ঢাকা ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
English

টাইগারদের নতুন কোচ হেম্প-অ্যাডামস

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫০ এএম
টাইগারদের নতুন কোচ হেম্প-অ্যাডামস
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় দলের নতুন ব্যাটিং ও পেস বোলিং কোচের নাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানিয়েছে, ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক বারমুডিয়ান ব্যাটার ডেভিড হেম্প ও পেস বোলিং কোচের দায়িত্বাভার এসেছে হিসেবে নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেস অলরাউন্ডার আন্দ্রে অ্যাডামসের কাঁধে।

নতুন দুই কোচের সঙ্গেই দুই বছরের জন্য চুক্তি করেছে বিসিবি। আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে দলের সাথে কাজ শুরু করবেন তারা। আগামী ৪ মার্চ টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু হবে দুই দলের সিরিজ।

এর আগে, বাংলাদেশ এইচপি দলের কোচ ছিলেন ডেভিড হেম্প। নিউজিল্যান্ড সফরেও ছিলেন তিনি জাতীয় দলের ভারপ্রাপ্ত ব্যাটিং কোচ হিসেবে। এছাড়াও দায়িত্ব পালন করেছেন পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলের হেড কোচ হিসেবে।

অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ড নারী দলের পেস বোলিং কোচ ছিলেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত টাইগারদের নতুন বোলিং কোচ অ্যাডামস। খণ্ডকালীন পেস বোলিং কোচ হিসেবে যুক্ত ছিলেন নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলেও। 

লিটনরা যেন ক্রিকেটের আদুভাই

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ০৫:৩০ এএম
লিটনরা যেন ক্রিকেটের আদুভাই
ছবি: সংগৃহীত

বলা হয়, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। নানা সমস্যায় হঠাৎ ছেড়ে দেওয়া লেখাপড়া আপনি শুরু করতে পারেন যখন-তখন। থেমেছিলেন যেখানে, সেখান থেকেই শুরু করতে পারবেন। কিন্তু অঢেল সম্পদ, আর্থিক সচ্ছলতা এবং সুযোগ-সুবিধার আধিক্যের পরও যদি আপনি শিক্ষায় পিছিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি অমনোযোগী শিক্ষার্থী। বছরের পর বছর পড়ে থাকতে হবে একই ক্লাসরুমে। ঠিক তেমনই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, যারা শিখেই চলেছে, কিন্তু রিপোর্ট কার্ডে কোনো উন্নতি নেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হার এর যথার্থতা প্রমাণ করেছে।

বাংলাদেশ আইসিসির পূর্ণ সদস্য পদ পাওয়ার দুই যুগ পেরিয়ে ২৫ বছরে পড়েছে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি- তিন ফরম্যাটেই অভিজ্ঞতার কমতি নেই তাদের। আর আমিরাত আজও আইসিসির সহযোগী সদস্য। তাদের মাটিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস বলেন, ‘আমাদের আরও শিখতে হবে।’ কিন্তু তাদের শেখার তাগাদা কতটুকু, সেটা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন? কারণ তাদের শেখার যেন শেষ নেই। একদিকে তারা শিক্ষা নিচ্ছে, অন্যদিকে আফগানিস্তানের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের জাতীয় ক্রিকেট দল অনেক দূর এগিয়ে ক্রমেই বড় শক্তি হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ সংগ্রাম করছে জয়ের দেখা পেতে। ধরা যাক, ২০২৫ সালের কথা। এ বছর দুই টেস্ট খেলেছে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে। একটি হেরেছে, একটি জিতেছে। ভারত এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ওয়ানডের দুটিই হেরেছে। টি-টোয়েন্টিতে তিন ম্যাচের দুটি হেরেছে, সদ্যসমাপ্ত আমিরাত সিরিজে। ভক্তরা হয়তো এখন মাথা চাপড়াচ্ছে আর আক্ষেপ করছে যে, কেন সিরিজের একটি ম্যাচ বাড়ল। এটা না হলে তো ১-১ সমতায় অন্তত সিরিজটা সমাপ্ত করা যেত। এতে প্রথম পূর্ণ সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সহযোগী সদস্য আমিরাতের কাছে অন্তত সিরিজ হারের লজ্জা পেতে হতো না। একটি হারকে নিছক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া যেত!

