ফরিদপুর-৩ / ওয়ারেন্ট ছাড়াই কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে: এ কে আজাদ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

ফরিদপুর-৩ ওয়ারেন্ট ছাড়াই কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে: এ কে আজাদ

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
ওয়ারেন্ট ছাড়াই কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে: এ কে আজাদ
ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ বলেছেন, ‘আমার নেতা-কর্মীদের নামে সাজানো ও মিথ্যা মামলা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। পারিবারিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে কানাইপুরে চেয়ারম্যান বেলায়েত ফকিরকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। বিনা ওয়ারেন্টে আমার অনেক নেতা-কর্মীকে এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ছাড়া আমার সমর্থকদের ওপর একের পর হামলা করা হচ্ছে। ভোটের আগের দিন এসব ঘটনায় ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।’

গতকাল শনিবার দুপুরে ফরিদপুর শহরে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
 
এ কে আজাদ বলেন, ‘ঈগলের পক্ষে জনসমর্থন দেখে তা নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হক ও তার সমর্থকরা। নৌকার এই প্রার্থী নানা কায়দায় বাধা সৃষ্টি করছেন। গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ঈগলের সমর্থক নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, ভয়ভীতি অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনায় পাঁচটি মামলা ও ১৪টি জিডি করার পরও দু-একটি ছাড়া তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি প্রশাসনকে।’
 
ঈগল প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, ‘গত রাতেও (শুক্রবার) আমার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে নৌকা সমর্থকরা। শুক্রবার রাতে আলিয়াবাদ ইউনিয়নে পলি মেম্বারের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কুপিয়ে আহত করা হয়েছে ছয়জনকে। এ ছাড়া মাচ্চর ইউনিয়ন ও অম্বিকাপুর ইউনিয়নেও হামলা এবং আটকের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শামীম হক এখন কোনো উপায় না দেখে পুলিশকে ব্যবহার করছেন।’ 

এ সময় অন্য আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, বিষয়টি পানির মতো পরিষ্কার। তারা প্রশাসন দিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রায় নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকতে বললেও ফরিদপুর পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি মানছে না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সবুল চন্দ্র সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফারুক হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি মাসুদ, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মনিরুল আহসান মিঠু প্রমুখ।

পাহাড়ে ভোটার আশাব্যঞ্জক ছিল না

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৩ এএম
পাহাড়ে ভোটার আশাব্যঞ্জক ছিল না
খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার চেঙ্গী ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী লোগাং করল্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৭৬৯ জন। তবে একটি ভোটও পড়েনি এই কেন্দ্রে।

খাগড়াছড়ির বেশরভাগ এলাকায় ফাঁকা গুলি ছোড়া হলেও বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।

জেলা শহরসহ উপজেলা সদর এবং তার আশপাশের কিছু ভোটকেন্দ্র ছাড়া দুর্গম এলাকার কেন্দ্রগুলো ছিল একেবারেই ভোটারশূন্য। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করলেও তৃণমূল বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাল ভোটের অভিযোগ তুলেছেন।

ভোটের শুরুতে গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের রিয়ংমরমপাড়া, বড়ইতলী ও নাক্রাই এলাকায় ফাঁকা গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। একই সময়ে মানিকছড়ি উপজেলার গভামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের আশপাশে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি এবং দুপুরে জেলা সদরের স্টেডিয়াম এলাকাতে তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে তারা। 

এ ছাড়াও সকালে পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের বড় পানছড়ি (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে চার যুবককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পানছড়ি উপজেলার সহকারী রিটার্নিং অফিসার অঞ্জন দাশ জানান, ছদ্মবেশে ভোট কেন্দ্রে ঢুকে জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে ওই চার যুবককে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হাসান তাদের প্রত্যেককে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জাহিদ হাসান, শওকত মিয়া, মো. হালিম ও মো. ফুল মিয়া। তারা সবাই পানছড়ির লোগাং এলাকার বাসিন্দা।

