দেশের বাজারে আসছে বিওয়াইডি’র গাড়ি । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

দেশের বাজারে আসছে বিওয়াইডি’র গাড়ি

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১১:০৩ এএম
দেশের বাজারে আসছে বিওয়াইডি’র গাড়ি
সেডান মডেলের প্রিমিয়াম বিওয়াইডি সিল

চীনের শেনজেনভিত্তিক বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিল্ড ইয়োর ড্রিমস বা বিওয়াইডির গাড়ি দেশের বাজারে এনেছে সিজি-রানার বাংলাদেশ লিমিটেড। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি সেডান মডেলের প্রিমিয়াম বিওয়াইডি সিলের দুটি সংস্করণ উন্মোচন করেছে। কয়েক সপ্তাহ বাজার প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ শেষে আগামী মে মাস থেকে দেশের সড়কে নামার অপেক্ষায় রয়েছে এই ব্র্যান্ডের গাড়ি।

প্রাথমিক অবস্থায় বিওয়াইডি সিল এক্সটেন্ডেড ও পারফরম্যান্স মডেলের দুটি গাড়ি দেশের বাজারে পাওয়া যাবে। বিওয়াইডি সিলের রিয়ার হুইল ড্রাইভ সংস্করণটি এক চার্জে ৫৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে সক্ষম। এটির আনুমানিক দাম এক কোটি থেকে এক কোটি ১০ লাখ টাকার মধ্যে হবে।

অন্যদিকে অল-হুইল ড্রাইভ (এডব্লিউডি) সংস্করণটি এক চার্জে মাইলেজ দেবে ৫২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। সম্প্রতি নেপালে এই সংস্করণের ঘোষিত দাম আগের সংস্করণ থেকে ৩০-৪০ শতাংশ বেশি হওয়ার দিকে ইঙ্গিত দেয়।

বিওয়াইডির পরিবেশক সিজি-রানার বাংলাদেশ লিমিটেড চলতি মাসে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় প্রথম নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র চালু করেছে। ৮ হাজার ৪০০ বর্গফুটের বিক্রয়কেন্দ্রে একসঙ্গে পাঁচটি গাড়ি প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে।

বিওয়াইডি উদ্ভাবিত নিজস্ব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সিল গাড়িতে ব্যবহার করা হয়েছে। এনইভি বা নিউ এনার্জি ভেহিকেল শ্রেণিতে সিলে রয়েছে এআই-প্ল্যাটফর্ম ৩.০। এতে প্রথমবারের মতো ‘সেল টু বডি’ অর্থাৎ সিটিবি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। স্যান্ডউইচ প্রযুক্তিতে তৈরি গাড়িতে ব্লেড ব্যাটারি স্থাপন করা হয়েছে। সিটিবি প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্লেড ব্যাটারি নিজেই একটি শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করবে। গাড়িতে ৮২ দশমিক ৫ কিলোওয়াটের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। মাত্র ৩ দশমিক ৮ সেকেন্ডে বিওয়াইডি সিল পারফরম্যান্স শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিচার পর্যন্ত গতি তুলতে সক্ষম। গাড়িটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার।

গাড়িটিতে আইট্যাক বা ইন্টেলিজেন্স টর্ক অ্যাডাপশন কন্ট্রোল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তির কারণে পিচ্ছিল রাস্তায়ও টর্ক নিয়ন্ত্রণ করে গাড়ির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া যাবে। ফলে গাড়ির যাত্রীরা পাবে বাড়তি নিরাপত্তা। দ্রুতগতির এই গাড়ির চার চাকাতেই রয়েছে ডিস্ক ব্রেক। অ্যাডাপটিভ সাসপেনশন থাকায় অমসৃণ রাস্তাতেও কোনো ঝাঁকুনি অনুভব হবে না।

এতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে হিট পাম্প রয়েছে। এই পাম্পের কারণে ব্যাটারি দ্রুত শীতল হবে এবং কম শক্তি খরচ করে দূরত্ব পাড়ি দেবে। স্লান্টেড রুফলাইন, শর্ট রিয়ার ডেক, ওয়াটারড্রপ মিরর, ওয়েভ ওয়েস্টলাইন ও পিএম ২.৫ ফিল্টারেশন সুবিধা গাড়িকে অনন্য করেছে। ইন্টেলিজেন্ট ককপিট সিস্টেম চালক ও যাত্রীকে বাড়তি সুবিধা দেবে। ১৯ ইঞ্চির চাকাগুলো যাত্রাপথে আলাদা স্বাচ্ছন্দ্য দেয়। সিল গাড়ির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা যথাক্রমে ৪৮০০, ১৮৭৫ এবং ১৪৬০ মিলিমিটার।

সিল গাড়ির সামনের দিকের নকশা ‘এক্স’ আকৃতির। স্পোর্টস সেডান ধারার এই গাড়ির কাঠামো অ্যারোডাইনামিক নকশায় তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য গাড়িটি বাতাসের প্রতিকূলে আরও সাবলীলভাবে ছুটে চলতে পারে। ‘ইউ’ আকৃতির ব্যাকলাইট গাড়ির দৃশ্যমানতা প্রকাশ করে।

গাড়িতে রয়েছে ১৫.৬ ইঞ্চির মাল্টিমিডিয়া টাচ স্ক্রিন। পর্দা সোজাসুজি এবং আড়াআড়ি দুভাবেই ব্যবহার করা যাবে। চারটি এসি ভেন্ট রয়েছে গাড়ির ভেতরে সামনের সারিতে। মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লের মাধ্যমে এই ভেন্টগুলোর বাতাস প্রবাহের দিক নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ভয়েস কন্ট্রোলারের মাধ্যমেও গাড়িটিতে বিভিন্ন নির্দেশ দেওয়া যায়।

এই গাড়িতে রয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা সুবিধা। গাড়ি চালানোর সময় যদি কোনো গাড়ি কাছাকাছি চলে আসে, তবে ক্যামেরাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে, তা ডিসপ্লেতে দেখা যাবে। এ ছাড়া ডানে বা বাঁয়ে সিগন্যাল লাইট জ্বালালেও ক্যামেরায় আশপাশের দৃশ্য পর্দায় দেখা যাবে। গাড়ি ডানে-বাঁয়ে অথবা সামনে-পেছনে চালানোর সময় ডিসপ্লেতে চাকার অবস্থান দেখা যাবে। পুরো গাড়িতে রয়েছে ‘মিউজিক সেন্সড অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট।’ গাড়িতে আরাম-আয়েসে বসার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। সবগুলো আসনেই পা রাখার প্রশস্ত জায়গা রয়েছে। এই গাড়ি একেবারেই শব্দহীন। সাউন্ডপ্রুফ ক্যাবিনেট থাকার কারণে বাইরের কোনো শব্দ ভেতরে প্রবেশ করে না। মসৃণ রাস্তায় গাড়ির গতি খুব একটা বোঝা যায় না। অনেক গতিতে গাড়িটি চালানোর সময় উচ্চ গতি বোঝা যায় না।

চালকের পাশের দরজা খুলতেই আসনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেছনে গিয়ে গাড়িতে ঢোকার জায়গা বেড়ে যায়। এই গাড়িতে ‘সিট মেমোরি’ রয়েছে। চালক নিজের পছন্দমতো লেগস্পেস ও স্টিয়ারিং হুইলের অবস্থান বের করে মেমোরিতে সংরক্ষণ করেতে পারেন। গাড়িতে চালক ঢোকার পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আসন ও স্টিয়ারিং সেই অবস্থানে চলে আসবে। গাড়িটির গিয়ার প্যানেলটা বেশ নান্দনিক। গাড়িটি চালু বা বন্ধ, হ্যাজার্ড, অটো হোল্ড, শব্দ নিয়ন্ত্রণ, ড্রাইভিং মোড পরিবর্তনসহ প্রায় সব কাজ এই অংশ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

