![এইচএসসির অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর: বাংলা প্রথম পত্র](uploads/2024/05/13/SSC-Bangla-1715604799.jpg)
মূলভাব
প্রশ্ন: তাহারেই পড়ে মনে কবিতার মূলভাব লেখ।
উত্তর: মূলভাব: ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবির স্মৃতিকাতর আবেগীয় অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে। এ কবিতায় কবি সুফিয়া কামালের ব্যক্তি জীবনের দুঃখময় ঘটনার ছায়াপাত ঘটেছে। কবির স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের মৃত্যুতে তার জীবনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়, তা কবিমনকে আচ্ছন্ন করে রাখে রিক্ততার হাহাকারে; যা কোনোভাবেই পূরণীয় নয়। প্রকৃতিতে নব বসন্তের আগমনও কবি হৃদয়ের সেই বিষাদময় রিক্ততার সুরকে মুছে ফেলতে পারেনি, জাগতিক কোনো কিছু কবিকে স্পর্শ করেনি। তাই বসন্ত এলেও উদাসীন কবির অন্তর জুড়ে থাকে রিক্ত শীতের করুণ বিদায়ের বেদনা ও হাহাকার। শীত যে কবিকে শূন্যতায় পূর্ণ করে গেছে। অথচ বসন্ত কবির প্রিয় ঋতু। প্রকৃতির সঙ্গে মানব মনের সম্পর্ক নিবিড় হওয়া সত্ত্বেও কবির শোকাচ্ছন্ন হৃদয়ে বসন্ত-প্রকৃতির প্রভাব কোনোভাবেই সে সম্পর্ককে জাগিয়ে তুলতে পারেনি এবং কবির বিয়োগভারাক্রান্ত অন্তরকেও স্পর্শ করতে পারেনি। গঠনরীতির দিক থেকে নাটকীয় গুণসম্পন্ন এ কবিতার সংলাপনির্ভর কথোপকথনকে বিশেষ তাৎপর্যময় করে তুলেছে, যা দুজন ব্যক্তির কথা বলার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি নাটকীয় সংলাপনির্ভর কবিতা। এখানে কবি ও কবি-ভক্তের মধ্যে সংলাপ বিনিময় হয়েছে। কবি ও কবি-ভক্তের যুক্তি ও ভাবের প্রকাশ কবিতাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কবি ও কবিভক্তের পাশাপাশি শীত ও বসন্তের তাৎপর্য এক গভীর প্রতীকী ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করেছে। কবিভক্ত কবিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছেন, প্রকৃতির সান্নিধ্যে কবিকে আবারও সৃষ্টিশীল হতে অনুরোধ করেছেন। মানবজীবনে প্রিয়জন হারানোর গভীর বেদনা ভোলার নয়; তবু মানুষকে বেদনাদীর্ণ হৃদয়ে আবারও জাগতিক স্বাভাবিকতায় ফিরতে হয়। কবিভক্ত কবিকে সেটিই বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। গভীর আবেগ থেকে কবিকে শোক সঙ্গে নিয়েই আবার কলম হাতে তুলে নিতে প্রতীকী আহ্বান জানিয়েছেন। যাপিত জীবন যেন থেমে থমকে না যায়, জীবিত মানুষ যেন প্রাণহীন হয়ে না পড়ে সেই কামনা থেকেই কবিভক্ত কবির কণ্ঠে বসন্ত বন্দনা শুনতে চেয়েছেন। একদিকে শোকসন্তপ্ত হৃদয় কবিকে শীতের সন্ন্যাসরূপে আবদ্ধ রাখতে চায়; অন্যদিকে প্রকৃতি ডাকে নতুন এক আবাহনী মন্ত্রে- জাগো! জাগো! উঠে দাঁড়াও প্রাণের সঞ্জীবনী নিয়ে। মানবজীবনের দুঃখ-বেদনা, সময়ের গভীর বাস্তবতা এ কবিতায় এক বিচিত্র অনুভূতিতে বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১.‘মাঘের সন্ন্যাসী’ কাকে বলা হয়েছে?
উত্তর: কবি শীতকে মাঘের সন্ন্যাসীরূপে কল্পনা করেছেন।
প্রশ্ন-২. ‘উন্মনা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: উৎকণ্ঠিত, ব্যাকুল, আনমনা, উদাস।
প্রশ্ন-৪. সুফিয়া কামালের জন্মসাল-
উত্তর: ২০ জুন, ১৯১১।
প্রশ্ন-৫. সুফিয়া কামাল কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: বরিশালের শায়েস্তাবাদে।
প্রশ্ন-৬. সুফিয়া কামালের পৈতৃক নিবাস কোথায়?
উত্তর: সুফিয়া কামালের পৈতৃক নিবাস কুমিল্লায়।
প্রশ্ন ৭. সুফিয়া কামাল কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: নভেম্বর ২০, ১৯৯৯ সালে।
প্রশ্ন-৮. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কোন ঋতুর আগমনের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: বসন্ত ঋতুর আগমনের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন-৯. ‘কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি’-কার আঁখি?
উত্তর: কবির আঁখির কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন-১০. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবির নীরবতার কারণ কী?
উত্তর: প্রিয়জন হারানোর শোক ও গভীর বেদনাবোধ।
প্রশ্ন-১১. মাঘের সন্ন্যাসী কোথায় চলে গেছে?
উত্তর: মাঘের সন্ন্যাসী পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে চলে গেছে।
প্রশ্ন-১৪. ‘পুষ্পারতি’ শব্দটি কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: ‘পুষ্পারতি’ শব্দটি ফুলের বন্দনা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রশ্ন-১৫. ‘অর্ঘ্য বিরচন’ অর্থ কী?
উত্তর: অর্ঘ্য বিরচন শব্দের অর্থ উপহার রচনা।
প্রশ্ন-১৬. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ‘মাসিক মোহাম্মদী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন-১৭. সুফিয়া কামালের স্বামীর নাম কী?
উত্তর: সৈয়দ নেহাল হোসেন।
প্রশ্ন-১৮. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি কোন ছন্দে লেখা?
উত্তর: ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা
কলি