‘মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস করেননি কলিম শরাফী’ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

‘মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস করেননি কলিম শরাফী’

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৯:৪৬ পিএম
‘মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপস করেননি কলিম শরাফী’
ছবি : সংগৃহীত

ছাত্রজীবনে সমাজতান্ত্রিক আদর্শে উজ্জীবিত হয়েছিলেন তিনি, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশ নেন। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে লঙ্গরখানার জন্য ত্রাণ সরবরাহের পাশাপাশি নিরন্ন মানুষকে জাগিয়ে রেখেছিলেন গানে-গানে। সক্রিয় সেই রাজনীতিকর্মী এরপর সমাজ বদলের পথ হিসেবে বেছে নেন সংগীতকে। রবীন্দ্রসংগীতের পরে গণসংগীতেও তিনি প্রতিবাদ জারি রেখেছিলেন সামরিক শাসন আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে আপসহীন থেকে অচল থেকেছেন নিজস্ব মূল্যবোধে।

দেশের কিংবদন্তিতুল্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কলিম শরাফীকে তার জন্মশতবার্ষিকীতে এভাবেই স্মরণ করেছেন বরেণ্য সংস্কৃতিজনরা।

বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী তার স্মরণসভার আয়োজন করে।

প্রথমে মিলনায়তনের বাইরে কলিম শরাফীর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অনুষ্ঠানে আগত দর্শক ও শিল্পীরা। পরে মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের শুরুতে কলিম শরাফীর জীবনী নিয়ে নিশাদ হোসেন রানা নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া’ প্রদর্শিত হয়। কলিম শরাফীর জীবনী পাঠ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি বেলায়েত হোসেন। এরপর ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’ গানটির সঙ্গে একক নৃত্য পরিবেশন করেন নেওয়াজ মৃন্ময় রহমান। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সংগীত বিভাগের শিল্পীরা পরিবেশন করেন দুটি সমবেত সংগীত।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী, প্রবীণ সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়, উদীচীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচী সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান।

সারওয়ার আলী বলেন, কলিম শরাফী সারা জীবন রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেছিলেন। কিন্তু জাতির সংকটের নানা সময়ে গণসংগীতে তিনি আশ্রয় করেছিলেন। গণসংগীতকে তিনিই নিয়ে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। সারাটা জীবন সংগীতকে বহন করে চলেছেন বলে অনেক বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনোই তিনি গান ছেড়ে দেননি। গানে-গানে তিনি এক বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে গেছেন।

১৯৯১ সালে যুদ্ধাপরাধী গোলম আযমের বিচারের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত গণআদালতের অন্যতম বিচারক ছিলেন কলিম শরাফী। গণআদালতের অন্যতম সংগঠক আবেদ খান বলেন, সেসময়ে এক ভাষণে আমি যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছিলাম। সেই মন্তব্য শুনে শহিদজননী জাহানারা ইমাম ও ফয়েজ আহমেদ আমাকে নিয়ে ভীত ছিলেন। অনেকে আমাকে বক্তব্য সংশোধন করতে বলেছিলেন। একমাত্র কলিম শরাফী আমাকে বলেছিলেন- তুমি যা করেছ ঠিক করেছ। আজীবন সংগ্রামী মানুষটি বলতেন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে যারা থাকবে তাদের কখনো ছাড় নয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী মাহমুদ সেলিম বলেন, রাষ্ট্র কলিম ভাইকে স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক দিয়েছে বটে; কিন্তু সংগীত জগৎ থেকে যে প্রাপ্য সম্মান সেটুকু পাননি। তিনি আপস করতে জানতেন না বলে অনেকের চক্ষুশূল হয়েছিলেন। তিনি কখনো সরল প্রতিবাদ করতেন না। প্রচণ্ড অভিমানী মানুষ ছিলেন। কিন্তু গান তিনি ছেড়ে যাননি কখনো। জীবনে বহু সংগ্রাম-তিতিক্ষার মাঝেও সংগীতকে তিনি জীবনের আধার করেছিলেন। একে একে তিনি বহু সংগঠন তৈরি করে গেছেন যার উত্তরাধিকার বহন করছি আমরা।

