বর্তমান সময়ে কোথাও ভ্রমণে গাড়ি ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। তা হতে পারে বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি, মোটরসাইকেল বা যেকোনো ধরনের যানবাহন। প্রায় সবারই যানবাহনে উঠার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির নম্বর প্লেটও চোখে পড়ে। এই নম্বর প্লেটের ফরম্যাট দেখতে সাধাণত ‘ঢাকা মেট্রো-ক-২৩-৩৪২২’ এমন হয়। যেখানে প্রথমে শহরের নাম, বাংলার একটি বর্ণমালা ও নম্বর থাকে। শহরের নাম দিয়ে বোঝায় কোন জেলা থেকে গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। এই বর্ণমালা দিয়েই বিভিন্ন ধরনের গাড়ির শ্রেণিবিভাগ বোঝানো হয়ে থাকে। আর সংখ্যা দিয়ে সিরিয়াল নম্বর বোঝানো হয়। সব গাড়ির নম্বর প্লেটে বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়।
গাড়ি কিনলে তা রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হয়। আর এই রেজিস্ট্রেশন করতে হয় বাংলাদেশ রোডস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বা বিআরটিএ’র কাছ থেকে। বিআরটিএ’র নির্দিষ্ট ফরমে গাড়ির তথ্য দিয়ে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে হয়। গাড়ির তথ্য দেওয়ার পর বিআরটিএ গাড়িটি কোন ক্যাটাগরিতে পড়ে তা নির্ধারণ করে একটি নম্বর দিয়ে থাকে। নম্বরপ্লেট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিআরটিএ’র নিয়ম অনুসারে মোট ১৯টি ক্যাটাগরি রয়েছে। এর মধ্যে একটি ক্যাটাগরি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়ি, বাকি ১৮টি ক্যাটাগরি জনসাধারণের গাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
কোন ধরনের গাড়িতে কোন বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করা হয় বিস্তারিত দেওয়া হলো।
ক – ৮০০ সিসির প্রাইভেটকারের নম্বর প্লেটে ব্যবহার করা হয়ে থাকে ব্যাঞ্জন বর্ণের প্রথম বর্ণ ‘ক’।
খ – যেসব প্রাইভেটকার ১০০০-১৩০০ সিসির হয়ে থাকে সেগুলোর নম্বর প্লেটে ‘খ’ লিখা থাকে।
গ – ১৫০০-১৮০০ সিসির যেসব প্রাইভেটকার রয়েছে সেগুলোর নম্বর প্লেটে ‘গ’ বর্ণ ব্যবহার করা হয়।
ঘ – জিপ ক্যাটাগরি নির্ধারণের জন্য ‘ঘ’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
চ – মাইক্রোবাসের নম্বর প্লেটে ব্যবহার করা হয় বাংলা বর্ণমালার পঞ্চম বর্ণ ‘চ’।
ছ – আবার ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস নম্বর প্লেটে থাকে ‘ছ’। লেগুনার জন্যও এই বর্ণটি নির্ধারিত।
জ – মিনিবাসের ক্যাটাগরি বোঝানোর জন্য নম্বর প্লেটে ‘জ’ বর্ণটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ঝ – আবার বড় বাস বা কোস্টার বাসের ক্যাটাগরি ভিন্ন হয়। এই ক্যাটাগরি বোঝাতে ব্যবহার করা হয় ‘ঝ’।
ট – কোনো গাড়ির নম্বর প্লেটে যদি ‘ট’ বর্ণটি লিখা থাকে তাহলে বুঝতে হবে এটি বড় ট্রাকের নাম্বার প্লেট।
ঠ – নম্বর প্লেটে ‘ঠ’ থাকলে বুঝতে হবে, তা কোনো ডাবল কেবিন পিকআপের ।
ড – মাঝারি ট্রাকের নম্বর প্লেটের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ‘ড’ বর্ণটি।
ন – কোনো গাড়ি যদি ছোট পিকআপ
ক্যাটাগরির হয়ে থাকে, তাহলে নম্বর প্লেটে ‘ন’
ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
প – ট্যাক্সি ক্যাবের জন্য নির্ধারিত ক্যাটাগরি হচ্ছে ‘প’ ক্যাটাগরি।
ভ – দুই হাজারের বেশি সিসির প্রাইভেটকার বোঝানোর জন্য, এসব গাড়ির নম্বর প্লেটে শহরের নামের পর ‘ভ’ বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ম – পণ্য পরিবহন ও ডেলিভারির জন্য ব্যবহৃত পিকআপ বোঝানোর জন্য বাংলা বর্ণমালার ‘ম’ বর্ণটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
দ – প্রাইভেট বা নিজস্ব পরিবহনের জন্য যেসব সিএনজি চলাচল করে থাকে, সেগুলোর নম্বর প্লেটে ‘দ’ ব্যবহার করা হয়।
থ – ভাড়ায়চালিত সিএনজি অটোরিকশার ক্ষেত্রে ‘দ’ এর পরিবর্তে ‘থ’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
হ – যদি কোনো মোটরবাইক ৮০-১২৫ সিসির হয়ে থাকে, তাহলে সেই বাইকের নম্বর প্লেটে ‘হ’ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
ল – যদি কোনো মোটরবাইক ১৩৫-২০০ সিসির হয়ে থাকে, তাহলে সেই বাইকের নম্বর প্লেটে ‘ল’ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
ই – ভটভটি টাইপের ট্রাকের নম্বর প্লেটে অনুমোদন দেওয়ার সময় তাতে ‘ই’ বর্ণটি ব্যবহার করা হয়।
য – প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গাড়িগুলো চিহ্নিত করতে নম্বর প্লেটে ‘য’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এ.জে/ জাহ্নবী