খাগড়াছড়িতে ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম রাসেল অপহরণের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে এখনো রাসেলকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। আর এই অপহরণের ঘটনার নেপথ্যে অনলাইন জুয়া বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
বুধবার (২২ নভেম্বর) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা মিঞ ধন চাকমা ও তার স্ত্রী সন্ধ্যা চাকমা মৌসুমী এবং দীঘিনালা উপজেলার তারাবুনিয়া এলাকার ধনঞ্জয় চাকমা।
পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘শফিকুল ইসলামকে এখনো উদ্ধার করতে না পারলেও ঘটনার রহস্য আমরা জানতে পেরেছি। যাবতীয় তথ্য উপাত্ত ও ঘটনার বিশ্লেষণ করে এবং আসামিদের সঙ্গে কথা বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, ভুক্তভোগী রাসেল এবং তিনি যার সঙ্গে গেছেন দুজনই বিভিন্ন রকমের অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের দুজনের মধ্যে এ সংক্রান্ত লেনদেন ছিল। আপাতত তদন্তের স্বার্থে একটু সময় নিচ্ছি। আমরা শিগগির এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরে ব্রিফিং করব।’
এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খাগড়াছড়ি সদর থানার এসআই মো. মিনহাজুল আবেদিন বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি এলাকা থেকে মিঞ ধন চাকমা ও তার স্ত্রী সন্ধ্যা চাকমা মৌসুমীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা থেকে ধনঞ্জয় চাকমাকে গ্রেপ্তার করে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে আসামিদের আদালতে নেওয়ার পর পুলিশের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে মিঞ ধন চাকমা ও ধনঞ্জয় চাকমার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। এ ছাড়া সন্ধ্যা চাকমা মৌসুমীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত ৯ নভেম্বর ভোরে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের কল্যাণপুরের বাসা থেকে বাগান দেখতে যাওয়ার উদ্দেশে বের হন কাঠ ব্যবসায়ী রাসেল। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন তিনি।
পরিবারের দাবি, তাকে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের আট মাইল রুচিচন্দ্র কারবারী পাড়া এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের পর রাসেলের মুঠোফোন থেকে কল করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করেছিল অপহরণকারীরা। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিল পরিবারের সদস্যরা। তবুও মুক্তি দেওয়া হয়নি রাসেলেকে।
টাকা দেওয়ার পর অপহরণকারীরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বলে জানান রাসেলের বড় ভাই জহিরুল ইসলাম। পরে তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
দিদারুল/সালমান/