ঢাকা ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গুলুর ঝালমুড়ি

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ১২:৪৮ পিএম
গুলুর ঝালমুড়ি

গুলু সকাল হলেই দু-মুঠো পান্তাভাত আর কাঁচামরিচ মেখে খায়। তারপর থলে হাতে গাঁয়ের বটতলা দিয়ে হাঁটা ধরে নিশিপুর স্কুলের দিকে। স্কুলের গেটের সামনে চট বিছিয়ে বসে বিক্রি করে ঝালমুড়ি আর ভাঁজা বাদাম।

বেচাবিক্রির ফাঁকে ফাঁকে ঠিক পাখির মতো গলা উঁচিয়ে হাঁক দেয় রাস্তার মানুষদেরও। এই ঝালমুড়ি, ভাঁজা বাদাম, যে খাবেন নিয়া যান, নিয়া যান…
একেবারে সস্তা দাম! নিয়া যান…

একবার খাইলেই ফের মন চাইব, এই সেই ঝালমুড়ি, ভাঁজা বাদাম।

এভাবে হাঁক পাড়তে পাড়তে বিক্রি করতে থাকে ঝালমুড়ি আর বাদাম। স্কুলের ছেলেমেয়েসহ গ্রামের প্রায় সব মানুষই গুলুর কাছেই ঝালমুড়ি কিনে খায়। ছেলে-বুড়ো সবাই গুলুকে এক নামে চেনে! গুলু ঝালমুড়িওয়ালা! সেদিন স্কুলের টুকুন, রাকিব, তনয় গুলুকে ডেকে বলে- গুলু ভাই, তোমার হাতের ঝালমুড়ির যা মজা! তার কোনো তুলনা নেই। আর বাদাম ভাঁজাও অনেক ভালো, একদম মুচমুচে!  

আজকাল এত যত্ন করে কজনই-বা বেচাকেনা করে বলো! সবাই কেবল ভেজাল বিক্রি করে।

সারা দুনিয়াটাই ভেজালময় হয়ে গেছে গো গুলু ভাই।

মৃদু হেসে জবাব দেয় গুলু, তা আপনারা ঠিক কথাই কইছেন। তবে এগুলো তো সবই আমার মায়ের হাতের তৈরি। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই মায়ের সব জোগাড় সারা হয়ে যায়। মা আগের যুগের মানুষ, ভেজাল কিছু দু-চোখে দেখতে পারেন না।

যাই বল গুলু ভাই, তোমার এই ঝালমুড়ি খেয়ে আমাদের হেডস্যারও তোমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

তাই নাকি ভাইজানেরা! এ তো আমার ভারি সৌভাগ্যির ব্যাপার!

কথার মাঝেই টুকুন বলে ওঠে, এই যে গুলু ভাই, তোমরা যে গল্পেই ডুবে গেলে, কই আমাদের ঝালমুড়ি দাও! সঙ্গে বাদামও দিও।  

গুলু বলল, জি ভাইজান দিতাছি।

এই নেন।

এভাবেই সকাল ও দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়। স্কুলে ছুটির ঘণ্টা বেঁজে ওঠে টুংটাং, টুংটাং করে।

ছেলেমেয়েরাও বই-খাতা গুছিয়ে বাড়ির দিকে ছুট দেয়। সেই সঙ্গে গুলুরও ছুটি হয়। থলেটা মাথায় তুলে বাড়ির দিকে রওনা হয় গুলু।

রোজ ঝালমুড়ি আর বাদাম বিক্রি করে কোনোমতে দিন পার হয় গুলুর। ভিটেমাটি বলতে তেমন কিছুই নেই। শুধু এক টুকরো জমিতে একটি কুঁড়েঘর।

সেখানেই বৃদ্ধ মাকে নিয়ে থাকে গুলু।

আজ শুক্রবার স্কুল ছুটির দিন। তাই গুলু ঝালমুড়ি বেচতে যায়নি।

এদিকে গুলুর মা ডাকে- বাবা গুলু, নেও বাপু এই তোমার জন্যি একটু চালের গুঁড়ো দিয়ে হালুয়া করেছি, খেয়ে নেও।

গুলু হালুয়া খায়।

একবার এক সপ্তাহ ধরে গুলুর কোনো খবর নেই। ঝালমুড়ি, বাদাম বেচতে যায়নি। গুলুর যে ভীষণ জ্বর!