গিয়ার শিফটারের সামনে একসঙ্গে দুটি স্মার্টফোন চার্জ করা যায়। গাড়ির যাত্রী আসনের সারিতেও রয়েছে আলাদা এসি ভেন্ট। সিলে রয়েছে হাই-ফাই ডাইন অডিও প্রিমিয়াম সাউন্ড বুস্টসমৃদ্ধ ১২টি স্পিকার, যা গাড়িতে হোম থিয়েটারের মতো অনুভূতি দেবে। বৈদ্যুতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত গাড়ির সামনের আসনগুলোয় রয়েছে হিটেড এবং কুলিং সিট অপশন। দীর্ঘ পথে অথবা অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় চালক বা যাত্রীর ক্লান্তি দূর করতে এই সুবিধাটি বেশ উপকারী।

এই গাড়ির নান্দনিক দিক হলো প্যানারমিক মুনরুফ। সম্পূর্ণ ছাদই মুনরুফ। দিনের বেলায় গাড়ির মধ্য থেকে আকাশ দেখা যাবে। মুনরুফটি অতি বেগুনি রশ্মি (ইউভি) প্রতিরোধক। এতে সূর্যের আলো ঢুকলেও তাপমাত্রা বাড়াবে না।

বিক্রয়কেন্দ্রে গিয়ে আগ্রহী ক্রেতারা বিওয়াইডি গাড়ির অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন। ক্রেতাদের সুবিধার্থে বিক্রয়কেন্দ্রে দুটি চার্জিং স্টেশন রয়েছে। ইভি বিক্রেতাদের মতে, বাণিজ্যিক চার্জিং স্টেশনগুলোয় সব ব্র্যান্ডের বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় ৪৫ মিনিটে চার্জ করা যাবে। অন্যদিকে বাড়িতে চার্জ করতে সময় লাগবে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল এক হাজার টাকার কম হবে। এখনো দেশে চার্জিং স্টেশনের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক গড়ে না ওঠায়, প্রথমদিকে এর ব্যবহারকারীদের চার্জিং নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। দেশে যে ৩টি ইভি চার্জিং স্টেশন রয়েছে, সেগুলোর অবস্থানও রাজধানীতে। তবে সারা দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য দেশের সক্রিয় ইভি ব্যবসায়ীরা চার্জিং নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য উদ্যোগ খুঁজছেন। আগামী জুনে রাজধানীতে ৮টি, কুমিল্লায় এবং চট্টগ্রামে একটি করে মোট ১০টি চার্জিং স্টেশন চালু হবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৩০টি স্টেশন চালু হবে।

এ.জে/জাহ্নবী

ভক্সওয়াগেন শক্তিশালী করবে প্লাগ-ইন হাইব্রিড লাইনআপ

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
ভক্সওয়াগেন শক্তিশালী করবে প্লাগ-ইন হাইব্রিড লাইনআপ
ভক্সওয়াগেনের গলফ জিটিই মডেলের প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ি। ছবি: ভক্সওয়াগেন

জার্মানির গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগেনের ইলেকট্রিক ভেহিকেল (ইভি) বিক্রিতে ধীরগতির কারণে কৌশল পরিবর্তন করছে। প্রতিষ্ঠানটি প্লাগ-ইন হাইব্রিড ইলেকট্রিক ভেহিকেল বা পিএইচইভি মডেল তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। তাদের সর্বশেষ প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়িগুলো এক চার্জে ১০০ কিলোমিটারের বেশি মাইলেজ দিয়ে থাকে।

পুরোপুরি ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা কমে যাওয়ায় ভক্সওয়াগেন প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ির সরবরাহ বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে। কোম্পানিটির সিইও টমাস শেফার গত সপ্তাহে জানান, পিএইচইভি মডেলের সম্প্রসারণের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।’ এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আগের কৌশলে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেখানে মূলত আইডি ব্যাজ লাইনআপে ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক গাড়ির (বিইভি) দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল।

লন্ডনে একটি অটোমোবাইল শিল্প সম্মেলনে সাক্ষাৎকারে শেফার বলেন, ‘বর্তমানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহকসহ বেশির ভাগ গ্রাহকের প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ির চাহিদা রয়েছে।’ বছরের শুরুতে ইউরোপে ইভির চেয়ে প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