এদিকে জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোর সদর এবং এর আশপাশের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় কিছু ভোটার দেখা গেলেও দুর্গম এলাকাগুলোতে এবার উল্লেখ করার মতো ভোটার কেন্দ্রে যাননি। কয়েকটি কেন্দ্রে কেবল হাতে গোনা কয়েকজন ভোটার চোখে পড়েছে। মূলত, খাগড়াছড়ির প্রভাবশালী একটি আঞ্চলিক সংগঠনের নির্বাচন বর্জন এবং ভোটারদের হুমকি-ধমকি দেওয়ায় ভয়ে কেউ ভোট দিতে যাননি।
 
প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ভোট বর্জনের পাশাপাশি ভোটারদের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। অপরদিকে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা ভোটারদের হুমকি ও ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য কয়েকটি কেন্দ্রের আশপাশে গুলি বর্ষণের অভিযোগ করেছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার। 

তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা বলেন, ‘নির্বাচনে চরম অনিয়ম হয়েছে। সদরকেন্দ্রিক ভোটকেন্দ্রগুলোতে জাল ভোটের মহোৎসব করেছে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।’ 

এ ছাড়া জাতীয় পাটির প্রার্থী মিথিলা রোয়াজাও বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে খাগড়াছড়িতে এমন নির্বাচন কেউ কখনো দেখেনি। এটি নির্বাচনের নামে প্রহসন।’

খাগড়াছড়ি আসনে এবার মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিথিলা রোয়াজা (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা (সোনালি আঁশ) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. মোস্তফা (আম প্রতীক)।

খাগড়াছড়ি আসনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪১৯ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬২ হাজার ৬১ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৮৫ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুইজন। নতুন ভোটার ৭৩ হাজার ৬০৩ জন। খাগড়াছড়ি আসনের মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের। 

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং এখানকার ভোটের সমীকরণ সমতলের অন্যান্য সংসদীয় আসনের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি বেশ শক্ত অবস্থান রয়েছে অনিবন্ধিত পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠনগুলো।

খাগড়াছড়ি জেলায় বর্তমানে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ), ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এবং মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস সংস্কার) এই চারটি গ্রুপের সশস্ত্র প্রভাব রয়েছে। তবে এর মধ্যে খাগড়াছড়িতে সবচে বেশি আধিপত্য প্রসিত খীসার ইউপিডিএফের। ভোটের মাঠেও বরাবরই ফ্যাক্টর প্রভাবশালী এই সংগঠনটি। বিগত সব স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়া হলেও এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে তারা।

শুধু তাই নয়, এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, গুলিবর্ষণ ও যানবাহন ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে পানছড়ি উপজেলায় সন্ধ্যা ৬টার পর যানবাহন চলাচল না করতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে সংগঠনটি।

এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোটরসাইকেল চালানোর অপরাধে গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পানছড়ি উপজেলার হারুবিল এলাকায় দুই নির্মাণ শ্রমিকের ওপর ব্রাশফায়ার করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে ওই দুই শ্রমিক। সেদিন দুপুর ২টার দিকে পানছড়ি উপজেলার ধুদুকছড়া এলাকায় নির্বাচনি প্রচারকাজ করতে গিয়ে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা ও তার কর্মী-সমর্থকরা হামলার শিকার হয়েছেন।

ওই হামলায় আহত হয়েছেন প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা নিজেও। ভাঙচুর করা হয়েছে তার নির্বাচনি প্রচারে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ও মাইক্রো বাসসহ ১২টি মোটরসাইকেল। আর ওই ঘটনায় প্রসিত খীসার ইউপিডিএফকে দায়ী করা হলেও অভিযোগটি প্রত্যাখ্যান করেছে তারা।

জামালপুরে ভোট বর্জন ও সংঘর্ষের মধ্যেই নির্বাচন

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪১ এএম
জামালপুরে ভোট বর্জন ও সংঘর্ষের মধ্যেই নির্বাচন
জামালপুর ৫ সদর আসনের ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্রপ্রার্থীর নির্বাচনি প্রচার কেন্দ্রে হামলা ও ভাঙচুর। খবরের কাগজ

জামালপুরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন, প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ জন আহত ও পুলিশের ফাঁকা গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