ঘরে যা পয়সাকড়ি ছিল তা ডাক্তার দেখাতেই শেষ হয়ে গেছে। এক টাকাও পুঁজি নেই! যা দিয়ে ব্যবসাটা আবার শুরু করবে। চিন্তায় গুলুর মাথায় হাত।

এদিকে স্কুলের ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন গুলুর মজাদার ঝালমুড়ি খাওয়ার অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু তার নাগাল পায় না কেউ।

রাকিব আর টুকুন ভাবে- কী হলো গুলু ভাইয়ের, এতদিন হয়ে গেল দেখা মেলে না। ব্যাপারটা দেখতে হচ্ছে।

টুকুন বলে, চল আজ গুলু ভাইয়ের বাড়ি গিয়ে দেখি সমস্যা কোথায়?

যেই ভাবা সেই কাজ! গুলুর বাড়ি গিয়ে তার মুখে সব কথা শুনে টুকুন ভাবে- আসলে কী করা যায়!

টুকুন আর রাকিব পরামর্শ করে।

পরের দিন সকালে স্কুলে তারা হেডস্যারের কাছে গিয়ে গুলুর ব্যাপারে সব কথা খুলে বলে।

সব শুনে স্যার বললেন, তাহলে কী করতে চাও তোমরা?

টুকুন বলে, আপনি অনুমতি দিলে আর কিছু আর্থিক সহযোগিতা করলে ভালো হবে। স্কুলের ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে গুলু ভাইয়ের জন্য স্কুলের গেটের বাইরে ছোট একটি দোকান করে দিতে চাই। সেখানে বসে গুলু ভাই ঝালমুড়ি, বাদাম, চা-বিস্কুটসহ সবই বেচতে পারবে। তাতে আমাদেরও সুবিধা হবে এবং গুলু ভাইয়েরও উপকার হবে।

সব শুনে হেডস্যার জবাব দিলেন, বাহ! ভালোই বলেছ। আচ্ছা, অনুমতি দিলাম।

পরদিনই টুকুন ও রাকিব স্কুলের ছেলেমেয়েদের নিয়ে কাজ শুরু করে দেয়। ছোট্ট একটা দোকান বানিয়ে দেয়। দোকানে মুড়ি, বাদামসহ নানান কিছু সাজিয়ে দেয়।

পরের দিন গুলুকে ডেকে নিয়ে আসে টুকুন। হেডস্যারকে দিয়ে গুলুর দোকান উদ্বোধন করায়। হেডস্যার বলেন, আজ থেকে এখানে বসেই ঝালমুড়ি বেচবে, বুঝলে গুলু। তোমাকে আর পাড়ায় পাড়ায় হাঁক দিয়ে বিক্রি করতে হবে না। সবাই এখান থেকেই কিনবে।

গুলু তো অবাক! খুশিতে ওর দু-চোখ পানিতে ভরে যায়।

কাঁপা গলায় বলে, কী বলে যে ধন্যবাদ দেব মাস্টার মশাই।

না না গুলু, আমায় ধন্যবাদ দেওয়ার কিছু নেই, সবই করেছে রাকিব, টুকুন ওরা মিলে। আমি তো শুধু সহযোগিতা করেছি।

জাহ্নবী

বিস্ময় বালক ঋতুরাজ!

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম
বিস্ময় বালক ঋতুরাজ!

বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী সিরিজ বইয়ের লেখক হিসেবে মাত্র ৯ বছর বয়সে সে পেয়েছে গিনেস বুক অব অ্যাওয়ার্ড। একই বছরে ইংল্যান্ড থেকে পেয়েছে প্রিন্সেস ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া আরও অনেক অর্জনে তার ঝুলি ভরপুর। বলছিলাম, ঋতুরাজ ভৌমিকের কথা।

তার আত্মপ্রকাশ হয় বাবা শুভাশীষ ভৌমিকের হাত ধরে। মাত্র ছয় বছর বয়সে বাবার সঙ্গে তার গানের হাতেখড়ি। ‘বাপকা বেটা’ নামে একটা ফেসবুক পেজ আছে তাদের। সেখানে সব কার্যক্রম তারা পোস্ট করতে থাকেন। ২০১৯ সালে তাদের জনপ্রিয়তার শুরু সেখান থেকেই। করোনা মহামারির সময় ঘরে বসে তারা একের পর এক গান করেছেন। সেসব গান শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাদের বাপ-বেটা জুটিকে সবাই সাদরে গ্রহণ করেছিলেন।

২০২২ সালের বইমেলায় যখন ঋতুরাজের বয়স মাত্র ৮ বছর, তখন তার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪টি। বইগুলোর নাম গুডউইল ফ্যাক্টরি, গুডউইল ফ্যাক্টরি-২, অ্যারাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড পার্ট-১ এবং অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড পার্ট-২। গুডউইল ফ্যাক্টরি এবং গুডউইল ফ্যাক্টরি-২ এ দুটি বইয়ে ঋতুরাজ তুলে ধরেছে এমন কিছু গল্প, যা সমাজে ছোটদের মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। চারপাশের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে এবং পরিবারের কাছ থেকে সুন্দর শিক্ষা পেয়ে সে পেয়েছে এমন কিছু লেখার অনুপ্রেরণা। অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড পার্ট-১ এবং অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড পার্ট-২ বই দুটি ভ্রমণের ওপর লেখা, যা একই সঙ্গে শিক্ষনীয়। ঋতুরাজ এখন পর্যন্ত বেশ কিছু দেশ ভ্রমণ করেছে। সেসব দেশ ঘুরে যা যা শিখতে পেরেছে, ভ্রমণকাহিনির মাধ্যমে তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। ছোটরা বই দুটি পড়ে যেমন অনেককিছু শিখতে পারবে, তেমনই ভ্রমণেও উৎসাহিত হবে।

ঋতুরাজের বয়স এখন ১১ বছর। সে ক্লাস ৫ শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে। এ বয়সেই তার চিন্তার জগৎ, মূল্যবোধ অবাক করে দেয় চারপাশের মানুষকে। সে সবসময় পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে ভাবে। তার মা-বাবা খুব কাছ থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জীবনযাপন দেখিয়েছেন তাকে। অনুভব করতে শিখিয়েছেন তাদের না পাওয়া কিংবা দুঃখগুলোকে। তাদের দারিদ্র্যে নিপীড়িত জীবন তাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়ে যায়। সমাজের প্রান্তিক মানুষদের জন্য কিছু করার ইচ্ছা তার সেখান থেকেই জন্মে। তার লেখা বইগুলো থেকে উপার্জিত সব অর্থ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়াশোনার জন্য ব্যয় হয়। পাশাপাশি ‘আমরাও পড়তে চাই’ নামক এক ক্যাম্পেইনে তার অনুরোধে অনেক মানুষ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়ায়। এত ছোট বয়সে এই মানবতামূলক কাজে যুক্ত থাকার জন্য ঋতুরাজকে প্রিন্সেস ডায়ানার মতো সম্মানজনক অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে যেমন তার ভাবনার অন্ত নেই, তেমনই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে কীভাবে আরও উপযোগী করে তোলা যায়, তা নিয়েও চেষ্টার কোনো কমতি নেই তার। পড়াশোনা আর লেখালিখি ছাড়াও নিজেকে নানানভাবে ছড়িয়ে দিতে চায় সে। নিজের মেধাকে চাষাবাদ করে ফলাতে চায় সোনার ফসল। ফুটবল খেলা খুব পছন্দ করে ঋতুরাজ। Growing Up নামে একটা ক্লাবে খেলে সে।