চীনে স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো যখন আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে, তখন ভক্সওয়াগেন ইভি কৌশলে পরিবর্তন করছে। কোম্পানিটি গত বছর জার্মানিতে ইভি তৈরির জন্য কারখানা নির্মাণে ২০০ কোটি ইউরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। ইভি বিক্রির ধীরগতির কারণে গাড়ি নির্মাতারা মার্কেট শেয়ার ধরে রাখার জন্য আগের পরিচিত ড্রাইভট্রেনগুলোয় ফিরে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী হাইব্রিড গাড়ির চাহিদার বৃদ্ধি পাওয়ায় সুবিধা পাচ্ছে টয়োটা। গত সপ্তাহে মার্সিডিজ-বেঞ্জ গ্রুপ জানিয়েছে, ইভি বিক্রির হতাশাজনক অবস্থার মধ্যেও প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে কমবাসটন ইঞ্জিনের গাড়ি বিক্রি করবে।

শেফার বলেন, পাসাত ও টিগুয়ান মডেলগুলোয় ভক্সওয়াগেনের সর্বশেষ হাইব্রিড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ১০০ কিলোমিটারেও বেশি ইলেকট্রিক রেঞ্জ অফার করে।

 

পুতিনের ‘অরাস সেনেট’ তৈরি হবে টয়োটার কারখানায়

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ০৭:০৬ পিএম
পুতিনের ‘অরাস সেনেট’ তৈরি হবে টয়োটার কারখানায়
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের লিমুজিন। ছবি: সংগৃহীত


রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘অরাস সেনেট’ নামের বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করেন। এটি এখন থেকে দেশটির সেন্ট পিটার্সবার্গের টয়োটার একটি সাবেক কারখানায় তৈরি করা হবে। রাশিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপ-প্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুরভের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস।

সোভিয়েত আমলের জিল লিমুজিনের আদলে তৈরি অরাস সিনেট রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সরকারি গাড়ি। সম্প্রতি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পুতিন অরাস লিমুজিনে করে ক্রেমলিনে হাজির হয়েছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকেও এই গাড়ি উপহার দিয়েছিলেন।

মান্তুরভের বরাত দিয়ে তাস জানিয়েছে, সেন্ট পিটার্সবার্গ কারখানায় ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে অরাস সেনেটের। টয়োটার এই সাবেক কারখানা অনেক আগেই অরাসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। গত বছরের মার্চ মাসে টয়োটা এই কারখানাটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নামির (NAMI) কাছে হস্তান্তর করে। এই নামি অরাস ব্র্যান্ডের অধিকাংশ শেয়ারের মালিক।

২০২১ সালে মস্কো থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে রাশিয়ার তাতারস্তান অঞ্চলে অরাস মোটরস তাদের গাড়ি তৈরি শুরু করে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, বেশ কিছু বৈশ্বিক গাড়ি নির্মাতা রাশিয়ার বাজার থেকে সরে যায়।

 ফলে দেশটির বেশ কিছু গাড়ি কারখানা অলস পড়ে থাকে। রাশিয়া এখন এই কারখানাগুলো ব্যবহারের উপায় খুঁজছে। রাশিয়ার পরিসংখ্যানবিষয়ক সংস্থা অটোস্ট্যাটের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের এ পর্যন্ত ৪০টি অরাস ব্র্যান্ডের গাড়ি বিক্রি হয়েছে রাশিয়ায়। সূত্র: অটোমোটিভ নিউজ ইউরো

রেনল্টের স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন মিনিবাস

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম
রেনল্টের স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন মিনিবাস
স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন মিনিবাস। ছবি: রেনল্ট


ফরাসি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রেনল্ট গ্রুপ স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে শাটল বা মিনিবাস নির্মাণে মনোযোগ দেবে। এ ধরনের গাড়ি তৈরিতে অটোমেটেড ড্রাইভিং ‘লেভেল থ্রি’-এর পরিবর্তে ‘লেভেল ফোর’ ব্যবহার করবে। প্রতিষ্ঠানটি স্বয়ংক্রিয় যানবাহনের গবেষণায় স্বয়ংক্রিয় মিনিবাস তৈরিতে কাজ করছে। গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, অ্যাডভান্সড ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম (এডিএএস) প্যাসেঞ্জার কার ক্রেতাদের ৯০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে।

