কেটলি-ট্রাকে উত্তেজনা / খিলক্ষেতে আওয়ামী লীগের হঠাৎ দুই ‘প্রধান কার্যালয়’ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

কেটলি-ট্রাকে উত্তেজনা খিলক্ষেতে আওয়ামী লীগের হঠাৎ দুই ‘প্রধান কার্যালয়’

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২১ পিএম
খিলক্ষেতে আওয়ামী লীগের হঠাৎ দুই ‘প্রধান কার্যালয়’
ছবি : খবরের কাগজ

ভোটের তারিখ ঘনিয়ে আসতেই পাল্টে গেল দৃশ্যপট। ঢাকা-১৮ আসনে নির্বাচনি প্রচারে প্রথম দিকে এগিয়ে ছিলেন লাঙ্গল আর কেটলি প্রতীকের প্রার্থী। তবে শেষ সময়ে এসে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতার কেটলি ও ট্রাকের সমর্থকদের মধ্যেও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে নির্বাচনি সীমানার আওতাভুক্ত খিলক্ষেত এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে থানা আওয়ামী লীগের দুই প্রধান কার্যালয়। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, খিলক্ষেত এলাকায় ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র পিলার থেকে আনুমানিক ২০ ফুট দূরত্বে সড়কের উভয় পাশেই স্থাপন করা হয়েছে দুটি কার্যালয়। গত বুধবার দেখা যায়, বাঁশের খুঁটি আর টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি ডান পাশে স্থাপিত কার্যালয়ের প্রবেশপথে ঝুলছিল একটি ব্যানার। সেখানে লেখা খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রধান কার্যালয়। ভেতরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের চিত্র, দলীয় স্লোগানসহ দুটি ব্যানার রয়েছে। একটিতে ‘সৌজন্যে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম’ ও অন্যটিতে ‘প্রচারে ৯৬ নম্বর ওয়ার্ড শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শফিকুল ইসলামের’ নাম রয়েছে। বাইরে কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরীর বহু পোস্টার ঝোলানো হয়েছে।

এ সময় কথা হয় শ্রমিক লীগের খিলক্ষেত থানার সাধারণ সম্পাদক সরওয়ারের সঙ্গে। খবরের কাগজকে তিনি বলেন, ‘এখানে অনেক দিন ধরে আমাদের অফিস ছিল। এখন বাড়ানো হয়েছে। নেতারা বসলে কর্মীর জায়গা হয় না। এ জন্য বড় করা হয়েছে। আমরা কেটলির পক্ষে কাজ করছি।’ 

এই কার্যালয়ের উল্টো দিকে আরেকটি অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপনের কাজ চলছিল কয়েক দিন ধরে। গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়ে সেখানে একটি ‘সাইনবোর্ড’সদৃশ ব্যানার দেখা যায়। সেখানে বড় করে লেখা, খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগ, প্রধান কার্যালয়। নিচে লেখা হাজি মো. আসলাম উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক। ভেতরে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক এস এম তোফাজ্জল হোসেনের ট্রাক মার্কার ভোটার লিস্টসহ প্রচারসামগ্রী রয়েছে। 

এখানে কথা হয় আওয়ামী লীগের ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের সহসভাপতি রাকিব উদ্দীনের সঙ্গে। পূর্বের কার্যালয় রেখে এখানে কার্যালয় করা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন থেকে এটি ইলেকশনের কাজে ব্যবহৃত হবে।’ 

সংশ্লিষ্টরা জানান, এ আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১৪-দলীয় জোটের সমর্থনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির শেরীফা কাদের। ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের চার নেতা। আসন সমঝোতায় বাদ পড়েন বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব হাসান। ফলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কেটলি ও ট্রাকের প্রচারে অংশ নেন। তবে হাবিব হাসানের সঙ্গে খসরু চৌধুরীর পূর্ব থেকে দূরত্ব থাকায় হাবিবের সমর্থকদের বড় অংশ এস এম তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।