জামালপুর-৫ সদর আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেজাউল করিম রেজনু নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের তমালতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পোলিং এজেন্টদের মারধর করে সব কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়া, প্রকাশ্য সিল মারাসহ ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে জামালপুর-৫ সদর আসনের নির্বাচন স্থগিত করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুনর্নির্বাচন দাবি করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু।

এদিকে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মীর সামছুল আলম ভোট বর্জন করেছেন। দুপুরে তার নির্বাচনি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি ভোট বর্জনের কথা জানান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটের আশ্বাস দিলেও মাঠে নির্বাচনের সেই পরিবেশ ছিল না। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রতিটি কেন্দ্রে নৌকার সমর্থকরা লাঙলের এজেন্টদের বের করে দিয়ে সিল মারার মহোৎসব চালায়।

এ ছাড়াও জামালপুর-২ ইসলামপুর আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় সিল মারার অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা আল মাহমুদ। দুপুরে উপজেলা জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ৯২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩০টি ভোটকেন্দ্রে লাঙ্গল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারার মহোৎসব চলছে। 

অপরদিকে, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর আদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা ও ট্রাকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় নৌকার এজেন্টসহ উভয় পক্ষের ১২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও বেলা ১১টার দিকে সরিষাবাড়ী পৌরসভার বলারদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় নৌকার এজেন্ট মুমিনুল ইসলাম ও রমজান আলী আহত হন। মুমিনুলকে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান জানান, চর আদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেতরে নৌকার প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে।

বলারদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আরিফুর রহমান জানান, ট্রাক ও নৌকা প্রার্থীর এজেন্টদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

কেউ জাল ভোট দিতে পারবে না : আরএমপি কমিশনার

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৯ এএম
কেউ জাল ভোট দিতে পারবে না : আরএমপি কমিশনার

‘ভোট হবে ভোটের মতো’ জানিয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেছেন, “কেউ কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিতে পারবে না। ভোটে কোনো ধরনের জালিয়াতিও হবে না। ভোটে অনিয়ম হবে না মানে হবে না। ভোট হবে ভোটের মতো। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’- এর ব্যতিক্রম হলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

গতকাল শনিবার সকালে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া পুলিশ ও আনসার সদস্যদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে প্যারেড ব্রিফিংয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন। 

আরএমপি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘ভোটারদের কেউ কোনো বাধা দিতে পারবে না। ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবেন, নিজের মতো করে ভোট দিয়ে বের হবেন। মাঝখানে কেউ বাধা দিতে গেলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ওসিদের প্রতি নির্দেশ থাকল, ভোটকেন্দ্রে কেউ ফৌজদারি অপরাধ করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। এর পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। অপরাধ বিবেচনায় তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচার করে সাজা দেবেন। তা না হলে থানায় মামলা হবে। আমরা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দেব যে, নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।’

পুলিশ কমিশনার বলেন, একটা কথা আছে যে রাতে ভোট হয়ে যায়। তাই এবার ব্যালট যাবে ভোটের দিন সকালে। এই ভোট বাধাগ্রস্ত করতে একটা মহল নানা কর্মকাণ্ড করতে পারে। তাদের মোকাবিলার জন্য পুলিশ ও আনসার বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কেউ যেন কোনো ধরনের ব্যাগ কিংবা টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না পারেন।

এই প্যারেডে ২ হাজার ১৯৫ জন পুলিশ সদস্য ও ১ হাজার ৩৪৪ জন আনসার সদস্য অংশ নেন। ভোটকেন্দ্রে তারা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তাদের দিকনির্দেশনা দেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার। পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা রাজশাহীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের দিকে রওনা দেন। এই ব্রিফিং প্যারেডে আরএমপির অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমপির অধীনে এবার সদর আসনসহ চারটি সংসদীয় এলাকা পড়েছে। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ২১৩টি। এর মধ্যে ২৪টি ছাড়া অন্য সব কেন্দ্রগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই ১২ জন করে আনসার সদস্য থাকবেন। আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে তিনজন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে চারজন করে পুলিশ সদস্য থাকবেন।