আগামীতে অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেল থ্রি সুবিধাযুক্ত গাড়ি তৈরি করা প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য নয়। এর পরিবর্তে নির্দিষ্ট রুটে অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেল ফোর সুবিধাযুক্ত মিনিবাস নির্মাণে ফোকাস করবে। গত মঙ্গলবার প্যারিসের বাইরে রেনল্ট টেকনিক্যাল সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) জিলেস লে বোর্গনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, রেনল্ট বর্তমানে অটোমেটেড ড্রাইভিং ‘অ্যানরিচড লেভেল টু’ সুবিধা যুক্ত গাড়ি তৈরি করছে। এতে নির্ধারিত লেন ও গতি নিয়ন্ত্রণ সহায়ক ব্যবস্থা আছে। এই গাড়িগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধীরগতিতে গোল চত্বর ও আঁকাবাঁকা রাস্তায় চলতে পারে। তবে চালককে সবসময় স্টিয়ারিংয়ে হাত রাখতে হয়।

লে বোর্গনে বলেন, ‘৯০ শতাংশ গ্রাহকের চাহিদা অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেল টু প্লাস দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। আমরা প্যাসেঞ্জার কারের ক্ষেত্রে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী দিকেই প্রাধান্য দেব। তবে গণপরিবহনের চাহিদা মেটাতে অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেল ফোর নিয়ে কাজ করতে চাই।’
লেভেল থ্রি অটোমেটেড ড্রাইভিং গাড়িতে প্রায় চালকবিহীন গাড়ি চালানোর সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু এই মানের স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন গাড়িতে পূর্ণাঙ্গ অটোমেটেড ড্রাইভিং সুবিধা পাওয়া যায় না। যে কারণে গাড়ি চালানোর সময় চালককে সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। অনেক সময় চালককে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। পুরো স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং না হওয়ায় চালককে সতর্ক থাকতে হয়।

লে বোর্গনে মনে করেন, এটি একটি জটিল বিষয়। কারণ এই অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেলে দুর্ঘটনা ঘটলে, তার দায়ভার নিতে হয় গাড়ি নির্মাতাকেও। এটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য সৃষ্টিকারী অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেল। আমরা একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, আমরা অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেল থ্রিতে বিনিয়োগ করতে চাই না। কারণ এটি খুবই ব্যয়বহুল ও গ্রাহকদের পক্ষে তা কেনা কঠিন হবে। পূর্ণাঙ্গ অটোমেটেড ড্রাইভিং সুবিধা লেভেল ফোর গাড়িতে পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট কোনো পরিস্থিতি ছাড়া চালককে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হয় না। চালক ছাড়াই গাড়ি চালানো সম্ভব অটোমেটেড ড্রাইভিং লেভেল ফাইভের গাড়িতে।

চীনা স্টার্টআপের সঙ্গে অংশীদারিত্ব
রেনল্ট চীনা স্টার্টআপ ‘উইরাইড’-এর সঙ্গে যৌথভাবে বৈদ্যুতিক স্বয়ংক্রিয় মিনিবাস তৈরি করবে। এতে ব্যবহার হবে উইরাইডের স্বয়ংক্রিয় গাড়ি প্রযুক্তি ও রেনল্টের ভ্যান প্ল্যাটফর্ম। জিলেস লে বোর্গনে আশা করছেন, এই দশকের শেষের দিকে এটির বিক্রি শুরু হবে।
উইরাইডের তৈরি করা মিনিবাসে স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন প্রযুক্তির পরীক্ষা চালাচ্ছে রেনল্ট। চলতি মাসের শেষের দিকে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ফ্রেঞ্চ ওপেন টেনিস টুর্নামেন্টে জনসাধারণের জন্য উইরাইডের তৈরি করা দুটি মিনিবাস চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ২০২১ সাল থেকে উইরাইডে বিনিয়োগ করছে রেনল্ট। উইরাইডের ৭০০টি গাড়ি বর্তমানে চলাচল করছে, এর মধ্যে ৩০০টি মিনিবাস রয়েছে। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে তাদের স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন মিনিবাস পরীক্ষামূলক চলাচলের অনুমতি লাভ করেছে।