শেষ দিনের প্রচার
আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারসীমা হওয়ায় প্রকৃত অর্থে গতকাল ছিল শেষ দিন। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের শেরীফা কাদের উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টর মাঠ থেকে ‘রোড শো’ শুরু করেন। যেখানে ট্রাক ও মোটরসাইকেলে করে নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এ সময় সাংবাদিকদের শেরীফা কাদের বলেন, ‘জনগণের ওপর ভরসা করে আমি নেমেছি। আমাকে ফাইট করতে হবে। আমি শতভাগ আশাবাদী।’

ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী এস এম তোফাজ্জল হোসেন বাউনিয়া, গোয়ালটেক, কবিরশাহ খান মাজার, আজমপুর, দক্ষিণখানে গণসংযোগ ও পথসভা করেন। সন্ধ্যার পর কুর্মিটোলা হাইস্কুলে পথসভা করেন। এ সময় ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক। ট্রাক মার্কায় আপনারা একটা ভোট দেবেন।’

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান খসরু
কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক খসরু চৌধুরী গতকাল দক্ষিণখান ও তুরাগ এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। একই সঙ্গে এই আসনের ২১৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৪টিকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করেছেন তিনি। 

জামালপুরে ভোট বর্জন ও সংঘর্ষের মধ্যেই নির্বাচন

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪১ এএম
জামালপুরে ভোট বর্জন ও সংঘর্ষের মধ্যেই নির্বাচন
জামালপুর ৫ সদর আসনের ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্রপ্রার্থীর নির্বাচনি প্রচার কেন্দ্রে হামলা ও ভাঙচুর। খবরের কাগজ

জামালপুরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন, প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ জন আহত ও পুলিশের ফাঁকা গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

জামালপুর-৫ সদর আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেজাউল করিম রেজনু নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের তমালতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পোলিং এজেন্টদের মারধর করে সব কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়া, প্রকাশ্য সিল মারাসহ ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে জামালপুর-৫ সদর আসনের নির্বাচন স্থগিত করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুনর্নির্বাচন দাবি করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু।

এদিকে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মীর সামছুল আলম ভোট বর্জন করেছেন। দুপুরে তার নির্বাচনি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি ভোট বর্জনের কথা জানান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটের আশ্বাস দিলেও মাঠে নির্বাচনের সেই পরিবেশ ছিল না। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রতিটি কেন্দ্রে নৌকার সমর্থকরা লাঙলের এজেন্টদের বের করে দিয়ে সিল মারার মহোৎসব চালায়।

এ ছাড়াও জামালপুর-২ ইসলামপুর আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় সিল মারার অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা আল মাহমুদ। দুপুরে উপজেলা জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ৯২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩০টি ভোটকেন্দ্রে লাঙ্গল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারার মহোৎসব চলছে। 

অপরদিকে, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর আদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা ও ট্রাকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় নৌকার এজেন্টসহ উভয় পক্ষের ১২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও বেলা ১১টার দিকে সরিষাবাড়ী পৌরসভার বলারদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় নৌকার এজেন্ট মুমিনুল ইসলাম ও রমজান আলী আহত হন। মুমিনুলকে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান জানান, চর আদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেতরে নৌকার প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে।

বলারদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আরিফুর রহমান জানান, ট্রাক ও নৌকা প্রার্থীর এজেন্টদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

কেউ জাল ভোট দিতে পারবে না : আরএমপি কমিশনার

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৯ এএম
কেউ জাল ভোট দিতে পারবে না : আরএমপি কমিশনার

‘ভোট হবে ভোটের মতো’ জানিয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেছেন, “কেউ কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিতে পারবে না। ভোটে কোনো ধরনের জালিয়াতিও হবে না। ভোটে অনিয়ম হবে না মানে হবে না। ভোট হবে ভোটের মতো। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’- এর ব্যতিক্রম হলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

