আমি একটা ছোট্ট ঘাস ফুলের পেছনে ছুটতে ছুটতে জীবন পার করতে পারব। চারদিকে এত অস্থিরতা, অশান্তির মাঝে নির্মল প্রকৃতিই স্বস্তি দিতে পারে। গাছপালা, ফুল, পাখি, প্রজাপতি এসবের প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে বিরল কিছু গাছ পরবর্তী প্রজন্মের চেনা-জানার জন্য সংগ্রহ করে লাগাই, আমার ভালো লাগে। সরস্বতী চাঁপাও এসবের মধ্যে একটা। নরসিংদীতে আমাদের প্রায় ২ হাজার হাঁসের একটা খামার আছে। ওখানে পুকুর পাড়ে গাছটি লাগিয়েছি।
অতি দুর্লভ বৃক্ষ সরস্বতী চাঁপা। কেউ কেউ এর নাম বলতে চান ঝঙ্কার ফুল, কেউবা পারিজাত বা বৃন্দাবনী চাঁপা। যদিও পারিজাত এবং বৃন্দাবনী চাঁপা নামে আরও দুটি আলাদা গাছ রয়েছে। তবুও নাম নির্বাচনে কতই না বাহার!
এই গাছের বাংলা নাম ‘সরস্বতী চাঁপা’ হতে পারে, কারণ ধবধবে সাদা, সুগন্ধী এই ফুল দেবী সরস্বতীর মতোই স্নিগ্ধ। শ্বেতশুভ্র মিষ্টি গন্ধযুক্ত এই ফুলগাছের কাঠ দিয়ে সংগীতের বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা হয়। যেহেতু সনাতন ধর্ম মতে, সংগীতের দেবী সরস্বতী। সে হিসেবে বৃক্ষটির নাম হয়তো সরস্বতী চাঁপা হয়েছে।
আবার এই গাছের বাংলা নাম ‘ঝঙ্কার’ হতে পারে কারণ- এই বৃক্ষের হালকা কাঠ দিয়ে সংগীতের জন্য বীনা, বেহালাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা হয়। সে হিসেবে ঝঙ্কার নামটিও যথার্থ হতে পারে। এর অন্য নাম বৃন্দাবনী চাঁপা ।
আমেরিকার অধিবাসী এই গাছ আমাদের দেশে হাতেগোনা দু-এক জায়গায় আছে। চির সবুজ, দ্রুতবর্ধনশীল ঝোপালো অপূর্ব সুঘ্রাণে মাতোয়ারা করার ক্ষমতা অনেকটা মহুয়া, কামিনী বা হাসনাহেনার মতোই। পুরো গাছজুড়ে গ্রীষ্মের সময় থোকায় থোকায় সাদা ফুল ফুটে থাকে। গাছের নিচ দিয়ে হেঁটে গেলে শুধু সুগন্ধই পাওয়া যায়। সবুজ পাতার ফাঁকে খেয়াল না করলে ছোট ছোট সাদা ফুলের গুচ্ছ কারও হঠাৎ চোখেই পড়ার কথা নয়। বিরল এই ফুল তার সুঘ্রাণ নিয়ে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে।
জাহ্নবী