আমিরাতকে পুঁচকে বললে ভুল হবে না। তাদের স্কোয়াডে চোখ রাখতেই এর প্রমাণ মেলে। তৃতীয় ম্যাচের একাদশে থাকা আমিরাত ক্রিকেটাররা মোট টি-টোয়েন্টি খেলেছে ২২৮টি, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ৩৮৯টি। আমিরাতের ১১ জনের গড় ম্যাচ ২০.৭৩, বাংলাদেশের ৩৫.৩৭। আমিরাতের পাঁচজনের ম্যাচের সংখ্যা যথাক্রমে ৩, ৩, ৩, ২, ১। বাংলাদেশের পারভেজ হোসেন ইমন (৯টি) বাদে সবাই এই ফরম্যাটে ইতোমধ্যে ২১ বা তারও বেশি করে ম্যাচ খেলেছে। এক কথায়, ছোটদের কাছ থেকে আরেকটি লজ্জা শিক্ষা নিয়েছে লিটন ও তার বাহিনী।

সিরিজজুড়ে আমিরাত ব্যাটারদের বুক চেতিয়ে লড়াইয়ের দৃশ্যটাও ছিল চমকপ্রদ। প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইতিহাস গড়ে ২০৬ রান তাড়া করে। এরপর ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়ে আরও বড় কীর্তি গড়ে তৃতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে। আমিরাত ব্যাটারদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে বাঘ ভর করেছে তাদের ওপর। আর সেই বাঘের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে বাংলাদেশি ভক্তদের হৃদয়। সমর্থকদের সেই কান্না কতটা ছুঁয়ে যায় ক্রিকেটারদের, সেটা তারাই বলতে পারবেন। যদিও পারফরম্যান্স বলছে, আবেগ কিংবা ভালোবাসা নয়, লিটন-হৃদয়রা ক্রিকেট খেলেন এমনি এমনি। তাই তো বছরের পর বছর ধরে শিক্ষা নিয়েও করতে পারছেন না ভালো ফল। হয়তো ক্রিকেটাররাও জানেন না, তারা এখন কোন ক্লাসরুমে? গল্পের আদুভাই যেমন একই ক্লাসে বছরের পর বছর পড়েছেন।

চোটে সৌম্য, মিরাজে ভরসা বাংলাদেশের

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
চোটে সৌম্য, মিরাজে ভরসা বাংলাদেশের
ছবি : সংগৃহীত

চোটের কারণে পাকিস্তানের মাটিতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন সৌম্য সরকার। তার জায়গায় স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন সদ্যই পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলতে যাওয়া অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সদ্যসমাপ্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজে দলের সঙ্গে থাকলেও মাঠে নামা হয়নি সৌম্যের। গতকাল (২১ মে) টসের পর জানা যায়, চোটের কারণে একাদশে নেই তিনি।

বিসিবি জানিয়েছে, কোমরের বাঁ-পাশের ব্যথায় ভুগছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার ও ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। এই চোট থেকে সেরে উঠতে তার ১০ থেকে ১২ দিনের পুনর্বাসন প্রয়োজন হবে।

জাতীয় দলের ফিজিও বায়জেদুল ইসলাম খান বলেন, ‘সৌম্যর ইনজুরির অবস্থা পর্যালোচনার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি, তাকে এখন পূর্ণ বিশ্রামে রাখা প্রয়োজন। ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে তার খেলার সম্ভাবনা নেই।’

মিরাজ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে ২৯টি টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি দেশের হয়ে এই ফরম্যাটে মাঠে নেমেছিলেন।

পরাজয়ের পর গ্যালারির সমালোচনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া শামীমের

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
পরাজয়ের পর গ্যালারির সমালোচনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া শামীমের
ছবি : স্ক্রিনশট

টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৫তম স্থানে অবস্থান করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেই দলের কাছে গতকাল (২১ মে) ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ দল।

তবে এটিই প্রথম সহযোগী দেশের বিপক্ষে সিরিজ পরাজয় নয় লিটনদের। আগেও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। সেই সিরিজটি ছিল ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে। ব্যবধান ছিল একই ২-১।

সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় স্বাগতিকদের লিটন দাসরা। সেই লক্ষ্য ৭ উইকেট হাতে রেখেই টপকে গেছে স্বাগতিকরা। এতে করে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো নিজেদের করে নিয়েছে সিরিজ।

সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি অবস্থান করেন পেশাগত কারণে। বাংলাদেশ দল সেখানে কোনো সিরিজ খেলতে গেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভীড় জমায় গ্যালারিতে। বাংলাদেশ দল হারলে হতাশ হয়ে পড়েন তারাও। সবশেষ ম্যাচেও ঘটেছে এমন ঘটনা। হতাশ হয়ে ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে স্লোগান ও কটূক্তি করে ক্ষোভ ঝেরেছেন গ্যালারির দর্শকরা।