গতকাল শনিবার সকালে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া পুলিশ ও আনসার সদস্যদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে প্যারেড ব্রিফিংয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন। 

আরএমপি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘ভোটারদের কেউ কোনো বাধা দিতে পারবে না। ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবেন, নিজের মতো করে ভোট দিয়ে বের হবেন। মাঝখানে কেউ বাধা দিতে গেলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ওসিদের প্রতি নির্দেশ থাকল, ভোটকেন্দ্রে কেউ ফৌজদারি অপরাধ করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। এর পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। অপরাধ বিবেচনায় তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচার করে সাজা দেবেন। তা না হলে থানায় মামলা হবে। আমরা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দেব যে, নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।’

পুলিশ কমিশনার বলেন, একটা কথা আছে যে রাতে ভোট হয়ে যায়। তাই এবার ব্যালট যাবে ভোটের দিন সকালে। এই ভোট বাধাগ্রস্ত করতে একটা মহল নানা কর্মকাণ্ড করতে পারে। তাদের মোকাবিলার জন্য পুলিশ ও আনসার বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কেউ যেন কোনো ধরনের ব্যাগ কিংবা টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না পারেন।

এই প্যারেডে ২ হাজার ১৯৫ জন পুলিশ সদস্য ও ১ হাজার ৩৪৪ জন আনসার সদস্য অংশ নেন। ভোটকেন্দ্রে তারা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তাদের দিকনির্দেশনা দেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার। পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা রাজশাহীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের দিকে রওনা দেন। এই ব্রিফিং প্যারেডে আরএমপির অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমপির অধীনে এবার সদর আসনসহ চারটি সংসদীয় এলাকা পড়েছে। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ২১৩টি। এর মধ্যে ২৪টি ছাড়া অন্য সব কেন্দ্রগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই ১২ জন করে আনসার সদস্য থাকবেন। আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে তিনজন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে চারজন করে পুলিশ সদস্য থাকবেন।

এ ছাড়া পুলিশের ৪৭টি মোবাইল টিম, ২০টি স্ট্রাইকিং টিম, কুইক রেসপন্স টিম এবং আরএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিট মাঠে থাকবে। এ ছাড়া র‌্যাবের চারটি দল, ৭ প্লাটুন বিজিবি, ৪ প্লাটুন আনসার ও ৬ প্লাটুন সেনাসদস্য টহলে থাকবে রাজশাহীতে।

এদিকে ৭ জানুয়ারি ভোটের মাঠে থাকবেন জুডিশিয়াল এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও। শনিবার সকাল থেকেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে দেখা গেছে। রাজশাহী মহানগরীর প্রতিটি প্রবেশমুখ এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাসদস্যরা। 

অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনা হচ্ছে: তৈমূর

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনা হচ্ছে: তৈমূর

অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও দলটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

গতকাল শনিবার দুপুরে রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় তার নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ‘সরকার কোন মুখে বলে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারছে। সরকার কী বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে, তারা সফলভাবে দেশ পরিচালনা করছে। বাসে আগুন লাগা সরকার বন্ধ করতে পারে না। ট্রেনের বগি জ্বালিয়ে দেওয়া নিত্যনৈমিত্যিক ব্যাপার হয়ে গেছে। প্রতিদিন ট্রেনে মানুষ মরছে। নির্বাচনে প্রকাশ্যে টাকা বিলি হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে পারে না। সরকার যে বারবার বলে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে, কিন্তু পত্রিকায় এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও পুলিশের অ্যাকশন নেই। সরকার কোন মুখে বলে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারছে।’

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জে শকুনের থাবা পড়েছে। ভূমিদস্যুদের শকুনি থাবা নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টাকা বিলি হচ্ছে। অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনা হচ্ছে।’