লে বোর্গনে জানান, ফ্রান্স ও জার্মানিতে নতুন নিয়মে জনসাধারণের রাস্তায় স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন শাটল চালানোর অনুমতি দেবে। রেনো গ্রুপের ভেহিকেল অ্যাডভান্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ফ্রঁসোয়া সালাসি তার ভাষায় বলেন, গণপরিবহনের জন্য স্বয়ংক্রিয় চালকবিহীন গাড়ি লেভেল-ফোর হলো ‘সুইট স্পট বা মিষ্টি দাগ’।

নির্ধারিত কিছু পরিস্থিতি ছাড়া লেভেল-ফোর গাড়িগুলো চালক বা কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই চলে। সালাসি বলেন, এটি ২০ থেকে ৩০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মিনিবাসের জন্য নিখুঁত হবে, কারণ এগুলো গাড়িমুক্ত নির্ধারিত রাস্তায় চলতে পারে। প্রাথমিকভাবে রেনল্ট গ্রুপের স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক বাসগুলো বড় আকারের ‘রেনল্ট মাস্টার ভ্যান’ প্ল্যাটফর্মের ওপর তৈরি করা হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো ‘স্কেটবোর্ড’ নামের ইলেকট্রিক গাড়ির প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা। যেটি ফ্লেক্সিস জয়েন্ট ভেনচারের অংশ হিসেবে ট্রাক নির্মাতা ভলভো এবির সঙ্গে যৌথভাবে রেনল্ট নির্মাণ করছে। সূত্র: অটোমোটিভ নিউজ ইউরো

উড়ন্ত গাড়িতে প্রথম যাত্রী সংগীতশিল্পী জ্যঁ মিশেল জার

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০২:৩৪ পিএম
উড়ন্ত গাড়িতে প্রথম যাত্রী সংগীতশিল্পী জ্যঁ মিশেল জার

বিশ্বে প্রথমবারের মতো যাত্রীসহ আকাশে উড়ে ইতিহাস গড়েছে উড়ন্ত গাড়ি ‘এয়ারকার’। এটি তৈরি করেছে স্লোভাকিয়ান উড়ন্ত গাড়ি তৈরি কোম্পানি ক্লাইনভিশন। সম্প্রতি এই উড়ন্ত গাড়িতে যাত্রী হিসেবে কিংবদন্তি ফরাসি সংগীতশিল্পী জ্যঁ মিশেল জার সফলভাবে প্রথম উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছেন। ক্লাইনভিশনের তৈরি উড়ন্ত গাড়িতে করে স্লোভাকিয়ার আকাশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন জার। এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত দেখে চমকে গেছেন দর্শকরাও।

এয়ারকার হলো ক্লাইনভিশনের তৈরি একটি দ্বৈত-মোডের যানবাহন, যা রাস্তায় গাড়ি ও আকাশে বিমান হিসেবে চালানো যায়। এটি দেখতে স্পোর্টস কারের মতো এবং এর চারটি চাকা ও ডানা রয়েছে। রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় ডানা ভাঁজ করা যায়। আবার আকাশে উড়ার সময় ডানা মেলানো যায়। এয়ারকারটিতে চালকসহ দুটি আসন রয়েছে।

লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে লেজার শোয়ে বিশ্বজোড়া মুগ্ধতা ছড়ানো জার সর্বদাই ইলেকট্রনিক এবং নিউ-এজ সংগীতধারার প্রথম সারির একজন শিল্পী। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে ফরাসি এই সংগীতশিল্পী বেশ পরিচিত মুখ। সেই সুবাদেই স্লোভাকিয়ার কোম্পানি ক্লাইনভিশনের উড়ন্ত গাড়িতে প্রথম যাত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন আদর্শ। এ কারণে স্লোভাকিয়ার পিস্ট্যানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রেকর্ড গড়ার মতো এ গাড়িতে দুবার উড্ডয়নের সুযোগ তিনি লুফে নেবেন, তা একরকম নিশ্চিত ছিল।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ জানিয়েছে, ইনস্টাগ্রামে এই অভিজ্ঞতার একটি ভিডিও শেয়ার করে জার বিস্তারিত লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, তার কাছে এটি ছিল গৌরবের মুহূর্ত। এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা তার আসন্ন ‘ব্রিজ ফ্রম দ্য ফিউচার’ কনসার্টের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। এই অসাধারণ অভিজ্ঞতা লাভ করার জন্য, তার ভক্তরাও তাকে ‘ভাগ্যবান’ বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

