খুলনা জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিতে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী যেখানে আছেন, সেখানে নির্বাচনি লড়াই ভিন্নমাত্রা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। খুলনা-৪, ৫ ও ৬ আসনে কোনো একক প্রার্থীর দিকে জয়ের পাল্লা ভারী না হওয়ায় প্রচারে ঘাম জড়িয়েছেন সব প্রার্থীই।
খুলনা-৪ আসনে এবার প্রার্থী আছেন ১১ জন। তবে এখানে মূল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারার সঙ্গে। দারা এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দুই প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হওয়ায় অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন সালাম মূর্শেদী।
খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সামনে টানা চতুর্থবার জয়ের হাতছানি। এর আগে তিনি ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পরপর তিনবার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তার বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন। এই আসনের ডুমুরিয়া উপজেলায় নারায়ণ চন্দ্র ও ফুলতলা উপজেলায় আকরামের দাপট বেশি। তবে সর্বশেষ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় বিভেদে ডুমুরিয়ায় নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভরাডুবি হওয়ায় সেখানে দলীয় কোন্দল কাজে লাগাতে চায় আকরাম। এই দুই নেতার মধ্যে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রত্যাশা করছেন সাধারণ মানুষ।
এরই মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে বিগত নির্বাচনগুলোতে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন আকরাম হোসেন। পাশাপাশি আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সমর্থকরা।
অন্যদিকে খুলনা-৬ আসনে নৌকা প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারে সক্রিয় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জিএম মাহবুবুল আলম। এখানকার বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তার বদলে নৌকা পেয়েছেন মো. রশিদুজ্জামান।
তবে সর্বশেষ পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রশিদুজ্জামান চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিয়ে জামানত হারিয়েছেন। ফলে নতুন প্রার্থী হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা গড়ে তুলতে সময় লেগেছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশ জি এম মাহবুবুল আলমকে সমর্থন করছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রশ্ন তুলেছেন রশিদুজ্জামান সমর্থকরা।
তবে কেন্দ্রীয় কোনো নির্দেশনা না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করলেও দলীয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এখনই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে বৈঠকে জানানো হয়। এই আসনেও দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা কথা জানাচ্ছেন ভোটাররা।