বদিউর রহমান তার বক্তব্যে কলিম শরাফীর ১০১তম জন্মদিনের আয়োজনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনের দাবি জানান।

১৯৬৮ সালে উদীচী প্রতিষ্ঠার পরের বছরই কলিম শরাফী সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় আবৃত্তি বিভাগের বাচিক শিল্পীরা। একক সংগীত পরিবেশন করেন মহাদেব ঘোষ, ইকবাল ইউসুফ, মাহমুনা ঐশী এবং মায়েশা সুলতানা ঊর্বি।

লাল মিয়া থেকে শিল্পী সুলতান

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১০:০৮ এএম
লাল মিয়া থেকে শিল্পী সুলতান
শিল্পী এস এম সুলতান

শিল্পী এস এম সুলতানকে জানতে হলে ঘুরতে হবে পুরো ভারতবর্ষ। তিনি ছিলেন পুরোদস্তুর মাটির মানুষ। মাটির সঙ্গে ছিল তার নাড়ির যোগ, মাটির সঙ্গেই ছিল আজন্ম বসবাস। তিনি শুধু একজন চিত্রশিল্পীই নন, তিনি ছিলেন ঋষি, দার্শনিক। ছিলেন এক ক্যারিশম্যাটিক চরিত্র। জয়নুল আবেদীন আর এস এম সুলতান ছিলেন একই আদর্শের ধারক ও বাহক। এমনকি তিনি ছিলেন চমৎকার রসবোধসম্পন্ন একজন মানুষ।

শনিবার (১৮ মে) ‘লাল মিয়া থেকে শিল্পী সুলতান কিছু খণ্ডচিত্র’- এই শিরোনামে শিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে বেঙ্গল শিল্পালয়ের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সভায় উপস্থিত বিশিষ্টজনদের আলোচনায় বারবার উঠে আসে, শিল্পীর অসাধারণ ‘সাধারণ’ জীবনযাপন, তার মনস্তত্ত্ব, জীবনবোধ এবং সারা জীবন ছবি আঁকার সংগ্রাম। 

আলোচনা সভার মূল বক্তা ছিলেন শিল্পী নাসিম আহমেদ নাদভী। আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন এবং ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম। এ সময় শিল্পী নাসিম আহমেদ নাদভীর ক্যামেরায় তোলা এস এম সুলতানের কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবি প্রদর্শন করা হয়।

শিল্পী নাসিম আহমেদ নাদভী বলেন, ‘আমি যখন প্রথম চারুকলায় তাকে দেখি, তার পরনে ছিল একটি গেরুয়া রঙের শাড়ি, বড় চুল। আমার মনে হয়েছিল, এখানে পড়লে আমাকেও কি এমন বেশ নিয়ে থাকতে হবে? আবার পরবর্তী সময়ে দেখি তিনি তার বেশ পরিবর্তন করেছেন। সুলতান আসলে এত বিনয়ী একজন মানুষ ছিলেন যে তিনি নিচ থেকে সবাইকে ওপরে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তিনি সব সময় সাধারণ মানুষের কথা বলে গেছেন।’

সুলতান সম্পর্কে আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন বলেন,‘ সুলতানের একেকটি ছবি স্বাধীনতার মেনোফেস্টো। তিনি যেভাবে তার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে ওই সময় যা দেখে গেছেন তা অকল্পনীয়। তাকে এক-দুই দিনে পাঠ করে জানা সম্ভব নয়। তাকে জানতে হলে পুরো ভারতবর্ষ জানতে হবে, ব্রিটিশ কলোনিয়াল সময় সম্পর্কে জানতে হবে, বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে হবে।’ 

ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম বলেন, ‘তিনি আকাশের চাঁদ, ধ্রুবতারা। তিনি এত সহজ একজন মানুষ ছিলেন যে তার কাছে যেই যেত তাকে তিনি আপন করে নিতেন। ঠিক ওই মুহূর্তে মনে হতো, ওই সময়টুকু সুলতান শুধু তার। এমনকি খুব বেশি দিন চেনেনও না, তার সঙ্গেও তিনি আপনজনের মতো কথা বলতেন।’ 

