প্রথম টি-টোয়েন্টির পর দ্বিতীয় ম্যাচেও টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সিদ্ধান্ত আগে বোলিংয়ের। তার আস্থার প্রতিদান দিতে বোলাররা অধিনায়ককে অপেক্ষায় রাখেনি। দারুণ বোলিংয়ে জিম্বাবুয়েকে আটকে রেখে ১১ ওভার পর্যন্ত। জোনাথন ক্যাম্পবেল ও ব্রায়ান বেনেট ৭৩ রানের জুটি গড়ার আগে হুড়মুড়িয়ে ভাঙে জিম্বাবুয়ের টপ ও মিডল অর্ডার। ৬ষ্ঠ উইকেটে বেনেট-ক্যাম্পবলের ৪৩ বলের ওই ঝড় না উঠলে হয়তো শতরানের আগে থামত সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত ওই ৪৩ বলে ৭৩ রানের ওই ঝড়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৩৮ রান।
চট্টগ্রামে রবিবার (৫ মে) সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারের করা ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা ছিল জিম্বাবুয়ে। ওই আশায় টপ অর্ডারে আসে পরিবর্তন। রায়ান বার্ল ও শন উইলিয়ামসের পরিবর্তে জায়গা পান তাদুওয়ানাশে মারুমানি ও জোনাথন ক্যাম্পবেল। জয়লর্ড গ্যাম্বির সঙ্গে ওপেনিংয়ে আসেন মারুমানি। বাংলাদেশি বোলারদের দাপটে দুইজনই হারিয়ে ফেলেন খেই। তাসকিন আহমেদের করা ফুল লেন্থের ডেলিভারি সামলাতে ব্যর্থ মারুমানি ফেরেন ৪ বলে ২ রানে। তার বিদায়ের পর হুড়মুড়িয়ে ভাঙে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংয়ের টপ ও মিডল অর্ডার। স্কোরবোর্ডে ৪২ রান তুলতে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান ৫ ব্যাটার। প্রতিপক্ষের উপর দাপট দেখানো বাংলাদেশি বোলাররা সফরকারীদের আটকে রাখে ১১ ওভার পর্যন্ত। বাংলাদেশি বোলারদের দাপটে আটকে যাওয়া জিম্বাবুয়ে ১১ ওভারে স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারে মাত্র ৪৫ রান।
দল যখন ঘোরতর বিপদে তখনই ৫ বলের ব্যবধানে ক্রিজে আসেন বেনেট ও ক্যাম্পবেল। দুই অনভিজ্ঞ ব্যাটার উইকেটে নেমে শুরু করেন ছড়ি ঘোরানো। বাংলাদেশি বোলারদের দর্শক বানিয়ে তারা দুজনে ৪৩ বলে গড়েন ৭৩ রানের জুটি। অভিষিক্ত জোনাথন ক্যাম্পবেলকে দেখে কোনোভাবেই বোঝা যাচ্ছিল না খেলতে নেমেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ। বাবা অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের সৌজন্যে অনেক বেশি আলোচনায় আসা জোনাথান ২৪ বলে খেলেন ৪৫ রানের ইনিংস। তার ১৮৭.৫০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ছিল চার চার ও তিন ছক্কা। তার সঙ্গী বেনেটের ব্যাটে আসে ২৯ বলে ৪৪ রান। তিনি হাঁকান দুই চার ও তিন ছক্কা। বাংলাদেশি বোলারদের উপর ছড়ি ঘোরানো বেনেট-ক্যাম্পবেল জুটির আগে ব্যাটিংয়ে নামা পাঁচ জিম্বাবুইয়ানই ছিলেন নার্ভাস। ওপেনার জয়লর্ড গ্যাম্বি তো খেলেছেন টেস্ট ইনিংস! ৩০ বলে মাত্র ১৭ রান করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ক্যাচ তুলে দেন শান্তর হাতে।
তার মতোই নার্ভাস ব্যাটিংয়ে দলকে বিপদে ফেলেন অভিজ্ঞ সিকান্দার রাজা, ক্রেইগ আরভিনরা। রাজা ৮ বলে ৩ ও আরভিন ১৬ বলে করেন ১৩ রান। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দলের রান শতরানের উপর টেনে নেওয়ার নায়ক ক্লাইভ মাদান্দে আউট হন রানের খাতা খোলার আগে। আগের ম্যাচের মতো ব্যর্থতার খাতায় ছিল লুক জোঙ্গে। ৩ বলে ২ রান আসে তার ব্যাটে।
জিম্বাবুইয়ানদের অল্প রানে আটকে রাখার দিনে শরিফুল ইসলাম, শেখ মাহেদি, তাসকিন আহমেদরা ছিলেন মিতব্যয়ী। বোলিং ইনিংসের গোড়াপত্তন করা শরিফুল ২৬ রানে নেন এক উইকেট। শেখ মাহেদির শিকার ছিল ১৮ রানে একটি। মাহেদির সমান রান দেওয়া পেসার তাসকিন আহমেদের ফেরান প্রতিপক্ষের দুই ব্যাটারকে। তাসকিনের সমান দুই উইকেট নেওয়া রিশাদের খরচ ছিল ৩৩ রান। খানিকটা রানপ্রসবা হলেও রিশাদ ফিরিয়েছেন দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার সিকান্দার রাজা ও ক্লাইভ মাদান্দেকে। ওপেনার গ্যাম্বিকে ফেরানো মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের খরচ ছিল ৩৭ রান। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দারুণ নজর কাড়া সাইফউদ্দিন একটু খরুচে ছিলেন। তার উপরই মূলত ঝড় তোলেন ক্যাম্পবেল ও বেনেট।