দর্শকদের স্লোগানের মাঝেও অধিকাংশ ক্রিকেটারই গুরুত্ব না দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলেও মেজাজ হারান শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক দর্শকের বাজে মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে তাকে নিচে নেমে আসার ইঙ্গিত করেন শামীম।

এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গ্যালারির বহু দর্শক একযোগে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। তখন সতীর্থ তানজিম হাসান সাকিব এসে শামীমকে শান্ত করে ড্রেসিংরুমে নিয়ে যান।

বাংলাদেশ দলের এমন পারফরম্যান্স ও দর্শকদের এমন প্রতিক্রিয়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

রিশাদ ফেরায় লাহোরে এখন ৩ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
রিশাদ ফেরায় লাহোরে এখন ৩ বাংলাদেশি
ছবি : সংগৃহীত

যুদ্ধবিরতির পর মাঠে ফেরা পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সে সুযোগ পেয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ব্যর্থ সিরিজ শেষে আগেই লাহোরের স্কোয়াডে থাকা রিশাদও ফের যোগ দিলেন দলটির সঙ্গে।

রিশাদ যোগ দেওয়ার লাহোর কালান্দার্সে এখন বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের সংখ্যা দাঁড়াল তিনে। রিশাদের যোগ দেওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেছে লাহোর কালান্দার্স।

প্লে-অফের ম্যাচে লাহোরের হয়ে মাঠে নামার কথা রয়েছে রিশাদ হোসেনের। সেখানে তার সঙ্গী হবেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ দুই অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। 

চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফে জায়গা পাওয়া লাহোর এলিমিনেটরের ম্যাচে মুখোমুখি হবে করাচি কিংসের মুখোমুখি হবে লাহোর। আজ (২২ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টায় শুরু হবে ম্যাচটি। 

এই ম্যাচে জয়ে পেলে শাহিন আফ্রিদির দল পৌঁছে যাবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে, যেখানে প্রতিপক্ষ হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে যাওয়া ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। 

লাহোর কালান্দার্সের এক ভিডিও বার্তায় রিশাদ হোসেন বলেন, ‘আসসালামুআলাইকুম সবাইকে। লাহোর কালান্দার্স পরিবারের কাছে আমি আবারও ফিরে এসেছি। ইনশাআল্লাহ মাঠে দেখা হবে, এবং আমরা একসঙ্গে শিরোপা জিতব।’

পিএসএল স্থগিত হওয়ার আগে রিশাদ হোসেন ৮.৭০ ইকোনমি রেটে পাঁচ ম্যাচে ৯ উইকেট শিকার করেছেন।

টেস্ট ক্রিকেট সম্ভাবনাময় নতুন যুগের দিকে

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
টেস্ট ক্রিকেট সম্ভাবনাময় নতুন যুগের দিকে
ছবি : সংগৃহীত

অনেক কিংবা একাধিক পরিবর্তন নয়। পাঁচ দিনের পরিবর্তে কেবল চার দিন। ইংল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ের মধ্যকার চার দিনের খেলাটি ঐতিহ্যবাহী ‘পাঁচ দিনের’ ম্যাচের একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ মাত্র। নটিংহামের ট্রেন্টব্রিজে উভয় দলই দুটি করে ইনিংস খেলবে এবং প্রতিদিন ৯০ ওভারের খেলা হবে। এই শতাব্দীর শুরু থেকে এটি হবে দ্বিতীয় চার দিনের টেস্ট, যা ক্রিকেটের লংগার ভার্সনে একটি নতুন যুগের সূচনার প্রতীক।

ঐতিহ্যগতভাবে টেস্ট ক্রিকেট পাঁচ দিনের খেলা। কিন্তু চার দিনের ম্যাচগুলো নতুন কিছু নয়। ১৯৭৯ সাল থেকে পাঁচ দিনের টেস্ট চূড়ান্ত হয়ে ওঠার আগে, টেস্ট ক্রিকেট বিভিন্ন ধরনের ফরম্যাট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করত: তিন, চার, পাঁচ, এমনকি ছয় দিনের ম্যাচ খেলা হতো এবং কিছু টেস্টের কোনো সময়সীমা ছিল না- তথাকথিত ‘টাইমলেস টেস্ট’। সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক চার দিনের টেস্টটি ১৯৭৩ সালে নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের মধ্যে খেলা হয়েছিল। ২০১৭ সালে আইসিসি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ের মধ্যে একটি ম্যাচ দিয়ে ফরম্যাটটি পরীক্ষা করে। যদিও সেই ম্যাচটি দুই দিনের মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছিল।