সুলতানের ছবিতে আমরা দেখি গ্রাম-বাংলার নতুন এক প্রতিচ্ছবি। একই সঙ্গে তার এ ছবিগুলোতে গ্রামীণ প্রেক্ষাপটের শ্রেণি-দ্বন্দ্ব এবং গ্রামীণ অর্থনীতির ক্রূর বাস্তবতাও উঠে এসেছে।

এস এম সুলতান যাদের দ্বারা বিতাড়িত হয়েছিলেন, তারা আজও সক্রিয়। বাংলাদেশের অনেক তরুণ এস এম সুলতান হতে চান, এই যে জনপ্রিয়তা অনেক শিল্পীই মানতে পারেন না। কিন্তু বাংলাদেশে এস এম সুলতান টিকে থাকতেই এসেছিলেন, তার কোনো সহায় নেই, সম্পত্তি নেই, কিন্তু তাকে নিয়ে আলোচনা আজও চলমান, তিনি ছিলেন মহামানব, ধরাবাঁধা স্কুলিং না থাকলেও তিনি ছিলেন অসামান্য মেধাবী। তিনি শুধু ছবি উপহার দেননি, সুলতান মিশে আছেন এ দেশের প্রকৃতি, জলবায়ুর সঙ্গে।

ব্রেইন ড্যামেজ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি লেখক হোসেনউদ্দিন

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১০:০৬ এএম
ব্রেইন ড্যামেজ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি লেখক হোসেনউদ্দিন
লেখক হোসেনউদ্দিন হোসেন

‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১’ প্রাপ্ত বরেণ্য প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক ও গবেষক হোসেনউদ্দিন হোসেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে তার ব্রেন ড্যামেজ ধরা পড়েছে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। 

হোসেনউদ্দিন হোসেনের ছোট মেয়ে শাহনাজ রাহানা রত্না জানান, ২০১৯ সালে বাবার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়। পরে গল ব্লাডারে পাথর ধরা পড়ে। এ ছাড়া তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে গত ১৪ মে বাবা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিন তাকে যশোর শহরের কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। 

তিনি জানান, শুক্রবার (১৭ মে) বাবার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। বেশির ভাগ সময় সেন্সলেস (চেতনাহীন) থাকছেন। কেউ ডাকলে একটু-আধটু চোখ মেলে দেখছেন। রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেছে। প্রতিদিন দুই ব্যাগ রক্ত লাগছে। তার ফুসফুসে পানি জমেছে।

‘গণহত্যা জাদুঘরের এক দশক’ আলোচনা-মিলনমেলা

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
‘গণহত্যা জাদুঘরের এক দশক’ আলোচনা-মিলনমেলা
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ। ছবি : খবরের কাগজ

খুলনা শহরের একটি ভাড়া বাড়িতে ২০১৪ সালের ১৭ মে যাত্রা শুরু হয় ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’-এর। এই প্রতিষ্ঠানের অধীনে বধ্যভূমিতে ৫০টি স্মৃতিফলক, মুক্তিযুদ্ধসংক্রান্ত প্রায় ৯ হাজার ছবি ও অনেক স্মৃতিচিহ্ন রাখা হয়েছে। এই জাদুঘরই প্রথম ডিজিটাল জেনোসাইড ম্যাপ তৈরি করেছে।

শুক্রবার (১৭ মে) গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর-এর দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণহত্যা জাদুঘরের এক দশক’ শিরোনামে দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও মিলনমেলা খুলনায় অনুষ্ঠিত হয়। এই আয়োজনের মাধ্যমে খুলনার সাউথ সেন্ট্রাল রোডে নতুন ভবনে নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করছে গণহত্যা জাদুঘর। 

১৯৭১ সালে হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার নির্ভুল ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, প্রদর্শন অন্বেষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছিল গণহত্যা জাদুঘর। সকালে সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সেমিনার উদ্বোধন করেন। সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। 