গিটার বাজাতে ভীষণ ভালোবাসে। গিটার বাজিয়ে অনেক গানই করেছে ঋতুরাজ। তবে এ পর্যন্ত তার মৌলিক গানের সংখ্যা ৩টি। যা ফেসবুক, ইউটিউব, স্পটিফাইসহ ২০০টির বেশি প্ল্যাটফর্মে রিলিজ হয়। গানগুলো প্রায় ৭০-৮০ লাখ মানুষ শুনেছে এবং বেশ কয়েকটি স্কুলে ছোটদের এই গানগুলো শেখানো হয়।

গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড অ্যাওয়ার্ড, প্রিন্সেস ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড ছাড়াও ঋতুরাজ তার নানামুখী কার্যক্রমের জন্য শেখ রাসেল পদক, দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যান্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ড, বাংলা অলিম্পিয়াড অ্যাওয়ার্ড, বিডি ট্যালেন্ট বেস্ট চাইল্ড অ্যাওয়ার্ড এবং UNDP SDG অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। তার বইয়ের অভাবনীয় সাড়া তাকে এনে দিয়েছে রকমারি বেস্ট সেলার অ্যাওয়ার্ড।

জাহ্নবী

আমরা আঁকি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আমরা আঁকি

দেবনীল চেীধুরী
কেজি ওয়ানৎ স্কলার্সহোম প্রিপারেটরি
পাঠানটুলা, সিলেট।
/আবরার জাহিন

 

আমরা আঁকি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
আমরা আঁকি

নাজিবাহ ইবনাত প্রান্তি
নবম শ্রেণি 
আটি পাঁচদোনা উচ্চ বিদ্যালয়
কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

/আবরার জাহিন

নীল সাগরের তিমি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
নীল সাগরের তিমি

ইউরোপের একটি ছবির মতো সুন্দর দেশ নরওয়ে। মানুষগুলো ছিমছাম, নির্ভেজাল ও হাসিখুশি। নরওয়ের রয়েছে বিশাল সমুদ্র উপকূল। এ দেশের অনেক মানুষ তাই মাছ ধরে। এজন্য নরওয়েকে জেলেদের দেশ বলা হয়।

নরওয়ের খোলা সাগরে ভেসে বেড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে তিমির দল। মাঝে মাঝে উপকূলে ঢু দিয়ে যায়। তারা সমুদ্রে খেলা করে। অবাক করার মতো হলেও এটা সত্যি যে, তারা গানও গায়। সে গান অন্য তিমিরাও শুনতে পায় বহু বহু  দূর থেকে। বিজ্ঞানীরা তো এ-কথাও বলেন যে, তিমিদের নিজস্ব ভাষাও আছে। তারা সে ভাষায় নিজেদের মধ্যে কথাও বলে। আর যখন তখন সমুদ্রের বুকে ডিগবাজি খায়। 9তিমিরা দল বেঁধে চলে। অবাক করার মতো কথা হলো, তাদের পরিবারও আছে। মা তিমি তার সন্তানকে পনেরো বছর পর্যন্ত নিজের কাছে রাখে। তার পর ছেড়ে দেয় স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার জন্য।