এ ছাড়া পুলিশের ৪৭টি মোবাইল টিম, ২০টি স্ট্রাইকিং টিম, কুইক রেসপন্স টিম এবং আরএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিট মাঠে থাকবে। এ ছাড়া র‌্যাবের চারটি দল, ৭ প্লাটুন বিজিবি, ৪ প্লাটুন আনসার ও ৬ প্লাটুন সেনাসদস্য টহলে থাকবে রাজশাহীতে।

এদিকে ৭ জানুয়ারি ভোটের মাঠে থাকবেন জুডিশিয়াল এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও। শনিবার সকাল থেকেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে দেখা গেছে। রাজশাহী মহানগরীর প্রতিটি প্রবেশমুখ এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাসদস্যরা। 

খুলনায় ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
খুলনায় ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা
প্রতীকী ছবি

খুলনায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট আয়োজনে ৭৯৩টি কেন্দ্রের ৪৭২০টি ভোটকক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার দুপুরের পর থেকে ভোটের সরঞ্জামাদি নিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছান প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসাররা। 

একই সঙ্গে কেন্দ্রের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা কেন্দ্রে উপস্থিত হন। তারা ভোটকক্ষ তৈরি ও ভোটকেন্দ্রের নির্দিষ্ট দূরত্বে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করেন। খুলনার ছয়টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ৩৯ জন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮২ জন।

খুলনা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন খবরের কাগজকে বলেন, ‘এরই মধ্যে নির্বাচনের সব দাপ্তরিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা
খুলনা জেলায় ৭৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচ শতাধিক কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ভৌগলিক অবস্থান ও এরই মধ্যে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার ভিত্তিতে ওই কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলা হচ্ছে। সাধারণ কেন্দ্রের চেয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্রে একজন করে অস্ত্রধারী পুলিশ বেশি থাকবে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
 
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নগরীর ৩১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৮৪টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে তালিকা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। নির্বাচনের আগে ও পরে মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করবে ৩ হাজার পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ, আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন থাকবে।’

খুলনার তিন আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২০ এএম
খুলনার তিন আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
প্রতীকী ছবি

খুলনা জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিতে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী যেখানে আছেন, সেখানে নির্বাচনি লড়াই ভিন্নমাত্রা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। খুলনা-৪, ৫ ও ৬ আসনে কোনো একক প্রার্থীর দিকে জয়ের পাল্লা ভারী না হওয়ায় প্রচারে ঘাম জড়িয়েছেন সব প্রার্থীই। 

খুলনা-৪ আসনে এবার প্রার্থী আছেন ১১ জন। তবে এখানে মূল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারার সঙ্গে। দারা এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দুই প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হওয়ায় অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন সালাম মূর্শেদী।

খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সামনে টানা চতুর্থবার জয়ের হাতছানি। এর আগে তিনি ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পরপর তিনবার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তার বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন। এই আসনের ডুমুরিয়া উপজেলায় নারায়ণ চন্দ্র ও ফুলতলা উপজেলায় আকরামের দাপট বেশি। তবে সর্বশেষ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় বিভেদে ডুমুরিয়ায় নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভরাডুবি হওয়ায় সেখানে দলীয় কোন্দল কাজে লাগাতে চায় আকরাম। এই দুই নেতার মধ্যে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রত্যাশা করছেন সাধারণ মানুষ। 

এরই মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে বিগত নির্বাচনগুলোতে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন আকরাম হোসেন। পাশাপাশি আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সমর্থকরা। 

অন্যদিকে খুলনা-৬ আসনে নৌকা প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারে সক্রিয় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জিএম মাহবুবুল আলম। এখানকার বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তার বদলে নৌকা পেয়েছেন মো. রশিদুজ্জামান।

তবে সর্বশেষ পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রশিদুজ্জামান চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিয়ে জামানত হারিয়েছেন। ফলে নতুন প্রার্থী হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা গড়ে তুলতে সময় লেগেছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশ জি এম মাহবুবুল আলমকে সমর্থন করছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রশ্ন তুলেছেন রশিদুজ্জামান সমর্থকরা। 

তবে কেন্দ্রীয় কোনো নির্দেশনা না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করলেও দলীয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এখনই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে বৈঠকে জানানো হয়। এই আসনেও দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা কথা জানাচ্ছেন ভোটাররা।