রূপগঞ্জের ভূমিদস্যুরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা টাকা বিলি করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া ডামি প্রার্থী রাখা নৈতিকতাবিরোধী কর্মকাণ্ড। কারণ তার জন্য রাষ্ট্রের ও জনগণের টাকা খরচ হয়। রূপগঞ্জে অর্থের ছড়াছড়ি খুবই ন্যক্কারজনক। নির্বাচন কমিশনকে আমি এই অর্থ বিলি বন্ধ করতে অনুরোধ করব।

খুলনায় ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
খুলনায় ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা
প্রতীকী ছবি

খুলনায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট আয়োজনে ৭৯৩টি কেন্দ্রের ৪৭২০টি ভোটকক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার দুপুরের পর থেকে ভোটের সরঞ্জামাদি নিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছান প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসাররা। 

একই সঙ্গে কেন্দ্রের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা কেন্দ্রে উপস্থিত হন। তারা ভোটকক্ষ তৈরি ও ভোটকেন্দ্রের নির্দিষ্ট দূরত্বে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করেন। খুলনার ছয়টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ৩৯ জন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮২ জন।

খুলনা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন খবরের কাগজকে বলেন, ‘এরই মধ্যে নির্বাচনের সব দাপ্তরিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা
খুলনা জেলায় ৭৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচ শতাধিক কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ভৌগলিক অবস্থান ও এরই মধ্যে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার ভিত্তিতে ওই কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলা হচ্ছে। সাধারণ কেন্দ্রের চেয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্রে একজন করে অস্ত্রধারী পুলিশ বেশি থাকবে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
 
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নগরীর ৩১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৮৪টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে তালিকা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। নির্বাচনের আগে ও পরে মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করবে ৩ হাজার পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ, আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন থাকবে।’

খুলনার তিন আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২০ এএম
খুলনার তিন আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
প্রতীকী ছবি

খুলনা জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিতে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী যেখানে আছেন, সেখানে নির্বাচনি লড়াই ভিন্নমাত্রা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। খুলনা-৪, ৫ ও ৬ আসনে কোনো একক প্রার্থীর দিকে জয়ের পাল্লা ভারী না হওয়ায় প্রচারে ঘাম জড়িয়েছেন সব প্রার্থীই। 

খুলনা-৪ আসনে এবার প্রার্থী আছেন ১১ জন। তবে এখানে মূল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারার সঙ্গে। দারা এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দুই প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হওয়ায় অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন সালাম মূর্শেদী।

খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সামনে টানা চতুর্থবার জয়ের হাতছানি। এর আগে তিনি ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পরপর তিনবার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তার বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন। এই আসনের ডুমুরিয়া উপজেলায় নারায়ণ চন্দ্র ও ফুলতলা উপজেলায় আকরামের দাপট বেশি। তবে সর্বশেষ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় বিভেদে ডুমুরিয়ায় নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভরাডুবি হওয়ায় সেখানে দলীয় কোন্দল কাজে লাগাতে চায় আকরাম। এই দুই নেতার মধ্যে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রত্যাশা করছেন সাধারণ মানুষ। 

এরই মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে বিগত নির্বাচনগুলোতে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন আকরাম হোসেন। পাশাপাশি আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সমর্থকরা। 

অন্যদিকে খুলনা-৬ আসনে নৌকা প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারে সক্রিয় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জিএম মাহবুবুল আলম। এখানকার বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তার বদলে নৌকা পেয়েছেন মো. রশিদুজ্জামান।

তবে সর্বশেষ পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রশিদুজ্জামান চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিয়ে জামানত হারিয়েছেন। ফলে নতুন প্রার্থী হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা গড়ে তুলতে সময় লেগেছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশ জি এম মাহবুবুল আলমকে সমর্থন করছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রশ্ন তুলেছেন রশিদুজ্জামান সমর্থকরা। 

তবে কেন্দ্রীয় কোনো নির্দেশনা না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করলেও দলীয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এখনই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে বৈঠকে জানানো হয়। এই আসনেও দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা কথা জানাচ্ছেন ভোটাররা।