বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন: জাকাতের তাৎপর্য ও শিক্ষা বর্ণনা করো।
উত্তর: ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে সালাতের পরই জাকাতের গুরুত্ব বেশি। জাকাতের তাৎপর্য ও শিক্ষা হলো-
জাকাতের তাৎপর্য: জাকাত দেওয়া দরিদ্রদের প্রতি ধনীদের কোনো অনুগ্রহ বা অনুকম্পা নয়; বরং তার সম্পদকে পবিত্র করার এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার একটি অবশ্য করণীয় ব্যবস্থা। ধনীদের সম্পদে গরিবদের অধিকার আছে, গরিবদের অংশ দিয়ে দিলে অবশিষ্ট সম্পদ মালিকের জন্য পবিত্র হয়ে যায়। তাই জাকাতের তাৎপর্য অপরিসীম।
জাকাতের শিক্ষা: জাকাত দিলে ধনী-গরিবের ব্যবধান কমে যায়। আল্লাহতায়ালা আমাদের খালিক ও মালিক। সব ধন-সম্পদের মালিকও তিনি। ‘সম্পদের মালিকানা আল্লাহর’-এ কথার বাস্তব প্রমাণ ঘটে জাকাতে। জাকাত না দিলে আল্লাহর মালিকানা অস্বীকার করা হয়। যারা সম্পদ পুঞ্জীভূত করে রাখে, জাকাত দেয় না, তাদের পরকালে কঠিন আজাব ভোগ করতে হবে। সুতরাং আমরা সঠিকভাবে জাকাত দেব।
প্রশ্ন: হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখ।
উত্তর: প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক, বুদ্ধিমান ও সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। হজ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহ শরিফে হজ পালন করা মানুষের ওপর অবশ্য কর্তব্য, যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে।’ হজ হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন এবং বিশ্ব মুসলিম যে এক, অখণ্ড উম্মত, হজ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। গায়ের রং, মুখের ভাষা এবং জীবন পদ্ধতিতে যত পার্থক্যই থাকুক না কেন, এই সম্মেলনে তারা একাকার হয়ে যায়, তাদের সব পার্থক্য দূর হয়ে যায়। হজ মানুষের অতীত জীবনের গুনাহগুলো ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেয়, মাফ করে দেয়। ইসলামের ঐক্য, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও প্রাণচাঞ্চল্য বজায় রাখার ব্যাপারে হজের তাৎপর্য অপরিসীম।
প্রশ্ন: হজের ফরজগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
উত্তর: হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। এর ফরজ তিনটি। নিচে সংক্ষেপে সেগুলো বর্ণনা করা হলো-
১. ইহরাম বাঁধা: হজের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা। ওজু, গোসলের পরে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে ইহরাম বাঁধতে হয়।
২. ওকুফ বা অবস্থান: হজের দ্বিতীয় ফরজ হলো ৯ জিলহজ আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা।
৩. তওয়াফে জিয়ারত: হজের তৃতীয় ফরজ হলো তওয়াফে জিয়ারত করা। কোরবানির দিনগুলোয় অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে কাবাঘরে তওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করাকে তওয়াফে জিয়ারত বলে।
প্রশ্ন: মুখ, দাঁত, হাত ও পা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব বর্ণনা করো।
উত্তর: মুখ: মুখ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা মুখ দিয়ে খাবার খাই। কথা বলি। মুখ পরিষ্কার না থাকলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। মানুষ তাকে ঘৃণা করে। লোকসমাজে লজ্জা পেতে হয়। মহানবী (সা.) দুর্গন্ধযুক্ত কোনো কিছু খেয়ে মসজিদে যেতে নিষেধ করেছেন।
দাঁত: আমরা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে খাবার খাই। এতে দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা লেগে থাকে। প্রতিবার খাবার পরে, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে দাঁত না মাজলে দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাদ্যকণা পচে মুখে দুর্গন্ধ হয়। দাঁতের নানারকম রোগ হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন ‘আমার উম্মতের কষ্ট না হলে, প্রত্যেক ওজুর আগে মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।’
হাত: আমরা হাত দিয়ে নানারকম কাজ করি। এতে হাত ময়লা হয়, নোংরা হয়। অনেক সময় হাতের নখ বড় হয়। বড় নখে অনেক ময়লা আটকে থাকে। আমরা হাত দিয়ে খাবার খাই। নোংরা হাতে খাবার খেলে খাবারের সঙ্গে ময়লা পেটে চলে যায়। এতে নানারকম পেটের অসুখ হয়। আমাদের নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। ভালোভাবে হাত ধুয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
পা: রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময় আমাদের পায়ে ধুলা-ময়লা লেগে পা নোংরা হয়ে যায়। কাজের শেষে পা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়।
মাস্টার ট্রেইনার ও সিনিয়র শিক্ষক,শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ,মধুবাগ, রমনা, ঢাকা।
কলি