি। তার আগে বেলা দেড়টায় স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স খেলবে কুমিল্লা ভিক্টোয়ান্সের বিপক্ষে। এই দুই দল অনুশীলন করেছে সকালের মিষ্টি রোদ গায়ে মেখে।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মাঠের রূপও বদলায়। সকাল, দুপুর আর বিকেল- একটার সঙ্গে অন্যটার তুলনা করা যায় না। রংপুর ও খুলনা অনুশীলন সেরে চলে যাওয়ার পর যেমন কিউরেটর ও মাঠ কর্মীরা থেকে গেলেন। মাঠে তুলির শেষ আচড় দিচ্ছিলেন তারা। বেলা শেষের আলোয় সেই কর্মযজ্ঞও কম আকর্ষণীয় ছিল না। সূর্য তখন পশ্চিম দিকে হেলে পড়েছে। আগের দুই বেলার চেয়ে ভিন্ন রূপ মাঠে। প্রেসবক্স থেকে উইকেটগুলো দেখা যাচ্ছিল পরিস্কার। বেশির ভাগ উইকেটেই তখন পর্যন্ত ঘাস দৃশ্যমান। এমনকি যে উইকেটে আজ খেলা হবে, সেটাতেও ঘাসের সবুজাভ আভা টের পাওয়া যায়। শেষ মুহূর্তে এই রূপ বদলাবে কি না কে জানে? তবে ঢাকা-সিলেট-ঢাকা হয়ে বিপিএল এখন চট্টগ্রাম বলে এই উইকেট নিয়েও কিন্তু সবার কৌতূহল। চট্টগ্রামে বিপিএল মানেই যে রান উৎসব।

দর্শকরাও তাই চট্টগ্রাম পর্বের বিপিএলের কাছে একটু বেশি কিছুই চেয়ে থাকেন। শুধু দর্শকরা নয়, ক্রিকেটাররাও। শুভগত হোমের কথাই শুনুন। ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই সেনানীর নেতৃত্বেই খেলছে স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। কাল অনুশীলনের ফাঁকে তিনি বলেন, ‘শেষ কয়েক বছর থেকে যেটা দেখছি, এখানে হাইস্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে। ১৮০-১৯০ রান হচ্ছে। আশাকরি সে রকম উইকেট এবারও পাব।’ খুলনা টাইগার্সের আকবর আলীও বলেছেন একই কথা, ‘চট্টগ্রামের উইকেট তো সচারচর ভালো থাকে। উইকেট দেখে ভালো লাগছে। ম্যাচ ডেতে যদি ভালো উইকেটে খেলা হয়, অবশ্যই রান হবে।’

শুভাগত-আকবরদের প্রত্যাশা পূরণ হলে চট্টগ্রামে আগামী ১২টি ম্যাচে দর্শক যে দারুণ কিছু দেখবে, সেটা বলাই যায়। কারণ বাড়তি রোমাঞ্চের বাতাবরণ ছড়িয়েই দলগুলো বন্দর নগরীতে এসেছে। বাংলাদেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগটির দশম আসর এখন শেষের দিকে। ফের ঢাকায় ফিরে ২৩ ফেব্রুয়ারি এক দিনে দুটি ম্যাচ হওয়ার পরই শুরু হয়ে যাবে প্লে অফ পর্ব। তার আগে এই সাগরিকাতেই ঠিক হয়ে যাবে দলগুলোর ভাগ্য।

চট্টগ্রামের এই পর্ব তাই দলগুলোর জন্য প্লে-অফ নিশ্চিত করার মঞ্চ। অবশ্য এ মঞ্চ প্রস্তুত হওয়ার আগেই দুর্দান্ত ঢাকা ছিটকে গেছে বাজেভাবে ব্যর্থ হয়ে। বাকি ৬ দলই এখানে এসেছে প্লে-অফ খেলার সম্ভাবনা নিয়ে। গতবারের রানার্সআপ সিলেটের ভাগ্য অবশ্য সুতোয় ঝুলছে। তাদের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তবে আজ মাঠে নামতে যাওয়া চার দলের সঙ্গে ফরচুন বরিশালও দারুণভাবে লড়াইয়ে আছে। শেষ চারে যেতে পাঁচ দলের রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ের বার্তা মিলছে তাই এই পর্যায়ে এসে।

