![হাতের স্পর্শ ছাড়াই দাবা খেলছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত](uploads/2024/03/22/1711087187.science.jpg)
হাতের স্পর্শ ছাড়াই শুধু চিন্তা করে কম্পিউটারে দাবা খেলছেন ২৯ বছর বয়সী নোল্যান্ড আরবাঘ নামের পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক ব্যক্তি। আর এমনটি সম্ভব হয়েছে ধনকুবের ইলন মাস্কের ব্রেইন চিপ স্টার্টআপ কোম্পানি নিউরালিংকের তৈরি ডিভাইসের মাধ্যমে। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যার মস্তিষ্কে পরীক্ষামূলকভাবে এই ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বৃহস্পতিবারন (২১ মার্চ) নোল্যান্ডের বাসা থেকেই লাইভে আসেন নিউরালিংকের এক কর্মী। সেই ভিডিওতেই তাকে হাতের স্পর্শ ছাড়াই ল্যাপটপে দাবা খেলতে দেখা যায়। এমনকি তিনি কম্পিউটারের মাউসের কারসরও প্রয়োজনমাফিক ব্যবহার করছিলেন।
নোল্যান্ড একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন। তিনি ঘাড়ের নিচের অংশ নাড়াতে পারতেন না। নিউরালিংক ডিভাইস স্থাপনের আগে তার কম্পিউটার চালাতেও অন্যের সহায়তা লাগত। গত জানুয়ারিতে ডিভাইস স্থাপনের পর এখন তিনি নিজে নিজেই তা পারছেন।
লাইভে তিনি বলেছেন, ডিভাইস স্থাপনের সার্জারিটাও ছিল খুব সহজ। যেদিন সার্জারি হয়, তার পরদিনই তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। কোনো কগনিটিভ সমস্যাও তাকে মোকাবিলা করতে হয়নি। এমনকি তাকে দেখে বোঝারও উপায় নেই যে তিনি মস্তিষ্কে একটি স্মার্ট ডিভাইস নিয়ে ঘুরছেন।
নিউরালিংকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি মূলত এই খেলাটি (দাবা) ছেড়ে দিয়েছিলাম। আপনারা সবাই (নিউরালিংক) আবার আমাকে দাবা খেলার ক্ষমতা দিয়েছেন। আমি টানা ৮ ঘণ্টাও দাবা খেলতে পারি।’
নিউরালিংকের এত বড় সাফল্যের পরও ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের নিউরাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সাবেক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কিপ লুডভিগ বলেন, ‘কোম্পানিটি যা দেখিয়েছে তা মোটেও বড় কিছু নয়। তবে এটি বেশ ভালো শুরু। এই প্রযুক্তি বর্তমানে খুব প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। এখনো অনেক কিছু শেখার আছে।’
নিউরালিংক মূলত একটি ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানি। মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটার বা স্মার্ট ডিভাইসের সংযোগ সাধন নিয়ে কোম্পানিটি কাজ করে। এর আগে মানুষের মস্তিষ্কে স্থাপনের আগে পরীক্ষামূলকভাবে শূকর ও বানরের মস্তিষ্কেও স্থাপন করা হয়েছিল।
ইলন মাস্ক এর আগে বলেছিলেন, তার কোম্পানির প্রাথমিক লক্ষ্য যারা পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা অন্ধত্বের সমস্যা মোকাবিলা করছে তাদের সহায়তা করা। তবে ভবিষ্যতে এর প্রভাব হবে আরও ব্যাপক। দেখা যাবে, কেউ নতুন কিছু শিখতে চাইলে তার মস্তিষ্কে স্বল্প সময়ের মধ্যেই সেই দক্ষতা লোড করতে পারবে কিংবা এর মাধ্যমে ব্রেইনকে কম্পিউটারেও ডাউনলোড করা যাবে বা তৈরি করা যাবে ডিজিটাল টুইন। সূত্র: নিউরালিংক