পরীক্ষামূলক উড্ডয়নটি পিয়েস্টানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্পন্ন হয়। যেখানে এয়ারকারটি স্পোর্টস গাড়ি থেকে বিমানে রূপান্তর হয়। এই গাড়িটি উদ্ভাবন ও চালনা করেছেন অধ্যাপক স্টেফান ক্লেইন। স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘এক মুহূর্ত আপনি চালকের সঙ্গে কথা বলছেন, পরের মুহূর্তেই আপনি আকাশে উড়ছেন। অসাধারণ অভিজ্ঞতা!’ কোম্পানিটি এই দুর্দান্ত মুহূর্তটি তুলে ধরে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মসৃণ ও ডানাযুক্ত স্পোর্টস গাড়ি রানওয়েতে চার চাকায় চলছে এবং তারপরই আকাশে উড়ে যাচ্ছে। সফল টেকঅফ ও ল্যান্ডিং পরীক্ষার পর ২০২২ সালে এয়ারকার ফ্লাইটের অনুমতি পায়।

ফরাসি ইলেকট্রনিক শিল্পী জ্যঁ মিশেল জার স্লোভাকিয়ায় উড্ডয়ন করার পরে ক্লাইনভিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্টন জাজ্যাক বলেছেন, ‘প্রযুক্তি উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা একে ব্যাটারিচালিত করে ফেলব। আমরা রাস্তা ও আকাশের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনছি। গাড়িগুলোকে সেই স্বাধীনতা দিচ্ছি, যেমন এটি স্বাধীনতার প্রতীক হয়েছিল ৫০ বছর আগে।’

আর এই স্বাধীনতার জন্য, কেবল চালকের লাইসেন্স ও পাইলটের লাইসেন্সই নয়, এয়ারকার নামের গাড়ি চালানোর জন্য দুই থেকে তিন মাসের বিশেষ ফ্লাইং কোর্সেরও প্রয়োজন হবে। জাজ্যাক আশা করেছেন, এটি এক বছরের মধ্যে বাজারে আসবে। ২০২২ সালে এয়ারকার একটি বিমান হিসেবে স্লোভাকিয়ায় চালানোর অনুমোদন পায়। অধ্যাপক স্টেফান ক্লেইন ও জাজ্যাক মিলে এটি তৈরি করেছেন।

গাড়িটিতে একটি ১৬০০ সিসির ‘বিএমডব্লিউ ইঞ্জিন’ রয়েছে। ২০২১ সালে এয়ারকার প্রথম আন্তঃনগর ফ্লাইট সম্পন্ন করে। স্লোভাকিয়ার নিত্রা থেকে ব্রাতিস্লাভায় ৩৫ মিনিট উড়ে যায়। ক্লাইনভিশন ২০২৫ সালের মধ্যে এয়ারকারের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা করছে। কোম্পানিটি বিশ্বাস করে এয়ারকার বিমানে ভ্রমণ ও যাতায়াতে পরিবর্তন আনতে পারে। এদিকে মার্চ মাসে ক্লাইনভিশনের গাড়িতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তার স্বত্ব ‘হেবেই জিয়ানঝিন ফ্লাইং কার টেকনোলজি কোম্পানি’ নামের এক চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেছে দিয়েছে।

এ.জে/জাহ্নবী

 

ইউরোপে শুধু ইভি বিক্রির লক্ষ্য পুনর্বিবেচনা করছে ফোর্ড

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০২:৩২ পিএম
ইউরোপে শুধু ইভি বিক্রির লক্ষ্য পুনর্বিবেচনা করছে ফোর্ড

