![‘ন্যায়বিচার ও সাম্যের জন্য প্রয়োজন সকল ভাষার স্বীকৃতি ও সম্মান’](uploads/2024/02/25/1708851237.IMLD-1.jpg)
সকল ভাষার স্বীকৃতি ও সম্মানের মধ্যে সামাজিক ন্যায়বিচার, সাম্য প্রতিষ্ঠা হতে পারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অঙ্গীকার বলে মন্তব্য করেছেন জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান।
জেনেভায় বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনার শুরুতে তিনি ভাষাশহিদ এবং ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা অবদান রেখেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষায় সাংস্কৃতিক ও বাংলা ভাষাভাষীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের রাজনৈতিক আন্দোলনে যুগপৎ নেতৃত্ব দেওয়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি তিনি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
দিবসটির তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্থায়ী প্রতিনিধি সুফিউর রহমান কয়েক হাজার বছরে সংস্কৃত, প্রাকৃত ভাষার বিবর্তনের ধারায় বাংলা ভাষার বর্তমান অবস্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাভাষী অঞ্চলসমূহের আশেপাশের এলাকার ভাষার সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়ায় এবং ব্যাকরণ, চিন্তা, দর্শন আত্মীকরণ করে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি বা প্রগতির জন্য যে জ্ঞান দরকার, তা অর্জনের জন্য বাংলার চর্চা ও প্রসারের পাশাপাশি অন্য ভাষাকে সম্মান দিতে হবে, অন্য ভাষার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর শিশুরা যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে নিজেদের ভাষায় আত্মগরিমায় শিক্ষালাভ করতে পারে, সে বিষয়ে অধিকতর সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকারি উদ্যোগের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান বলেন, ‘দ্রুত নগরায়ন, বিশ্বায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের কারণে আঞ্চলিক ও ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ভাষার অস্তিত্ব ক্রমশ হুমকির মুখে পড়ছে। আমাদের সতর্ক হতে হবে যাতে ভাষাগুলো কালের বিবর্তনে হারিয়ে না যায়।’
অনুষ্ঠানে মিশনের কমার্শিয়াল মিনিস্টারসহ দুইজন প্রবাসী বাংলাদেশিও বক্তব্য রাখেন।
মিশনের মিলনায়তনে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের অংশগ্রহণে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪ পালিত হয়েছে।
দিবসের শুরুতে মিশন ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের সুখ, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাতের ও বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
এরপর মহান ভাষা আন্দোলনের উপর নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন’ শীর্ষক একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সাদিয়া নাহার/অমিয়/