দ্বিতীয় পর্বে একাডেমিক সেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক পুনম মুখার্জি এবং পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. সাগর তরঙ্গ মণ্ডল। সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. মাহবুবর রহমান। বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান এমপি।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘যে জাদুঘর জীবনের কথা বলে’ দশম শহিদ স্মৃতিস্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি কবি তারিক সুজাত। সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।

তারেক খানের স্মৃতির প্রতি অনুশীলন নাট্যদলের শ্রদ্ধা

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ১০:৫০ পিএম
তারেক খানের স্মৃতির প্রতি অনুশীলন নাট্যদলের শ্রদ্ধা
চিত্রশিল্পী, থিয়েটার কর্মী ও অনুষ্ঠান প্রযোজক তারেক খান। ছবি : সংগৃহীত

চিত্রশিল্পী, থিয়েটার কর্মী ও অনুষ্ঠান প্রযোজক তারেক খানের প্রয়াণে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে অনুশীলন নাট্যদল। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার (১৫ মে) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

সাবেক কর্মীর মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেলে রাজশাহীতে দলের সদস্যরা অনুশীলন নাট্যদল কার্যালয়ে শোকসভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি অধ্যাপক এস এম আবু বকর। 

সভার শুরুতেই প্রয়াত তারেক খানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং শোকাতুর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। 

সভায় তার কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন দলের সদস্যরা।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তারেক খান বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন গাজী টিভির অনুষ্ঠান সমন্বয়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আগামীকাল শুক্রবার (১৭ মে)  বিকেল ৫টায় ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে তারেক খানের  স্মরণে সভার আয়োজন করেছে অনুশীলন নাট্যদলের প্রাক্তন সদস্যরা।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছিলেন গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ আন্দোলনের সহযাত্রী: স্মরণসভায় বিশিষ্টজনরা

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০১:০১ পিএম
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছিলেন গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ আন্দোলনের সহযাত্রী: স্মরণসভায় বিশিষ্টজনরা
রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের প্রয়াণবার্ষিকীতে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিকরা। ছবি: খবরের কাগজ

রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক আনিসুজ্জামান জাতির দুর্দিনে পথ দেখিয়ে গেছেন। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এবং গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ আন্দোলনের সহযাত্রী। 

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জীবন ও কর্ম স্মরণে স্মরণসভায় এ মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিকরা।

মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে কালি ও কলম পত্রিকার আয়োজনে অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাবেক সভাপতি মাহফুজা খানম, কবি পিয়াস মজিদ। 

মঙ্গলবার ছিল বাংলা একাডেমির প্রয়াত সভাপতি, শিক্ষাবিদ-সাহিত্যিক জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের চতুর্থ প্রয়াণবার্ষিকী। 

অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি লেখালেখির মাধ্যমে তরুণদের জাগাতে চেয়েছিলেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি তরুণদের সেখানে ঘাটতি আছে। তাকে স্মরণ করে সেই কাজটাই আমরা করতে চাই। তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন চিন্তা প্রসারিত করতে হবে। আমরা সকলেই মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী। আমরা সেই বিশ্বাসকে প্রসারিত করব।’

বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাবেক সভাপতি মাহফুজা খানম বলেন, নতুন প্রজন্মকে মানবিক, উদারতা, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করাসহ নানা কর্মে অবদান রেখেছেন। রাজনৈতিক বিভাজন, ধর্মীয় উন্মাদনা, সন্ত্রাস, মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় রোধে জাতীয় জাগরণের আশায় অনেককে একত্রিত করার নানা কর্মকাণ্ডে তিনি যুক্ত ছিলেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের চতুর্থ প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল আজিমপুর কবরস্থানে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা। একাডেমির পরিচালক ডা. মো. হাসান কবীরের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত মোনাজাতে অংশ নেন একাডেমির বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক, উপপরিচালক, সহ-পরিচালক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।