তো আমাদের এ গল্পের তিমি শিশুটির নাম অ্যাবে। তার মা সিলোনি তাকে খুব আদর করত। খুব ভালোবাসত। কিন্তু যখন অ্যাবের বয়স পনেরো হয়ে গেল, তখন তার মা সিলোনি তাকে স্বাধীন করে দিল। সত্যি সত্যিই, সিলোনি এটা চায়নি। কিন্তু সমাজের নিয়ম বলে কথা! তাই ছেলেকে না ছেড়ে তার উপায় ছিল না। অ্যাবে কয়েকদিন কান্না করতে করতে সমুদ্রে ভেসে বেড়াল। ধীরে ধীরে সমুদ্রের নানা রকম মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণীর সঙ্গে তার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়ে গেল। তাদের সঙ্গে ভেসে বেড়িয়ে, গল্প করে তার সময় ভালোই কাটতে লাগল। ভালো লাগল সমুদ্রের প্রাণীদের সঙ্গে খেলা করতে। এমনি করতে করতে একদিন একটা রে-ফিসের সঙ্গে সাঁতরাতে সাঁতরাতে সে চলে এল নরওয়ের সমুদ্র উপকূলের খুব কাছে। সেখানে নরওয়ের রাজা হ্যানসনের রাজকীয় জাহাজ এমভি মার্টিনা নোঙর করা ছিল। রাজা এই জাহাজে চড়ে তার ভীষণ অসুস্থ ছেলে হ্যানসনকে নিয়ে ইংল্যান্ডে যাবেন উন্নত চিকিৎসা করাতে।

জাহাজটি এক সপ্তাহের মধ্যেই রওনা হবে। ছোট্ট তিমি অ্যাবে আগে কখনো জাহাজ দেখেনি। সে বিস্মিত হলো। আনন্দে সে বড় করে দম নিয়ে সমুদ্রে ডুব দিল, একটু পরেই ভুস করে ভেসে উঠে আকাশের দিকে লাফ দিল পানি ছিটাতে ছিটাতে। তখন অ্যাবেকে মনে হচ্ছিল একটা উড়ন্ত পানির ফোয়ারা। রাজপুত্র হ্যানসন তখন জাহাজের খোলা ডেকে দাঁড়িয়ে ছিল। খালাসিরা ছোটাছুটি করে জাহাজে প্রয়োজনীয় মালপত্র ওঠাচ্ছিল। হ্যানসন তিমিটাকে দেখে ফেলল আর ওকে খুব ভালোবেসে ফেলল। সে তিমিটার উদ্দেশে গান গেয়ে উঠল। গানটা কিন্তু ছোট্ট তিমি অ্যাবের খুব ভালো লাগল। সে প্রতিদিন রাজপুত্র হ্যানসনের সঙ্গে দেখা করতে আসতে লাগল।

একদিন রাজার সেনাপতি রবরয় তিমিটিকে দেখে ফেলল। সে হারপুন গান দিয়ে তিমিটির দিকে গুলি ছুড়ল। ছোট্ট তিমির চারপাশে রক্তে লাল হয়ে গেল পানি। ধীরে ধীরে সে সমুদ্রে তলিয়ে গেল। রাজপুত্র হ্যানসন ডেক থেকে সবকিছু দেখে চিৎকার করে সমুদ্রে দিল ঝাঁপ। সে সাঁতার জানত না, তাই সেও সমুদ্রে তলিয়ে গেল।

সমুদ্রে স্কুবা ডাইভার পাঠিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রাজপুত্রকে আর পাওয়া গেল না। শোনা যায় আজও নরওয়ের জেলেরা যখন সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, তখন তারা কখনো কখনো রাজপুত্রের করুন কণ্ঠের গান শোনে। জেলেদের মন তখন রাজপুত্রের কথা ভেবে বিষণ্ন হয়ে ওঠে।

/আবরার জাহিন

বৃষ্টিঝরা দিনে

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১১ পিএম
বৃষ্টিঝরা দিনে
ছবি: সংগৃহীত

মেঘ গুরগুর ডাকছে দেয়া
আকাশ কালো করে,
ঠাণ্ডা হাওয়ার ডানায় চড়ে
নামল বৃষ্টি জোরে।
তা-ধিন তা-ধিন সোনাব্যাঙে
নাচছে খালে বিলে,
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ভাঙা সুরেই
ডাকছে সবাই মিলে।
শিশু-কিশোর উঠোনজুড়ে
করছে লুটোপুটি,
কেউবা বিলে বড়শি পেতে
ধরছে ট্যাংরা পুঁটি।
কদম ফুলের পাপড়ি মেলে
বর্ষা ওঠে হেসে,
নদী-নালা পায় ফিরে প্রাণ
রূপসী বাংলাদেশে।