ইউরোপজুড়ে ২০৩০ সালের মধ্যে কেবল বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল আমেরিকান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ড। তবে এই অঞ্চলে ইলেকট্রিক গাড়ির বিক্রি আশানুরূপ না হওয়ায়, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানিটি আগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করছে।

কোম্পানিটি ২০২১ সালে জানিয়েছিল, ২০৩০-এর শেষ নাগাদ ইউরোপে শুধু বিদ্যুৎচালিত প্যাসেঞ্জার কার বিক্রি করবে। ফোর্ডের এই পরিকল্পনা ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিকল্পনার চেয়েও বেশি উচ্চাভিলাষী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কার্বন নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০৩৫ সালের পরে কেবল কার্বন নিঃসরণমুক্ত গাড়ি বিক্রির অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা আশানুরূপ না থাকায় ফোর্ড জানিয়েছে, ক্রেতাদের চাহিদা থাকলে ২০৩০ সালের পরেও ইউরোপে জ্বালানি ইঞ্জিনের গাড়ি বিক্রি চালিয়ে যাবে।

ইউরোপে ফোর্ডের প্যাসেঞ্জার কার ব্যবসার প্রধান মার্টিন স্যান্ডার বলেন, ‘প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ির মতো কোনো গাড়ির উচ্চ চাহিদা থাকলে, আমরা সেগুলো সরবরাহ করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী না বাড়ায় আগের লক্ষ্য পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। ফোর্ডের ইলেকট্রিক গাড়ি উৎপাদনের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের কেবল শতভাগ বিদ্যুৎচালিত গাড়ি উৎপাদনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

তিনি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের ‘ফিউচার অব দ্য কার’ সম্মেলনে গত মঙ্গলবার এ কথাগুলো বলেন।

কোম্পানিটির জার্মানির কলোনে অবস্থিত কারখানা সম্পূর্ণরূপে ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির জন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এটি ভক্সওয়াগেন গ্রুপের এমইবি প্ল্যাটফর্মের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হবে। কলোনে আগামী জুন মাসে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত কমপ্যাক্ট এসইউভির সিরিজ উৎপাদন শুরু হবে। একই মাসে এমইবি প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্মিত দ্বিতীয় গাড়িটি উন্মোচন করা হবে।

এ বছরের শেষের দিকে ফোর্ড রোমানিয়ার ক্রাইওভায় তৈরি তাদের সর্বাধিক বিক্রীত পিউমা এসইউভির ব্যাটারিচালিত পিউমা জেন-ই সংস্করণটিও প্রকাশ করবে।

প্রত্যাশিত বিদ্যুৎচালিত ভ্যানের চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও, ফোর্ড তুরস্কে তাদের ট্রানজিট কাস্টম ওয়ান-টন ভ্যানের ইলেকট্রিক সংস্করণ বিক্রি শুরু করেছে।

ফোর্ড ইলেকট্রিক গাড়ি ও লাভজনক লাইট কমার্শিয়াল গাড়ির ব্যবসায় মনোযোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের জ্বালানি ইঞ্জিনের গাড়ির লাইনআপ কমিয়ে দিচ্ছে। গত বছর কোম্পানিটি কলোনে তাদের ছোট আকারের ফিয়েস্তা কারের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২৫ সালে তারা জার্মানির সারলুইয়ের কারখানায় ফোকাস গাড়ির উৎপাদনও বন্ধ করে দেবে। স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ার কারখানায় ফোর্ড তাদের মন্ডিও মিডসাইজ গাড়ি এবং গ্যালাক্সি/এস-ম্যাক্স মিনিভ্যান তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। কোম্পানিটি সেখানে নতুন ‘মাল্টি-এনার্জি’ প্যাসেঞ্জার কারের মডেল তৈরি করার কথা ভাবছে, যা বর্তমানে প্লাগ-ইন হাইব্রিড, সম্পূর্ণ হাইব্রিড বা জ্বালানি ইঞ্জিন সংস্করণে কুগা কমপ্যাক্ট এসইউভি তৈরি করে। সূত্র: অটোমোটিভ নিউজ ইউরো

জাহ্নবী