এখন চট্টগ্রামের উইকেটে যদি বরাবরের মতো আচরণ করে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই এ রোমাঞ্চ বেড়ে যাবে ঢের। আর প্রতিটি ম্যাচই হবে দর্শকদের পয়সা উসুলের। তারার মেলাও একেবারে কম নেই এখানে। পিএসএলের ব্যস্ততা থাকায় বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানরা ফিরে গেছেন। তবে তাদের শূন্যতা ঢেকে দিয়েছেন ইমরাম তাহির, কেশব মহারাজ, জিমি নিশাম, ওয়েইন পারনেলের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চের বড় তারকারা।

ক্রিকেটের আগামী কটাদিন তাই সাগরিকার-এভাবে বোধ হয় বলাই যায়!

চোটে সৌম্য, মিরাজে ভরসা বাংলাদেশের

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
চোটে সৌম্য, মিরাজে ভরসা বাংলাদেশের
ছবি : সংগৃহীত

চোটের কারণে পাকিস্তানের মাটিতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন সৌম্য সরকার। তার জায়গায় স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন সদ্যই পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলতে যাওয়া অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সদ্যসমাপ্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজে দলের সঙ্গে থাকলেও মাঠে নামা হয়নি সৌম্যের। গতকাল (২১ মে) টসের পর জানা যায়, চোটের কারণে একাদশে নেই তিনি।

বিসিবি জানিয়েছে, কোমরের বাঁ-পাশের ব্যথায় ভুগছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার ও ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। এই চোট থেকে সেরে উঠতে তার ১০ থেকে ১২ দিনের পুনর্বাসন প্রয়োজন হবে।

জাতীয় দলের ফিজিও বায়জেদুল ইসলাম খান বলেন, ‘সৌম্যর ইনজুরির অবস্থা পর্যালোচনার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি, তাকে এখন পূর্ণ বিশ্রামে রাখা প্রয়োজন। ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে তার খেলার সম্ভাবনা নেই।’

মিরাজ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে ২৯টি টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি দেশের হয়ে এই ফরম্যাটে মাঠে নেমেছিলেন।

পরাজয়ের পর গ্যালারির সমালোচনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া শামীমের

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
পরাজয়ের পর গ্যালারির সমালোচনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া শামীমের
ছবি : স্ক্রিনশট

টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৫তম স্থানে অবস্থান করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেই দলের কাছে গতকাল (২১ মে) ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ দল।

তবে এটিই প্রথম সহযোগী দেশের বিপক্ষে সিরিজ পরাজয় নয় লিটনদের। আগেও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। সেই সিরিজটি ছিল ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে। ব্যবধান ছিল একই ২-১।

সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় স্বাগতিকদের লিটন দাসরা। সেই লক্ষ্য ৭ উইকেট হাতে রেখেই টপকে গেছে স্বাগতিকরা। এতে করে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো নিজেদের করে নিয়েছে সিরিজ।

সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি অবস্থান করেন পেশাগত কারণে। বাংলাদেশ দল সেখানে কোনো সিরিজ খেলতে গেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভীড় জমায় গ্যালারিতে। বাংলাদেশ দল হারলে হতাশ হয়ে পড়েন তারাও। সবশেষ ম্যাচেও ঘটেছে এমন ঘটনা। হতাশ হয়ে ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে স্লোগান ও কটূক্তি করে ক্ষোভ ঝেরেছেন গ্যালারির দর্শকরা।

দর্শকদের স্লোগানের মাঝেও অধিকাংশ ক্রিকেটারই গুরুত্ব না দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলেও মেজাজ হারান শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক দর্শকের বাজে মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে তাকে নিচে নেমে আসার ইঙ্গিত করেন শামীম।

এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গ্যালারির বহু দর্শক একযোগে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। তখন সতীর্থ তানজিম হাসান সাকিব এসে শামীমকে শান্ত করে ড্রেসিংরুমে নিয়ে যান।

বাংলাদেশ দলের এমন পারফরম্যান্স ও দর্শকদের এমন প্রতিক্রিয়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

রিশাদ ফেরায় লাহোরে এখন ৩ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
রিশাদ ফেরায় লাহোরে এখন ৩ বাংলাদেশি
ছবি : সংগৃহীত

যুদ্ধবিরতির পর মাঠে ফেরা পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সে সুযোগ পেয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ব্যর্থ সিরিজ শেষে আগেই লাহোরের স্কোয়াডে থাকা রিশাদও ফের যোগ দিলেন দলটির সঙ্গে।

রিশাদ যোগ দেওয়ার লাহোর কালান্দার্সে এখন বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের সংখ্যা দাঁড়াল তিনে। রিশাদের যোগ দেওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেছে লাহোর কালান্দার্স।

প্লে-অফের ম্যাচে লাহোরের হয়ে মাঠে নামার কথা রয়েছে রিশাদ হোসেনের। সেখানে তার সঙ্গী হবেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ দুই অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। 

চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফে জায়গা পাওয়া লাহোর এলিমিনেটরের ম্যাচে মুখোমুখি হবে করাচি কিংসের মুখোমুখি হবে লাহোর। আজ (২২ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টায় শুরু হবে ম্যাচটি। 

এই ম্যাচে জয়ে পেলে শাহিন আফ্রিদির দল পৌঁছে যাবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে, যেখানে প্রতিপক্ষ হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে যাওয়া ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। 

লাহোর কালান্দার্সের এক ভিডিও বার্তায় রিশাদ হোসেন বলেন, ‘আসসালামুআলাইকুম সবাইকে। লাহোর কালান্দার্স পরিবারের কাছে আমি আবারও ফিরে এসেছি। ইনশাআল্লাহ মাঠে দেখা হবে, এবং আমরা একসঙ্গে শিরোপা জিতব।’

পিএসএল স্থগিত হওয়ার আগে রিশাদ হোসেন ৮.৭০ ইকোনমি রেটে পাঁচ ম্যাচে ৯ উইকেট শিকার করেছেন।

টেস্ট ক্রিকেট সম্ভাবনাময় নতুন যুগের দিকে

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
টেস্ট ক্রিকেট সম্ভাবনাময় নতুন যুগের দিকে
ছবি : সংগৃহীত

অনেক কিংবা একাধিক পরিবর্তন নয়। পাঁচ দিনের পরিবর্তে কেবল চার দিন। ইংল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ের মধ্যকার চার দিনের খেলাটি ঐতিহ্যবাহী ‘পাঁচ দিনের’ ম্যাচের একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ মাত্র। নটিংহামের ট্রেন্টব্রিজে উভয় দলই দুটি করে ইনিংস খেলবে এবং প্রতিদিন ৯০ ওভারের খেলা হবে। এই শতাব্দীর শুরু থেকে এটি হবে দ্বিতীয় চার দিনের টেস্ট, যা ক্রিকেটের লংগার ভার্সনে একটি নতুন যুগের সূচনার প্রতীক।

ঐতিহ্যগতভাবে টেস্ট ক্রিকেট পাঁচ দিনের খেলা। কিন্তু চার দিনের ম্যাচগুলো নতুন কিছু নয়। ১৯৭৯ সাল থেকে পাঁচ দিনের টেস্ট চূড়ান্ত হয়ে ওঠার আগে, টেস্ট ক্রিকেট বিভিন্ন ধরনের ফরম্যাট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করত: তিন, চার, পাঁচ, এমনকি ছয় দিনের ম্যাচ খেলা হতো এবং কিছু টেস্টের কোনো সময়সীমা ছিল না- তথাকথিত ‘টাইমলেস টেস্ট’। সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক চার দিনের টেস্টটি ১৯৭৩ সালে নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের মধ্যে খেলা হয়েছিল। ২০১৭ সালে আইসিসি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ের মধ্যে একটি ম্যাচ দিয়ে ফরম্যাটটি পরীক্ষা করে। যদিও সেই ম্যাচটি দুই দিনের মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছিল।

