বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে শেষ বলে ১ রানের জয় পায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। রোমাঞ্চকর সেই ম্যাচ অবশ্য আলোচনায় রয়েছে ভিন্ন এক কারণে। বিরাট কোহলির আউট প্রসঙ্গ নিয়ে চলছে নানামুখী চর্চা। আউট হওয়া সেই বল নো ছিল, নাকি ছিল না এই নিয়ে চলছে একের পর এক আলোচনা।
২২২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে হার্শিত রানার ফুল্টস বলটি তার হাতেই ক্যাচ দেন বিরাট। বোলার ক্যাচ নেওয়ার পর আম্পায়ার তাৎক্ষণিক আউটের সিদ্ধান্ত দেন। বলটি কোমরের ওপর দাবি করে রিভিউর সংকেত দেখান কোহলি। কিন্তু, যেহেতু বলটি স্লোয়ার ছিল আর ব্যাটার ক্রিজের বাইরে ছিল বল ট্র্যাকিং অনুযায়ী বলটি পপিং ক্রিজ পর্যন্ত যেতে যেতে কোহলির কোমরের নিচে নেমে আসতো এই যুক্তিতে আউট দেওয়া হয় আরসিবির এই ব্যাটারকে।
যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের সন্তুষ্ট হতে না পেরে মাঠ ছাড়ার আগে আম্পায়ারের সাথে কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৬ বলে ১৮ রান করে দ্রুত রান তুলছিলেন। আম্পায়ার সিদ্ধান্তে মাঠে ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় ড্রেসিংরুমের ঢোকার আগে রাগে ব্যাট দিয়ে ডাস্টবিনকে আঘাত করে তা ভেঙে ফেলেন।
এমন আউট নিয়ে মতামত রেখেছেন বিশেষজ্ঞরাও। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার নভোজিৎ সিং সিধু এক্সে একটি ভিডিও আপলোড করে বুলেন, ‘এমন আউট বিমারকে বৈধতা দিচ্ছে।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘ক্রিজ থেকে ৬ ইঞ্চি বাইরে আসা ব্যাটারের ব্যাটে বল দেড় ইঞ্চি ওপরে স্পর্শ করে তাহলে, ৬ ইঞ্চি পথ যেতে যেতে কীভাবে ২ ফুট নিচে কমে কোমরের নিচে চলে আসে?’
তিনি মনে করেন এই আইনটি নিয়ে আবারও ভাবা উচিত। ‘এই আইন নিয়ে ভালোভাবে চিন্তা করা দরকার। আর এই আইনকে পরিবর্তন করা দরকার।’
এবারের আইপিএলে সকল খেলোয়াড়ের আলাদা করে কোমরের উচ্চতা নেওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে পপিং ক্রিজে কতটুকু উচ্চতা পর্যন্ত বলের ইমপ্যাক্ট হলে নো হবে না সেই বলটি নো হবে না সেই হিসাবও রয়েছে। তবে সাবেক ভারতীয় পেস বোলিং অলরাউন্ডার ইরফান পাঠানের দৃষ্টিতে আউট ছিলেন কোহলি।
‘যেহেতু এবারের আইপিএলে সবার কোমরের উচ্চতা নেওয়া হয়েছে এর মানে পপিং ক্রিজে স্ট্যান্স নিয়ে থাকলে কোমরের ওপর গেলে তা নো বল হবে। এখন কোহলি যেহেতু পপিং ক্রিজের বাইরে ছিলেন আর বল স্লো ছিল তাই বলটি পপিং ক্রিজ যেতে যেতে নিচে নেমে আসতো আর তা বৈধ ডেলিভারিই হতো। তাই আমার কাছে তিনি আউটই ছিলেন।’
ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে আউট মেনে নিয়ে এক্সে ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রযুক্তিকে, ‘প্রযুক্তির জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। পক্ষপাতিত্বের সমস্ত অভিযোগ তুলে নিয়েছে। একই সেই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে খেলোয়াড়দের কোমরের উচ্চতা পরিমাপ করা হয়েছিল, এমন কিছুর জন্য আমরা অনেকেই অপেক্ষা করছিলাম। সুতরাং, এটি মোটেও আম্পায়ারদের বিষয় নয়, প্রযুক্তির পক্ষপাতশূন্য ব্যবহার।
এই আউট সম্পর্কে এক্সে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়েছেন মোহাম্মদ কাইফও, ‘এটি একটি অনিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত। ব্যাট ও বল মিলিত হওয়ার সময় যদি তা কোমরের ওপর থাকে তাহলে সেটা নো বল হিসেবে নিয়ম করা উচিত। এছাড়াও আমি সবসময় অনুভব করেছি যে বল ট্র্যাকিং একটি তীক্ষ্ণ ডিপ দেখায়।’