দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো. ইকবাল হোসেন (৪০) নামে আরও এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন। তার বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায়।
সোমবার (১১ মার্চ) সকালে ডারবানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে রবিবার (১০ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি আহত হন।
নিহত মো. ইকবাল হোসেন সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের সাবেক সেনা কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উল্যাহর বড় ছেলে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা নিহতের ছোট ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রবিবার বিকেলে ডারবান এলাকায় দোকান বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হাতে থাকা টাকার বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন আহত ইকবালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমবার সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ইকবাল হোসেন সবার বড়। কয়েকদিন পর তার দেশে আসার কথা ছিল। বাড়িতে তার মা-বাবা, ভাই-বোন ছাড়াও স্ত্রী রওনক জাহান এবং তাহফিজ আল ইফাজ (১০) ও ইমরান হোসেন (৮) নামে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে।
সোমবার দুপুরে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। আত্মীয়-স্বজনরা খবর পেয়ে ওই বাড়িতে জড়ো হয়েছেন।
বাড়িতে থাকা নিহতের আরেক ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় বারবার বাংলাদেশিদের ওপর আক্রমণ করে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। এর প্রতিকার হওয়া দরকার। আর কারও ভাইকে যাতে এভাবে জীবন দিতে না হয় সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’
ইকবালের মা তৈয়বের নেছা খবরের কাগজকে বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমার পরিবারের হাল ধরা ছেলেকে শেষ করে দিয়েছে। আমি কী নিয়ে বাঁচব? আমি সন্ত্রাসীদের বিচার চাই। আমার ছেলের মরদেহ যাতে বাড়িতে আনা হয় আমি সরকারের কাছে এ দাবি জানাই।’
সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় মামলা হয়েছে। দূতাবাসে যোগাযোগ করে কাগজপত্র পাঠিয়ে মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
এর আগে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে সন্ত্রাসীরা নোয়াখালীর সেনবাগের উত্তর মানিকপুর গ্রামের মহিন ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রুনা আক্তারকে গুলি করে হত্যা করে। রবিবার (১০ মার্চ) তাদের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার দিনই আবারও একই এলাকার ইকবালকে গুলি করে হত্যা করা হলো।
ইকবাল/সালমান/