![হেপাটাইটিস-সি থেকে নিরাপদ থাকুন](uploads/2024/03/07/1709790736.ni-er-jabe34.jpg)
হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসের (এইচসিভি) কারণে হওয়া লিভারের প্রদাহকে হেপাটাইটিস-সি বলে। প্রাথমিকভাবে এই সংক্রমণ সঞ্চারিত হয় রক্তের মাধ্যমে। হেলথ লাইন অবলম্বনে জানাচ্ছেন মো. রাকিব।
হেপাটাইটিস-সি রোগটি তীব্র সংক্রমণ হিসেবে বৃদ্ধি পেতে পারে। ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয়। তীব্র সংক্রমণ সর্বাধিক ছয় মাস পর্যন্ত হয় এবং কোনো চিকিৎসা ছাড়াই সেরে ওঠা সম্ভব। অন্যদিকে, দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী হয় এবং তার থেকে সিরোসিস ও কার্সিনোমা (ক্যানসার) হতে পারে।
রোগের লক্ষণ
রোগটির মাত্রা খুব বেড়ে গেলে নানা লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণগুলো ফুটে উঠতে সাধারণত দুই সপ্তাহ থেকে ছয় মাস সময় লাগে। ৮০ শতাংশ সংক্ৰমিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা না দিলেও, তারা কিন্তু অনুভব করতে পারেন। এর মধ্যে আছে দুর্বলতা, বমি বমি ভাব ও বমি। এ ছাড়া খিদে কমে যাওয়া, চোখ এবং ত্বক হলদেটে হয়ে পড়ার পাশাপাশি তলপেটে অস্বস্তি থাকতে পারে।
হেপাটাইটিস-সি এর কারণ
হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস বিভিন্ন উপায়ে অন্যের দেহ থেকে রোগীর দেহে আসতে পারে। এর মধ্যে আছে সুচ এবং ব্যক্তিগত সামগ্রী ভাগাভাগি করে ব্যবহার। যেমন মাদক কারবারিরা রেজর ভাগাভাগি করে। এ ছাড়া হাসপাতালে সংক্রমিত সুচ এবং সিরিঞ্জ ব্যবহার, চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত না করে ব্যবহার এবং ভাইরাসবাহী রক্ত অন্যকে দান।
এ ছাড়া অনিরাপদ যৌনমিলন, আক্রান্ত মায়ের থেকে সন্তানের দেহে এটা আসতে পারে। তবে দূষিত খাদ্য ও পানি এবং গৃহস্থালী সামগ্রীর মিলেমিশে ব্যবহারের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায় না।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা
উল্লেখিত উপসর্গগুলো দেখা গেলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। চিকিৎসক যকৃতের এনজাইমের মাত্রা চিহ্নিত করার জন্য রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য এইচসিভি অ্যান্টিবডি (অ্যান্টি-এইচসিভি) এবং এইচসিভি রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (এইচসিভি আরএনএ) পরীক্ষা করাতে পারেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাস এক সপ্তাহের মধ্যে শনাক্ত করা সম্ভব।
অন্যদিকে লিভারের ক্ষতির পরিমাণ শনাক্ত করতে লিভারের বায়োপসি করা হয়। থেরাপি শুরু হওয়ার আগে এইচসিভি জেনোটাইপ পরীক্ষাও করা হয়। হেপাটাইটিস-সি সংক্রমণের চিকিৎসায় ডাইরেক্ট অ্যাক্টিং অ্যান্টিভাইরালস হলো সবচেয়ে নতুন ওষুধ, এতে চিকিৎসা করতে তিন মাস সময় লাগে। পাশাপাশি চিকিৎসকরা প্রচলিত অন্যান্য চিকিৎসাও করে থাকেন।
বর্তমানে এই সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য কোনোরকম টিকা নেই। তবে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া কমানো গেলে (সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে সুচ ও সিরিঞ্জ ভাগাভাগি করে ব্যবহার, ব্লাড ট্রান্সফিউশন এবং যৌন সম্পর্ক এড়িয়ে চলা) এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকটা কমানো সম্ভব।
কলি