টি-টোয়েন্টির যুগে টাইমলেস্ট টেস্ট কিংবা পাঁচ দিনের টেস্ট অনেকটা দীর্ঘ মনে হচ্ছে। লজিস্টিক সাপোর্ট থেকে শুরু করে দীর্ঘ ম্যাচের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ হ্রাস পর্যন্ত সবকিছু সমাধানের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে আইসিসি। তারই একটি ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ। এটি আধুনিক যুগে ভক্ত, ব্রডকাস্টার এবং খেলাসংশ্লিষ্ট প্রত্যেকেই চাহিদা মেটাতে ঐতিহ্যবাহী ফরম্যাট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আইসিসির ইচ্ছার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

অনেক কারণেই ক্রিকেটের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফরম্যাট টেস্ট নিয়ে এভাবে পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। একটি প্রধান কারণ হলো টেস্ট ম্যাচের পরিবর্তিত প্রকৃতি। ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ৫২টি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়েছিল এবং ফল হয় ৪৯টিতে। যে তিনটি হয়নি, তার মধ্যে একটি পরিত্যক্ত হয়েছিল কোনো বল ছাড়াই। বাকি দুটিতে বৃষ্টিপাতের প্রভাব ছিল। গত বছর গড়ে টেস্ট ম্যাচ প্রায় ২৬৮ ওভার স্থায়ী হয়েছিল, যা প্রায় তিন দিনের পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেটের সমান। এটাই জানান দেয় যে, সিংহভাগ ম্যাচের ফলাফলে পৌঁছাতে আর পুরো পাঁচ দিনের প্রয়োজন হয় না।

চার দিনের টেস্টের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পেছনে আরেকটি মূল চালিকাশক্তি হলো আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (ডব্লিউটিসি) পয়েন্ট সিস্টেম। এই সিস্টেমের অধীনে, একটি জয়ের মূল্য ১২ পয়েন্ট, কিন্তু একটি ড্র মাত্র চার পয়েন্ট অর্জন করে। এটি দলগুলোকে ফলাফল-ভিত্তিক পিচ প্রস্তুত করতে উৎসাহিত করেছে, যার ফলে ড্রয়ের সম্ভাবনা কম এবং পাঁচ দিনের পূর্ণাঙ্গ খেলার প্রয়োজন হ্রাস পেয়েছে।

সম্প্রচার এবং আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে, চার দিনের টেস্ট বেশ কিছু সুবিধা প্রদান করে। প্রথমত, ম্যাচের সময়সূচি নির্ধারণ করা সহজ করে তোলে। যেহেতু খেলোয়াড়দের টেস্টের মধ্যে কমপক্ষে তিন দিনের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, তাই ম্যাচ সংক্ষিপ্ত করার ফলে বোর্ডগুলো সময়সূচির সঙ্গে আরও নমনীয় হতে পারে। সম্প্রচারক এবং হোম বোর্ডগুলোর জন্য খরচ সাশ্রয় উল্লেখযোগ্য হতে পারে। পঞ্চম দিনের জন্য পরিকল্পনা করা ব্যয়বহুল, বিশেষ করে ছোট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর জন্য। এখন পঞ্চম দিনটি বাদ দিলে বার্ষিক এবং লজিস্টিক খরচে লাখ লাখ টাকা সাশ্রয় হতে পারে।

