দ্বিতীয় অধ্যায়
প্রাণীর পরিচিতি
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
সোহান তার জীববিজ্ঞান বইয়ের Hydra-এর চলন পড়তে গিয়ে ভাবে, ‘আচ্ছা Hydra যদি তার পরিবেশেই কোনো কলেজে পড়ত এবং কলেজের নিয়ম অনুযায়ী তারও আমার মতো প্রতিদিন ঘুম হতে উঠেই সকাল ৮টার মধ্যে কলেজে প্রবেশ করতে হতো, তখন Hydra তাড়াতাড়ি কলেজে আসতে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করলেও ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার পর দূরে কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে সে ভিন্ন আরেকটি পদ্ধতি অবলম্বন করত।’
ক. ভেনাস হার্ট কী? ১
খ. ঘাসফড়িংকে কেন Insecta বা পতঙ্গ শ্রেণিভুক্ত প্রাণী বলা হয়? ২
গ. উদ্দীপকের সোহানের ভাবনার সঙ্গে মিল রেখে Hydra দূরে বেড়াতে যেতে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করবে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে Hydra-এর চলনের যে দুটি পদ্ধতির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে তাদের মধ্যে পার্থক্য দেখাও। ৪
উত্তর: ক. যে ধরনের হৃৎপিণ্ডের মধ্য দিয়ে কখনোই অক্সিজেনযুক্ত রক্ত প্রবাহিত হয় না এবং শুধু কার্বন ডাই-অক্সাইডযুক্ত রক্ত প্রবাহিত হয় তাকে ভেনাস হার্ট বলে। যেমন- মাছের হৃৎপিণ্ড।
খ. ঘাসফড়িংকে Insecta বা পতঙ্গ শ্রেণিভুক্ত প্রাণী বলা হয়, কারণ- ১. অন্যান্য পতঙ্গের মতো ঘাসফড়িংয়ের দেহ কাইটিন নির্মিত বহিঃকঙ্কাল দিয়ে আবৃত।
২. দেহ তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত- মস্তক, বক্ষ ও উদর।
৩. মস্তকে এক জোড়া পুঞ্জাক্ষি এবং এক জোড়া অ্যান্টেনা রয়েছে।
৪. বক্ষদেশে তিন জোড়া সন্ধিযুক্ত পা ও দুই জোড়া ডানা থাকে।
৫. ট্রাকিয়া নামক শাখা-প্রশাখাযুক্ত বায়ু নালিকার মাধ্যমে শ্বাসক্রিয়া সম্পন্ন করে।
৬. মুক্ত রক্ত সংবহনতন্ত্র বর্তমান।
৭. ম্যালপিজিয়ান নালিকার সাহায্যে রেচন ক্রিয়া সম্পন্ন করে।
গ. উদ্দীপকের সোহানের ভাবনার সঙ্গে মিল রেখে Hydra দূরে বেড়াতে যেতে অর্থাৎ লম্বা দূরত্ব অতিক্রমের জন্য Hydra লুপিং (Looping) বা হামাগুড়ি চলনের আশ্রয় নেবে।
এ প্রক্রিয়ার শুরুতে Hydra-এর এক পাশের পেশি-আবরণী কোষগুলো সংকুচিত হয় এবং অপর পাশের অনুরূপ কোষগুলো সম্প্রসারিত হয়। ফলে Hydra গতিপথের দিকে দেহকে প্রসারিত করে ও বাঁকিয়ে মৌখিক তলকে ভিত্তির কাছাকাছি নিয়ে আসে এবং কর্ষিকার গ্লুটিন্যান্ট নেমাটোসিস্টের সাহায্যে ভিত্তিকে আটকে ধরে। এরপর পাদ-চাকতিকে মুক্ত করে মুখের কাছাকাছি এনে স্থাপন করে এবং কর্ষিকা বিযুক্ত করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। এ পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে Hydra ধীরগতিতে স্থান ত্যাগ করে। জোঁক বা শুঁয়াপোকা চলার সময় যেভাবে ক্রমান্বয়িক লুপ বা ফাঁসের সৃষ্টি হয়, Hydra-এর চলনও দেখতে অনেকটা একই রকম হওয়ায় লুপিং চলনকে জোঁকা চলন বা শুঁয়াপোকা চলন নামেও অভিহিত করা যায়। এ পদ্ধতিতে প্রতিবার চলনে একটি লুপ তৈরি হয় এবং Hydra তার দেহের দৈর্ঘ্যের অর্ধেক দূরত্ব অতিক্রম করে।
ঘ. উদ্দীপকের সোহানের ভাবনার সঙ্গে মিল রেখে Hydra সকাল ৮টার মধ্যে কলেজে যেতে অর্থাৎ স্বল্প দূরত্বের পথ দ্রুত যেতে সমারসল্টিং (Somersaulting) বা ডিগবাজি এবং দূরে বেড়াতে যেতে অর্থাৎ লম্বা দূরত্ব অতিক্রমের জন্য Hydra লুপিং (Looping) বা হামাগুড়ি চলনের আশ্রয় নেবে।
Hydra-এর লুপিং (Looping) ও সমারসল্টিং (Somersaulting) চলনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
আরও পড়ুন: জীববিজ্ঞান ১ম পত্র ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
লেখক: প্রভাষক, জীববিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা ইমপিরিয়াল কলেজ, ঢাকা
জাহ্নবী