ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ঢাবি ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বা তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠনের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়াতে ন্যায়বিচার ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত অধ্যাপককে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
সোমবার (৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান বিভাগটির বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী।
লিখিত বক্তব্যে বিভাগটির ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিজ খান বলেন, ‘অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী এবং তিনি অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিয়েছেন এমন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীও যৌন হয়রানির জন্য ঢাবির প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গত ৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মাস্টার্স ব্যাচের ফল ধসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে অপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তকারী কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু অত্যন্তু দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দুই সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হলেও আজ দুই মাস অতিক্রান্ত হয়েছে, তদন্তের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’
ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীরা তদন্তপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা করছি। বিশেষ কোনো মহল বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে অথবা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা কমে গেলে লঘুদণ্ড দিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে এই ঘটনায় অগ্রগতি আমাদেরকে জানাতে হবে। দৃশ্যমান কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হলে নিপীড়িত শিক্ষার্থীর ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে আমরা বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।’ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
যদিও অধ্যাপক নাদির জুনাইদ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি তাকে ৩ মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।