ভক্তদের জন্য, চার দিনের টেস্ট ফরম্যাটটি আরও সহজলভ্য হতে পারে। এটা টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের দ্রুত গতিতে অভ্যস্ত নতুন দর্শকদের কাছে আবেদন সৃষ্টি করতে পারে। এক কথায়, চার দিনের টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহ্য এবং আধুনিক ক্রীড়া ব্যবহারের বাস্তবতার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে। অনেকেই, বিশেষ করে সমালোচকরা যুক্তি দেন যে, চার দিনের টেস্ট ফরম্যাটটির ঐতিহ্যকে হারিয়ে ফেলবে। তারা টেস্টকে ক্রিকেটের ধৈর্যশীল, সহশীলতার সবচেয়ে কঠোর এবং চূড়ান্ত পরীক্ষার দৃষ্টিতে দেখেন।

তবে আইসিসির বিশ্বাস, সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গি খেলার ঐতিহাসিক নমনীয়তাকে ধ্বংস করবে না। খেলাটি ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে এবং ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ম্যাচটি নতুন সূচনালগ্নকে সফল করে তুলবে। আর যদি তাই হয়, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠতে পারে চার দিনের টেস্ট।

বাংলাদেশকে ‘দুর্ভাগা’ মনে করছেন আমিরাত অধিনায়ক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০১:৪০ পিএম
বাংলাদেশকে ‘দুর্ভাগা’ মনে করছেন আমিরাত অধিনায়ক
ছবি : সংগৃহীত

কোনো সংস্করণেই ভালো অবস্থানে নেই বাংলাদেশ দল। তবে র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৫তম স্থানে থাকা সহযোগী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হার, মেনে নেওয়াটা অনেকখানি কষ্টেরই বলা চলে। 

টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজ জয়ের পর বেশ ঊচ্ছ্বসিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম। তবে দুর্ভাগা মনে করছেন বাংলাদেশকে। 

সিরিজের সব ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করেছে বাংলাদেস। শারজাতে শিশিরের প্রভাবটা অনেকবেশি থাকে। আমিরাতের অধিনায়ক এখানেই দুর্ভাগা ভাবছেন বাংলাদেশকে।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসিম বলেন, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে শারজা স্টেডিয়ামে বল করা কিছুটা কঠিন হয়ে যায়। তারা বল ভালোই করেছে। ভালো খেলেছে। এখানে শারজাতে কাজটা সহজ নয়। আমি কখনোই বলতে চাই না বাংলাদেশ খারাপ দল বা খারাপ খেলেছে। তারা টেস্ট খেলুড়ে দেশ। তারা ভালো দল। আমরা সহযোগী দেশ হিসেবে অনেক ভালো খেলেছি। তাদের ভাগ্য কিছুটা খারাপ ছিল সব ম্যাচেই টস হেরেছে, দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে হয়েছে তাদের বোলারদের। কাজটা কঠিন ছিল।’

সিরিজের তিন ম্যাচেই ভালো ক্রিকেট খেলেছে আমিরাত। বিশেষ করে তাদের ব্যাটাররা দারুণ পারফর্ম করেছে পুরো সিরিজে। সিরিজ জয়ের পর ওয়াসিম বলেন, ‘সবার আগে আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। হ্যাঁ অবশ্যই অনেক চ্যালেঞ্জিং সিরিজ ছিল। টেস্ট খেলুড়ে দল। আমরা সহযোগী। দল হিসেবে আমরা যেভাবে খেলেছি, ছেলেরা যা দেখিয়েছে সবকিছুই দুর্দান্ত ছিল।’

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নিজেদের ব্যাটিং নিয়ে বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে আমাদের মধ্যে কথা হচ্ছিল পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য খুবই ভালো ছিল। কন্ডিশনও ভালো আছে। ২০০ রানও অনেক সময় ১৮০ রান হয়ে যায় এমন জায়গায়। টি-টোয়েন্টিতে ১ জন, ১-২ ওভারে রান বের করে ফেলে যায়। ১৬০ রান চেইজ করা যাবে এই বিশ্বাস ছিল। আলিশান (শারাফু) এবং আসিফ (খান) কাজটা করে দিয়েছে।’