টি-টোয়েন্টির যুগে টাইমলেস্ট টেস্ট কিংবা পাঁচ দিনের টেস্ট অনেকটা দীর্ঘ মনে হচ্ছে। লজিস্টিক সাপোর্ট থেকে শুরু করে দীর্ঘ ম্যাচের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ হ্রাস পর্যন্ত সবকিছু সমাধানের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে আইসিসি। তারই একটি ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ। এটি আধুনিক যুগে ভক্ত, ব্রডকাস্টার এবং খেলাসংশ্লিষ্ট প্রত্যেকেই চাহিদা মেটাতে ঐতিহ্যবাহী ফরম্যাট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আইসিসির ইচ্ছার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

অনেক কারণেই ক্রিকেটের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফরম্যাট টেস্ট নিয়ে এভাবে পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। একটি প্রধান কারণ হলো টেস্ট ম্যাচের পরিবর্তিত প্রকৃতি। ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ৫২টি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়েছিল এবং ফল হয় ৪৯টিতে। যে তিনটি হয়নি, তার মধ্যে একটি পরিত্যক্ত হয়েছিল কোনো বল ছাড়াই। বাকি দুটিতে বৃষ্টিপাতের প্রভাব ছিল। গত বছর গড়ে টেস্ট ম্যাচ প্রায় ২৬৮ ওভার স্থায়ী হয়েছিল, যা প্রায় তিন দিনের পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেটের সমান। এটাই জানান দেয় যে, সিংহভাগ ম্যাচের ফলাফলে পৌঁছাতে আর পুরো পাঁচ দিনের প্রয়োজন হয় না।

চার দিনের টেস্টের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পেছনে আরেকটি মূল চালিকাশক্তি হলো আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (ডব্লিউটিসি) পয়েন্ট সিস্টেম। এই সিস্টেমের অধীনে, একটি জয়ের মূল্য ১২ পয়েন্ট, কিন্তু একটি ড্র মাত্র চার পয়েন্ট অর্জন করে। এটি দলগুলোকে ফলাফল-ভিত্তিক পিচ প্রস্তুত করতে উৎসাহিত করেছে, যার ফলে ড্রয়ের সম্ভাবনা কম এবং পাঁচ দিনের পূর্ণাঙ্গ খেলার প্রয়োজন হ্রাস পেয়েছে।

সম্প্রচার এবং আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে, চার দিনের টেস্ট বেশ কিছু সুবিধা প্রদান করে। প্রথমত, ম্যাচের সময়সূচি নির্ধারণ করা সহজ করে তোলে। যেহেতু খেলোয়াড়দের টেস্টের মধ্যে কমপক্ষে তিন দিনের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, তাই ম্যাচ সংক্ষিপ্ত করার ফলে বোর্ডগুলো সময়সূচির সঙ্গে আরও নমনীয় হতে পারে। সম্প্রচারক এবং হোম বোর্ডগুলোর জন্য খরচ সাশ্রয় উল্লেখযোগ্য হতে পারে। পঞ্চম দিনের জন্য পরিকল্পনা করা ব্যয়বহুল, বিশেষ করে ছোট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর জন্য। এখন পঞ্চম দিনটি বাদ দিলে বার্ষিক এবং লজিস্টিক খরচে লাখ লাখ টাকা সাশ্রয় হতে পারে।

ভক্তদের জন্য, চার দিনের টেস্ট ফরম্যাটটি আরও সহজলভ্য হতে পারে। এটা টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের দ্রুত গতিতে অভ্যস্ত নতুন দর্শকদের কাছে আবেদন সৃষ্টি করতে পারে। এক কথায়, চার দিনের টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহ্য এবং আধুনিক ক্রীড়া ব্যবহারের বাস্তবতার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে। অনেকেই, বিশেষ করে সমালোচকরা যুক্তি দেন যে, চার দিনের টেস্ট ফরম্যাটটির ঐতিহ্যকে হারিয়ে ফেলবে। তারা টেস্টকে ক্রিকেটের ধৈর্যশীল, সহশীলতার সবচেয়ে কঠোর এবং চূড়ান্ত পরীক্ষার দৃষ্টিতে দেখেন।

তবে আইসিসির বিশ্বাস, সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গি খেলার ঐতিহাসিক নমনীয়তাকে ধ্বংস করবে না। খেলাটি ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে এবং ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ম্যাচটি নতুন সূচনালগ্নকে সফল করে তুলবে। আর যদি তাই হয়, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠতে পারে চার দিনের টেস্ট।